1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্নীতি না ভোট, কাকে গুরুত্ব দেবে কেন্দ্র

২১ ডিসেম্বর ২০২২

সমস্যায় পড়েছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গে একশ দিনের কাজের টাকা বন্ধ থাকবে নাকি ছাড়া হবে তা নিয়ে।

ছবি: Subrata Goswami/DW

গত মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে একশ দিনের কাজের টাকা রাজ্য সরকারকে দেয়নি কোন্দ্রের মোদী সরকার। দিনকয়েক আগেই সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, দুর্নীতি ও বেনিয়ম নিয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে,  তার ব্যাখ্যা যতক্ষণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার না দিচ্ছে, ততক্ষণ তারা অর্থ বন্ধ রাখবেন। ফলে প্রায় দশ মাস হয়ে গেল, ১০০ দিনের কাজের টাকা পশ্চিমবঙ্গে পাচ্ছেন না গ্রামের মানুষ।

একশ দিনের কাজ মানে গ্রামের গরিব কর্মহীন মানুষকে একশ দিন সরকার কাজ দেয়। যে রাজ্যে যত গরিব, সেখানে এই কাজের চাহিদা তত বেশি।

পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। এই ধরনের অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখা হয়। সূত্র জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় দল পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে গিয়ে তা খতিয়ে দেখেছে। তদন্ত এই কথাটা সরকারিভাবে বলা না হলেও এই খতিয়ে দেখার কাজটা কার্যত তদন্তের মতোই। সরকারি কর্মকর্তারা বিভাগের কাছে কী রিপোর্ট দিয়েছেন, তা জানা না গেলেও নির্মলার কথা থেকে স্পষ্ট, তারা এখনো রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যা পাননি বা পেলেও তারা সন্তুষ্ট হননি। ফলে অর্থ দেয়া শুরু হচ্ছে না।

এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু গোল বেঁধেছে, দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীদের কাছেপশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতাদের অনুরোধ নিয়ে। সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের বলেন, আর মাসছয়েকের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এখনো একশ দিনের কাজের টাকা বন্ধ রাখলে তার প্রভাব পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়তে বাধ্য।

বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা

রাজ্য বিজেপি-র নেতারা মনে করছেন, তৃণমূল একশ দিনের কাজে  টাকা দেয়া বন্ধ করাটা ভোটের প্রধান ইস্যু করবে। তারা বঞ্চনার কথা বলবে। তখন দোষ গিয়ে পড়বে বিজেপি-র উপর। তাই অবিলম্বে পুরোটা না হলেও কিছুটা অর্থ ছাড়া হোক। নাহলে এই একটা প্রচারেই পঞ্চায়েতে বিজেপি-র অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে

এখানেই বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিপাকে পড়েছে। দুর্নীতির অভিযগে টাকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। খোদ অর্থমন্ত্রী তা জানিয়ে দিয়েছেন। এখন আবার টাকা চালু করার মানে, সেখানে দুর্নীতি নেই তা মেনে নেয়া। আবার অর্থ না দিলে ভোটে খারাপ ফল হতে পারে। তাহলে কোনদিকে যাওয়া যায়,  দুর্নীতি না ভোট পাওয়ার জন্য আপস কোন রাস্তাতে হাঁটবে বিজেপি?

সমস্যাটা শুরু হয়েছে। এখন কোন পথে তার সমাধান হবে তার ইঙ্গিত এখনো নেই।

প্রবীণ সাংবাদিক ও লেখক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, বিজেপি-র রাজ্য নেতারা বুঝতে পেরেছেন, ''সাধারণ মানুষ তৃণমূলের প্রচারে প্রভাবিত হচ্ছে। এর মধ্যে দুর্নীতি নেই, বেনিয়ম হয়নি এমন কথা তো বলা য়াবে না। ভারত তো দুর্নীতি সূচকে উপরের দিকে উঠছে না। কিন্তু যারা দুর্নীতি করেনি, তারা কেন টাকা পাবে না?''

শুভাশিসের বক্তব্য, ''দুর্নীতি হলে, প্রকল্পকে ফুলপ্রুফ করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। তাদেরই প্রকল্প। দুর্নীতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে সাস্তিও দিক তারা। কিন্তু দরিব মানুষরা যাতে টাকাটা পায়, সেটাও নিশ্চিত করা হোক। টাকা বন্ধ করে দিলে ভোটে তার প্রভাব পড়বেই।'' তাই শুভাশিস মনে করছেন, ''ভোটের আগে কেন্দ্র একশ দিনের কাজে রাজ্যকে আবার টাকা দিলে তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। অর্থনীতি ও রাজনীতির মধ্যে বিরোধ হলে, ভারতে শেষেরটাই তো হামেশা প্রাধান্য পায়।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ