1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিটেনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন

গ্রেহেম লুকাস/এসবি৬ মে ২০১৫

বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ ভোটাররা যখন ভোট দিতে যাবেন, ব্রিটেনের জন্য তাঁদের সিদ্ধান্তের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে বলে মনে করেন গ্রেহেম লুকাস৷ এখনো নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে কোনো পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে না৷

Großbritannien David Cameron Wahlkampf 2015
ছবি: Reuters/T. Melville

ভোটাররা শেষ পর্যন্ত যে সরকারই বেছে নিন না কেন, তার ফলাফল হতে চলেছে ব্রিটেনের বিভাজন৷ হাতে গোনা কিছু মানুষ ছাড়া কেউই সেটা চান না৷ মাত্র ন'মাস আগে স্কটল্যান্ডে স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটে ৫৫ শতাংশ ব্রিটেনে থাকার পক্ষে, ৪৫ শতাংশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল৷ আজ স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি স্কটল্যান্ডের প্রায় সব আসনই দখল করবে বলে মনে হচ্ছে৷ তাদের জয় হলে যে আবার গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং সেখানকার ভোটাররা ব্রিটেন থেকে বিচ্ছিন্ন হবার রায় দিতে পারে, এটা সবারই জানা আছে৷ সেক্ষেত্রে দুই-এক বছরের মধ্যেই স্কটল্যান্ড স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারে৷ এমনটাই এসএনপি দলের নেতা নিকোলা স্টার্জন-এর ঘোষিত লক্ষ্য৷ জনমত সমীক্ষায় তিনি শীর্ষে রয়েছেন৷ এসএনপি দলের সাফল্যের রহস্য ‘ওয়েস্টমিনস্টার মডেল' সম্পর্কে স্কটল্যান্ডের মানুষের অনীহা৷ তাদের মতে, এর ফলে স্কটল্যান্ডের স্বার্থের ক্ষতি হচ্ছে৷ বিশেষ করে নর্থ সি থেকে পেট্রোলিয়াম উত্তোলনের অর্থ বিতরণ এবং সামাজিক ভাতায় কাটছাঁট নিয়ে তাদের মনে ক্ষোভ রয়েছে৷ কয়েক বছর আগে স্কটিশ জাতীয়তাবাদীরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে জনমত ধীরে ধীরে বামপন্থি ভাবধারা এবং ইংল্যান্ডের তুলনায় অনেক বেশি মাত্রায় ইউরোপপন্থি চিন্তাধারার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে৷

স্কটল্যান্ডে এসএনপি দলের বিশাল জয় হলে লেবার ও কনজারভেটিভ দল উত্তর সীমান্তের অপর দিকে কার্যত ধুয়ে-মুছে যাবে৷ অথচ স্কটল্যান্ডে লেবার পার্টি চিরকাল বেশ শক্তিশালী ছিল৷ সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বে রক্ষণশীল ও এড মিলিব্যান্ড-এর নেতৃত্বে লেবার দল সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না৷ ২০১০ সালেও ব্রিটিশ নির্বাচনি ব্যবস্থা এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল৷অর্থাৎ ‘হাং পার্লামেন্ট' এবারের সবচেয়ে সম্ভাব্য ফলাফল৷ তখন জোট সরকার অথবা সংখ্যালঘু সরকার গঠন করা হতে পারে৷ সেখানেই সমস্যার সূত্রপাত ঘটবে, কারণ লেবার পার্টির জোটসঙ্গী হিসেবে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি সংসদে প্রায় ৫০টি আসনের জোর খাটিয়ে ব্রিটেন বিভাজনের শর্ত স্থির করতে পারে৷ আবার সংখ্যালঘু লেবার সরকারও এসএনপি-র বৈরি মনোভাবের সামনে বেশিদিন টিকতে পারবে না৷ ক্যামেরন সরকারের বর্তমান জোটসঙ্গী লিবারাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এত বেশি জনপ্রিয়তা হারিয়েছে, যে রক্ষণশীলদের পক্ষে তাদের সঙ্গে আবার জোট বাঁধার সম্ভাবনা বিরল৷ গত পাঁচ বছরে ক্যামেরন সরকারি ব্যয় বিশাল মাত্রায় কমিয়ে ভোটারদের ক্ষোভের পাত্র হয়েছেন৷ সেই রোষের ভাগীদার হতে হচ্ছে জোটসঙ্গী উদারপন্থিদেরও৷

তবে এটাই একমাত্র বিপদ নয়৷ গত শতকের নব্বইয়ের দশকে ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি বা ইউকিপ-এর জন্ম হয়েছিল৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের সদস্য পদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেই তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল৷ বহুকাল রাজনীতি জগতের সীমানায় নির্বাসিত থাকার পর নাইজেল ফারাজ-এর নেতৃত্বে দলটি রাজনৈতিক আঙিনার কেন্দ্রস্থলে এসে পড়েছে৷বিশেষ করে প্রবীণ প্রজন্মের অনেকেই তাঁর প্রতি আকর্ষণ বোধ করছেন৷ তাঁরা গ্রেট ব্রিটেন-এর হারানো গৌরব, পরাশক্তি হিসেবে বিশ্বমঞ্চে দেশের অতীত গুরুত্ব, দ্বীপরাষ্ট্র হিসেবে ব্রিটেনের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে আজও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন৷ অভিবাসন ও ইইউ-বিরোধী অবস্থান সামনে রেখে এবারের নির্বাচনে ইউকিপ অবশ্যই সংসদে প্রবেশ করতে চলেছে৷ তবে সম্ভবত খুব বেশি আসন তারা পাবে না৷ তবে একই সঙ্গে তারা রক্ষণশীল শিবিরের এত ভোট কড়ে নেবে যে, ডেভিড ক্যামেরন প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন না৷ আবার ক্যামেরন যদি সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে পারেন, সেটিও ইউকিপ-এর সমর্থনের উপর নির্ভর করবে৷ তখন ক্যামেরনকে ২০১৭ সালে ইইউ-তে থাকা-না থাকার প্রশ্নে গণভোট আয়োজন করতে হবে৷ ভোটাররা ইইউ ত্যাগ করার পক্ষে রায় দিলে স্কটল্যান্ডের এসএনপি তখন ব্রিটেন ত্যাগ করে দ্বিগুণ উৎসাহে ইইউ-তে যোগ দেবার উদ্যোগ শুরু করবে৷

গ্রেহেম লুকাস, ডয়চে ভেলেছবি: DW/M. Müller

এই পরিস্থিতিতে অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, যে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ ভোটাররা যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, বর্তমান অবস্থায় ইউনাইটেড কিংডম-এর অস্তিত্ব সম্ভবত শেষ হয়ে যাবে৷ তাছাড়া চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তির প্রস্থান ইউরোপের জন্যও এটা সুখবর হবে না৷ রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্রিটেনের প্রায় ৪০,০০০ কোটি ইউরো লোকসান হবে৷ বিশ্বমঞ্চে ইউরোপের রাজনৈতিক প্রভাব অনেকটা কমে যাবে৷ ব্রিটেনের জন্য সেটা হবে এক ঐতিহাসিক মাত্রার বিপর্যয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ