1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেলোয়ার ধরা পড়লেও এলাকায় আতঙ্ক কাটেনি

রনজিৎ চন্দ্র কুরী নোয়াখালী
৮ অক্টোবর ২০২০

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নির্যাতনের শিকার নারীর প্রত্যাশা নির্যাতনকারীদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়৷ এদিকে, দেলোয়ারসহ বেশ কয়েকজন আসামি ধরা পড়লেও এখনো আতঙ্ক কাটেনি৷ বেগমগঞ্জ ঘুরে এসে জানাচ্ছেন রনজিৎ চন্দ্র কুরী৷

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটার স্থান ছবি: Ranajit Chandra Kuri

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের ঘটনায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও ব়্যাব৷ ফলে স্থানীয় মানুষের মধ্যে সুবিচার পাওয়ার আশা তৈরি হয়েছে৷ তবে এলাকায় আতঙ্ক এখনো কাটেনি৷ নির্যাতনের শিকার নারী বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন৷ বেগমগঞ্জ থানায় ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার উপর চালানো বর্বরোচিত নির্যাতনের বিস্তারিত জানিয়েছেন৷

‘ওদের মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন চাই’

তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় রাগ করে ১০/১২ বছর আমি তার কাছে যাইনি, সে-ও ভয়ে আমার কাছে আসতো না৷ কিন্তু এখন মেয়ের বিয়ে হয়েছে আর ছেলে ক্লাস নাইনে পড়ে৷ মেয়ে একদিন বলে যে, আম্মু, তুমি আমার বাবার সাথে এক হয়ে যাও৷ এক হয়ে গেলে আল্লাহ দিলে কোনো সমস্যা নাই৷’’

মেয়ের কথামতো নির্যাতনের শিকার নারী তার স্বামীর সঙ্গে আবারো যোগাযোগ শুরু করলে স্থানীয় কিছু বখাটে তাতে বাধ সাধে বলে জানান তিনি৷ বখাটেদের বাবা-মায়ের কাছে এর বিচারও দিয়েছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি বললাম, তারা হলো আমার ছোট ভাইয়ের মতো, তারা যে আমাকে বিরক্ত করে, তাদের ডাক দোয়াই দিয়ে দিয়েন৷ এ কথার পরে তারা যে এসব কথা মনের ভিতরে এত ইয়া করছে, এটা আর আমি স্যার বলতে পারি না৷’’

নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ওই দিনের ঘটনা হলো, আমার স্বামী আইছে আর দেরি হয় নাই, তারা কোথায় থেকে মৌমাছির মতো দরজা ভাঙ্গি ঘরে ডুকে৷ তারপর দেখছেন যা কী আর বলব...’’

তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তারা বলছে, যদি মেম্বারের কাছে যাই বা থানায় যাই, এসবগুলা তো আর চিনি না তারপরও একজনকে লই যামু, এগুলো আমার ছাড়ি দিব৷ আমি বললাম, যা করছ আল্লাহ লয়াইছে, তোরা সমাজে দিস না৷ আমার মেয়েটার বিয়ে হইছে, এগুলো ছাড়িস না৷ কয়, আমরা ডিলিট করি দিছি৷ আর আমি আর ভয়ে... আমার শরীর অসুস্থ ছিল৷’’ 

শুধু এটাই চাই ছেলেগুলোর মৃত্যু আর নয়তো যাবজ্জীবন জেল: নির্যাতিতা নারী

This browser does not support the audio element.

নির্যাতিতা আরো জানান, ‘‘দশ-বারোজন এসেছিল৷ তবে যেগুলারে দেখছি, প্রথমে মাথায় বাড়ি দিছিল, চোখ মুখ অন্ধকার, কিছু দেখি না৷ ধোঁয়া৷ আর সব বাতিগুলো চোখের উপরে৷ আমার ঘরে কারেন্টও নাই৷ তাদের কয়টারে চিনেছি৷ দেখি আমি তাদের নাম দিছি৷’’

বখাটেরা হুমকি দেয়ার পরও নির্যাতনের ঘটনা স্থানীয় মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে জানিয়েছিলেন৷ কিন্তু মেম্বার কোনো ব্যবস্থা নেননি৷ নির্যাতিত নারী বলেন, ‘‘মেম্বার তদন্তও করে নাই, আর আমিও ভয়ে ভয়ে বাইরে বাইরে চলে গেছি৷ তারা আমাকে সব সময় ভয় দেখাতো, সব সময় হুমকি দিতো ১০/১২ টা মিলে৷’’

নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা তো বুঝছেন৷ ওদের সাথে চলা-ফেরা করার জন্য এবং তাদের জন্য ট্যাবলেট-টুবলেট বিক্রি করতে বলছে৷ আমি বলছি, আমার জাত-গুষ্টি এসবগুলা করে না৷ আল্লাহ যেভাবে খাওয়ায় আমার আল্লাহর প্রতি অনেক ভালোবাসা আছে, বিশ্বাস আছে৷ আল্লাহকে বিশ্বাস করি৷ আমরা মুসলমান৷ ওই ধরনের হারাম খেতে রাজি না৷’’

আরো নির্যাতনের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালানো নারী জানালেন পুলিশের তৎপরতায় এখন তিনি খুশি৷ সুষ্ঠু বিচারের ব্যাপারেও আশাবাদী৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এখন আল্লাহর রহমতে আমার জন্য সরকার লড়তেছে৷ আমার দুইটা টাকা খরচ নাই৷ তারা দেখতেছে, আমি আল্লাহর কাছে শোকরিয়া জানাচ্ছি৷ আর শুধু এটাই চাই ছেলেগুলোর মৃত্যু আর নয়তো যাবজ্জীবন জেল৷ আপনারা এ দুইটা জিনিস যদি করেন আর নারী হচ্ছে মায়ের জাত ওদের আপনারা সম্মান দিবেন৷ আপনাদের কাছে এটাই দাবি৷’’

পুলিশের তৎপরতায় এখন খুশি নির্যাতিতা নারীছবি: Ranajit Chandra Kuri

প্রসঙ্গত, সেই ঘটনার ৩২ দিন পর গত রবিবার দুপুরে ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের৷ এরপর অপরাধীদের ধরতে শুরু হয় সাড়াশি অভিযান৷ সেই ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতারকৃতরা হলো দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, মো. রহিম, মো. রহমত উল্যাহ, বাদল, সাজু,সোহাগ, নূর হোসেন রাসেল,কালাম, মাঈনুদ্দীন শাহেদ ও ৯নং ওয়ার্ড এর সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন৷

ঘটনার যে এত বিভৎস তা কেউ অনুমান করতে পারেনি

বেগমগঞ্জের একলাশপুর গিয়ে জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলায় মাদক ও হত্যা সহ বিভিন্ন মামলার আসামী ও মাদকসেবী দেলোয়ার হোসেনের নাম শুনলেও এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়৷ নির্যাতিতা নারীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন৷ বসত ঘরের দরজা খোলা৷ সম্মুখের রুমের মাাটির উপর একটি কার্টনের বিছানা পড়ে রয়েছে৷ তার উপর একটি কম্বল ও ২ টি বালিশ এবং আশপাশে ওই নারীর কাপড়-চোপড় ছড়ানো ছিটানো৷

ওই নারীর জ্যাঠা বলেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না৷ রাত ১০ টার পর বাড়িতে এলে তার মেয়ে রাজিয়া সুলতানা জানায়, কয়েকজন সন্ত্রাসী তার ভাতিজি জামাইকে টানাহ্যাঁচড়া করে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায় এবং ঘর থেকে চিৎকার শুনতে পায়৷ তারা তখন ভয়ে ঘর থেকে বের হয়নি৷

তিনি আরো বলেন, এ রকম নির্যাতন হয়েছে তা তিনি বুঝতে পারেননি৷ ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ভিডিওটি দেখে তারা বিষয়টি জানতে পারেন৷ তার আগে বাড়ির কেউই ঘটনা সম্পর্কে জানতেন না বলেও দাবি করেন তিনি৷

নির্যাতিত নারীর চাচাতো ভাবী বেবি আক্তার (৪২) ও বিবি রাবেয়া (৪০) বলেন, ঘটনার দিন তারা একটি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে বেগমগঞ্জ থানায় ছিলেন৷ পরে এসে শুনেছেন৷ তবে এমন ঘটনা যে এমন বর্বরোচিত তা তারা রবিবারের আগে বুঝতে পারেননি৷

প্রতিবেশী মিনু (৫৫) ও ফজর বানুও (৬০) বললেন, এমন নির্যাতন হয়েছে তা তারা কল্পনাও করেন নি৷ তবে তারা প্রত্যেকেই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন৷

নির্যাতিতা নারীর বাড়িছবি: Ranajit Chandra Kuri

স্থানীয় মেম্বার জেনেও যে কারণে ব্যবস্থা নেননি

স্থানীয়ভাবে কথা বলে বোঝা গেল ঘটনার ভয়াবহতা অনেকেই অনুমান করতে পারেননি৷ পূর্ব একলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা রহমত উল্যাহও বললেন, ‘‘ঘটনাটি যে এত বর্বরোচিত ছিল, তা কল্পনাও করিনি৷ শুনেছি, এ ঘটনা ঘটার পর নির্যাতিতা নারী স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে জানানোর পর তিনি ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে এলাকা ছেড়ে যেতে বলেন এবং কিছু করতে পারবেন না বলে জানান৷ মেম্বারের নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার জন্য মেম্বার দেলোয়ার বাহিনীর সকল কর্মকাণ্ড সাত খুন মাপের মতো দেখেন৷’’

তিনি আরো বলেন, ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে ওই নারীর কাছে মোবাইলে টাকা চাওয়ার কথা তিনি শুনেছেন৷ টাকা দিতে না পারলে ফেসবুকে ভিডিও ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয় বলে জানান৷ টাকা না পেয়ে তারা ঘটনার ৩২ দিন পর ফেসবুকে ভিডিও প্রচার করে দেয়৷

রহমত উল্যাহ বলেন, ‘‘দেলোয়ারের সাথে কখনো কথা বলি না৷ আামি চাই তার বিচার হোক৷’’

দেলোয়ারের বাড়ি পূর্ব একলাশপুর গ্রামে দেলোয়ারের মা আকলিমা এবং তার ২ ভাই আনোয়ার এবং আজাদের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়৷  তাদের  কাছ থেকে জানা যায়, দেলোয়ারের বাবা ছায়েদল হক মারা গেছেন প্রায় ২০ বছর আগে৷ স্থানীয় এলাকাবাসী দেলোয়ার সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে চাচ্ছেন না৷

খোঁজ নিয়ে জানা যায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেলোয়ার বেপরোয়া হয়ে হয়ে ওঠে৷ তবে দেলোয়াড়ের বাড়ি জীর্ণশীর্ণ, সেখানে কোনো প্রাচুর্যের ছাপ নেই৷

বিএনপির দেলোয়ার সাংসদকে ফুল দিয়ে আওয়ামীলীগে

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক এলাকাবাসী জানান, এক সময় বিএনপির রাজনীতির সংগে সম্পৃক্ত ছিলেন দেলোয়ার৷ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় আওয়ামী রাজনীতির সমর্থক হয়ে উঠেন৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি আরো দাবি করেন, দলে কোনো পদ-পদবী না থাকলেও বেগমগঞ্জের আরেক দুধর্ষ ক্যাডার সুমন বাহিনীর সাথে মিশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে, এক সময় মাদকসেবনও শুরু করে দেলোয়ার৷

স্থানীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন একলাশপুর গ্রামে এলে তার হাতে ফুল দিয়ে প্রথম এলাকাবাসীর নজরে আসেন দেলোয়ার৷ এরপর থেকে শুরু হয় তার চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যত্রম, মাদক ব্যবসা ও সেবন৷

এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও এলাকায় নিজেকে ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে তুলে ধরতে থাকেন দেলোয়ার৷ একলাশপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের ক্যাডার হিসেবে দোর্দণ্ড প্রতাপে নিজের একটি বাহিনী গড়ে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করতে শুরু করেন৷ ২০১৮ সালে পুলিশ তাকে অস্ত্রসহ আটক করলেও পরবর্তিতে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান৷

বেগমগঞ্জের একলাশপুরে ঐ নারীর বাড়ি যাওয়ার পথছবি: Ranajit Chandra Kuri

সেই দায় এড়ানোর রাজনীতি এবং সর্বোচ্চা শাস্তি দাবি

স্থানীয় সংসদ সদস্য মামনুর রশিদ কিরণের কাছে তাকে ফুল দিয়ে দেলোয়ারের আওয়ামীঘনিষ্ঠ হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচন শেষে আমাকে অনেকেই ফুল দিয়েছে৷ তবে আমি কোনো সন্ত্রাসীকে লালন করি না৷ দেলোয়ার আমাদের দলে কোনো পদে নেই৷ আমি সব সময় সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলি৷ আমি চাই তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক৷’’

বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নোয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. এবিএম জাফর উল্যাও দাবি করেন, ‘‘দেলোয়ারের সাথে আমাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই৷ আমার এলাকার হলেও আমি তাকে চিনি না এবং কখনো আমার সাথে তার কথা হয়নি৷আমি চাই এ বর্বরোচিত ঘটনার সাথে যে-ই জড়িত, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক৷’’

একলাশপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মানু বলেন, ‘‘দেলোয়ার দলের কেউ নয়৷ এরা একটা গ্যাং৷ দলের পরিচয় দিয়ে সন্ত্রাস করে, ইয়াবা সেবন করে৷ আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি৷

ভয়ে বাদ দিয়েছিলেন দেলোয়ারের নাম

ঘটনার তদন্ত করতে একটি দল নিয়ে বেগমগঞ্জে গিয়েছিলেন মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর৷  ৬ অক্টোবর নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন দেলোয়ার প্রায়ই তাকে কুপ্রস্তাব দিতেন৷ কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় হুমকি-ধমকিও দিতেন৷ বছর খানেক আগে দেলোয়ার ওই নারীর ঘরে ঢুকে প্রথমবার তাকে ধর্ষণ করেন৷ গত রমজানের কিছুদিন আগে দেলোয়ার তার সহযোগী কালামের মাধ্যমে ওই নারীকে একটি নৌকায় ডেকে পাঠান৷ সেখানে দেলোয়ার ও কালাম তাকে ধর্ষণ করতে চায়৷ এসময় কালামকে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেন দেলোয়ার৷ এরপর নৌকায় ২য় বার ধর্ষণ করা হয় ওই নারীকে৷

নির্যাতনের ঘটনার ২ টি মামলায় দেলোয়ারের নাম না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতার কারণে ভুক্তভোগী নারী দেলোয়ারের নামে মামলা করেননি বলে তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন৷ এমনকি আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দিতেও নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়ের কারণে দেলোয়ারের নাম বলেননি৷ ধর্ষণের ভিডিওগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকিও দিয়েছিল দেলোয়ার৷ সেই ভয়ও ছিল নির্যাতিতার মনে৷

তবে ৬ অক্টোবর রাতে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও কালামকে আসামী করে একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করা হয়৷ বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে থাকা মামলার বাদীর সাথে কথা বলেছেন৷ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি বলেছেন, মামলার তদন্তে যার যার সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের প্রত্যেককে আসামীর তালিকাভুক্ত করা হবে৷ অপরাধীদের কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না৷

আটক দুই আসামিছবি: bdnews24

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নজরে এলে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেই৷

কেউ জানায়নি, তাই ওসি জানতে পারেননি

এমন একটা ঘটনা কেন ৩২ দিন পর জানা গেল না- এ প্রশ্নের জবাবে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ চৌধুরী বলেন, ভুক্তভোগী বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি জানাননি৷ এ জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ ঘটনা জানার পর তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে৷

৬ অক্টোবরের ছবিঘরটি দেখুন..

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ