1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দূষণের দায় এড়িয়ে চলছে জাহাজ শিল্প

২৬ মে ২০২২

জলপথে পণ্য পরিবহণ অবিশ্বাস্য রকম সস্তার হওয়ায় বিশ্বায়নের নামে অদ্ভুত সব ‘সাপ্লাই চেন' গড়ে উঠেছে৷ পরিবেশ দূষণ সত্ত্বেও জাহাজ শিল্পকে এখনো কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হয় না৷

Abgase bei Kreuzfahrtschiffen
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner

নিজের টিশার্টের দিকে তাকালে বলতে পারবেন সেটা আসলে কোথা থেকে এসেছে? লেবেলে লেখা আছে ‘মেড ইন টার্কি, মেক্সিকো বা বাংলাদেশ'৷ কিন্তু সেই তথ্য আসলে আংশিকভাবে সত্য৷ তুলা হয়তো টেক্সাসের লাববক থেকে এসেছে৷ তারপর সেই কাপড় চীনে সেলাই, ট্রিটমেন্ট, ব্লিচিং ও ডাইয়িং করা হয়েছে৷

তারপর বাংলাদেশে কাপড় কেটে টিশার্টের রূপ পাবার পর আবার অ্যামেরিকায় পাঠানো হয়েছে৷ শেষে সমুদ্রের অন্য প্রান্তে বার্লিনে সেটি মাত্র চার ইউরো ৯৯ সেন্ট দামে বিক্রি করা হয়েছে৷

শুনলে পাগলামি মনে হলেও পুরোটা ঘটছে শিপিং বা জাহাজপথে পণ্য পাঠানোর অবিশ্বাস্য কম মাসুলের কারণে৷ ফাইগ আবাসভ ‘ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড এনভায়র্নমেন্ট' নামের এক এনজিও-র নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যেটি আরও দূষণহীন পরিবহণের জন্য প্রচার চালাচ্ছে৷ ‘অপচয়'-এর একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘যেমন বেলজিয়ামে প্রায় ২৪ ঘণ্টাই বৃষ্টি হয়৷ অথচ আমরা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে বোতলে ভরা পানি কিনি৷''

যে শিল্প পরিবেশ দূষণের মূল্য দেয় না

03:55

This browser does not support the video element.

একই রকম একটি উদাহরণ তুলে ধরে লুসি গিলিয়াম বলেন, ‘‘উত্তর সাগরে মাছ ধরা হয়৷ তারপর সেই মাছ হিমায়িত করে এশিয়ায় পাঠিয়ে ফিলে করে আবার ফেরত পাঠানো হয়৷'' গিলিয়াম ‘সিস অ্যাট রিস্ক' সংঘের হয়ে কাজ করেন, যার আওতায় একাধিক এনজিও মহাসাগরের সুরক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে৷

তবে এমন উদ্ভট প্রক্রিয়ার প্রকৃত ব্যয় আড়ালে থেকে যায়৷ পণ্য পাঠানোর পূর্ণ মূল্য পরিবেশকেই মেটাতে হচ্ছে৷

আপেক্ষিকভাবে দেখলে শিপিং অত্যন্ত কার্যকর এক প্রক্রিয়া মনে হবে৷ জাহাজে করে এক টন পণ্য পরিবহণ করলে কিলোমিটার প্রতি ১৬ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়৷ বিমানযোগে পাঠালে সেই মাত্রা আরও অনেক বেশি৷ কিন্তু সার্বিকভাবে দেখলে গোটা বিষয়টি দুঃস্বপ্নের মতো৷ লুসি গিলিয়ামের মতে, বিশাল দূরত্বের কারণে কার্বন নির্গমনের মাত্রাও বেশি হয়, যা একটা সমস্যা৷ কারণ ৮০ শতাংশ জাহাজ হেভি ফুয়েল অয়েল ব্যবহার করে, যা মোটা, চটচটে, দূষণকারী জ্বালানি৷

জাহাজ শিল্প অ্যামেরিকার সব কয়লা কারখানার তুলনায় কিছুটা বেশি এবং বিমান চলাচল শিল্পের তুলনায় সামান্য কম কার্বন নির্গমন করে৷ কিন্তু পণ্যবাহী সাহাজ এথনো নজর এড়িয়ে থাকতে পারছে৷ ফাইগ আবাসভ মনে করিয়ে দিলেন যে শিপিংই একমাত্র শিল্পক্ষেত্র, যা কার্বন দূষণের মূল্য দেয় না৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটাই একমাত্র শিল্পক্ষেত্র, যেটি জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহারের জন্য কোনো কর দেয় না৷ ভ্যাট বা বিক্রয় করও দেয় না৷ সম্প্রতি বিশ্বনেতারা কমপক্ষে ১৫ শতাংশ কর্পোরেট ট্যাক্সের হারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন৷ কিন্তু একমাত্র জাহাজ পরিবহণ শিল্পকে সেটির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে৷''

কিন্তু দূষণের এত বড় মাত্রা সত্ত্বেও কেন এমনটা ঘটছে? বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ জাহাজের মাধ্যমে ঘটে৷ কিন্তু এ ক্ষেত্রে অদ্ভুত একটা হেঁয়ালি কাজ করে৷

ধরুন জাপানে তৈরি, অ্যামেরিকার মালিকানার এক ট্যাংকারে কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ নাবিকরা ফিলিপাইন্সের, ক্যাপ্টেন সাইপ্রাসের এবং জাহাজটি আন্তর্জাতিক জলসীমার উপর দিয়ে চীন থেকে ক্যানাডার দিকে চলেছে৷ তাহলে কি পানামাকে সেই সমস্যার দায় নিতে হবে? ‘ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড এনভায়র্নমেন্ট' প্রতিষ্ঠানের ফাইগ আবাসভ বলেন, ‘‘পানামা, মার্শাল দ্বিপপুঞ্জ, লাইবেরিয়া, বাহামা ও মাল্টা – এই পাঁচটি দেশ সম্পর্কে দৈনিক খবরে তেমন কিছু চোখে পড়ে না৷ এ সব দেশ রাজনীতি বা অর্থনীতির ক্ষেত্রে কোনো বড় শক্তি নয়৷ কিন্তু শিপিং জগতে ‘কিংমেকার' হিসেবে তাদের বিশাল প্রতিপত্তি রয়েছে৷

‘ফ্ল্যাগ অফ কনভিনিয়েন্স' নামের এক প্রণালীর জন্য এমনটা ঘটছে৷

ক্রিস্টিয়ান কাউরলা/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ