1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দ্বিতীয় ডোজ টিকার অনিশ্চয়তায় ১৪ লাখ মানুষ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ মে ২০২১

বাংলাদেশে করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেয়া পুরোপুরি বন্ধ৷ দ্বিতীয় ডোজ কিছু কিছু কেন্দ্রে দেয়া হচ্ছে৷ তবে অধিকাংশ কেন্দ্রই বন্ধ আছে৷ প্রথম ডোজপ্রাপ্তরা কবে নাগাদ দ্বিতীয় ডোজ পাবেন তার কোনো নির্দেশনাও নেই৷

Bangladesch AstraZeneca Impfung
ছবি: Mortuza Rashed/DW

মোহাম্মদপুরের ওয়ালিউল বিশ্বাস করোনার টিকা নিয়েছেন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি৷ ২৭ মার্চ তার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার কথা ছিলো৷ কিন্তু নির্ধারিত তারিখে তিনি দ্বিতীয় ডোজ পাননি৷ তাকে বলা হয়েছে এক মাস নয়, দুই মাস পরেও দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেয়া যাবে৷ তারপর বলা হয়েছে তিন মাস৷ আগামী ২৫ মে সেই সময়ও শেষ হবে৷ কিন্তু টিকা পাবেন কীনা জানেন না তিনি৷ ওয়ালিউল বলেন, ‘‘আমি যদি তিন মাসেও দ্বিতীয় ডোজের টিকা না পাই তাহলে কী হবে? আমার প্রথম ডোজে  কোনো কাজ হবে কীনা বা আবার কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে কীনা কিছুই বুঝতে পারছিনা৷ কোনো পরামর্শ দিচ্ছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়৷'' তার মতো এমন অনিশ্চয়তায় এখন প্রথম ডোজ টিকা নেয়া ১৪ লাখ ৪০ হাজার মানুষ৷ তাদের অনেকেরই টিকা নেয়ার নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাচ্ছে৷

গত ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে করোনার অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা দেয়া শুরু হয়৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে এখন এই টিকা অবশিষ্ট আছে মাত্র নয় লাখ৷ দ্বিতীয় ডোজের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে অক্সফোর্ডের টিকা আনার চেষ্টা করছে সরকার৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র টিকা দিতে রাজি হয়েছে৷ তবে সেই টিকা কবে আসবে তা এখনো নিশ্চিত নয়৷

বাংলাদেশের হাতে এখন চীনের পাঁচ লাখ উপহারের টিকা রয়েছে৷ তারা আরো ২০ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দিবে বলে জানা গেছে৷ এর বাইরে চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা কেনার চেষ্টা চলছে৷ তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতার কারনে চীনের টিকা পেতে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ কিন্তু সেই টিকা আসলেও তা অক্সফোর্ডের টিকার দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নাই৷ তার জন্য অক্সফোর্ডের টিকাই লাগবে৷

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশ বেক্সিমকোর মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করে৷  চুক্তি অনুাযয়ী প্রথম চালানের ৫০ লাখ টিকা আসে গত জানুয়ারি মাসে৷ ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ২০ লাখ৷ এরপর সেরাম আর কোনো টিকা পাঠায়নি৷ কথা ছিলো, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাঠাবে তারা৷ বাংলাদেশে এই চুক্তির বাইরে ভারত সরকারের কাছ থেকে শুরুতেই ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পেয়েছে৷ এছাড়া নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের সময় উপহার হিসেবে পেয়েছে আরো ১২ লাখ৷ ভারতের সেনাপ্রধান বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে উপহার দিয়েছেন এক লাখ৷ সবমিলে বাংলাদেশ হাতে টিকা পেয়েছে এক কোটি তিন লাখ৷ দুই ডোজ করে এই টিকা ৫১ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে দেওয়া সম্ভব ছিলো৷

‘‘সর্বোচ্চ চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে হবে’’: কামরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া শুরু হয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি৷ এরপর দ্বিতীয় ডোজ টিকাদেয়া শুর হয় ৮ এপ্রিল থেকে৷ কিন্তু এখন তা বন্ধ আছে৷

বিএসএমইউ'র সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম জানান, সর্বোচ্চ চার মাসের (১৬ সপ্তাহ) মধ্যে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে হবে৷ এরপর নিলে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে না৷ এরপর আবার নতুন করে দুই ডোজই নিতে হবে৷ তবে দ্বিতীয় ডোজ না নিতে পারলে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে না৷

‘‘‘করোনার টিকা নিয়ে শুরু থেকেই পরিকল্পনার অভাব আছে’’: লেনিন চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

তিনি আশা করেন, ‘‘এখনো সময় আছে হয়তো যুক্তরাষ্ট্র থেকে অক্সফোর্ডের টিকা এরমধ্যে পাওয়া যাবে৷ আর অক্সফোর্ড আর ফাইজারের টিকার মিক্সিং করার গবেষণা প্রায় সফল৷ এভাবে আরো হলে সংকট কেটে যাবে৷''

এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্রসহ দায়িত্বশীল কয়েকজনকে চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য জানা যায়নি৷ তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, ‘‘করোনার টিকা নিয়ে শুরু থেকেই পরিকল্পনার অভাব আছে৷ এখনো মানুষকে দ্বিতীয় ডোজের ব্যাপারে পরিস্কার তথ্য দেয়া হচ্ছে না৷ আর এখন মিক্সড ডোজের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ