দেশের স্বার্থরক্ষা করব: ভারত, মৃত অর্থনীতি: ট্রাম্প
৩১ জুলাই ২০২৫
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরেই বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। তারপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, অ্যামেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে ভারত। গত কয়েক মাস ধরে এই আলোচনা চলছে। ভারত নিজের স্বার্থরক্ষা করবে।
কিন্তু বুধবার শুল্ক-ধাক্কার একদিন পর ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোস্যালে পোস্ট করে বলেছেন, ''ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করবে, আমি তার পরোয়া করি না। ওরা ওদের মৃত অর্থনীতি নিয়ে নিচে নামুক। আমরা ভারতের সঙ্গে সামান্য বাণিজ্য করি। ওদের শুল্ক খুবই বেশি। বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্কের মধ্যে একটা। রাশিয়া ও অ্যামেরিকা কার্যত কোনো বাণিজ্যই করে না। সেভাবেই বিষয়টা থাক।''
ভারতের বিবৃতি
ভারতের বাণিজ্বিয মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ''একটা ন্যায্য়, সমতাপূর্ণ এবং দুই দেশের কাছেই লাভজনক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির জন্য গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলছে। আমরা সেই লক্ষ্যের প্রতি দায়বদ্ধ।''
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ''কেন্দ্রীয় সরকার দেশের কৃষক, শিল্পপতি, মাঝারি ও ছোট শিল্পের উন্নয়ন ও সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। সরকারের জাতীয় স্বার্থরক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে আমরা সেটাই করেছি।''
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
ভারতের উপর ডনাল্ড ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক ও জরিমানার ঘোষণার পর কংগ্রেস বলেছে, দেশকে এখন নরেন্দ্র মোদীর বন্ধুত্বের মূল্য চোকাতে হচ্ছে। মোদী ট্রাম্পের জন্য প্রচার করেছিলেন। তাকে উৎসাহ সহকারে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। সেই ছবি দিয়েছিলেন। তারপর ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্কের বোঝা চাপালেন। ভারতের পররাষ্ট্র নীতি পুরোপুরি ব্যর্থ।
কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেছেন, ''মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না যে, আমরা কার কাছ থেকে তেল কিনব। ট্রাম্পের ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী একটা ধাক্কা খেলেন, ভারতের অর্থনীতি একটা ধাক্কা খেল। আমরা সরকারকে এই নিয়ে প্রশ্ন করে যাব।''
জয়রাম বলেছেন, ''হাউডি মোদী, নমস্তে ট্রাম্প করে কোনো লাভ হলো না। ট্রাম্প ৩০ বার জানিয়েছেন, তিনিই ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত থামিয়েছেন। ট্রাম্পের শুল্ক ধাক্কায় ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং, ওষুধ, বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো বিপাকে পড়বে। আমরা সাধারণত চীন ও পাকিস্তানের দিক থেকে আসা বিপদের কথা ভাবি, এখন তো তৃতীয় সমস্যা হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র সামনে এলো।''
আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেছেন, ''ট্রাম্প এর আগে অ্যাপলকে ভারতে আইফোন তৈরি করতে মানা করেছেন, তিনি বলেছেন, পাকিস্তানকে ভালোবাসেন, ভারত যেন সেটা নিয়ে ভাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত, ট্রাম্পের এই শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্তের কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো ও বিরোধিতা করা।''
বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিজেপি সাংসদ প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেছেন, ''আমি নিশ্চিত, সরকার এই বিষয়ে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবে।'' বিজেপি সাংসদ হেমাঙ্গ জোশী বলেছেন, ''মার্কিন প্রেসিডেন্ট একতরফা বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। ভারতের সরকারি বক্তব্য আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।'' বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারেঙ্গি বলেছেন, ''আমি নিশ্চিত, অ্যামেরিকার এই কৌশল সফল হতে দেবেন না প্রধানমন্ত্রী মোদী।''
জিএইচ/এসসি(বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি, এনডিটিভি)