ধনী-দরিদ্র্যের ব্যবধান বাড়়ছে
২০ জানুয়ারি ২০১৫
সোমবারেই অক্সফ্যামের এই খবর আলোড়ন তোলে৷ এবং অক্সফ্যাম যে সুইজারল্যান্ডের ডাভোস-এ বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম যখন শুরু হওয়ার ঠিক আগে এই সব তথ্য প্রকাশ করল, তার উদ্দেশ্যটা স্পষ্ট: ডাভোসে যে সব মান্যগণ্যরা আসছেন, তাদের কিছুটা নাড়া দেওয়া হবে৷
২০০৯ সালে বিশ্বের সম্পদের মোট ৪৪ শতাংশ ছিল এক শতাংশ মানুষের তাঁবে; ২০১৪ সালে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ শতাংশে; ৫০ শতাংশ ছাড়াবে ২০১৬ সালে৷ এই ক্রমবর্ধমান অসাম্য বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে রুখে দিচ্ছে, এই অভিমত প্রকাশ করেছে অক্সফ্যাম তার রিপোর্টে৷ অপরদিকে বিশ্বের বৃহত্তম কোম্পানিগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নে লবিয়িং চালাচ্ছে কর হ্রাসের আশায় – অপরদিকে সাধারণ করদাতাদের এখনও আর্থিক সংকটের মূল্য দিতে হচ্ছে, বলেছে অক্সফ্যাম৷
অক্সফ্যামের কার্যনির্বাহী পরিচালক উইনি বিয়ানাইমা একটি বিবৃতিতে বলেছেন: ‘‘বিশ্বব্যাপী অসাম্যের পর্যায় সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো এবং গ্লোবাল অ্যাজেন্ডায় অন্যান্য নানা ইস্যু থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী যারা এবং অবশিষ্টদের মধ্যে ব্যবধান দ্রুত বেড়ে চলেছে৷'' প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ প্রমুখ বিশ্বনেতারা চরম অর্থনৈতিক অসাম্যের ব্যাপার কিছু করার কথা বললেও, ‘‘তাঁরা সত্যিই কিছু করবেন বলে আমরা অপেক্ষা করে আছি,'' মন্তব্য করেছেন বিয়ানাইমা৷
স্বাস্থ্য সেবা এবং আর্থিক পরিষেবা শিল্পগুলি ২০১৩ সালে শুধু ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলসে লবিয়িং করার জন্য যথাক্রমে নব্বই কোটি তথা বিশ কোটি ডলার খরচা করেছে৷ ওদিকে বিশ্বের প্রতি দশজন মানুষের মধ্যে একজনের পর্যাপ্ত খাদ্য জোটে না এবং একশো কোটির বেশি মানুষকে দিনে এক ডলার ২৫ সেন্টের কমে দিনগুজরান করতে হয় – বলে জানিয়েছে অক্সফ্যাম তার রিপোর্টে৷ কাজেই অক্সফ্যামের দাবি হল, বড় বড় কর্পোরেশন এবং ধনীরা যাতে কর এড়াতে না পারেন, তার ব্যবস্থা করা; এছাড়া স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে বর্ধিত বিনিয়োগ এবং স্ত্রী-পুরুষের সমান পারিশ্রমিক সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন৷
অক্সফ্যামের রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পরদিন বিশ্ব শ্রম সংগঠন আইএলও-র মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেছেন, ডাভোসে বিশ্বনেতারা সকলেই স্বীকার করবেন যে, অসাম্য একটি সমস্যা – কিন্তু তাঁরা সে বিষয়ে কিছু করবেন বলে রাইডার মনে করেন না৷ এক্ষেত্রে ডাভোস-এ কথা ও কাজের মধ্যে ব্যাপক ফারাকের কথা স্মরণ করিয়ে দেন আইএলও প্রধান৷
এসি/এসবি (এপি, রয়টার্স)