1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মে মাসের একটি দিন

ফল্কার ভাগেনার/এসি৮ মে ২০১৫

৮ই মে ১৯৪৫: জার্মানির পক্ষে পরাজয়ের দিন, না মুক্তির দিন? লজ্জা আর ধিক্কার, নাকি একটা নতুন সুযোগ? যাকে বলে ‘শূন্য থেকে শুরু'? সত্তর বছর ধরে তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন জার্মানরা৷

Deutschland Zweiter Weltkrieg, Einmarsch der Alliierten
ছবি: picture-alliance/dpa

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন অবশেষে শেষ হলো, তখন উল্লাস কিংবা আনন্দের পরিবর্তে একটা ‘‘অসাড় গোছের স্বস্তি'' পড়ে ছিল, লিখেছেন ইতিহাসবিদ গের্হার্ড ব্রুন৷ স্মৃতি একটি ব্যক্তিগত ব্যাপার, কাজেই যে জার্মান সৈন্য সোভিয়েত সৈন্যদের হাতে বন্দি হয়েছেন, আর একজন সাধারণ জার্মান নাগরিক যুদ্ধশেষের স্মৃতি ভিন্ন হবে বৈকি৷ পূর্ব প্রাশিয়া থেকে বিতাড়িত জার্মানদের স্মৃতি, আর অ্যামেরিকায় নির্বাসনরত জার্মানদের স্মৃতির মধ্যে ফারাক থাকবে বৈকি – বিশেষত ১৯৪৫ সালের ৮ই মের প্রেক্ষিতে৷ আর আউশভিৎস-এর মতো বন্দিশিবির থেকে যাঁরা প্রাণে বেঁচেছেন, তাঁদের কথা না তোলাই ভালো৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যেদিন শেষ হয়, সেই দিনটার নানান নাম আছে৷ সাবেক পশ্চিম জার্মানিতে এর অর্থ করা হয়েছিল ‘‘স্টুন্ডে নুল'', বা ‘শূন্য থেকে শুরু'-র মুহূর্ত৷ যুদ্ধপরবর্তী বছরগুলিতে দুই জার্মানির মানুষরাই ভাবতেন, যুদ্ধের সময় তাঁদের যে দুঃখকষ্ট সহ্য করতে হয়েছে, তার কথা – জার্মানরা যে যুদ্ধ চালিয়েছে, তার কথা নয়৷ এই আমলেই জার্মানদের সব অপরাধ হিটলার ও নাৎসিদের ওপর চাপানোর প্রবণতা উভয় জার্মানিতেই সূচিত হয়৷ একদিকে হিটলার ও তার নাৎসি সাঙ্গপাঙ্গরা – অন্যদিকে সহজ সরল সাধারণ জার্মান, যে কিছুই জানতো না এবং যার কোনোই দোষ নেই৷ দশকের পর দশক ধরে পুব এবং পশ্চিমের জার্মানরা বুঝতে পারেননি – অথবা বুঝতে চাননি – ১৯৪৫ সালের ৮ই মে অবধি কী ঘটেছে, এবং সেজন্য তাদের নিজেদের দায়িত্বই বা কত৷ আজ জার্মানরা যে ‘‘সফলভাবে অতীতের মোকাবিলা'' করতে পারার জন্য সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত, সেটা এসেছে তার অনেক পরে৷

১৯৫৫ সালে পূর্ব জার্মানিতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয় উদযাপনের মুহূর্তছবি: picture-alliance/dpa/UPI

জার্মানির বিভাজন নিয়ে দুঃখ ও রোষ

৮ই মে নিয়ে যুদ্ধপরবর্তী প্রথম দুই দশকে সাবেক পশ্চিম জার্মানির সরকারি কর্মকাণ্ডে বিশেষ কেউ কোনো উচ্চবাচ্য করেননি৷ সেই যুদ্ধের যাঁরা শিকার হয়েছেন, তাঁদের কথা না ভেবে, জার্মানরা ব্যস্ত ছিলেন জার্মানির বিভাজন নিয়ে৷ সরকারি স্মারক অনুষ্ঠান জোর দেওয়া হয়েছিল ১৯৪৪ সালের ২০শে জুলাই এবং ১৯৫৩ সালের ১৭ই জুনের উপর: প্রথমটি যেদিন ক্লাউস ফন স্টাউফেনবার্গ হিটলারকে মারার চেষ্টা করেন; দ্বিতীয়টি যেদিন সাবেক পূর্ব জার্মানির মানুষ কমিউনিস্ট শাসকবর্গের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঝরেছিল অনেক প্রাণ

অপ্রতিসম চিন্তাধারা

পূর্ব জার্মানিতে কিন্তু যুদ্ধাবসান সম্পর্কে সরকারি – এবং আনুষ্ঠানিক ক্রিয়াকর্ম অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে৷ সেখানে গোড়া থেকেই ৮ই মে তারিখটিকে একটি সরকারি ছুটির দিন বলে ঘোষণা করা হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর বিজয়দিবস হিসেবে৷ ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাকারের পতন অবধি পূর্ব জার্মানির ৮ই মে উদযাপন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রকাশ্য নিদর্শন – এবং জিডিআর যে বিজয়ীদের মধ্যে পড়ে, তার প্রমাণ৷ যার ফলে জার্মানির অতীত সম্পর্কে পূর্ব জার্মানিতে বিতর্ক কিংবা চিন্তাভাবনার কোনো প্রশ্নই ছিল না৷

ওয়ারশতে নতজানু হলেন ভিলি ব্রান্ড

সাবেক পশ্চিম জার্মানিতে ৮ই মের তাৎপর্য ক্রমেই বদলে গেছে৷ ১৯৬৮ সালেও সিএসইউ দলের প্রভাবশালী নেতা ফ্রানৎস-ইওজেফ স্ট্রাউস বলেছিলেন: ‘‘যে জাতি এই পরিমাণ অর্থনৈতিক সাফল্য দেখিয়েছে, তাদের আর আউশভিৎস-এর কথা না শোনার অধিকার আছে৷''

অতীতকে চেনার অপর প্রান্তে পাওয়া যাবে ভিলি ব্রান্ডকে, যিনি ১৯৭০ সালের ৭ই ডিসেম্বর ওয়ারশ ঘেটোর স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ প্রদান করার সময় নতজানু হয়ে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন সূচিত করেন৷ তৎকালীন চ্যান্সেলর-এর এই প্রতীকী আচরণ আজও ‘‘জার্মানির অপরাধ স্বীকারের প্রথম আন্তরিক নজির'' বলে গণ্য করা হয়, বলেছেন ইতিহাসবিদ পেটার হুরেলমান৷

সত্তরের দশক থেকেই জার্মানরা ৮ই মে সম্পর্কে ভিন্নভাবে ভাবতে শেখেন৷ ১৯৭৫ সালে যুদ্ধাবসানের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জার্মান প্রেসিডেন্ট ভাল্টার শেল মুক্তভাবে জার্মানির অপরাধের কথা স্বীকার করেন এবং বলেন: ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল অবধি যা কিছু ঘটেছে, তা একটি গোটা প্রজন্মের ব্যর্থতার পরিচয় বহন করছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ