1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষণের কারণে জন্ম নেয়া শিশুদের কী দোষ?

১ মে ২০১৯

ইরাকের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী একটি সম্প্রদায় ইয়াজিদি৷ ২০১৪ সালে তাঁদের উপর হামলা চালায় তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস৷

Irak Duhok - Yazidi überlebenden treffen Verwandte nach Freilassung vom IS in Syrien
ছবি: Reuters/A. Jalal

ইসলাম ধর্মের সঙ্গে ইয়াজিদিদের অনুসরণ করা ধর্মীয় বিশ্বাসের পার্থক্য থাকার অভিযোগে আইএস ইয়াজিদি সম্প্রদায়কে সমূলে উৎপাটন করতে চেয়েছিল৷ তাই তারা ইয়াজিদি পুরুষদের হত্যা করেছে, আর কিশোর ও তরুণদের জোর করে আইএস যোদ্ধা হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করেছে৷ এছাড়া নারী ও তরুণীদের যৌন দাসী হিসেবে ব্যবহার করেছে আইএস জঙ্গিরা৷

এসব কারণে ইয়াজিদি নারীদের গর্ভে যেসব শিশু জন্ম নিয়েছে তাদের সমাজে গ্রহণ করা হবে না, বলে শনিবার জানিয়েছে ইয়াজিদিদের ‘সুপ্রিম স্পিরিচুয়াল কাউন্সিল'৷

এই সিদ্ধান্তের কারণে ধর্ষণের কারণে জন্ম নেয়া শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷

জানা গেছে, যৌন দাসী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হওয়া প্রায় তিন হাজার ইয়াজিদি নারী বর্তমানে সন্তানসহ বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে৷ এদের মধ্যে একটি অংশ জার্মানিসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে চলে গেছেন৷ এছাড়া কেউ কেউ সন্তানদের ছেড়ে ইয়াজিদি সমাজে ফিরে গেছেন৷ বাকি যাঁরা এখনো শিবিরে আছেন, তাঁরা কী করবেন, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷

ইয়াজিদিদের নিয়ম অনুযায়ী,  ইয়াজিদিও নন-ইয়াজিদির মধ্যে বিয়ে ও সন্তান ধারণের বিষয়টির স্বীকৃতি দেয়া হয় না৷ ফলে আইএস জঙ্গিরা যেহেতু ইয়াজিদি গোত্রের কেউ নন, সে কারণে ইয়াজিদি সুপ্রিম কাউন্সিল ধর্ষণের কারণে জন্ম নেয়া শিশুদের মেনে নিতে চাইছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷

এছাড়া ইয়াজিদিদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘ইয়াজদা'র উপ-পরিচালক আহমেদ বুর্জুস বলছেন, ইয়াজিদি গোত্রের জন্য অন্যতম বেদনার বিষয় হচ্ছে, এই শিশুরা এমন সব ব্যক্তির কারণে জন্মেছে, যারা কিনা ইয়াজিদি গোত্রের উপর গণহত্যা চালিয়েছে, ঘরবাড়ি লুট করেছে৷

আহমেদ বুর্জুস বলেন, ইয়াজিদি গোত্রের অনেকে মনে করেন, এই শিশুরা আসলে ভবিষ্যতে আইএস-এর নির্যাতনের শিকারদের প্রতিহিংসার শিকার হতে পারে৷ এছাড়া ইরাকের আইনের কারণে এই শিশুদের ইয়াজিদি হিসাবে নিবন্ধনও কঠিন হবে৷ কারণ, আইন বলছে, কোনো শিশুর মা-বাবার একজন যদি মুসলিম হয়, তাহলে সেই শিশুকে মুসলমান হিসেবে নিবন্ধন করা হবে৷

অ্যাক্টিভিস্টরা যা বলছেন

নোবেলজয়ী ইয়াজিদি অ্যাক্টিভিস্ট  নাদিয়া মুরাদ বলছেন, ধর্ষণের শিকার মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে ফিরবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র তাঁদের পরিবারই নিতে পারেন৷ এক্ষেত্রে অন্যদের সিদ্ধান্ত দেয়ার কোনো অধিকার নেই৷

আরেক অ্যাক্টিভিস্ট ও ইরাকের সাবেক সাংসদ আমিনা সৈয়দ ডয়চে ভেলেকে বলেন, শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের পরিবারেরই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত৷ ‘‘একজন মা হিসেবে আমি অন্য নারীরা কী অনুভব করছেন, তা বুঝতে পারি,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন তিনি৷

গোত্রের প্রতিক্রিয়াও তিনি অনুভব করতে পারেন জানিয়ে আমিনা সৈয়দ বলেন, ‘‘কিন্তু তাঁরা তো (ধর্ষণের শিকার নারী) ভুক্তভোগী৷ আমরা যদি তাঁদের জন্য সব দরজা বন্ধ করে দেই, তাহলে তাঁদের দ্বিতীয়বারের মতো শাস্তি দেয়া হবে৷''

‘ইয়াজদা'র উপ-পরিচালক আহমেদ বুর্জুস একটি প্রস্তাব দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, সবচেয়ে ভালো হয় যদি এই নারীদের ইরাকের বাইরে অন্য কোনো দেশে পুনর্বাসন করা যায় এবং তাঁদের সম্মানের জীবন দেয়া যায়৷

টম আলিনসন/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ