1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষণের দুই আসামি রিমান্ডে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১২ মে ২০১৭

ঢাকায় দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় দু’জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে অবশেষে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ৷ তবে এই গ্রেপ্তার ও মামলা নেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ঢিলেমির অভিযোগে শুরু হয়েছে তদন্ত৷ ওদিকে পলাতক রয়েছে আরো তিন আসামি৷

Symbolbild Gewalt gegen Frauen Vergewaltigung
ছবি: Fotolia/detailblick

ধর্ষণ মামলার আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে আটক করা হয় সিলেট শহরের একটি বাড়ি থেকে, বৃহস্পতিবার রাতে৷ তাদের ঢাকায় এনে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে৷ এরা দু'জনই প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান৷ মামলাটি এখন থানা পুলিশকে বাদ দিয়ে পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার-এর মাধ্যমে তদন্ত করানো হচ্ছে৷

গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের দায়ওয়াত দিয়ে দুই তরুণীকে ঢাকার একটি হোটেল রুমে ১৩ ঘণ্টা আটকে রেখে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করে ধর্ষকরা৷ তারা ধর্ষণের ঘটনাটি ভিডিও-ও করে৷ এরপর তাদের প্রাণনাশের এবং ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়ে মামলা থেকে বিরত রাখা হয়৷ শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে তারা ৪ মে বনানী থানায় মামলা করতে যান৷ কিন্তু পুলিশ তাদের দু'দিন, মানে ৪৮ ঘণ্টা ঘুরিয়ে শেষ পর্যন্ত ৬ মে মামলা নেয়৷ মামলা দায়েরের আরো ছ'দিন দিন পর দুই আসামিকে আটক করা হয়৷ 

Masudur Rahman - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই আসামির কাছ থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে ধর্ষণ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া পাওয়া গেছে৷ এর আগে আমরা ঘটনার শিকার দুই তরুণীর জবানবন্দি নিয়েছি৷ কিছু আলামতও আমাদের হাতে আছে৷ এবার এই দুই আসামিকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো তথ্য পাবো আমরা৷ তবে এটা নিশ্চিত যে, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৷''

পুলিশ আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালেও আদালত সাফাতের ছয় দিন এবং সাদমানের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷ রিমান্ড আবেদনে তারা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ আর তারা ওই দুই তরুণী ছাড়া আরো অনেক তরুণীকে এর আগে ধর্ষণ করেছে বলে রিমান্ড আবেদনে বলেন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ইন্সপেক্টর ইসমত আরা এমি৷

মামলার আরো তিন আসামি ইভেন্ট ম্যানেজার নাঈম আশরাফ, ড্রাইভার বিল্লাল এবং বডিগার্ড আবুল কালাম এখনো পলাতক৷ ধারণা করা হচ্ছে, তারা দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে৷ তবে মাসুদুর রহমান দাবি করেন, ‘‘তারা দেশের ভিতরেই আছে এবং তাদের ধরতে অভিযান চলছে৷''

এই মামলায় বনানী থানার একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আসামিদের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ করেছেন ধর্ষণের শিকার দুই তরুণী৷ তারা বলেছেন, ‘‘থানার ওসি আসামিদের পক্ষ নিয়ে শুরুতে মামলা না নিয়ে উল্টো হয়রানির চেষ্টা করেন৷''

মানবাধিকার কর্মী এই আইনও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পুলিশের উচিত ছিল ৪ মে দুই তরুণী যখন বনানী থানায় যান, তখনই অভিযুক্তদের আটক করা৷ তাহলে তারা আর পালনোর চেষ্টায় ঢাকা থেকে সিলেটে যেতে পারত না৷ এই মামলায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে শুরুদে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ আছে৷ পরে গণদাবির মুখে অভিযুক্তদের দু'জনকে আটক করা হলো৷ কিন্তু শুরুতে পুলিশ তৎপর ছিল না৷''

তিনি বলেন, ‘‘আসামিরা সময় পেয়েছে৷ আমার আশঙ্কা, এই সময়ে তারা ভিডিওসহ আরো কিছু আলামত নষ্ট করার সুযোগ পেয়েছে৷ এখন পলাতক তিনজনকে গ্রেপ্তার করা খুব জরুরি৷ তাদের মধ্যে ড্রাইভার এবং বডিগার্ড-এর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আমার ধারণা৷ কারণ তারা সামাজিকভাবে শক্তিশালী না হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদে দ্রুতই ‘ব্রেক ডাউন' করবে৷'' 

Noor Khan - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

ডেপুটি কমিশনার মাসুদুর রহমান দাবি করেন, ‘‘মামলা করার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় নেয়ার কারণ, দুই তরুণী ঘটনার দেড়মাস পরে মামলা করতে যান৷ তাই কিছু বিষয় তদন্তের প্রয়োজন ছিল৷ আর তা করেই মামলা নেয়া হয়েছে৷ তারপরও পুলিশের গাফিলতির যে অভিযোগ উঠেছে, তা দেখতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷''

তবে নূর খান বলেন, ‘‘ভিকটিমদের অভিযযোগই মামলা নেয়া এবং আসামিদের তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারের জন্য যথেষ্ঠ ছিল৷ পুলিশ প্রভাবিত হয়ে মামলাটি শুরুতে আমলে নেয়নি৷ তারা অভিযুক্তদের পক্ষে কাজ করেছে৷ দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এবং গণদাবর কারণেই পুলিশ শেষ পর্যন্ত সক্রিয় হতে বাধ্য হয়৷'' 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ