1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষিতার বঞ্চনা-যন্ত্রণা চার দেয়ালের মধ্যে, বাইরে

৪ জুলাই ২০২৫

একজন ধর্ষিতা নারীকে ঘরে-বাইরে বঞ্চনা-যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়৷ শুধু তাই নয়, ডাক্তারি পরীক্ষা থেকে শুরু করে আদালতে বিচার পর্যন্ত দফায় দফায় তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তার ধর্ষণের কথা৷

এক নারী মুখ ঢেকে আছেন
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বলছে, জুন মাসে ৩৬৩ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছেছবি: Jonas Walzberg/dpa/picture alliance

এমনকি আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে তাকে খুটিয়ে খুটিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা৷ এখন আমাদের সমাজে ধর্ষিত একজন নারীর দিকেই আঙুল তোলা হয়৷ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এসে এখন পরিস্থিতি বদলায়নি৷

কেন এই পরিস্থিতি? জানতে চাইলে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরিন হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমরা এখনও সভ্য হতে পারেনি৷” একাত্তরের বীরাঙ্গনাদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, "তাদের কি আমরা যথাযথ সম্মান দিতে পেয়েছি৷ স্বাধীনতার পর সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে কামারুজ্জামান সাহেব তাদের বীরঙ্গনা খেতাব দিয়েছিলেন৷ শুধু এইটুকুই৷ তাদের আমরা পরিবার তো দূরের কথা, সমাজেও ঠাই দেইনি৷ তারই ধারাবাহিকতা চলছে৷ পরিস্থিতি উত্তরণে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে, আমাদের সভ্য হতে হবে৷”

সর্বশেষ কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে (২৫) ঘরের দরজা ভেঙে ধর্ষণ করা হয়৷ সেখানে যারা উপস্থিত হন তারা নারীকেই অভিযুক্ত করে মারধোর করেন৷ এমনকি ওই নারীর বিবস্ত্র ছবি তুলে সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন৷ অথচ যিনি ধর্ষণ করলেন তার ভিডিও কেউ করলেন না৷ যদিও এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ পাশাপাশি এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ মিডিয়ার কারণে ওই নারী বাড়ি ছেড়ে অজ্ঞাতস্থানে চলে গেছেন৷ তার আগে তিনি মামলা প্রত্যাহারের কথা বলেছিলেন৷ যদিও সর্বশেষ মামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন৷

৯ দিনে দেশে ২৪ জন ধর্ষণের শিকার

৯ দিনে দেশে ২৪ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ৷ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন৷ এসময় উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, নারী ও শিশু নির্যাতন মহামারির মতো অবস্থায় রয়েছে৷ উপদেষ্টা বলেন, "দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়টি মহামারির মতো অবস্থায় রয়েছে৷ দীর্ঘদিন ধরে এটা চলছে৷ এর কারণ রাজনীতি, মাদক, মোবাইল ও পর্নোগ্রাফি৷ এগুলো বন্ধে নতুন আইন করার চিন্তা আছে সরকারের৷ ২০ থেকে ২৯ জুনের তথ্য অনুযায়ী ২৪ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে৷ একজন ষাট বছরের বৃদ্ধ একজন শিশুকে ধর্ষণ করেছে৷ আমরা তো ধর্মভীরু, ধর্মবিরোধী না, এটা কীভাবে সম্ভব?” শারমীন এস মুরশিদ বলেন, "এমন অবস্থা যে, আমি এখন এদের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে৷ যদিও আমি মানবাধিকার কর্মী৷ দেশের মাদ্রাসাগুলোতেও শিশুদের যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে৷ মাদ্রাসাগুলো চোখের আড়ালে থাকে৷ তথ্য পাই না৷ সেখানে অনেক শিশুরা নানা ভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়৷” 

নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৪৫টি নির্যাতনের অভিযোগ জমা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, "কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা নেই সব অভিযোগের সমাধান করা৷ তবে যেগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ তাৎক্ষণিক সেগুলোর সমাধান করা হয়৷ শতাধিক নারীকে কাউন্সেলিং, আইনি সহায়তার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷”

৬ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ৪৬৬টি

চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৩৮৩টি ধর্ষণের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র৷ অন্তত ৭১টি ঘটনায় কোনো মামলা দায়েরের তথ্য পাওয়া যায়নি৷ এই পাঁচ মাসে মোট ধর্ষণের অর্ধেকেরও বেশি ১৯৬টি ধর্ষণের ঘটনার ভুক্তভোগী ১৮ বছরের নিচের শিশুরা৷

অন্যদিকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) দেওয়া জুন মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুন মাসে ৩৬৩ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে৷ যা গত মাসের তুলনায় ৫টি কম৷ এ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ৬৩টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৭টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৪টি৷ এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭ জন প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারী৷ গত মে মাসে দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ৫৯টি৷

চলতি মাসে ধর্ষণের শিকার ৬৩ জনের মধ্যে ১৯ শিশু ও ২৩ কিশোরী রয়েছে৷ অপরদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২ শিশু, ৭ জন কিশোরী ও ৮ জন নারী এবং ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন ১ জন কিশোরী ও ৩ জন নারী৷ ধর্ষণের চেষ্টা ২৭টি, যৌন হয়রানি ৩৯টি, শারীরিক নির্যাতনের ৫১টি ঘটনা ঘটেছে৷ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) বলছে, নিপীড়নের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়া, নারীর প্রতি আরেক দফা নির্যাতনের শামিল এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ এটি অপরাধের শিকার নারীর সামাজিক ও মানসিক স্থিতিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে৷ এই শাস্তিযোগ্য অপরাধ সামাজিক সহিংসতাকে উৎসাহিত করে৷ নারীর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনায় এমজেএফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ বিষয়ে আরও সচেষ্ট আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে৷ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কার্যকর আইনের যথাযথ প্রয়োগ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক মূল্যবোধের উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য৷

নারী নেত্রী খুশী কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, "মানসিকতা না বদলালে ধর্ষণের ক্ষেত্রে এখন যে পরিস্থিতি তা থেকে বের হওয়া সম্ভব না৷ একেবারে কিছু যে হয়নি, তা নয়৷ গত ৪০ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি, এতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে৷ অনেকেরই মানষিকতায় পরিবর্তন এসেছে৷ তবে বহু মানুষের মানষিকতায় এখনও পরিবর্তন হয়নি৷ আমাদের সমস্যা হয়েছে, সরকারের যখন যারা দায়িত্বে থাকেন তারা বিষয়গুলোকে সঠিকভাবে অ্যাড্রেস করেন না৷ যে ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয় শুধু সে ঘটনাগুলোরই বিচার হচ্ছে৷ অন্য মামলাগুলোর মধ্যে বিচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেকেই বিচার পাচ্ছেন না৷”

সাম্প্রতিক কিছু ধর্ষণের ঘটনা

ভোলার তজুমদ্দিনে গত সোমবার স্বামীকে রাতভর নির্যাতনের পর স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়৷ বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে স্থানীয় শ্রমিকদল, যুবদল ও কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ সাতজনকে করে একটি মামলা হয়৷ এর মধ্যে আলাউদ্দিন ও ফরিদ উদ্দিন নামে দুই আসামিকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷

গাজীপুরের শ্রীপুরে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৩) ধর্ষণ করেছেন একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফ মিয়া৷ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে৷ শিক্ষক আরিফ মিয়া ওই ছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন৷ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, শিক্ষক আরিফ মিয়া মাদ্রাসায় বই আনার কথা বলে তাদের মেয়েকে তার পরিচালিত মাদ্রাসায় ডেকে নেন৷ সেখানে একটি কক্ষের দরজা বন্ধ করে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন৷ শুধু তাই নয়, ধর্ষণের আগে তিনি মেয়েটির একটি অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেন৷ পরবর্তীতে এই ভিডিও এবং বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে আলাদা দিনে ও সময়ে আরও একবার মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন৷ শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক জানান, "প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত শিক্ষক ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন৷”

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় ৭ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে শাহাদাৎ হোসেন ওরফে বুলবুল (২০) নামে এক বখাটে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল৷ গত ২৫ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে রাজশাহী জেলার চারঘাট থানাধীন মেরামতপুর গ্রামস্থ মেরামতপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তার ওপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সিএনজি-তে করে আসামি বুলবুলের ভাড়া বাসা রাজশাহীর টিকাপাড়ায় নিয়ে যায়৷ সেখানে তাকে ধর্ষণ করে৷ পরে বুলবুলকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব৷

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন আইনুল হক (২৮) নামে পুলিশের এক কনস্টেবল৷ পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে৷ গত সোমবার রাতে এক তরুণী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলাটি করেন৷ গ্রেপ্তার আইনুল হক (২৮) ধর্মপাশা থানায় কর্মরত৷ তার বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ইসলামপুর দুভাগ গ্রামে৷ ভুক্তভোগী তরুণী নেত্রকোনার একটি কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন৷ তরুনী জানিয়েছেন, প্রায় এক বছর আগে তরুণীর সঙ্গে কনস্টেবল আইনুল হকের পরিচয় হয়৷ এরপর দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে৷ মাঝে মধ্যে তারা দেখা করতেন৷ গত ২৬ জুন তরুণী ধর্মপাশা উপজেলার মহদীপুর স্পিডবোট ঘাটে যান৷ সেখান থেকে তাকে সুনামগঞ্জ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান আইনুল৷ হোটেলে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে ভুয়া তথ্য দিয়ে কক্ষ ভাড়া নেন৷ পরদিন দুপুর পর্যন্ত বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন আইনুল৷ ২৮ জুন পরীক্ষা শেষে তরুণী বিয়ের কথা বললে আইনুল যোগাযোগ বন্ধ করে দেন৷ ২৯ জুন রাতে তরুণী ধর্মপাশা থানায় গিয়ে মামলা করেন৷

ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, "ভুক্তভোগী তরুণী বিষয়টি জানানোর পর কনস্টেবল আইনুল হককে আমরা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি৷ ওই তরুণী বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা রুজু করেছেন৷ এখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷”

বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সামলা আলী ডয়চে ভেলেকে বলেন, "একজন নারী যখন ধর্ষণের মুখোমুখি হন, এরপর কিন্তু তাকে আরও কয়েকবার ধর্ষণের মুখে পড়তে হয়৷ একবার মেডিক্যাল পরীক্ষায় গিয়ে৷ আরেকবার বিচারে গিয়ে৷ এছাড়া ধর্ষণের পর পরিবার-স্বজনসহ বহু মানুষের কাছে তাকে সেই ঘটনার বর্ণণা করতে হয়৷ ফলে ওই নারী পদে পদে ধর্ষণের মুখোমুখি হন৷ আইনগুলো বদলে এখন যথেষ্ট যুগোপযোগী আইন করা হয়েছে৷ কিন্তু এর প্রয়োগের ক্ষেত্রে শৈথিল্য আছে৷ সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকার-রাষ্ট্রকে আরও আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে৷”

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলছবি: Sazzad Hossain

ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই ধর্ষণ মামলার বিচার

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, আদালত চাইলে ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই ধর্ষণ মামলার বিচার করতে পারবে৷ গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ কথা জানান৷ তিনি বলেন, "নতুন সংশোধনী অনুযায়ী আমি আগেই বলেছিলাম বিচার ও তদন্তের সময় কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ এর বাইরে যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যাপারে নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদ৷ শুধু শিশু ধর্ষণ মামলার আলাদাভাবে বিচার করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হয়েছে৷ এছাড়া আমরা ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে কিছু ডেফিনেশন এনেছি৷ শুধু পুরুষ কর্তৃক না যেকোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণকে শাস্তিযোগ্য করা হচ্ছে৷ যেকোনো ফর্মে ধর্ষণকে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে৷” 

আইন উপদেষ্টা বলেন, "তৃতীয় যে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হচ্ছে সেটা হচ্ছে ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় অনেক মামলা বছরের পর বছর ঝুলে থাকত৷ আমরা এই আইনে বিধান করেছি ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই আদালত যদি মনে করে মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচার সম্ভব, তাহলে আদালত ডিএনএ সার্টিফিকেট ছাড়াই মামলা দ্রুত বিচার করবে৷ এছাড়া আমরা ভিকটিমদের প্রটেকশনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা করেছি৷ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছি এবং ধর্ষণকালে জখমের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেছি৷”

আগের আইনে ১৮০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ শেষ করার বিধান ছিল৷ সেটি কমিয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে৷ আর ১৫ দিনের তদন্ত কাজ শেষ করার বিধানও করেছে সরকার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ