বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বিদেশিদের মুখে আবার বেশ জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে৷ অতীতেও এমন শোনা গিয়েছিল৷ কারণ সময়ের সাথে দল হয়ত বদলায়, রাজনীতির চরিত্র বদলায় না৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় যায় তার মধ্যে এরকম একটা মানসিকতা তৈরি হয় যে যেকোনো কিছুর বিনিময়ে সেই ক্ষমতা ধরে রাখতে হবে৷ এবং এই লক্ষ্য পূরণের আশায় তারা ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচার বিভাগ, পুলিশ ও প্রশাসন দলীয়করণের চেষ্টা করেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে৷
৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে স্বাধীন হলেও যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখার এই মানসিকতায় আমাদের খুব একটা পরিবর্তন এখনো আসেনি৷
রাজনীতিবিদদের এই মানসিকতায় ছেদ ঘটাতে দুটো উপায় অতীতে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে৷ এক, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ যে স্বল্পমেয়াদি সরকারের কাজ ছিল বিচার বিভাগ, পুলিশ ও প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্তভাবে কাজ করতে দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা৷ রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে এই ব্যবস্থা তৈরি হয়েছিল৷ কার্যকারিতাও প্রমাণিত হয়েছিল৷
কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে বড় দুই দলই নানা বাহানায় সেই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তও করতে চেয়েছে, আবার সেই প্রক্রিয়ার কারণেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে অংশ নিয়ে কখনো ক্ষমতায় গেছে, কখনো ক্ষমতা হারিয়েছে৷ কিন্তু একটা বিষয় সেক্ষেত্রে নিশ্চিত হয়েছিল৷ তা হচ্ছে জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারতেন৷ শেষমেষ সেই ব্যবস্থাও বাতিলই হয়ে গেলো নানা অযুহাতে৷
দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটা বিদেশি শক্তি, এটা অবশ্য অতীতে তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে৷ যখন অন্তত নির্বাচনকেন্দ্রিক গণতন্ত্রটুকুর অবস্থাও মোটামুটি জাদুঘরে চলে যাওয়ার দশা হয় তখন বিদেশিদের দৌঁড়ঝাপে আবার সেটা অনেকটা বাস্তবে ফিরে আসতে দেখা গেছে৷ তার প্রতিফলন আমরা দেখেছি ২০০৬ সালে৷ বিএনপি জোট যখন ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া এবং নিজেদের মতো গোছানো এক নির্বাচন করতে মাঠ তৈরি করেছিল, মূলত বিদেশিদের বাধায় তা সফল হয়নি৷ বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তখন রাজপথ গরম রাখার পাশাপাশি বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ধর্না দিতেও কোনো রকম কমতি রাখেনি৷
একই অবস্থা বর্তমানে দেখা যাচ্ছে৷ এবারও প্রায় জাদুঘরে চলে যাওয়া গণতন্ত্র ফেরাতে বিদেশিদের, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, আগ্রহ ব্যাপক আকারে বেড়েছে৷ দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় না থাকা বিএনপিকে তাতে আপাতদৃষ্টিতে সুবিধাভোগী মনে হচ্ছে৷ বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে তাদের দেনদরবারের কথাও শোনা যাচ্ছে৷ ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাও কখনো ভারত, কখনো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন নানাভাবে, উদ্দেশ্য যেকোনো উপায়ে ১৫ বছর ধরে রাখা ক্ষমতার মেয়াদ আরো বাড়ানো৷
যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় টিকে থাকার এই বাসনাকে আমার কাছে নোংরা ব্যাপার মনে হয়৷ আর এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় প্রতারণার শিকার হন সাধারণ জনগণ৷ ২০১৩ সালে জনগণ ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জয়ী করার সুযোগ পাননি৷ আর ২০১৮ সালেতো ভোটের দিনের আগের রাতেই নির্বাচন হয়ে গেছে বলে বিশ্বাস গোটা দেশের৷
বাংলাদেশে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের যত মন্তব্য
নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতিকদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়৷ ২০০০ সালের পর থেকে এমন কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা থাকছে ছবিঘরে৷
২০০০ সালের পর থেকে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলোর প্রায় প্রত্যেকটির আগে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূতদের কথা বলতে দেখা গেছে৷ বিদেশি কূটনীতিকদের এমন আচরণকে সবসময় ক্ষমতাসীন দল ‘শিষ্টাচার লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করে। আর ক্ষমতার বাইরে থাকলে তা ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার’ পদক্ষেপ৷
ছবি: AP
‘স্টুপিড রাষ্ট্রদূত’
চার দলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষের আগে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের তৎপরতা দেখা যায়৷ তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, ‘‘কিছু কিছু দালাল রাষ্ট্রদূত মহাজোটকে (আওয়ামী লীগ ও তার জোট) সংবিধান ধ্বংসের উসকানি দিচ্ছেন৷ তাদের কর্থাবার্তা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরুপ৷’’ বাংলাদেশে মার্কিন ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ‘স্টুপিড’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
২০ বছর পর আওয়ামী লীগের মুখেও একই সুর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে ভিসা নীতি। কথা বলছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকেরাও। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বা বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন বিষয় বা অনুষ্ঠান থেকে কূটনীতিবিদেরা বিরত থাকবেন বলে আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর৷
ছবি: DW
২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট
২০০১ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে আগস্টে ঢাকায় আসেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত‘ করতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় বসেন তিনি৷ ঢাকা ত্যাগের আগে সংবাদ সম্মেলনে কার্টার জানান, ১) সংসদ বর্জন নয় ২) হরতাল নয় ৩) সন্ত্রাস নয় ৪) ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় পর্যবেক্ষক এবং ৫) কমপক্ষে ৬০জন নারী এমপি, এই পাঁচ প্রশ্নে একমত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি৷
ছবি: John Amis/REUTERS
‘বাংলাদেশ ট্রাবলসাম হয়ে উঠেছে’
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, জঙ্গিবাদের উথ্থানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনায় আসে বাংলাদেশ৷ এমন প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পরররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসের এক বক্তব্য বেশ আলোড়ন তোলে৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বেশ ট্রাবলসাম বা সমস্যাসংকুল হয়ে উঠেছে এবং এ ব্যাপারে আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত) কিছু করতে হবে।’’
ছবি: DW/O. Sawizky
বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের চিঠি
সম্প্রতি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে লেখা ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে৷ এমন ঘটনা নতুন নয়৷ ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ১৬ বা ১৮ জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান-সিনেটর পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বুশের কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংস জঙ্গিবাদের ব্যাপারটি উথ্থাপন করার অনুরোধ জানান৷
ছবি: Anna Moneymaker/Getty Images
এক-এগারো সরকার ও কূটনীতিকেরা
চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হবার আগেই বাংলাদেশে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইত্যাদি বিষয়ে সম্পূর্ণ দুই মেরুতে অবস্থান নেয় সেসময় ক্ষমতায় থাকা বিএনপি ও প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে থেকেই তৎপরতা শুরু করে কূটনীতিকেরা।
ছবি: DW
সরব পশ্চিমারা
চারদলীয় জোটের সময়কালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে বেশ তৎপরতা দেখা যায় পশ্চিমা কূটনীতিকদের৷ ২০০৬ সালের ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে ফোন করেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি নিকোলাস বার্নসে৷ সব দল যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেন৷
ছবি: Jakub Porzycki/NurPhot/picture alliance
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের 'কফি গ্রুপ’
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকাস্থ পশ্চিমা কূটনীতিকেরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করতেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘কফি গ্রুপ’। এর সাথে সম্পৃক্ত ছিল অ্যামেরিকা, ব্রিটেন, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও জাতিসংঘের প্রতিনিধি। এই গ্রুপে জাপানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উইকিলিকসে প্রকাশিত তথ্য এমন ইঙ্গিত দেয়।
ছবি: DW
চাকরির নিশ্চয়তা চান সেনাপ্রধান
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ সেসময়ের ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির কাছে চাকরির নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত প্রণব মুখার্জি ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ার্স’ এ জানান, মইন উ আহমেদের আশঙ্কা ছিল, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হবে। তার চাকরির দায়িত্ব প্রণব মুখার্জি ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।
ছবি: DW / Samir Kumar Dey
সুজাতা সিংয়ের বিতর্কিত সফর
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এমন অবস্থানে অনড়৷ সেবছরের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা নির্বাচন৷ ঠিক এক মাস আগে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। অনকের দাবি, সুজাতা সিং জাতীয় পার্টির প্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে নির্বাচনে আসতে অনুরোধ জানান৷ এর ফলে বিএনপিকে ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন আয়োজন সহজ হয়৷
ছবি: DW
পুলিশ রাতে ব্যালট ভর্তি করেছে: জাপানের রাষ্ট্রদূত
দ্বাদশ নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই একাদশ নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গত নির্বাচনে (২০১৮ নির্বাচনে) পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার যে অভিযোগ উঠেছে, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে কখনোই এমনটা শুনিনি। আশা করি আগামী নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। জাপান আশা করে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে।’’
ছবি: U.S. Embassy Dhaka
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি
সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ ৷ ২৪ মে ঘোষিত ওই ভিসানীতিতে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে৷ এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি চ্যানেল 24-কে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইউরোপের বাজারে ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধার দুয়ার খুলতে পারে।
সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি সমুন্নত রাখার প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রতি চীনের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। অবশ্য এক সপ্তাগ আগে গত শুত্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছে ঢাকার চীনা দূতাবাস।
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/L. Zheng
14 ছবি1 | 14
আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, জনগণকে অধিকারবঞ্চিত রেখে গণতন্ত্রের নামে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় যাওয়া অনেক রাজনীতিবিদ আবার বুক ফুলিয়ে বলেন, জনগণই নাকি তাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় রেখেছে!
সাধারণ জনগণও বুঝে গেছে যেকোনোভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার রাজনীতির প্যাঁচে তাদের ভোট দেয়ার অধিকার আসলে আবারও হারিয়ে গেছে৷ এখন ঐ বিদেশি শক্তিগুলোই যদি চেষ্টাচরিত্র করে কিছু করতে পারে তাহলে হয়ত ভোটকেন্দ্রে ফেরার সুযোগ হবে তাদের৷ তা না হওয়া অবধি রাজনীতির মাঠের দর্শক হিসেবে থাকাই ভালো৷
এবার আসি তোষামোদি প্রসঙ্গে৷ যাদের নিরপেক্ষ থেকে কাজ করার কথা বা যাদের জাতির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করার কথা তাদের অনেকেই ক্ষমতাসীনদের প্রতি অন্ধ তোষামোদিতে মত্ত হয়ে যাচ্ছেন দিনে দিনে৷ কে, কত বড় দলকানা, ক্ষমতাসীনদের অনুগত সেটা প্রমাণে রীতিমত লড়াই চলছে তাদের মধ্যে৷ ছোটবড় অনেক সংবাদকর্মীও তোষামোদিকে একমাত্র অবলম্বন মনে করছেন৷
দিনে দিনে সংখ্যায় বড় হওয়া এই তোষামোদকারীরা নিজেরাই শুধু চাটুকারি মনোভাব দেখিয়ে ক্ষান্ত হচ্ছেন না৷ বরং এখনও দেশি দু'চারজন যারা গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছেন তাদেরকে দমাতেও চেষ্টায় কোনো কমতি রাখছেন না তারা৷
কথা হচ্ছে, নিজে না হয় ক্ষমতাসীনদের আনুকুল্য পেতে স্বেচ্ছায় মেরুদণ্ডটা নমনীয় করে নিয়েছেন, কিন্তু যিনি এখনো দৃঢ় রেখেছেন তাকে সহায়তা করতে না পারেন, তার পেছনে লাগা থেকেতো দূরে থাকতে পারেন৷ এতটুকু পারতে সমস্যা কোথায়?