1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ম, কোভিড-১৯ ও ধরিত্রীর মুক্তি

৪ মে ২০২০

ধর্মীয় বিশ্বাস করোনা মোকাবিলায় ও পরিবেশ সুরক্ষায় রাখতে পারে বিরাট ভূমিকা, মনে করেন জাতিসংঘের পরিবেশ প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসেন ও রিলিজিয়ন্স ফর পিসের মহাপরিচালক আজ্জা কারাম৷

Brandrodung Myanmar
ছবি: picture-alliance/dpa

বিশ্বাস মানুষকে আধ্যাত্মিক ও ব্যবহারিক দুইভাবেই সহযোগিতা করে, বিশেষ করে সংকটের সময়৷ ঠিক এখন যেমনটি দেখছি যে, চার্চ, মসজিদ, মন্দির ও সারাবিশ্বের অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সাহায্য, খাবার, আশ্রয়, অর্থ ও চিকিৎসাসেবা নিয়ে এগিয়ে এসেছে৷ যখন লাখ লাখ মানুষ করোনা মহামারীর স্বাস্থ্যগত, অর্থনৈতিক ও মানসিক পরিণতির শিকার হচ্ছেন, তখন এমন সহাবস্থান খুবই জরুরি৷  

তবে ধর্মগুলো ও তাদের নেতাদের আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে: এর চেয়েও ভয়ঙ্কর সংকট থেকে তাদের মানুষের ওপর তাদের প্রভাব খাটিয়ে পৃথিবী নামক গ্রহটিকে বাঁচাতে পারেন৷  

দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ায় ধরিত্রীর সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে হবে বলে মনে করেন ইনগার অ্যান্ডারসেনছবি: Getty Images/M. Ngan

আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সেখানে বসবাসরত প্রাণি ও তাদের আবাসস্থল ধংস করার কারণে আজ কোভিড-১৯ ও পূর্ববর্তী আরো অনেক রোগ পশু থেকে মানুষের শরীরে এসেছে৷ এই মহামারী কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল, বহু বছর পর জানুয়ারি মাসে এত গরম অথবা আফ্রিকায় পঙ্গপালের এমন হানা- এর অর্থ ধরিত্রী আমাদের কাছে জরুরি বার্তা দিচ্ছে: আমরা আমাদের নিরাপদ রাখতে পারব না যদি না আমরা প্রকৃতিকে নিরাপদ রাখি৷

এই ডাকে সারা দেয়াই হবে এখন বুদ্ধিমত্তার পরিচয়৷ কী করে ধরিত্রীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঠিক করা যায়, সেটাই হওয়া উচিত কোভিড-১৯ এর প্রতি দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া৷ আর এই সম্পর্ক মেরামত করতে হবে জীবনধারণের প্রতিটি ক্ষেত্রে৷ এর অর্থ এই প্রতিক্রিয়ার নানা দিক রয়েছে৷ 

যেসব অর্থনৈতিক প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে তাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবেশবান্ধব ভবন, অবকাঠামো ও যানবাহন যুক্ত করতে হবে৷

বিশ্বজুড়ে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রজাতির পাখি, স্তন্যপায়ী ও উভচর প্রাণীর কেনাবেচা হয় বিশ্বের বাজারগুলোতে, জীববৈচিত্র্যের জন্য যা সবচেয়ে বড় হুমকিছবি: AFP/G. Ginting

আমাদের উৎপাদন ও ভোগের ধরন পালটাতে হবে: কম কেনা, কম অপচয় ও পুণরায় ব্যবহার- যা লকডাউনের সময় অনেকেই করেছেন৷ আমাদের বনগুলোতে পুণরায় বনায়ন করতে হবে এবং সংরক্ষিত অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করতে হবে৷ আর বন্যপ্রাণী ও বনজসম্পদের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে এবং বৈধ বাণিজ্য পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে হবে৷

ধর্মীয় গুরুগণ ও তাদের অনুসারীদের ভূমিকা এই পরিবর্তন আনয়নে খুব গুরত্বপূর্ণ৷ কারণ:

তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যতম প্রাচীন ও সবচেয়ে পরম্পরাগত এবং কোটি কোটি মানুষকে গুরত্বপূর্ণ সেবা দিয়ে যাচ্ছে৷ এ কারণে শুধু স্বাভাবিক সময়েই নয়, জরুরি অবস্থাতেও তারা গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার৷ 

ধর্মীয় নেতা ও প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবীর প্রতি মানুষের আচরণ বদলাতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন আজ্জা কারাম ছবি: Christian Flemming

ধর্মীয় সংস্থাগুলোর অধীনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে৷ তাই তারা মানুষের স্বাস্থ্য ও পৃথিবীর মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পারে৷ পুরোবিশ্বে তাদের অধীনে অসংখ্য চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে যেগুলো চলমান মহামারীর বিরুদ্ধে শুধু লড়াই করছে তা নয়, স্বাভাবিকভাবে পৌঁছানো কঠিন এমন জনসমাজেও তারা সেবা দিতে পারে৷

যেমন, এমন একটি উদ্যোগ হল ইন্টারফেইথ রেইনফরেস্ট ইনিশিয়েটিভ, যেখানে জাতিসংঘ পরিবেশ প্রকল্প (ইউএনইপি) ও রিলিজিয়ন্স ফর পিস একসঙ্গে কাজ করছে৷ 

এমন উদ্যোগ শুরুর জন্য ভালো, কিন্তু আমরা আরো অনেক কিছু করতে পারি৷

আসল ব্যাপার হল, মানুষের ঔদ্ধত্য তার ঘর ধংস করছে, যেটা অনেকেই বিশ্বাস করেন সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য তৈরি করেছেন৷ ধর্মীয় নেতারা একটি স্বাস্থ্যকর পৃথিবীর জন্য তাদের প্রভাব কাজে লাগাতে পারেন- একইসঙ্গে অনুসারীদের এসব ডাকে সারা দিয়ে সব ধর্মে সৃষ্টিকে রক্ষা করার যে বাণী ও ঐতিহ্য রয়েছে, তা মেনে চলা উচিত৷

কোভিড-১৯ এর প্রত্যুত্তর হল বিশ্বাসের ক্ষমতা৷ এখন আমাদের ও পৃথিবীর সব প্রজাতির প্রাণির জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যত গড়তে এই ক্ষমতা কাজে লাগাতে হবে৷ 

ইনগার অ্যান্ডারসেন, আজ্জা কারাম/জেডএ 

ইনগার অ্যান্ডারসেন জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল ও ইউএনইপির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর৷ আজ্জা কারাম বিশ্বের ধর্ম ও বিশ্বাসগুলো নিয়ে সংস্থা রিলিজিয়ন্স ফর পিসের জেনারেল সেক্রেটারি ও আমস্টারডামে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ