ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ আইনে আছে, ১৫ বছরের বেশি বয়সি নারীর সঙ্গে ‘স্বামী' জোর করে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করলেও তা ‘ধর্ষণ' হবে না৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, এমন আইন থাকা উচিত৷
বিজ্ঞাপন
গত চারবছর ধরে ধর্ষণের খবরের কারণে অনেকবারই আলোচনায় এসেছে ভারত৷ ২০১২ সালের দিল্লি ধর্ষণকাণ্ড দিয়ে শুরু, সেই থেকে বারবার ফিরে ফিরে আসছে ধর্ষণ এবং ধর্ষণ সংক্রান্ত খবর৷ এবার বিষয়টিকে আলোচনায় এনেছে একটি বেসরকারি সংস্থা৷
ভারতে ১৮ বছরের চেয়ে কম বয়সে বিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ তারপরও অহরহ বাল্যবিবাহ হচ্ছে৷ অদ্ভূত বিষয় হলো, আইনেও প্রকারান্তরে বাল্যবিবাহের অস্তিত্ব স্বীকার করে নেয়া হয়েছে৷
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
নারী স্বাধীনতা, নারী আন্দোলন, নারী অধিকার নিয়ে সর্বত্র আলোচনা, সমালোচনা, বক্তৃতা, অন্যদিকে বেড়ে চলেছে ধর্ষণের সংখ্যা৷ কিন্তু কেন? এর জন্য কারা দায়ী, কী করে ধর্ষণ কমিয়ে আনা সম্ভব? বা ধর্ষিতা নারীদের কী-ই বা করা উচিত?
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অহরহ৷ তার ওপর পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধের যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, সেটাও যথার্থ নয়৷ এছাড়া বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশ নাকি জীবনের যে কোনো সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷
ছবি: Fotolia/DW
উন্নত বিশ্বের নারীরাও রেহাই পান না
ধর্ষণ শব্দটি শুনলেই মনে হয় এ ধরণের অপরাধ হয়ে থাকে শুধু অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে৷ আসলে কিন্তু মোটেই তা নয়৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ৩৩ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়৷ এমনকি জার্মানির মতো উন্নত দেশের নারীরাও যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷
ছবি: Fotolia/detailblick
ধর্ষিতা নারীরা জানাতে ভয় পান
জার্মানিতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা ধর্ষিত নারীদের সঠিক পদ্ধতিতে ‘মেডিকেল টেস্ট’-এর ব্যবস্থা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত স্ত্রী বিশেষজ্ঞ ডা. সোনিয়া পিলস বলেন, ‘‘ধর্ষণের শিকার নারী লজ্জায় এবং আতঙ্কে থাকেন৷ তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে সে অভিজ্ঞতা বা ধর্ষক সম্পর্কে তথ্য জানাতে ভয় পান, কুণ্ঠা বোধ করেন৷ অনেকদিন লেগে যায় ধর্ষণের কথা কাউকে বলতে৷
ছবি: detailblick/Fotolia
ধর্ষককে ধরার জন্য দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষা
ধর্ষণের পর নারীদের কী করণীয় – এ বিষয়ে জার্মানির ধর্ষণ বিষয়ক নির্দেশিকায় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ যেমন ধর্ষণের পর একা না থেকে কারো সাথে কথা বলা৷ গোসল, খাওয়া, ধূমপান, বাথরুমে যাওয়ার আগে, অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে না যাবার আগে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো৷ এ পরীক্ষা করালে ধর্ষক কোনো অসুখ বা এইচআইভি-তে আক্রান্ত ছিল কিনা, তা জানা সম্ভব৷ নারীর শরীরে নখের আচড় বা খামচি থাকলে ধর্ষকের চিহ্ন সহজেই পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/M. Ruettinger
যাঁরা ধর্ষণের শিকার, তাঁদের জন্য জরুরি বিভাগ
ধর্ষক যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, অর্থাৎ অন্তর্বাস, প্যাড এ সব তুলে রাখুন৷ ছবিও তুলে রাখতে পারেন৷ নিজেকে দোষী ভাববেন না, কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে – সেই অপরাধী, আপনি নন৷ জার্মানির বেশ কয়েকটি শহরের হাসপাতালে যৌন নির্যাতন বিষয়ক আলাদা জরুরি বিভাগ রয়েছে৷ তাছাড়া ধর্ষণ সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে রয়েছে ‘গেভাল্ট গেগেন ফ্রাউয়েন’, যেখানে ২৪ ঘণ্টাই টেলিফোন করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্রুপ থেরাপি
যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সমাধানের জন্য জার্মানিতে রয়েছে গ্রুপ থেরাপি, যার সাহায্যে নারীরা আবার সমাজে সহজভাবে মিশতে পারেন এবং তাঁদের জীবনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি সহজে ভুলে যেতে পারেন৷
ছবি: dpa
সবচেয়ে বেশি যৌন অপরাধ হয় বাড়িতেই
ভারতের কোথাও না কোথাও প্রতি ২২ মিনিটে একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে৷ তাই আদালতের নির্দেশে ভারতের পুলিশ বিভাগ এক সমীক্ষা চালিয়েছিল দিল্লির ৪৪টি এলাকায়৷ চলতি বছরের গত আট মাসে ২,২৭৮টি ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং যৌন অপরাধের তদন্তের ফলাফলে দেখে গেছে: ১,৩৮০টি ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা হলেন পরিবারের লোকজন এবং পরিচিতজনেরা৷ অর্থাৎ নিজের বাড়িতেও মেয়েরা নিরাপদ নয়!
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
সঠিক বিচার চাই
২০১৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লিতে গণধর্ষণ ঘটনার পর, ভারতে ঘটা করে বিচার বিভাগীয় কমিশন বসিয়ে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ দমনে আইন-কানুন ঢেলে সাজানো হয়৷ শাস্তির বিধান আরো কঠোর করা হয়৷ কিন্তু তাতে যৌন অপরাধের সংখ্যা না কমে বরং বেড়েছে৷
ছবি: picture alliance/abaca
বাংলাদেশে ধর্ষণের শিকার
বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১১ সালে ৬২০ জন, ২০১২ সালে ৮৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৭১৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ মাত্র ছ’মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি এবং এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮২ জন৷ তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণ করে ধর্ষণ এবং পরে হত্যার ঘটনাও অনেক বেড়েছে৷
ছবি: DW
নারীর পোশাকই কি ধর্ষণের জন্য দায়ী?
বাংলাদেশের একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশের নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেপরোয়াভাবে, বেপর্দায় চলাফেলার কারণে ধর্ষণের শিকার হন৷’’ পুলিশের কর্মকর্তার দাবি, ধর্ষণের দায় প্রধানত নারীদের৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘বখাটে ছেলেরা তো ঘোরাফেরা করবেই৷’’ এ কথা শুধু পুলিশ কর্মকর্তার নয়, ভারত-বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাই এরকম৷ ধর্ষণ বন্ধ করতে এই মধ্যযুগীয় চিন্তা, চেতনার পরিবর্তন প্রয়োজন৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Uz Zaman
ছোট বেলা থেকে সচেতন করতে হবে
ধর্ষণ সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে সঠিক ধারণা দিলে স্বাভাবিকভাবে ধর্ষণের সংখ্যা কমবে৷ তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকেও বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ ধর্ষিতা নারীকে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়, সে সম্পর্কেও সচেতনতা দরকার৷ অনেকে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন৷ গোটা সমাজও নারীকেই দোষ দিয়ে থাকে৷ ডাক্তারি বা মনস্তাত্ত্বিক সাহায্য ছাড়াও প্রয়োজন পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সমাজের বন্ধুবৎসল আচরণ৷
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
11 ছবি1 | 11
ভারতের প্যানাল কোডের ৩৭৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সি কোনো মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা ধর্ষণের নামান্তর৷ সেই আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সির সঙ্গে মিলিত হওয়া পুরুষ যদি দাবি করে নারীর সম্মতিক্রমেই যৌনমিলন হয়েছে, তারপরও তা ধর্ষণ হিসেবেই গণ্য হবে৷ কিন্তু এই আইনেই দেখানো হয়েছে ব্যতিক্রম৷ সেখানে লেখা হয়েছে, ১৫ বছরের বেশি বয়সি কোনো মেয়ের সঙ্গে যদি কোনো ব্যক্তি যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে এবং সেই ব্যক্তি যদি ওই নারীর স্বামী হয়, তাহলে সেটি ‘ধর্ষণ' বলে গণ্য হবে না৷
বেসরকারি সংস্থা আরআইটি ফাউন্ডেশন আইনের এই ‘স্ববিরোধিতা' দূর করার জন্য আদালতে গিয়েছে৷ দিল্লি হাইকোর্টে শুরু হয়েছে মামলার শুনানি৷ বিস্ময়করভাবে শুনানিতে ১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ মন্ত্রণালয় বলেছে, যদিও সম্মতি দানের ন্যূনতম বয়স ১৮ এবং যদিও বাল্যবিবাহকে সবসময় নিরুৎসাহিত করা হয়, তারপরও ভারতে বাল্যবিবাহ হচ্ছে৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, ভারতে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষার উন্নয়ন খুব অসম, ফলে এমন সমাজে বাল্যবিবাহ থাকাটাই স্বাভাবিক৷ এ কারণে ১৮ বছরের কম বয়সি যুগল স্বামী-স্ত্রী হলে তাদের যৌনমিলনকে ‘ধর্ষণ' হিসেবে গণ্য না করাই সমীচীন মনে করে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷
সে দেশের অনেক নাগরিকই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর৷ তাঁরা মনে করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন যুক্তি দেখিয়ে প্রকারান্তরে ধর্ষকদেরই সমর্থন করছে৷
এসিবি/ডিজি (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, রয়টার্স)
১৮ বছর বয়সের নীচের বিয়ে ভারতে বেআইনি৷ অথচ ১৮ বছরের কম বয়সি স্ত্রীকে স্বামী যখন ধর্ষণ করে, সেটা বেআইনি নয়৷ এ বি,য়ে আপনার মত কী? লিখুন নীচের ঘরে৷
দক্ষিণ এশিয়ায় বাল্য বিবাহের হিড়িক
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি মেয়েদের বিয়ের বয়স কমিয়ে ১৬ না করার আবেদন জানিয়েছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় বাল্য বিবাহের সংখ্যা অত্যন্ত বেশি, এবং সেই তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশ৷
ছবি: Getty Images/AFP
বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স
গত ৯ই জুন প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এইচআরডাব্লিউ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি বাল্য বিবাহের এই নতুন ‘মহামারীর’ মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছে৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি বাংলাদেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করার বিরোধী৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
পনেরো বছর হবার আগেই
বাংলাদেশের ৩০ শতাংশ মেয়ের ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়, বলছে ‘বাড়ি বন্যার জলে ভেসে যাওয়ার আগেই বিয়ে করে ফেলো’, এই শীর্ষকের একটি রিপোর্ট৷ এইচআরডাব্লিউ সংগঠনের রিপোর্টটি বাংলাদেশে শত শত বালিকা বধূর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে৷ বাংলাদেশে বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ, কিন্তু কর্মকর্তাদের ঘুস দিয়ে সহজেই ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট বার করে নেওয়া যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
একটি কারণ: দারিদ্র্য
ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাংলাদেশের বহু মানুষকে চরম দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দিয়েছে৷ ফলে বাল্য বিবাহের সংখ্যা বেড়েছে, কেননা দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ পরিবারে কন্যাসন্তান একটি দায় বা বোঝা৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছর প্রতিশ্রুতি দেন যে, ১৫ বছরের নীচে মেয়েদের বিয়ে নিষিদ্ধ করা হবে৷ কিন্তু সরকার সে প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য বিশেষ কিছু করেননি, বলে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
দাম্পত্য জীবনে মারধোর ও ধর্ষণ
বিভিন্ন জরিপ থেকে দেখা গেছে, মেয়েদের পড়াশুনা করতে না দিলে তারা দারিদ্র্যের শৃঙ্খলেই আবদ্ধ থাকে, পরনির্ভর হয়ে থাকে, এমনকি তাদের স্বাস্থ্যেরও হানি ঘটতে পারে৷ বালিকা বধূদের জন্য আরো রয়েছে পতির হাতে মারধোর, এমনকি ধর্ষণ৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/M. Asad
গোটা দক্ষিণ এশিয়ার সমস্যা
সমস্যাটা যে শুধু বাংলাদেশের, এমন নয়৷ জোর করে কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার প্রথা দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে পাওয়া যাবে – খানিকটা সেখানকার বিভিন্ন দেশের ধর্ম ও সংস্কৃতির কারণে৷ জাতিসংঘের উদ্বাস্তু ত্রাণ সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগামী দশ বছরে ১৪ কোটির বেশি মেয়ের ১৮ বছর হবার আগেই বিয়ে হয়ে যাবে৷ তাদের অর্ধেকই হবে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়ে৷
ছবি: DW/P.M.Tewari
সংস্কার বনাম সরকার
ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল কিংবা শ্রীলঙ্কায় বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ, কিন্তু তা সত্ত্বেও সামাজিক প্রথাটি ভালোভাবেই বেঁচে রয়েছে৷ জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের পরিসংখ্যানে দেখা যায়: ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় আড়াই কোটি মহিলা, যাদের বয়স ২০ থেকে ২৪-এর মধ্যে, তাদের সকলেরই কিন্তু বিয়ে হয়েছিল ১৮বছর বয়স হবার আগে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Hatvalne
মনোভাব বদলাতে হবে
ইউনিসেফ-এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক উপ-পরিচালক স্টিফেন অ্যাডকিনসন ডয়চে ভেলেকে বলেন যে, বাল্য বিবাহ, আঁতুড়ে মায়ের মৃত্যু, মেয়ে হলে গর্ভপাত ইত্যাদি বিষয়ে মানুষজনের মনোভাব বদলানোর জন্য সর্বাগ্রে সংলাপ চালু করতে হবে, পৌঁছাতে হবে এই ‘মাইন্ডসেট’ বা কুসংস্কারের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক তথা রাজনৈতিক মূলে৷