1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেসবুকে নজরদারি

আরাফাতুল ইসলাম১০ অক্টোবর ২০১৫

বাংলাদেশে ফেসবুকের ব্যবহার বাড়ছে৷ বিশ্বের আরো অনেক দেশের মতো এ দেশেও সামাজিক যোগাযোগের এ সাইটটি হয়ে উঠছে জীবনের অপরিহার্য অংশ৷ কিন্তু ফেসবুকে নজর রাখার ব্যাপারটি সরকার কি ঠিকভাবে করতে পারছে?

Bangladesch Facebook
ছবি: Getty Images/AFP/M.U. Zaman

গত কয়েকদিন আগের ঘটনা৷ ‘ইসলাম বিষয়ক' এক পাতা থেকে একটি ছবি প্রকাশ করা হলো৷ ছবিটা এমন, একটি মেয়ে একটি পবিত্র ধর্মগ্রন্থের উপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ শুধু তার পা দু'টো আর ধর্মগ্রন্থটি দেখা যাচ্ছে৷ ছবির ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক মেয়ে এভাবে ধর্ম অবমাননা করছে৷

ছবিটি আমি পরীক্ষা করে দেখেছি৷ ছবিটা নকল৷ আর এমন ছবির উদ্দেশ্য যে সৎ নয়, তা বলাই বাহুল্য৷ ছবিটি সহিংসতা ছড়াতে পারে, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের একটা উপলক্ষ্য হতে পারে৷ তাই ফেসবুকে ছবিটি সম্পর্কে আমি রিপোর্ট করেছিলাম তাদের প্রতিক্রিয়া দেখতে৷

ফেসবুক ছবিটি সরিয়ে নেয়নি৷ প্রতিষ্ঠানটি মনে করে না, এটা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াতে পারে, যা বাংলাদেশের মতো দেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার কারণ হতে পারে৷ আমার মনে হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে এত কিছু বোঝা সম্ভব নয়৷ কিংবা বাংলাদেশের এরকম ইস্যু তাদের কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ এমনটা মনে হওয়ার কারণ আছে৷ জার্মানি কিছু দিন আগেই ফেসবুককে একহাত নিয়েছিল৷ কেননা, যেসব বিষয় জার্মান সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে, যা নিয়ে কথা বলা, যার পক্ষ নেয়া জার্মানিতে নিষিদ্ধ, সেসব বিষয়ের প্রতি ফেসবুকের উদাসীনতা ছিল৷ মানুষ রিপোর্ট করলেও ফেসবুকের সাড়া ছিল দায়সারা গোছের৷

জার্মান সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর ফেসবুক আরো সক্রিয় হয়েছে৷ তাদের মডারেটরের সংখ্যা বাড়িয়েছে৷ সম্প্রতি ভারত সরকারও ফেসবুকের সঙ্গে সম্পর্কটা ঝালিয়ে নিয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফেসবুক পরিদর্শন থেকে সেটা পরিষ্কার৷

বাংলাদেশের সঙ্গে ফেসবুকের সম্পর্কটা স্বচ্ছ নয়৷ বাংলাদেশের টেলযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি) কি সামাজিক যোগাযোগের এই সাইটটির সঙ্গে কোনোরকম সরাসরি যোগাযোগ রাখছে? সরকারের সঙ্গে সম্পর্কটা কেমন? এ সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কঠিন৷ ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ কিছুদিন আগে বিটিআরসি-র সঙ্গে এসব নিয়ে যোগাযোগ করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু সাড়া মেলেনি৷

এক ব্লগার, যিনি ২০১৩ সালে জেলে গিয়েছিলেন লেখালেখির কারণে, আমাকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পর্যবেক্ষণের বিষয়টি অনেকটা মানুষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য নির্ভর৷ কেউ হয়ত প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কিছু লিখলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিচিতরা বা শত্রুরা তা পুলিশকে জানালে, পুলিশ পদক্ষেপ নেয়৷ আর এভাবেই ‘৫৭ ধারার' আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেক মানুষ৷ কিন্তু প্রকৃত নজরদারি, পর্যবেক্ষণ বলতে যা বোঝায়, তা সম্ভবত নেই৷ থাকলে যে ছবি নিয়ে আমি ফেসবুকে রিপোর্ট করেছি, সে ছবি সরিয়ে নিতে সরকারের, পুলিশের উদ্যোগী হওয়ার কথা৷ অন্তত তারা যদি সংখ্যালঘুদের সত্যিকার অর্থেই নিরাপদ রাখতে চান৷

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সংখ্যা ৯১ লাখ৷ এত বিশাল জনগোষ্ঠী যেখানে আছে, সেখানে নজর রাখার ব্যাপার আছে৷ তবে সেই নজরদারি করতে হবে কৌশলে, বুদ্ধি খাটিয়ে এবং অবশ্যই ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে৷ এর-ওর কাছ থেকে শুনে গ্রেপ্তার কোনো সমাধান নয়৷

আপনি কি আরাফাতুল ইসলামের সঙ্গে একমত? জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ