সারা দেশের রাজনীতিবিদদের ভোটে দ্বিতীয়বারের মতো জার্মানির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ রোববার তিনি দেশটির রাষ্টপ্রধান হিসেবে পুননির্বাচিত হলেন৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগের সদস্য ও ১৬ টি রাজ্যের ‘ডেলিগেটসদের' ভোটে আরো পাঁচ বছরের জন্য জার্মানির প্রেসিডেন্ট পদে থাকছেন ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমেয়ার৷ সাতাত্তর শতাংশ ভোট পড়েছে এই রাজনীতিকের পক্ষে৷
পুননির্বাচিত হওয়ার পর দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি গণতন্ত্র তুলে ধরার পক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করার পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমরা পূর্ব ইউরোপে সামরিক সংঘাত, যুদ্ধের বিপদের মধ্যে আছি৷ …আমি (রাশিয়ার) প্রেসিডেন্ট পুটিনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- ইউক্রেনের গলার ফাঁস আলগা করুন এবং ইউরোপে যাতে শান্তি বজায় থাকে আমাদের সঙ্গে তেমন পথের সন্ধান করুন৷
জার্মানির প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত জীবনের কথা
নিজের স্ত্রীকে কিডনি দান করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর থাকাকালীন প্রতিবেশীর সন্তানদের বেবিসিটিং করতেন৷ এমনকি নিজের বাগানের ঘাসও নিজেই কাটেন তিনি৷ ইনি আর কেউ নন, জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
কিডনি দান
৫৫ বছর বয়সি বিচারক এল্কে ব্যুডেনবেন্ডার স্টাইনমায়ারের স্ত্রী৷ তবে স্টাইনমায়ার যখন আইনের প্রফেসর ছিলেন, তখন এলকে ছিলেন তাঁর সহকারী৷ শোনা যায়, সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই তাঁদের পরিচয়, প্রণয়৷ ২০১০ সালে প্রিয়তমা স্ত্রী এলকেকে নিজের একটি কিডনি দান করেন স্টাইনমায়ার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Stache
বেবিসিটার
৬১ বছর বয়সি ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসার থাকাকালীন বাচ্চাদের দেখাশোনা করতেন, অর্থাৎ ‘বেবিসিটার’ ছিলেন জার্মানির এই সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ আর বেবিসিটার হিসেবে প্রতিবেশীদের মধ্যে বেশ সুনামও কুড়িয়েছিলেন তিনি৷ তাঁর মেয়ে মেরিটের বয়স এখন ২০ বছর৷
ছবি: picture-alliance/Joker/Khandani
প্রিয় খাবার স্প্যাগেটি
ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ারের প্রিয় খাবার স্প্যাগেটি আর টুন ফিশ৷ তবে তিনি রুটি খেতেও খুব পছন্দ করেন৷ ছোটবেলায় তিনি নাকি খুব আনন্দের সঙ্গেই সকাল সকাল পরিবারের সকলের জন্য বেকারি থেকে রুটি নিয়ে আসতেন৷
ছবি: Colourbox
জিন টনিক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন সরকারি কাজের শেষে বিমান-ভ্রমণের সময় পুরো টিমকে নিয়ে খুব আনন্দের সঙ্গে ‘জিন অ্যান্ড টনিক’ পান করতেন স্টাইনমায়ার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Hase
পাহাড়প্রেমী
অবসর সময়ে জার্মানির প্রেসিডেন্ট পাহাড়ে উঠতে খুব ভালোবাসেন৷ পাহাড়প্রেমী মানুষটি তাই ছুটি কাটাতে প্রায়ই চলে যান ইটালির দক্ষিণ টিরোল-এর পর্বতে৷ হাঁটাহাঁটি করেন প্রকৃতির কোলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. D. Gabbert
নিজেই বাগান করেন
বাগানের ঘাস নিজে কাটতেই পছন্দ করেন স্টাইনমায়ার৷ শুধু তাই নয়, ‘ইকেয়া’ বা ‘আইকিয়া’ কোম্পানি থেকে আসবাবপত্র কিনে, তার বিভিন্ন অংশ নিজেই জোড়া লাগাতে পছন্দ করেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট৷ অথচ দামে সস্তা এ সব আসবাব কিন্তু সাধারণত তরুণরাই কেনে, তাদেরই মানায় এগুলো৷
ছবি: picture-alliance / chromorange
ভিন্ন ধরণের পোশাক
একসময় অদ্ভুত পোশাক পরতেন বলে নাম ছিল স্টাইনমায়ারের৷ আর সেই সব পোশাক তিনি নিজেই পছন্দ করে কিনতেন৷ শোনা যায়, চকমকে বেগুনি রঙের স্যুটের সাথে সবুজ রঙের চশমা পরে তিনি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েছিলেন হ্যানোফারে, তাও আবার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গেয়ারহার্ড শ্র্যোডারের সঙ্গে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Altwein
ফুটবল প্রেমিক
স্টাইনমায়ার নাকি শিশু ও তরুণদের গ্রুপে মিডফিল্ডার হিসেবে ফুটবল খেলতেন এবং বেশ জনপ্রিয়ও ছিলেন৷ পরবর্তীতে তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
8 ছবি1 | 8
সোশ্যাল ডেমোক্রেট সদস্য ৬৬ বছর বয়সি স্টাইনমায়ার সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকারের দুই মেয়াদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন৷ শুধু রাজনীতিবিদ নন, জার্মানির জনগণের মধ্যেও রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা৷ সাম্প্রতিক এক জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, জার্মানির ৮৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন তিনি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ বর্তমান জোট সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যেও রয়েছে তার সমর্থন৷
দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে তিনি বিরোধী বাম দলের প্রার্থী গ্রেরহার্ড ট্রেবার্ট, ফ্রি ভোটার্স নামের একটি রাজনতিক গোষ্ঠীর মনোনীত প্রার্থী পদার্থবিদ স্টেফানি গেবাউয়ার এবং এএফডি এর মনোনীত মাক্স ওটেকে পরাজিত করেন৷
১৪৩৭ ভোটের মধ্যে ১০৪৫টি ভোটই পড়েছে তার পক্ষে৷ সিডিইউ এর সদস্য হয়েও উগ্র ডানপন্থি দল এএফডি এর পছন্দে এই নির্বাচনে অংশ নেয়া ওটেকে দল থেকে বহিস্কারের দাবি তুলেছেন নেতারা৷