একাধিক সাধিকা ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ভারতের স্বঘোষিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিমকে কুড়ি বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর বিশেষ আদালত৷
বিজ্ঞাপন
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মোড়া হরিয়ানা রাজ্যের রোহতকের সুনারিয়া জেলে ‘ডেরা সাচ্চা সৌদা' নামের এক ধর্মীয় সংগঠনের প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে তাঁর আশ্রমের একাধিক সেবিকাকে ধর্যণ করার অপরাধের দুটি মামলায় দশ বছর করে মোট কুড়ি বছরের কারাদন্ড দেন কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই)-এর বিশেষ আদালতের বিচারক জগদীপ সিং৷
নিরাপত্তার কারণে পাঁচকুলা থেকে হেলিকপ্টারে বিচারককে নিয়ে যাওয়া হয় ঐ জেল চত্বরে৷ জেলের লাইব্রেরি রুমে সাজা ঘোষণার আগে আরেক প্রস্থ সংক্ষিপ্ত সওয়াল-জবাব হয় আসামি পক্ষের এবং সরকার পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে৷ তারপর বিচারক সাজা ঘোষণা করলে ডেরা প্রধান কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং মার্জনা ভিক্ষা করেন৷ বিচারক সেকথায় কান না দেওয়ায় রাম রহিম জেলের বিচারকক্ষে বসে থাকেন৷ তখন কারারক্ষীরা জোর করে তাকে তুলে নিয়ে যায়৷ জেলের বাইরে ত্রি-স্তরীয় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনি৷ রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড৷
কে এই রাম রহিম!
ভারতের পঞ্চকুলায় বিতর্কিত ধর্মীয় নেতা গুরমিত রাম রহিমের সমর্থকেরা সহিংস হয়ে উঠেছিল৷ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল তারা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Topgyal
‘রকস্টার বাবা’
শুরুতে এই নামেই পরিচিত ছিলেন রাম রহিম৷ উজ্জ্বল, রংবেরংয়ের কাপড়, এবং গহনা ছিল তার পছন্দের জিনিস৷ স্বঘোষিত এই ‘ঈশ্বরের দূত’ বেশ কয়েকটি সিনেমা প্রযোজনা করেছেন, কয়েকটিতে অভিনয়ও করেছেন৷ তবে তার অর্থ ও সম্পদের উৎস এখনও অজানা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Topgyal
সমাজকর্মী সাধু
শুরুতে নিজেকে ‘সামাজিক সাধু’ এবং ‘মানবপ্রেমী’ বলে দাবি করেন রাম রহিম৷ তার অনুসারীদের উদ্যোগে বেশকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং রক্তদান কর্মসূচি আয়োজন হয়৷ ২০১০ সালে একটি গণবিয়ের আয়োজনের করা হয়, যেখানে রাম রহিমের ১০০ অনুসারী স্বেচ্ছায় সাবেক যৌনকর্মীদের বিয়ে করেন৷ তার এ ধরনের কাজ বিপুল পরিমাণ অনুসারীদের আকৃষ্ট করে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Topgyal
অপরাধমূলক অভিযোগ
নিজের প্রযোজিত ও অভিনীত একটি চলচ্চিত্রে গোবিন্দ সিং নামে এক শিখ গুরুর বেশ ধরায় শিখ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়৷ পরবর্তীতে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে হয় রাম রহিমকে৷ তবে তার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব অপরাধের অভিযোগও রয়েছে৷ ২০০২ সালে একজন সাংবাদিক হত্যার জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে৷ তবে ২০০২ সালে নিজের দুই নারী অনুসারীকে ধর্ষণের অভিযোগেই শেষ পর্যন্ত সাজা হচ্ছে রাম রহিমের৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/R. Prakash
রায়ের পর সহিংসতা
রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে বলে হাই কোর্টের দেয়া রায়ের পরপরই পঞ্চকুলা, চণ্ডীগড়, দিল্লি এবং সিরসা শহরে বিক্ষোভ শুরু করে তার সমর্থকরা৷ সহিংসতার শুরু হয় পঞ্চকুলায়৷ সেখানে এক লাখেরও বেশি রাম রহিম সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.Qadri
অনেকের মৃত্যু
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী সহিংসতা শুরু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিভিন্ন শহর মিলিয়ে অন্তত ৩১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ তবে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে৷ পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Sharma
বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ
পঞ্চকুলা, সিরসা, সঙ্গরুর এবং মোগা জেলায় অনির্দিষ্টকালের কালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে৷ দিল্লিতেও একটি ট্রেনের কয়েকটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা৷
ছবি: Getty Images/M.Sharma
প্রশাসনিক ব্যর্থতা
হরিয়ানা এবং পাঞ্জাব সরকার আগে থেকেই পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরেছিল৷ কিন্তু তারপরও দুই রাজ্যই হাজার হাজার রাম রহিম সমর্থককে পঞ্চকুলায় প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছিল৷ আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে এ অবস্থা সৃষ্টি হতো না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Qadri
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
সহিংসতা চলাকালে বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে চণ্ডীগড়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল৷ ভারতীয় রেলওয়ের দুই শতাধিক ট্রেন বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Pal Singh
8 ছবি1 | 8
গুরমিত রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ১৯৯৯ সালে৷ ধর্ষিতা দু'জন সেবিকা বা সাধিকা গোপনে চিঠি লিখে সরকারকে সেকথা জানিয়েছিলেন৷ সেই চিঠির ভিত্তিতে সিবিআই ২০০২ সালে মামলা দায়ের করে ডেরা প্রধানের বিরুদ্ধে৷ সেই মামলায় তিনি গত শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত হন৷ সোমবার, ২৮শে অগাস্ট তার সাজা ঘোষণা করা হলো৷
স্বঘোষিত এই ধর্মগুরু রাম রহিমের বর্ণময় চরিত্রের রয়েছে নানা রূপ৷ একদিকে সাধু পুরুষ, অন্যদিকে স্পোর্টসম্যান, অভিনেতা, চিত্র পরিচালক, সুরকার, লেখক, সমাজকর্মী এবং সবশেষে ‘ডন'৷ সাধিকাদের সঙ্গে ব্যাভিচারে লিপ্ত থাকার একাধিক অভিযোগ সত্বেও কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেতো না৷ বছর ষোল আগে এক সাংবাদিক এ বিষয়ে মুখ খোলাতে তাঁকে খুন করা হয়৷
এত অভিযোগের পরেও রাম রহিমের ভক্ত ও অনুগামীর সংখ্যা কয়েক কোটি৷ এ এক অদ্ভুত বৈপরীত্য৷ কেউ কেউ মনে করেন, অনেকে তার কাছে উপকৃতও হয়েছে৷ হরিয়ানার সিরসায় ৭০০ একর জমি নিয়ে ডেরা সাচ্চা সৌদার বিশাল আশ্রম৷ এটাই ডেরার সদর দপ্তর৷ এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আরও আশ্রম আছে৷ কোটি কোটি টাকা কথিত আশ্রমের খাজাঞ্চিখানায়৷ জনশ্রুতি আছে, বহু রাজনৈতিক নেতাই নাকি তার আশীর্বাদধন্য৷
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
নারী স্বাধীনতা, নারী আন্দোলন, নারী অধিকার নিয়ে সর্বত্র আলোচনা, সমালোচনা, বক্তৃতা, অন্যদিকে বেড়ে চলেছে ধর্ষণের সংখ্যা৷ কিন্তু কেন? এর জন্য কারা দায়ী, কী করে ধর্ষণ কমিয়ে আনা সম্ভব? বা ধর্ষিতা নারীদের কী-ই বা করা উচিত?
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অহরহ৷ তার ওপর পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধের যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, সেটাও যথার্থ নয়৷ এছাড়া বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশ নাকি জীবনের যে কোনো সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷
ছবি: Fotolia/DW
উন্নত বিশ্বের নারীরাও রেহাই পান না
ধর্ষণ শব্দটি শুনলেই মনে হয় এ ধরণের অপরাধ হয়ে থাকে শুধু অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে৷ আসলে কিন্তু মোটেই তা নয়৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ৩৩ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়৷ এমনকি জার্মানির মতো উন্নত দেশের নারীরাও যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷
ছবি: Fotolia/detailblick
ধর্ষিতা নারীরা জানাতে ভয় পান
জার্মানিতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা ধর্ষিত নারীদের সঠিক পদ্ধতিতে ‘মেডিকেল টেস্ট’-এর ব্যবস্থা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত স্ত্রী বিশেষজ্ঞ ডা. সোনিয়া পিলস বলেন, ‘‘ধর্ষণের শিকার নারী লজ্জায় এবং আতঙ্কে থাকেন৷ তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে সে অভিজ্ঞতা বা ধর্ষক সম্পর্কে তথ্য জানাতে ভয় পান, কুণ্ঠা বোধ করেন৷ অনেকদিন লেগে যায় ধর্ষণের কথা কাউকে বলতে৷
ছবি: detailblick/Fotolia
ধর্ষককে ধরার জন্য দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষা
ধর্ষণের পর নারীদের কী করণীয় – এ বিষয়ে জার্মানির ধর্ষণ বিষয়ক নির্দেশিকায় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ যেমন ধর্ষণের পর একা না থেকে কারো সাথে কথা বলা৷ গোসল, খাওয়া, ধূমপান, বাথরুমে যাওয়ার আগে, অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে না যাবার আগে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো৷ এ পরীক্ষা করালে ধর্ষক কোনো অসুখ বা এইচআইভি-তে আক্রান্ত ছিল কিনা, তা জানা সম্ভব৷ নারীর শরীরে নখের আচড় বা খামচি থাকলে ধর্ষকের চিহ্ন সহজেই পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/M. Ruettinger
যাঁরা ধর্ষণের শিকার, তাঁদের জন্য জরুরি বিভাগ
ধর্ষক যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, অর্থাৎ অন্তর্বাস, প্যাড এ সব তুলে রাখুন৷ ছবিও তুলে রাখতে পারেন৷ নিজেকে দোষী ভাববেন না, কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে – সেই অপরাধী, আপনি নন৷ জার্মানির বেশ কয়েকটি শহরের হাসপাতালে যৌন নির্যাতন বিষয়ক আলাদা জরুরি বিভাগ রয়েছে৷ তাছাড়া ধর্ষণ সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে রয়েছে ‘গেভাল্ট গেগেন ফ্রাউয়েন’, যেখানে ২৪ ঘণ্টাই টেলিফোন করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্রুপ থেরাপি
যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সমাধানের জন্য জার্মানিতে রয়েছে গ্রুপ থেরাপি, যার সাহায্যে নারীরা আবার সমাজে সহজভাবে মিশতে পারেন এবং তাঁদের জীবনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি সহজে ভুলে যেতে পারেন৷
ছবি: dpa
সবচেয়ে বেশি যৌন অপরাধ হয় বাড়িতেই
ভারতের কোথাও না কোথাও প্রতি ২২ মিনিটে একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে৷ তাই আদালতের নির্দেশে ভারতের পুলিশ বিভাগ এক সমীক্ষা চালিয়েছিল দিল্লির ৪৪টি এলাকায়৷ চলতি বছরের গত আট মাসে ২,২৭৮টি ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং যৌন অপরাধের তদন্তের ফলাফলে দেখে গেছে: ১,৩৮০টি ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা হলেন পরিবারের লোকজন এবং পরিচিতজনেরা৷ অর্থাৎ নিজের বাড়িতেও মেয়েরা নিরাপদ নয়!
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
সঠিক বিচার চাই
২০১৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লিতে গণধর্ষণ ঘটনার পর, ভারতে ঘটা করে বিচার বিভাগীয় কমিশন বসিয়ে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ দমনে আইন-কানুন ঢেলে সাজানো হয়৷ শাস্তির বিধান আরো কঠোর করা হয়৷ কিন্তু তাতে যৌন অপরাধের সংখ্যা না কমে বরং বেড়েছে৷
ছবি: picture alliance/abaca
বাংলাদেশে ধর্ষণের শিকার
বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১১ সালে ৬২০ জন, ২০১২ সালে ৮৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৭১৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ মাত্র ছ’মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি এবং এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮২ জন৷ তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণ করে ধর্ষণ এবং পরে হত্যার ঘটনাও অনেক বেড়েছে৷
ছবি: DW
নারীর পোশাকই কি ধর্ষণের জন্য দায়ী?
বাংলাদেশের একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশের নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেপরোয়াভাবে, বেপর্দায় চলাফেলার কারণে ধর্ষণের শিকার হন৷’’ পুলিশের কর্মকর্তার দাবি, ধর্ষণের দায় প্রধানত নারীদের৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘বখাটে ছেলেরা তো ঘোরাফেরা করবেই৷’’ এ কথা শুধু পুলিশ কর্মকর্তার নয়, ভারত-বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাই এরকম৷ ধর্ষণ বন্ধ করতে এই মধ্যযুগীয় চিন্তা, চেতনার পরিবর্তন প্রয়োজন৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Uz Zaman
ছোট বেলা থেকে সচেতন করতে হবে
ধর্ষণ সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে সঠিক ধারণা দিলে স্বাভাবিকভাবে ধর্ষণের সংখ্যা কমবে৷ তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকেও বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ ধর্ষিতা নারীকে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়, সে সম্পর্কেও সচেতনতা দরকার৷ অনেকে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন৷ গোটা সমাজও নারীকেই দোষ দিয়ে থাকে৷ ডাক্তারি বা মনস্তাত্ত্বিক সাহায্য ছাড়াও প্রয়োজন পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সমাজের বন্ধুবৎসল আচরণ৷
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
11 ছবি1 | 11
সাজা ঘোষণার দিন হাঙ্গামার আশংকা করে হরিয়ানা সংলগ্ন দিল্লি, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে ব্যাপক নিরাপত্তা৷ বিমানবন্দর রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে অতিরিক্ত সতর্কতা৷ হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের নয়ডা ও গাজিয়াবাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হয়৷ উল্লেখ্য, গত শুক্রবার পাঁচকুলায় ডেরা প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার দিনে হরিয়ানা জুড়ে তার ভক্ত ও অনুগামীদের সহিংস তান্ডবে মারা যায় ৩৮ জন৷ কিন্তু বিজেপি শাসিত হরিয়ানা সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিরোধী দলগুলি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে৷ তারা অভিযোগ তুলে বলেছে, গত নির্বাচনে ডেরা সাচ্চা সৌদার কাছ থেকে বিপুল সাহায্য পেয়েছিল বিজেপি৷ তাই কঠোর হাতে দমন করেনি৷ সাজা ঘোষণার পরবর্তী পরিস্থিতির উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন৷
ভারতে এইসব স্বঘোষিত ধর্মগুরুদের নিয়ে না কেচ্ছা কাহিনী রয়েছে৷ গুজরাটের স্বঘোষিত প্রৌঢ় ধর্মগুরু আশারাম বাপুর বিরুদ্ধেও একই ধরণের মামলা ঝুলছে আদালতে৷ ১২ বছর ধরে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা ঝুলছে৷ আশ্রমের বাসিন্দা দুই বোনকে আশ্রমের ভেতরেই ধর্ষণ করা হয়৷ আজও কেন সাজা ঘোষণা হয়নি, সুপ্রীম কোর্ট গুজরাট আদালতের কাছে তা জানতে চেয়েছেন. এই ধরণের ন্যক্কারজনক ঘটনা যখন সামনে আসে তখন সমাজের ধর্মবোধে কালি লাগে৷