1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সেকেন্ড হোম’ কেন মালয়েশিয়া?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৪ জুলাই ২০১৭

সেকেন্ড হোম হিসেবে যেসব বিদেশি নাগরিক মালয়েশিয়াকে বেছে নিচ্ছেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান তৃতীয়৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘‘মালয়েশিয়া টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন না করায় অনেক বাংলাদেশি এই সুযোগ নিচ্ছেন৷’’

ছবি: AP

বৃহস্পতিবার  মালয়েশিয়ার পর্যটন ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী নাজরি আজিজ জানান, ‘‘মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম নামে বিদেশিদের আশ্রয় দেওয়ার বিশেষ প্রকল্পের আওতায় যারা সেখানে বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন, তাদের মধ্যে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি৷ যা তৃতীয় সর্বোচ্চ৷’’

মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম নিউ স্ট্রেইট টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘মোট ৩ হাজার ৫৪৬ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন৷ এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীন৷ দেশটির ৮ হাজার ৭১৪ ব্যক্তি মালয়েশিয়াকে সেকেন্ড হোম করেছেন৷ এর পরের অবস্থানে আছে জাপান– ৪ হাজার ২২৫ জন৷ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ৷’’

এই কর্মসূচির আওতায় ২০০২ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, অর্থাৎ দ্বিতীয় বাড়ি গড়ার অনুমতি পেয়েছেন ১২৬টি দেশের ৩৩ হাজার ৩০০ বিদেশি নাগরিক৷

নাজরি আরো বলেন, ‘‘সেকেন্ড হোম কর্মসূচির আওতায় অংশ নেওয়া মানুষরা স্থাবর সুবিধা ও রাজস্ব হিসাবে মোট এক হাজার ২৮০ কোটি মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ করেছে৷’’

‘সেকেন্ড হোম করতে যে টাকার প্রয়োজন হয়, তা বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে যায়নি’

This browser does not support the audio element.

মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমের এই আলোচনা এর আগেও বাংলাদেশে হয়েছে৷ বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদনও হয়েছে৷ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভির সাংবদিক (হেড অব ইনপুট) অখিল পোদ্দার সরেজমিন মালয়েশিয়া গিয়েও প্রতিবেদন করেছেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি দু'বছর আগে প্রতিবেদন করতে গিয়েছিলাম ৷ তখন এই সংখ্যা ছিল দেড় হাজারের মতো৷ মাত্র দু'বছরেই তা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে৷ আমি দেখেছি, ওখানে বাংলাদেশি রাজনীতিদিরাই বেশি সেকেন্ড হোম বানিয়েছেন৷ এর পরেই আছেন ব্যবসায়ীরা৷ আমি সেখানে নানা মহলের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি যে, সেকেন্ড হোম করতে যে টাকার প্রয়োজন হয়, তা বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে যায়নি৷’’

অখিল বলেন, ‘‘মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোমের জন্য ব্যবসায়ীদের অনেক সুবিধা দেয়৷ কেউ দেশের ‘আনরেষ্ট’ থেকে বাঁচতে, আবার কেউ তার সম্পদ সরাতে সেকেন্ড হোমের আশ্রয় নিয়েছেন৷ ওখানে একজন বাংলাদেশি ব্যক্তি গড়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা খরচ করলেই সেকেন্ড হোমের সুবিধা পান৷’’

তিনি বলেন, ‘‘মালয়েশিয়ায় এখন বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেশ কয়েকটি এলাকা গড়ে উঠেছে৷ সেখানকার অধিবাসীরা ফ্ল্যাট কিনে থাকছেন৷ আর ফ্ল্যাটের দাম কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়েও কম৷ বাংলা মার্কেট এবং শাহআলূ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশির বসবাস৷ তারা কেউ কেউ বাড়ি কিনেছেন, আবার কেউ কিনেছেন ফ্ল্যাট৷’’

অখিল আরো বলেন, ‘‘মালয়েশিয়ার শিক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাও বাংলাদেশিদের সেকেন্ড হোম বনানোর আরেকটি কারণ৷’’

‘মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোমের ব্যাপারে অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করে না’

This browser does not support the audio element.

এ নিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমদে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ঠিক কোন শ্রেণির লোক মালয়েশিয়াকে সেকেন্ড হোম বানাচ্ছেন সে ব্যাপারে কোনো গবেষণা নাই৷ তবে যারা এটা করছেন তারা সাধারণ লোক নন৷ তাদের অর্থ এবং ক্ষমতা আছে৷ তারা ব্যবসায়ী হতে পারেন৷ আর বাংলাদেশের অনেক রাজনীতিবিদই এখন ব্যবসায়ী৷ তারা কোনো ঝামেলা হলে সেটা সামলানোরও ক্ষমতা রাখেন৷’’

তিনি বলেন, ‘‘মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোমের ব্যাপারে অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করে না৷ বিনিয়োগের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করে না৷ বাংলাদেশে একটা ফ্ল্যাট কিনলে অর্থের উৎস জানাতে হয়৷ তাই বাংলাদেশে যাদের অবৈধ আয় আছে বা যারা অর্থের উৎস জানাতে অক্ষম, তারা মালয়েশিয়াকে সেকেন্ড হোম বানাচ্ছেন৷ আর হুন্ডির মাধ্যমে এসব অর্থ পাচার করছেন৷’’

ড. নাজনীন বলেন, ‘‘তবে কেউ কেউ আছেন যাঁরা বৈধভাবেও এটা করছেন৷ কিন্তু এতে অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে৷ দেশের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে৷ যা দেশে বিনিয়োগ হতে পারত, তা বিদেশে বিনিয়োগ হচ্ছে৷ অবৈধ টাকাও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ