1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্মীয় উৎসব

৮ আগস্ট ২০১৩

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা৷ তবে ঈদের আনন্দের মাঝেও দুই ব্লগার তুলে ধরেছেন কিছু বাস্তব চিত্র৷ সামহোয়্যার ইন ব্লগে তাই উঠে এসেছে ঈদের বাজারের ভোগান্তি৷ আমার ব্লগে আরেক ব্লগার জানতে চেয়েছেন, ‘‘ধর্মীয় ঊৎসবগুলোর ভবিষ্যত কী?''

ছবি: FARJANA K. GODHULY/AFP/Getty Images

ঈদ উপলক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও সবাই এখন শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন৷ তবে সামহোয়্যার ইন ব্লগে ‘অন্যমনস্ক শরৎ' জানিয়েছেন ঈদের কেনাকাটার সময়ের এক তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা, ‘‘মা-বোনকে নিয়ে শপিংয়ে গিয়েছি৷ একদম ফেরার সময় শেষ দোকানটায় ঢোকা৷ এমন সময় খেয়াল করলাম সস্তা মেকাপ দিয়ে চারজন নারী মেয়েদের কেনাকাটার অংশে ঢুকেছে৷ এবং তারা একভাবে আমাকে ঠেলে দিচ্ছেন৷ আমি স্বভাবতই মাকে মাঝখানে রেখে সরে আসছি৷ প্রথমে ভেবেছিলাম গার্মেন্টস কর্মী, ঈদের সাজুগুজু করে শপিংয়ে এসেছেন এবং মধ্যবিত্ত....৷'' ‘অন্যমনস্ক শরৎ' পরে বুঝেছেন ওই চার নারী আসলে সংঘবদ্ধ এক চক্রের সদস্য, যাদের কাজ ভিড়ে ঢুকে এটা-ওটা বাগিয়ে নেয়া৷

এদিকে আমার ব্লগে ‘সুশুপ্ত পাঠক' ঈদ প্রসঙ্গে লিখেছেন বেশ বড় একটি লেখা৷ শিরোনাম, ‘ধর্মীয় উৎসবের ভবিষ্যৎ'৷ মূলত ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উৎসব ঈদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি তাঁর লেখা৷ শুরুতেই ‘সুশুপ্ত পাঠক' লিখেছেন, ‘‘ধর্মীয় উৎসবগুলোর সঙ্গে ধর্মের সম্পর্কগুলো বাদ দিলে যে সর্বজনীন চেহারা ফুটে উঠে তা খুবই উৎসাহ ব্যঞ্জক৷ অসাম্প্রদায়িক চেতনাধারী মানুষের কথা ভেবে এবং তাদের সংখ্যাবৃদ্ধির একটা চিত্র কল্পনা করে স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তিবোধ করি৷ ইফতারের বাজারে প্রচুর হিন্দু সম্প্রদায়কে ইফতার কিনতে দেখেছি৷ দূর্গা পূজার লাড্ডু অনেক মুসলমান বাড়ি কিনে নিয়ে যায় উৎসব উপলক্ষ্য করেই৷ ছোটবেলা থেকে আমাদের বাড়িতে দেখে আসছি দূর্গা পূজার সময়ে লাড্ডু কেনা হয়৷....পূজা দেখতে যেতে আমাদের বাড়িতে কখনো কোনোদিন বাধা দেয়া হয়নি৷ অনেক মুসলিম পরিবারেও এই কথা সত্য৷ ঈদের দিন বাংলাদেশের অধিকাংশ হিন্দুর ঘরে নিদেনপক্ষে সকালবেলা একটু সেমাই রান্না করা হয়৷ অনেকের বাসায় দুপুরে রীতিমতো পোলাও-মাংস রান্না করা হয়৷ দূর্গা পূজার মন্ডপে আমার হিন্দু বন্ধুর সঙ্গে আমার মুসলিম বন্ধু একসঙ্গে নাচানাচি করেছে৷ সংখ্যায় কম হলেও এগুলোই ধর্মীয় উৎসবের সর্বজনীন হয়ে উঠার গল্প৷''

‘‘ মানুষে মানুষে মেলবন্ধনে পৃথিবীর ঘাতকদের স্বস্তিবোধ করার কথাও নয়’’ছবি: picture-alliance/dpa

তারপরই আমার ব্লগ-এর ব্লগার গিয়েছেন বিষয়ের আরো গভীরে৷ সমাজের একটা অংশ যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে সবসময় তৎপর সেই বিষয়টিও তুলে ধরেছেন তিনি, ‘‘....কিন্তু এসব তো সবার ভালো লাগার কথা নয়৷ মানুষে মানুষে মেলবন্ধনে পৃথিবীর ঘাতকদের স্বস্তিবোধ করার কথাও নয়৷ শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিনের মিছিলে কিংবা মহরমের তাজিয়া মিছিলে রাস্তার পাশ থেকে দাঁড়িয়ে দেখার মানুষ দ্রুত কমে যাচ্ছে৷ এগুলো এখন চোখের পাপ! দূগা পূজায় মন্ডপে নাচানাচি দূরে থাক, সেখানে সামাজিকভাবে নিমন্ত্রণ রক্ষা করাও ধর্মসম্মত নয় আজকাল৷ হাদিস থেকে কোরআন থেকে নানা মাসালা বের করে এনে মসজিদ থেকে বয়ানের নামে বিষ ছাড়া হচ্ছে৷ সব ধর্মের মানুষ মিলে বছরে নির্দিষ্ট কোনো উৎসবে যোগ দেয়া দিনকে দিন সুদূর পরাহত হয়ে উঠছে৷''

তারপর ‘সুশুপ্ত পাঠক' চোখ রেখেছেন উপমহাদেশের বাইরে৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশে অন্য ধর্মগুলোর উৎসবের চেহারা দ্রুত বদলে যাবার বিষয়টি উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘‘....‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার' – বলে একটা প্রচারণা চালানোর খুব চেষ্টা চলছে আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার মহল থেকে, কিন্তু বিপরীত প্রচারণার তোড়ে সেটা খুবই ক্ষীণ স্রোত ধারায় বয়ে চলেছে৷ মাঝখানে বাঁধ দিয়ে সে ধারাকে শুকিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টাও হচ্ছে৷ আগামীদিনে তাই ঈদকে অনেক বেশি ধর্মীয় লেবাসে জড়ানো হবে৷ যাতে অন্য ধর্মমতের লোক স্বাচ্ছন্দবোধ না করে৷ বর্হিবিশ্বে প্রবাসী মুসলিমদের খ্রিস্টমাসে যোগ দেয়ার প্রবণতা কমে যাবে অস্বাভাবিক হারে৷ আর পূজা তো শিরক! তাই বেদাত, কুফরি, শিরক ইত্যাদির ভয়ে মুসলিম মানস কুঁকড়ে যাবে সর্বজনীন উৎসবে যোগ দিতে৷ মহরমের তাজিয়া মিছিলেই যেখানে আজকের সুন্নি মুসলিমের কাছে বেদাত সেখানে দূর্গা পূজা, খ্রিস্টমাসসহ অন্যান্য উৎসব তো আরো অমসৃণ দূর্গম পথ....৷''

‘সুশান্ত পাঠক' শেষ করেছেন একটা প্রশ্ন আর বড় কিছু আশঙ্কার কথা লিখে, ‘‘ধর্মীয় উৎসবগুলোর ভবিষ্যত তাহলে কি? পাকিস্তানে ঈদের নামাজের জামাতে বোমা হামলায় প্রাণ হারায় মানুষ৷....এই রকম পরিস্থিতিতে কোনো উৎসব আনন্দের হয় না৷ এসব অতিরিক্ত ধর্মীয়করণের ফল৷ মসজিদে ঈদের নামাজের জামাতে বোমা হামলা কোনো ইহুদি-খ্রিষ্টান করে না৷ দূর্গা পূজার মন্ডপে র‌্যাব-পুলিশের কঠোর পাহারা ধর্মীয় উৎসবের ভবিষ্যত আগামীদিনে আতঙ্কের মধ্য দিয়েই শুরু হবে বলে মনে হচ্ছে৷ ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার' – এই মন্ত্রে দীক্ষিত মানবতাই পারে ধর্মীয় উৎসবগুলোর ভবিষ্যত সর্বজনীন আর উৎসবমুখোর করে তুলতে৷ আমরা সেই মন্ত্রে দীক্ষা নিবো কিনা সেটা আমাদেরই ঠিক করতে হবে৷''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ