গত এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে৷ এই বৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে খাদ্য তালিকা কাঁটছাট করছে অনেক পরিবার৷
বিজ্ঞাপন
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি চাপে পড়েছেন মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত এবং নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ৷ খাদ্য তালিকা থেকে তারা বাদ দিচ্ছেন মাছ-মাংস৷
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম যা বাড়ছে, তার চেয়ে বেশি বাড়ছে বাংলাদেশের বাজারে৷ সম্প্রতি কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী খাদ্যপণ্যের ব্যবসায় এসেছেন৷ তাদের নিয়ন্ত্রণ এতটাই যে, তারা চাইলে পণ্যের সরবরাহ কমিয়ে বা বাড়িয়ে দিয়ে বাজারে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারেন৷ এখন বাজার যারা মনিটরিং করছেন তাদের কাছে হয়ত পর্যাপ্ত তথ্য থাকছে না৷ এখানে মনিটরিংটা আরও জোরদার হওয়া দরকার৷''
দ্রব্যমূল্যের তুলনা: ২০০৯ বনাম ২০২১
কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিদিন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন জেলার বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রকাশ করে৷ ছবিঘরে ঢাকার একটি বাজারে ২০০৯ ও ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের দাম উল্লেখ করা হয়েছে৷
চাল
কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিদিন ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রকাশ করে৷ এতে দেখা যাচ্ছে ২০০৯ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার এক বাজারে এক কেজি সরু বোরো চালের দাম ছিল ৩৪-৩৬ টাকা৷ ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর একই বাজারে ঐ চালের দাম ছিল ৫৭-৭০ টাকা৷ মোটা বোরো চালের দাম ২০০৯ সালে ছিল ২১-২৩ টাকা৷ ২০২১ সালে ছিল ৪৪-৪৭ টাকা৷
ছবি: DW
ডাল
২০০৯ সালে এক কেজি দেশি মসুর ডালের দাম ছিল ১০৮-১১০ টাকা৷ ২০২১ সালে ১০০-১১০ টাকা৷ আমদানিকৃত মসুর ডালের দাম ২০০৯ সালে ছিল ১১২-১১৫ টাকা৷২০২১ সালে সেটা কমে হয় ৮৫-৯০ টাকা৷ মুগ ডালের দাম ২০০৯ সালে ছিল ৮৫-১০০ টাকা৷ ২০২১ সালে সেটা বেড়ে হয় ১২০-১২৫ টাকা৷
ছবি: bdnews24.com/T. Ahammed
পেঁয়াজ
এক কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ২০০৯ সালের ১০ নভেম্বর ছিল ৪০-৪৪ টাকা৷ ২০২১ সালে সেটা বেড়ে হয় ৫৫-৬০ টাকা৷ আর আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম ২০০৯ সালে ছিল ২৮-৩৪ টাকা৷ ২০২১ সালে ৪৫-৫০ টাকা৷
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan
রসুন
২০০৯ সালে এক কেজি দেশি রসুনের দাম ছিল ৯০-১০৫ টাকা৷ ২০২১ সালে সেটা কম ছিল, ৫০-৭০ টাকা৷ আমদানিকৃত রসুনের এক কেজির দাম ২০০৯ সালে ছিল ৮০-৮৫ টাকা৷ ২০২১ সালে সেটা বেড়ে হয় ১১০-১২০ টাকা৷
ছবি: bdnews24.com/A. Mannan
কাঁচা মরিচ
২০০৯ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার এক বাজারে এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৩০-৪০ টাকা৷ ঐ একই বাজারে ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর কাঁচা মরিচের দাম ছিল ১২০-১৩০ টাকা৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
সয়াবিন তেল
২০০৯ সালে এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৭০-৭৩ টাকা৷ ২০২১ সালে সেটা বিক্রি হয়েছে ১৩৮-১৪২ টাকায়৷
ছবি: Gustavo Cuevas/dpa/picture-alliance
চিনি
২০০৯ সালে আমদানিকৃত এক কেজি চিনির দাম ছিল ৫২-৫৪ টাকা৷ ২০২১ সালে ৭৫-৭৭ টাকা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J.Kalaene
ডিম
২০০৯ সালে দেশি মুরগির ডিম ছিল ৩২-৩৪ টাকা হালি৷ ২০২১ সালে সেটা বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকায়৷ ফার্মের মুরগির ডিমের (লাল) দাম ২০০৯ সালে ছিল ২৫-২৬ টাকা৷ ২০২১ সালে ৩৬-৪০ টাকা৷
ছবি: Reuters/W. Kurniawan
গরুর মাংস
গরুর মাংসের কেজিপ্রতি দাম ২০০৯ সালে ছিল ২২০-২৩০ টাকা৷ ২০২১ সালে সেটা বিক্রি হয়েছে ৫৮০-৬০০ টাকায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Bachmann
খামারের মুরগী
২০০৯ সালে কেজিপ্রতি দাম ছিল ১০০-১১০ টাকা৷ ২০২১ সালে ১৫০-১৬০ টাকা৷
ছবি: Getty Images/AFP/H. Dinh Nam
দেশি রুই
২০০৯ সালে ছিল ১৪০-১৬০ টাকা৷ ২০২১ সালে ২০০-৩০০ টাকা৷ বিস্তারিত জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Mortuza Rashed
পানির দাম
গত ১২ বছরে ১৪ বার পানির দাম বাড়িয়েছে ঢাকা ওয়াসা৷ ২০০৯ সালে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রতি ইউনিট (১ হাজার লিটার) পানির দাম ছিল ৫ টাকা ৭৫ পয়সা৷ গত জুলাই থেকে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা দরে দাম দিতে হচ্ছে৷ অর্থাৎ গত ১২ বছরে ইউনিটপ্রতি পানির দাম প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে৷ সম্প্রতি চট্টগ্রাম ওয়াসাও আগামী মাস থেকে পানির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে৷
ছবি: AP
বিদ্যুৎ
এ বছরের ২১ জুন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) ও ভোক্তাকণ্ঠ আয়োজিত এক ওয়েবিনারের মূল নিবন্ধে বলা হয়, গত ১১ বছরে বিদ্যুতের দাম ১০ বার বেড়েছে৷ পাইকারি বিদ্যুতের দাম ১১৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে৷ আর খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ৷
ছবি: DW
জ্বালানির দাম বৃদ্ধি
৩ নভেম্বর বুধবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়৷ ডিজেলের মোট চাহিদার ৬৩ শতাংশ ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে৷ আর সেচকাজে ব্যবহৃত হয় ১৬ শতাংশ৷ ৪ নভেম্বর ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারপ্রতি তিন টাকা বাড়িয়ে ৬২ টাকা করা হয়৷ আরও বেড়েছে বেসরকারি খাতের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম৷ ১২ কেজির সিলিন্ডারে বেড়েছে ৫৪ টাকা৷
ছবি: Getty Images/P. Walter
মুনাফা সত্ত্বেও বৃদ্ধি
জ্বালানি বিভাগের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, সবশেষ ২০১৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল৷ মাঝে ২০১৬ সালে দাম কিছুটা কমানোও হয়েছিল৷ তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম যখন কম ছিল তখন তেলের দাম ততটা না কমানোয় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন সাত বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছিল৷ আর এবার টানা পাঁচ মাস ক্ষতি হওয়ার পর দাম বাড়ানো হলো৷
ছবি: Alastair Grant/AP/picture alliance
ঢাকায় বাসা ভাড়া দ্বিগুন হয়েছে
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বলছে ঢাকায় ২০১০ সালে দুই কক্ষের পাকা বাসার গড় ভাড়া ছিল ১১ হাজার ৩০০ টাকা৷ ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয় ২৪ হাজার ৫৯০ টাকা৷ আধাপাকা (টিন শেড) বাড়ির দুই কক্ষের ভাড়া ২০১০ সালে ছিল ৬ হাজার ৮০০ টাকা৷ ২০১৯ সেটা বেড়ে হয় ১৩ হাজার ২০০ টাকা৷ ২০১০ সালে দুই কক্ষের মেসের গড় ভাড়া ছিল ১১ হাজার ৫০০ টাকা৷ ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয় ২৩ হাজার ২০০ টাকা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. uz Zaman
জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে
এ বছরের জুনে ক্যাব জানায় ২০২০ সালে ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬.৮৮ শতাংশ এবং সেবা-সার্ভিসের দাম বেড়েছে ৬.৩১ শতাংশ৷ ২০১৯ সালে এটি ছিল যথাক্রমে ৬.৫০ শতাংশ ও ৬.০৮ শতাংশ৷ ২০১৮ সালে তা ছিল ৬ শতাংশ ও ৫.১৯ শতাংশ৷ ঢাকার ১৫টি খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবা-সার্ভিসের মধ্য থেকে ১১৪টি খাদ্যপণ্য ও ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা-সার্ভিসের সংগৃহীত মূল্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে ক্যাব৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
মাথাপিছু আয় বেড়েছে
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে ২০০৯-২০১০ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৮৪৩ মার্কিন ডলার৷ আর সবশেষ হিসাব বলছে, মাথাপিছু আয় এখন ২,৫৫৪ ডলার৷ তবে এই আয়ের সুষম বণ্টন হচ্ছে বলে মনে করেন না অনেক অর্থনীতিবিদ৷ কারণ একদিকে যেমন একদল মানুষ দ্রুত ধনী হচ্ছেন, আবার গরিবের সংখ্যাও বাড়ছে৷ করোনার সময়ে প্রায় সোয়া তিন কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র্য হয়েছেন বলে সম্প্রতি এক জরিপে জানা গেছে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
18 ছবি1 | 18
শেওড়াপাড়া বাজারে মাছ বিক্রি করেন মোসলেম উদ্দিন৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘‘তেলাপিয়া বা পাঙ্গাস মাছের দামও কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে৷ এক কেজি ওজনের রুই আগে ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ পাবদা, টেংড়া মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে৷ এখন এক কেজি ওজনের একটা ইলিশ এক হাজার ৬০০ টাকার কমে পাওয়া যায় না৷ ফলে সব মাছের দামই গড়ে অন্তত ৫০ টাকা বেড়েছে৷ দাম বৃদ্ধির এই চিত্র গত ১৫ দিনের৷''
একই বাজারে মাংস ব্যবসায়ী আমীর হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গরুর মাংসের দাম গত কয়েকদিনে খুব একটা বাড়েনি৷ এখন ৬৮০-৬৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ খাসির মাংস বিক্রি করছি ৯৫০ টাকা কেজি দরে৷ কিন্তু মাংসের দাম এত বেড়েছে যে আগে যিনি ৪ কেজি কিনতেন, এখন তিনি ২ কেজিও নিচ্ছেন না৷ এক বছর আগেও করোনার মধ্যে প্রতিদিন অন্তত ৫০ কেজি মাংস বিক্রি করেছি৷ আর এখন ২০-২৫ কেজিও বিক্রি করতে পারি না৷'' মানুষের কেনার সামর্থ্য কমে গেছে বলে মনে করেন আমীর হোসেন৷
‘মনিটরিংটা আরও জোরদার হওয়া দরকার: ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম’
শেওড়াপাড়া বাজারে শনিবার বাজার করতে এসেছেন গৃহবধূ তাহমিনা আক্তার৷ তার স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে এই নারী জানালেন, ‘‘বাজারের হিসাব এখন আর মিলছে না৷ আমাদের ৫ জনের সংসার৷ স্বামী-স্ত্রী, দুই সন্তান আর শ্বাশুড়ি৷ খাওয়া বাবদ প্রতি মাসে আমরা সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা খরচ করতে পারি৷ পাঙ্গাস মাছ আমরা আগে কখনও খাইনি৷ কেউ পছন্দও করে না৷ শুধু খরচ বাঁচাতে গত তিন মাসে বহুবার পাঙ্গাস মাছ খেয়েছি৷ এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তেলাপিয়াও৷ বাচ্চারা পছন্দ করে না, কিন্তু কি করা? গত এক মাসে একবারও মাংস কিনিনি৷ কারণ মাংস কিনতে গেলে অন্যান্য জিনিস কেনা কঠিন৷ সত্যি বলতে কি, মূল্যবৃদ্ধির চাপ সামলাতে আমরা খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি৷ বাজারে চাল, আটা, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে আমরা মাছ-মাংসে কাঁটছাট করছি৷''
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) রাজধানীর বাজারের ৩২ ধরনের খাদ্যপণ্যের দামের ওঠা-নামার হিসাব রাখে৷ সংস্থাটির গত এক মাসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ সময়ের ব্যবধানে বাজারে ৩২ খাদ্যপণ্যের মধ্যে বেড়েছে ১৯টির দাম৷ কমেছে শুধু একটি পণ্যের দাম৷ স্থিতিশীল রয়েছে ১২টির৷
‘সব মাছের দামই গড়ে অন্তত ৫০ টাকা বেড়েছে: মাছ ব্যবসায়ী’
টিসিবি বলছে, এক মাসের ব্যবধানে বাজারে চাল, আটা, ময়দা, সয়াবিন, পাম অয়েল, মসুর ডাল, ছোলা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনা মরিচ, হলুদ, আদা, জিরা, তেজপাতা, গুড়া দুধ, চিনি ও ডিমের দাম বেড়েছে৷ বাজারে শুধুমাত্র কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম, যা গত মাসের থেকে বর্তমানে কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে৷ অন্যদিকে টিসিবির তথ্যে বাজারে একমাসের ব্যবধানে মুগডাল, অ্যাংকার ডাল, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনিয়া, রুই মাছ, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, খাসির মাংস, খেজুর ও লবণের দাম স্থিতিশীল রয়েছে৷
ভোগ্যপণ্য নিয়ে কাজ করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)৷ প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি গোলাম রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, "বিভিন্ন যৌক্তিক কারণে দেশে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে৷ তবে যৌক্তিকভাবে যা বেড়েছে, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা৷ এখন সব ইস্যুকে সামনে রেখে বাড়তি মুনাফার সুযোগ খোঁজেন তারা৷ ব্যবসায়ীদের নানান অজুহাত, যার শেষ নেই৷ কারণে-অকারণে পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের নাজেহাল করা হচ্ছে৷ ব্যবসায়ীদের এ কারসাজি ঠেকাতে দেশে বেশি কিছু বিদ্যমান আইনও আছে৷ তবে সেসব আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নেই৷ সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে, তা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে৷ ''
প্রতি বছরই সংগঠনটি বাজার নিয়ে তাদের গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করে৷ এ বছর এখনও তাদের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়নি৷ ২০২১ সালের রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে জনাব রহমান বলেন, ‘‘আমরা গবেষণায় দেখেছি, গত বছরই জীবন-যাত্রার ব্যয় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে৷ এ বছরের রিপোর্ট আসলে বর্তমান চিত্রটা বলা যাবে৷ তবে এবার যে আরও বেড়েছে তাতে তো কোন সন্দেহ নেই৷ সেই অনুযায়ী, মানুষের আয় বাড়ছে না৷''
এদিকে, শুধু খাদ্যপণ্য নয়, বেড়েছে নিত্যব্যবহার্য্য অন্যান্য পণ্যের দামও৷ সাবান, টুথপেস্ট, ডিটারজেন্ট, নারিকেল তেল, সেভিং ফোম, টালকম পাউডার, রেজারসহ বিভিন্ন পণ্যের দামও বেড়েছে৷ ব্যয় সামলাতে না পেরে অনেকেই নিত্যব্যবহার্য্য পণ্যের তালিকাও কাটছাঁট করছেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন৷ এছাড়া আটা-ময়দার দাম বাড়ায় রুটি, কেক, বিস্কুটের মতো বেকারি পণ্যের দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। আগে চায়ের দোকানে যে রুটি (বনরুটি) ও পিস কেক ৮ টাকা করে বিক্রি হতো, তা এখন ১০ টাকা৷ আবার ৩০ টাকা দামের ফ্যামেলি রুটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়৷