শেষ হলো বিশ্বকাপ ২০১৪৷ তবে উন্মাদনা এখনো শেষ হয়নি৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এখনো চলছে কথার লড়াই৷ জার্মানিকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাই থাকছে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উদ্দেশে কটাক্ষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিজ্ঞাপন
প্রিয় দলের প্রতি অনুরাগ অবশ্য তাতে কমার নয়৷ সামহয়্যার ইন ব্লগে তানি তানিশা লিখেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ নিয়ে কিছু কথা৷''
তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমি সত্যি অনেক খুশি হয়েছি জার্মানি এই বিশ্বকাপে জয়ী হওয়ায়৷ তার একমাত্র কারণ হলো বাংলাদেশের কিছু মানুষের বাড়াবাড়ি রকম শুধু আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব৷'' তানিশার মতে, ‘‘আমাদের দেশের অনেকে ভুলেই গিয়েছে যে বিশ্বকাপ ফুটবলে এই দুই দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশও খেলে৷ তাঁদের জন্য আজ জার্মানির এই জয়টা জরুরি ছিল৷''
বিশ্বকাপের রঙে বাংলাদেশ
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের আসরকে সামনে রেখে ঢাকাসহ বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকা সেজেছে বর্নিল সাজে৷ আপনাদের জন্য এমনই কিছু ছবি তুলে এনেছেন মুস্তাফিজ মামুন৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিশ্বকাপের বর্নিল রূপ
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের আসরকে সামনে রেখে ঢাকাসহ বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকা সেজেছে বর্নিল সাজে৷ বাড়ির দেয়াল থেকে রাস্তা-ঘাট, দোকান পাট সবখানেই প্রিয় খেলোয়াড়, প্রিয় দলের পতাকার রং৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাড়ির দেয়াল অঙ্কন
কলতাবাজারের একটি বাড়ির বাইরের দেয়ালজুড়ে ফুটবলের এই ছবি বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
খেলোয়াড়ের প্রতীকী ছবি
পুরান ঢাকার কলতাবাজারের গলির ভেতরে একটি বাড়ির দেয়ালচিত্রে পাশাপাশি আর্জেন্টিনা ও জার্মানি এই দুই দেশের খেলোয়াড়ের প্রতীকী ছবি৷ ছবিটি যখন আঁকা হয়েছিল তখন কিন্তু এই দুই দলের ফাইনালে খেলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়নি৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিশ্বকাপ গলি
পুরান ঢাকার কলতাবাজারের এই গলির নাম এখন বিশ্বকাপ গলি৷ ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসরকে ঘিরে স্থানীয় তরুণ ফুটবলপ্রেমীরা পুরো এলাকা মুড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বকাপ ফুটবলের নানা চিত্র দিয়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
পতাকা বিক্রি
বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে জার্মানি আর আর্জেন্টিনা৷ তাই এই দুই দেশের পতাকা নিয়ে গুলিস্তানে ক্রেতার অপেক্ষায় পতাকা বিক্রেতা জামাল৷
ছবি: DW/M. Mamun
জাতীয় পতাকার সম্মান
বিশ্বকাপে ৩২টি দলে নেই বাংলাদেশ৷ কিন্তু অন্যান্য দলের পতাকার পাশাপাশি দেশের জাতীয় পতাকাকে সম্মান জানাতে ভোলেননি ফুটবল ভক্তরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
একনিষ্ঠ ভক্ত আমজাদ হোসেন
মাগুরা জেলার দরিদ্র কৃষক আমজাদ হোসেন ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনায় নিজের জমি বিক্রি করেছে, তৈরি করেছেন প্রিয় দল জার্মানির সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি পতাকা৷ এতে ব্যয় হয়েছে এক লাখেরও বেশি টাকা৷ ১৯৮৭ সালে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত এই কৃষক জার্মানি থেকে আনা ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেন৷ তারপর থেকেই তিনি দেশটির ফুটবল দলের একনিষ্ঠ ভক্ত৷
ছবি: Alok Bose
জার্মান দূতাবাসের সম্মাননা
জার্মানি দলের সমর্থনে দীর্ঘ এই পতাকা তৈরির জন্য আমজাদ হোসেন জার্মান জাতীয় ফুটবল দলের অফিসিয়াল ফ্যানক্লাবের আজীবন সদস্যপদ পাচ্ছেন৷ ঢাকার জার্মান দূতাবাস তাঁকে এ সম্মান জানাচ্ছে৷
ছবি: Alok Bose
ভক্তরা কাঁপছেন বিশ্বকাপ জ্বরে
ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে ফুটবল নিয়ে আনন্দ করছে এক কিশোর৷ ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে সারাদেশের ফুটবল ভক্তরা কাঁপছেন বিশ্বকাপ জ্বরে৷
ছবি: DW/M. Mamun
কার্গোতে কসরত
বুড়িগঙ্গা নদীতে চলমান বালুবাহী কার্গো শিপের ফুটবল নিয়ে কসরত করছে দুই কিশোর৷
ছবি: DW/M. Mamun
উড়ছে আর্জেন্টিনা আর জার্মানির পতাকা
ঢাকার পাশের এলাকা কেরাণীগঞ্জের বাড়িগুলোর ছাদে ছাদে উড়ছে আর্জেন্টিনা আর জার্মানির পতাকা৷ ফাইনালে জার্মানির কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর এ এলাকার বেশিরভাগ ব্রাজিল ভক্ত ঐ দেশের পতাকাটা নামিয়ে ফেলেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
ক্ষুদে ভক্ত
এই খুদে ফুটবল প্রেমী আর্জেন্টিনা দলের ভক্ত৷ কলতাবাজারের বিশ্বকাপ গলির দেয়ালের পাশে দাঁড়ানো এই শিশুটির মত বাংলাদেশে ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাও কম নয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঝুলছে ফুটবল
এই ছবিটিও কলতাবাজারের৷ বিশ্বকাপ গলির উপরে ভক্তরা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বেশ কিছু ফুটবল৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভক্তদের উচ্ছ্বাস
কলতাবাজারের এই গলিটিকে সবাই এখন চেনে বিশ্বকাপ গলি নামে৷ এখানে দেখতে পাচ্ছেন জার্মান ফুটবল দলের ভক্তদের উচ্ছ্বাস৷ পুরান ঢাকার এই জায়গাটিতে প্রায়ই জড়ো হন ফুটবল ভক্তরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
14 ছবি1 | 14
উগ্র সমর্থকদের উগ্র আচরণের উল্লেখও আছে তাঁর লেখায়৷ তানিশা এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘‘কথায় কথায় আমাদের মাঝে ভালো খেলোয়াড়দের গালি দেয়ার একটা প্রবণতা আছে৷ আমার এক বন্ধু বলল ‘মেসি আজ কি খেলল? একটাও গোল দিতে পারেনাই'৷ আমার কথা হচ্ছে, তাঁরা তাঁদের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেন খেলার মাঠে৷ আমরা ঘরে বসে খেলা দেখি শুধু৷ আমাদের যদি এই খেলার মাঠে ছেড়ে দেয়া হয় তখন আসলেই বুঝব কতো ল্যাঙে কতো গোল করা যায়৷ একটা খেলায় হারজিত থাকবেই৷ তার জন্য কাউকে গালি দেয়া বা খুশিতে আতশবাজি পোড়ানোর কিছু নেই৷''
শেষে আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের সমর্থকদের প্রতি কিছু প্রশ্নও রেখেছেন তানিশা৷ প্রশ্নগুলো হলো, ‘‘১) কেন আপনি আর্জেন্টিনা/ব্রাজিলের সমর্থক?
২) কেন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এই দুই দলের সমর্থন বেশি?
৩) আর্জেন্টিনার সমর্থকদের কাছে ব্রাজিল সমর্থক আর ব্রাজিল সমর্থকদের কাছে আর্জেন্টিনা সমর্থকরা কেন শত্রু?
৪) আপনি কি আপনার সমর্থিত দলের সকল খেলোয়াড়, কোচ এবং সেই দেশের রাজধানী শহরের নাম জানেন? সেই দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নাম জানেন? জানলে লিখে জানান৷''
তানিশার প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর অনেকেই হয়তো দিতে পারবেন না৷ ভক্ত-সমর্থকদের আবেগ জ্ঞানচর্চার পথ ধরে সবসময় হাঁটেনা৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমর্থনের ভিত্তিটা হয় আবেগ৷ সেই আবেগ হাসান রাজিবুলকে যেন বেশ আর্জেন্টিনাবিরোধী করেছে৷ সামহয়্যারইন ব্লগে তাঁর লেখার শিরোনাম তাই, ‘‘টানিয়া, ধরিয়া, মারিয়া ও রেকর্ড সংখ্যক হলুদ কার্ড খাইয়াও হারিয়া গেল আমাদের আর্জেন্টিনা৷''