দূষণ কমাতে রাজি হল রাশিয়া স্টকহোম সম্মেলনে
১৯ নভেম্বর ২০০৯
স্টকহোমে রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে প্রত্যাশামতই রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা উঠল বুধবার৷ সাম্প্রতিক অতীতে রাশিয়ার অভ্যন্তরের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে বিভিন্ন ইস্যুতেই মুখ খুলেছে ইউরোপ৷ এই সম্মেলনে রাশিয়া সেই বিতর্কিত কারণকে কেন্দ্র করে ইঙ্গিত দিতে ভোলেনি, যে, বিশ্ব বাণিজ্য চুক্তি বা ডাবলিউ টি ও-র ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে তারা বিলম্ব করতে পারে৷ সেরকম আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
তবে, অন্য একটি বিষয়, যা নিয়ে রাশিয়ার সমর্থন ইউরোপের প্রয়োজন ছিল, সেক্ষেত্রে কিন্তু বেশ অগ্রগতি দেখাল রাশিয়া৷ বিষয়টি হল, এই মুহূর্তে গোটা দুনিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আলোচিত সমস্যা জলবায়ু৷ ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ' বা বিশ্বজুড়ে জলবায়ুর পরিবর্তন এবং ক্রমবর্দ্ধমান বিশ্ব উষ্ণতা রুখতে নতুন ব্যবস্থা নিতে কোপেনহেগেন-এ আগামী মাসের গোড়ায় যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, তার দিকেই সব মহলের চোখ এই মুহূর্তে৷ সেই সম্মেলনের মুখে ই ইউ'-র সঙ্গে স্টকহোম সম্মেলনে রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন মাত্রা বিশ থেকে পঁচিশ শতাংশ কমাতে রাজি আছে মস্কো৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট হোসে মানুয়েল বারোসো রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে স্টকহোমে বলেছেন, ‘‘আর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে কোপেনহেগেন সম্মেলন শুরু হতে চলেছে৷ তার আগেই রাশিয়ার মত বড় দেশের এমন একটি ঘোষণা নিঃসন্দেহে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷''
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ডিমিত্রি মেদভেদেভ এই দূষণের মাত্রা কমানোর বিষয়ে সরাসরি কোন মন্তব্য করেন নি ঠিকই, তবে রুশ সংবাদসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স-এর একটি সূত্র জানিয়েছে, স্টকহোম সম্মেলনের আলোচনা চলাকালীন মেদভেদেভ নিজেই এই বিষয়টি উত্থাপন করেন৷ ইন্টারফ্যাক্সের খবর অনুযায়ী, মেদভেদেভ চাইছেন, রুশ শিল্পসংস্থাগুলি অন্তত চল্লিশ শতাংশ দূষণের মাত্রা কমিয়ে ফেলুক পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের মাধ্যমে৷
তবে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে আয়োজিত ই ইউ-রাশিয়া সম্মেলনে বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট দেশ সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডরিক রাইনফেল্ডট তাঁর ভাষণে রাশিয়ার পক্ষে অস্বস্তিকর সেদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷ এর জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ জানান, কোন বিষয় নিয়ে অতিনাটকীয়তা না করাই ভালো৷ তিনি আরও বলেছেন, কিছু বিষয় নিয়ে ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার যে মতপার্থক্য আছে তা মেনে নেওয়া উচিত৷
প্রতিবেদন - সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সম্পাদনা - হোসাইন আব্দুল হাই