1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্নীতি দূর করতে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা

১০ মার্চ ২০১৭

রাজনৈতিক দলগুলো যদি কঠোর অবস্থান নেয়, তাহলেই দুর্নীতি কমিয়ে আনা সম্ভব৷ তবে আশার কথা, দুর্নীতি দমন কমিশন কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ বড় বড় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান যদি ঠিক থাকে তাহলেও এটা কমে আসবে৷

Katar Baustelle Fußballstadion Arbeiter
ছবি: picture-alliance/Pressefoto Markus Ulmer

‘‘দুর্নীতিবাজরা যদি ভয় পায়, তাহলে কাজ হবে৷ কারণ রাজনীতিবিদ-আমলা-ব্যবসায়ী মিলেই দুর্নীতি হয়৷’’ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাগুলো বলেন ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক’ বা সুজন-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার৷

বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি-র এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘বিদেশে কাজ করতে যাওয়া ৯০ শতাংশের বেশি পুরুষ কর্মী দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন৷ সরকার নির্ধারিত খরচের কমপক্ষে দ্বিগুণ বেশি অর্থ দিতে হচ্ছে তাঁদের৷’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘শুধু পুরুষ কর্মী নন, নারী কর্মীরাও দুর্নীতির শিকার৷ নারী গৃহকর্মীদের বিনা খরচে বিদেশ যাওয়ার কথা থাকলেও, অনেককে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে৷ গন্তব্য দেশের অবৈধ ভিসা বিক্রি থেকে শুরু করে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বহির্গমন ছাড়পত্র পাওয়া পর্যন্ত ৫ ধাপে ১৬ ধরনের এই অতিরিক্ত অর্থ দিতে হচ্ছে৷ এছাড়া গন্তব্য দেশের ভিসা কিনতে দেশ থেকে পাচার হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা৷’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘টিআইবি-র এই রিপোর্ট ঠিক নয়৷ বাংলাদেশ থেকে যাঁরা বিদেশে যাচ্ছেন, তাঁদের অধিকাংশই সঠিকভাবেই যাচ্ছেন৷ এক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ ভাগ কর্মী দুর্নীতির শিকার হতে পারেন৷’’

‘‘টিআইবি যেভাবে গবেষণা করে তাতে সঠিক তথ্য উঠে আসে না’’

This browser does not support the audio element.

টিআইবি-র গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে উল্টো প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘টিআইবি যেভাবে গবেষণা করে তাতে সঠিক তথ্য উঠে আসে না৷ কারণ ৯০ ভাগ কর্মীকে বিদেশে পাঠাচ্ছে নামকরা বায়ার প্রতিষ্ঠান৷ তারা সঠিকভাবেই কাজ করে৷ শুধুমাত্র দু-একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে৷ সেগুলোর বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেয়৷’’

টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের প্রক্রিয়াটি জটিল৷ এটা মূলত দালাল নির্ভর৷ এই দালালদের কারণে প্রতিবেশী কর্মী প্রেরণকারী দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের কর্মী প্রেরণ অনেক বেশি ব্যয়বহুল৷ ফিলিপাইন্সের একজন কর্মীকে সৌদি আরবের ভিসা কিনতে যেখানে কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না, সেখানে বাংলাদেশের একজন কর্মীকে ৭ থেকে ১৫ হাজার সৌদি রিয়াল পর্যন্ত খরচ করতে হচ্ছে৷ যে কারণে কয়েকটি দেশের ভিসা পেতে সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে সর্বনিম্ন দ্বিগুণ, কখনো চার, পাঁচগুণ বেশি টাকা দিতে হচ্ছে৷’’

‘বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের প্রক্রিয়াটি জটিল’

This browser does not support the audio element.

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা রাখা প্রয়োজন৷ এই খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মন্ত্রণালয়ের সদ্বিচ্ছা থাকলেও তাদের অপারগতাও আছে৷ শ্রম অভিবাসন খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইনে পরিবর্তন, আইনের প্রয়োগ, সেবার বিকেন্দ্রীকরণ, বিএমইটি-র ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’ কার্যকর, বিদেশে দূতাবাসের শ্রম উইং-এর সমতা (বাজেট, জনবল) ও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে৷’’

গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি মনে করেন এটা ঠিক নয়, তাহলে তিনি সেটা ভাবতেই পারেন৷ কিন্তু আমরা যেটা করি তার একটা আন্তর্জাতিক মাপকাঠি আছে৷ মন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা তাঁর নিজস্ব অভিমতের বিষয়৷ আমরা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই কথা বলি৷ এর বাইরে আমরা কিছু বলি না৷’’

‘সুশাসনের জন্য নাগরিক’ বা সুজন-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা তো কারো মুখের কথা গ্রহণ করব না৷ বরং গবেষণায় যেটা পাওয়া যাবে সেটাই গ্রহণ করব৷ আমি নিজেও মনে করি, আমাদের দেশে সার্বিকভাবে দুর্নীতি কমেনি৷ অনেক ক্ষেত্রেই এটা বেড়েছে৷ আসলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়৷’’

‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়’

This browser does not support the audio element.

টিআইবি-র ‘শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন: সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটিতে রিক্রুটিং এজেন্সির ভিসা বিক্রি, প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত চাহিদাপত্র তৈরি, ভিসা কেনা বাবদ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার, চাকরির ধরন বা বেতন সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য অভিবাসনকর্মীদের না জানা, স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়, পুলিশ ছাড়পত্রে নিয়ম বহির্ভূত অর্থ আদায়, ভিসা স্ট্যাম্পিংয়ে অর্থ আদায় ও হয়রানি, ডেটাবেজ থেকে কর্মী না নিয়ে দালাল দিয়ে কর্মী সংগ্রহসহ নানা অনিয়মের কথা উঠে এসেছে৷

এর প্রেক্ষিতে টিআইবি শ্রম অভিবাসন খাতে সুশাসন নিশ্চিতে বিদ্যমান আইনের সংস্কারসহ ন’দফা সুপারিশ পেশ করেছে৷

প্রিয় পাঠক, এ বিষয়ে আপনার বা আপনার পরিচিত কারও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা জানাতে পারেন নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ