দ্বিতীয় দফা ভোটে গড়ালো ব্রাজিলের নির্বাচন
৪ অক্টোবর ২০১০এবারের নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পড়েছে৷ এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা'র সাবেক ক্যাবিনেট প্রধান ডিলমা রুসেফ পেয়েছেন ৪৭ শতাংশ এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দী জোসে সেরা পেয়েছেন ৩৩ শতাংশ ভোট৷ আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে গ্রিন পার্টির মারিনা সিলভা পেয়েছেন ১৯ শতাংশ ভোট৷ ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থী ডিলমা রুসেফ দলের পক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট টানতে না পারার কারণেই এই দ্বিতীয় দফা নির্বাচন৷
ব্রাজিলে লুলার জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয়৷ অত্যন্ত সাধারণ একটি জীবন থেকে উঠে আসা এই মানুষটি নির্বাচনে জিতে সেদেশের সকল রাজনৈতিক পক্ষকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, বাস্তবে তা সম্ভবও করেছিলেন৷ কিন্তু দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হলে পরবর্তীতে আর প্রতিদ্বন্দিতা করার বিধান না থাকায় এবারে তার দলের প্রার্থী ছিলেন ডিলমা রুসেফ৷
লুলা'র সযত্নে সাজানো মসনদে আরোহণ করতে না পারাটা ডিলমা'র জন্য এক ব্যর্থতাই বটে, কেননা ব্রাজিলের আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনে লুলা অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন৷ সঙ্গত কারণেই ডিলমার এই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ার বিষয়টিতে অনেকে বিস্মিত হয়েছেন৷ যেমন বিস্মিত হয়েছেন গ্রিন পার্টির প্রার্থী মারিনা সিলভা'র ১৯ শতাংশ ভোট পাওয়ায়৷ উল্লেখ্য, ব্রাজিলে নাগরিকদের ভোট দেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক৷
মারিনা ক্ষমতাসীন দলটির পরিবেশ মন্ত্রী ছিলেন৷ মতবিরোধের কারণে পদত্যাগী মারিনা খুব ক্লেশকর এক জীবন থেকে উঠে এসেছিলেন৷ একসময় রবার বাগানে কাজ করতেন৷৷ পড়াশোনা করে নিজের যোগ্যতাতেই আজকের অবস্থানে এসেছেন তিনি৷ পরে সংসদ নির্বাচনে জেতার পর লুলা'র মন্ত্রীসভায় ঠাঁই পেয়েছিলেন ২০০৩ সালে৷
ব্রাজিলের রাজনৈতিক বিশ্লেষক আন্দ্রে পেরেইরা সিজারের মন্তব্য হচ্ছে, এবারের এই নির্বাচনে মারিনা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন৷ বলা চলে, দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করছে মারিনার ভোট ব্যাঙ্কে'র ওপর৷
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই ধারণা করছেন যে, মারিনা সিলভা দ্বিতীয় দফা ভোটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন৷ যদিও তিনি ৩১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না৷ নির্বাচন হবে দুই নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ডিলমা এবং জোসে সেরার মধ্যে৷ কিন্তু মারিনার পাওয়া ১৯ শতাংশ ভোট এখন অপর দুই যুযুধান প্রার্থী ডিলমা এবং জোসে সেরা, দুজনের জন্যই সোনার খনির মত বিষয়৷ যিনিই এই অংশের ভোট পাবেন তার ভাগ্যেই শিকেটি ছিঁড়বে৷
প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন