1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দূষণে ক্ষতি ৪২ হাজার কোটি টাকা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশে বায়ু, পানি ও পরিবেশ দূষণে বছরে ক্ষতির পরিমাণ ৪২ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২.৭ ভাগ৷ শুধুমাত্র বায়ু দূষণে ক্ষতি হয় ২০ হাজার কোটি টাকা৷ দূষণের সবচেয়ে বেশি শিকার হয় শিশুরা৷

ছবি: bdnews24.com

রবিবার ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের এক কর্মশালায় প্রকাশিত সমীক্ষার ভিত্তিতে বাংলা দৈনিক প্রথম আলো এবং ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার জানিয়েছে, ঢাকার ৫৯টি এলাকায় মাটি ও পানিতে সীসার পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি৷ ঢাকা শহরের ৬ লাখ মানুষ এখন সিসা দূষণের কবলে৷

ঢাকার পরই নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার৷ ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে বায়ু দূষণ সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে৷ ইট ভাটাগুলো বায়ু দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী৷ বায়ু দুষণের জন্য ইটভাটা ৩৪ ভাগ এবং মোটরযান ১৮ ভাগ দায়ী৷

ঢাকার বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

03:48

This browser does not support the video element.

‘বাংলাদেশ পরিবেশ সমীক্ষা-২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে বাংলাদেশের পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে৷ শিল্পকারখানাগুলো অপরিকল্পিতভাবে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানি তুলে ফেলছে৷ ফলে পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে নীচে নেমে যাচ্ছে৷ ফলে খাল ও নদীসহ অন্যান্য জলাশয়ের পানিও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে

৭১৯টি তৈরি পোশাকশিল্পের ওয়াশিং ও ডাইং কারখানার বর্জ্য দূষণের অন্যতম উৎস৷ এক টন কাপড় উৎপাদন করতে নদীতে বর্জ্য যাচ্ছে ২০০ টন৷ ইস্পাত কারখানাগুলো থেকে ১ লাখ কোটি লিটার এবং কাগজ কারখানাগুলো থেকে ৪৫ হাজার কোটি লিটার দূষিত বর্জ্য পানিতে মেশে৷

ঢাকার পাশাপাশি ছোট জেলা শহরগুলোতে জলাশয় ভরাট, দখল ও দূষণ চলছে৷ ২০১৭ সালের বর্ষা মৌসুমে ঢাকায় টিকে থাকা ১৩টি খালের মধ্যে মাত্র দুটি সচল ছিল৷

তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পরিবেশ দূষণ অব্যাহত রেখেছে: ড. আব্দুল মতিন

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) প্রধান ড. আব্দুল মতিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে৷ যার ফল স্বাস্থ্য বিপর্যয়৷ আমরা অনেক দিন ধরেই পরিবেশ নিয়ে কথা বলছি৷ কিন্তু সমস্যা হলো যারা পরিবেশ দূষণের জন্য প্রধানত দায়ী তারা অনেক ক্ষমতাধর৷ তাদের এই ক্ষমতা রাজনৈতিকও৷ ফলে তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পরিবেশ দূষণ অব্যাহত রেখেছে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘পরিবেশ রক্ষায় আইন আছে, নীতিমালা আছে৷ কিন্তু তা মানা হচ্ছেনা৷ এসব আইন ও নীতিমালা ভঙ্গ করলে শাস্তিরও বিধান আছে, কিন্তু অপরাধীরা শাস্তি পাচ্ছেনা৷ কিন্তু সরকার চাইলে পারে৷ সরকারের সদিচ্ছাই পারে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা নিতে৷ কিন্তু সরকার যদি সুশীল সমাজের মত শুধু কথা বলে, কাজ না করে তাহলে সামনে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে৷’’

ঢাকায় পানি ও বায়ু দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র লোক ও শিশুরা৷ রাজধানীর ৫৯টি এলাকাকে তীব্র মাত্রায় সিসা-আক্রান্ত বা হট স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এসব এলাকার পানি ও মাটিতে আরও পাওয়া গেছে আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, ক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫), কীটনাশক ও সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বস্তু৷

শব্দ দূষণ শিশুদের অবসাদগ্রস্ত করে তোলে: ডা. শাহরিয়ার

This browser does not support the audio element.

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে শুধু সিসা-দূষণের শিকার ছয় লাখ মানুষ৷ তাদের বেশিরভাগই শিশু৷ রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে সিসার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে মাত্রার চেয়েও বেশি৷

সোহরাওয়ার্দি হাসপতালের শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পরিবেশ দূষণের প্রধান শিকার নারী ও শিশু৷ বিশেষ করে শব্দ দূষণ শিশুদের অবসাদগ্রস্ত করে তোলে৷ তারা বধিরতায় আক্রান্ত হয়৷ তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়৷ তারা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়ে উঠতে পারে৷ আর অতিরিক্ত সিসা শিশুদের রক্তশূণ্যতা সৃষ্টি করে৷ তারা ঠিকমত খেলেও অপুষ্টির শিকার হয়৷’’

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ