দ্বিতীয় দফার করোনা সংক্রমণে বিধ্বস্ত দক্ষিণ কোরিয়া
৬ জুলাই ২০২০
দ্বিতীয় দফার করোনা সংক্রমণ ক্রমেই চিন্তার বিষয় হয়ে উঠছে বলে মনে করেন রাজধানী সৌলের মেয়র পার্ক উওন-সুন৷
বিজ্ঞাপন
করোনা ভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণের হার না কমলে আবার কড়া লকডাউনের দিকে যেতে পারে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সৌল৷ আগামী তিনদিনের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার গড়ে ৩০-এর কম না থাকলে লকডাউন শুরু হবে বলে জানান মেয়র পার্ক উওন-সুন৷
সোমবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত একটি বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘যদি সৌল আবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তার মানে হচ্ছে গোটা কোরিয়ার আক্রান্ত হওয়া৷''
দ্বিতীয় দফা করোনার ঢেউ শুরুর আলামত?
বিশ্বব্যাপী একদিনে করোনা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি ছিলো ২১ জুন৷ কয়েকটি দেশে নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে৷ ছবিঘরে থাকছে বিস্তারিত৷ এতে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Eissa
করোনা শনাক্তের রেকর্ড
২১ জুন বিশ্বব্যাপী ১ লাখ ৮৩ হাজার ২০ জনের দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ মহামারি শুরুর পর ২৪ ঘণ্টায় এটাই সর্বোচ্চ শনাক্তের ঘটনা৷ তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত বেশি পরীক্ষা করা হচ্ছে, তত বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে৷ বিশ্বে এ পর্যন্ত প্রায় ৯০ লাখ ৫২ হাজার রোগীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে৷ মারা গেছেন ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৩৩১ জন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Inderlied
জার্মানি
জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে৷ মারা গেছেন তিনজন৷ মাত্র দুই দিনের মধ্যে এমন বৃদ্ধির জন্য নতুন করে দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷ জার্মানিতে এখনো পর্যন্ত মোট ১৮৯,৮২২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে৷ মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ৮৮২৷ করোনা মহামারি নিয়ে নতুন করে পদক্ষেপ নিতে সংসদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
চীন
রবিবার ১৮ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন৷ এদের মধ্যে ৯ জন বেইজিংয়ের বাসিন্দা৷ বেইজিংয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে, যাতে নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে৷ দেশটিতে সংক্রমণের সংখ্যা ৮৪ হাজার ৫৭২৷ মারা গেছেন চার হাজার ৪৩৯ জন৷
ছবি: Getty Images/AFP/H. Retamal
অস্ট্রেলিয়া
মেলবোর্নে নতুন ১৬০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে৷ গত কয়েক সপ্তাহে সেখানে কোনো রোগীর দেহে সংক্রমণের ঘটনা ছিলো না৷ কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব পরিবার অনেকদিন পর একসাথে হয়েছে তাদের মধ্যেই সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে৷ দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৭ হাজার ৪৭৪ জন, মারা গেছেন ১০২ জন৷
ছবি: Getty Images/Q. Rooney
মেক্সিকো
২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে আক্রান্ত৷ এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু৷ মোট সংক্রমিত ১ লঅখ ৮১ হাজার৷ মৃত্যু ২১ হাজার ৮২৫ জনের৷ তবে কর্তৃপক্ষের ধারণা বাস্তব সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি৷
ছবি: Getty Images/H. Vivas
ব্রাজিল
সংক্রমিত প্রায় ১১ লাখ মানুষ৷ মারা গেছেন ৫০ হাজার ৫৯১ জন৷ গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/L. Correa
রাশিয়া
সংক্রমিত ৫ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ৷ মারা গেছেন ৮ হাজার ১০১ জন৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Maximov
ভারত
সংক্রমিত ৪ লাখ ২৫ হাজার৷ মৃত ১৩ হাজার ৬৯৯ জন৷
ছবি: Reuters/A. Dave
যুক্তরাজ্য
সংক্রমিত ৩ লাখ ৬ হাজার৷ মৃত ৪২ হাজার ৭১৭ জন৷
ছবি: Getty Images/D. Kitwood
বাংলাদেশ
মোট সংক্রমিত ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জন৷ মৃত ১,৫০২ জন৷ (তথ্য: ২২ জুন পর্যন্ত)
ছবি: picture-alliance/abaca/S. Kanti Das
10 ছবি1 | 10
নতুন সংক্রমণের কারণ হিসাবে মেয়র বলেন, জনগণের উদাসীনতার কথা৷ গত বছর ঠিক যে সময়ে সংক্রমণ চরমে পৌঁছেছিল কোরিয়ায়, সেই সময়ের মতোই রাস্তাঘাটে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভিড়৷ সেভাবে মানাও হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব৷ বর্তমান সংক্রমণের হারকে একটি গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে রেখে তিনি বলেন যে, এই হারে চললে এক মাসের মধ্যে দৈনিক ৮০০টি নতুন সংক্রমণ দেখতে হবে কোরিয়াতে৷
এদিকে আরেকটি বিবৃতিতে কোরিয়ার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক জিওং ইউন-কিওং বলেন, আসলেই দ্বিতীয় দফার সংক্রমণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া৷ বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর দায়েগুর আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে৷
মে মাসের শেষ থেকেই নতুন করে দৈনিক ৪০ থেকে ৫০টি করে সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছিল৷ এই সংক্রমণের বেশির ভাগই ছিল সৌল ও তার আশেপাশে৷ মার্চের শেষের দিক থেকে শারীরিক দূরত্ব, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং এবং গণহারে পরীক্ষা চালানোর কড়াকড়ি বাড়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছিল দক্ষিণ কোরিয়া কর্তৃপক্ষ৷
কিন্তু বর্তমানে বাড়ন্ত সংক্রমণের ঘটনায় নতুন করে বিপদের ঝুঁকিতে রয়েছে সৌল৷