চলতি বছরেই ইউরো এলাকা মন্দা কাটিয়ে আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে – এমন পূর্বাভাষ দিয়েছেন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান৷ তাই আগামী ইইউ সম্মেলনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে অগ্রগতির আশা করা হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান মারিও দ্রাগি মন্তব্য করেছেন, ইউরো এলাকায় মন্দা কাটবে ঠিকই, তবে তার জন্য কিছুটা সময় লাগবে৷ চলতি বছরের শেষেই তার সুফল পাওয়া যাবে৷ এখনই বেশ কিছু ইতিবাচক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে দ্রাগি জানিয়েছেন৷ ইউরো এলাকায় স্থিতিশীলতার স্বার্থে ইসিবি কাজ করে যাবে, বলেন তিনি৷ মনে রাখতে হবে, এর আগেও বাজারকে শান্ত করতে দ্রাগির মন্তব্য সহায়ক হয়েছে৷
‘ইউরোপের ৫০ শতাংশ মানুষই মোটা’
স্বপ্নের পৃথিবী গড়তে চাইলে থাকতে হবে সুস্থ৷ আর সুস্থ থাকার জন্য খাওয়া থেকে শুরু করে জীবনযাত্রার মান – সবকিছুতেই চাই পরিমিতি বোধ৷
ছবি: Fotolia/Yuri Arcurs
জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবধানবাণী উচ্চারণ
ইউরোপে অতিরিক্ত ওজনের মানুষের সংখ্যা দিনদিন বেড়ে চলেছে৷ দেখা দিচ্ছে মোটা মানুষের মধ্যে নানা অসুখ-বিসুখ – যা অবশ্যই চিন্তার বিষয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবগুলো দেশেই গত কয়েক শতক ধরে এই সমস্যা শুরু হয়েছে৷ জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অতিরিক্ত মোটা হওয়ার সমস্যার বিরুদ্ধে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছে৷
ছবি: Getty Images
হাঙ্গেরিতে মোটা মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি
ইউরোপের সবগুলো দেশের মধ্যে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় এক নম্বরে রয়েছে হাঙ্গেরি, তারপর ইংল্যান্ড, তৃতীয় নম্বরে আয়ারল্যান্ড আর চতুর্থ নম্বরে মালটা৷ পাঁচ নম্বরে লুক্সেমবুর্গের স্থান৷
ছবি: Fotolia/Xuejun li
জার্মানি রয়েছে ১৮ নম্বরে
তুলনামূলকভাবে জার্মানির অবস্থা এতটা খারাপ নয়৷ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে জার্মানিতে মানুষের বয়সের সাথে সাথে ওজনও বাড়ে৷ তবে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়৷ আনুমানিক হিসেব – ইউরোপে মোটা মানুষের সংখ্যা বছরে এক মিলিয়ন বাড়ছে৷
ডাক্তারের পরামর্শ
মোটা রোগীরা যখন ডাক্তারের কাছে যান, ডাক্তাররা প্রথমেই ওজন কমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ অতিরিক্ত ওজনের মানুষদেরই উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস হবার আশঙ্কা থাকে৷ প্রতিদিন খাবারে তালিকায় দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার রাখতে হবে৷ তবে মাছ, মাংশ ডিমের প্রয়োজন প্রতিদিন নেই, সপ্তাহে এক বা দু’দিন হলেই যথেষ্ট৷
ছবি: picture alliance/Arco Images
কি খাচ্ছেন, বুঝে খান
খাদ্য সংস্থার তথ্যে জানানো হয়েছে, খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর, অস্বাস্থ্যকর বা নিষিদ্ধ খাবার বলে কিছু নেই৷ আসলে তা নির্ভর করে খাবারের পরিমাণ, খাবার নির্বাচন বা খাবারের উপকরণের ওপর৷ জার্মানির খাদ্য সংস্থা আরো জানিয়েছে, ওজন ঠিক রাখতে হলে মনে রাখতে হবে, রান্নার সময় কম তাপ, অল্প সেদ্ধ, কম তেল আর কম পানির ব্যবহারের কথা৷ এসব দিকে লক্ষ্য রাখলেই কেবল খাবারের আসল স্বাদ ও পুষ্টি ধরে রাখা সম্ভব৷
ছবি: picture alliance/Bildagentur Huber
কে খাচ্ছে সেটাও জরুরি
মানুষের বয়স, ওজন, ছেলে না মেয়ে বা দিনে সে কতটুকু পরিশ্রম করে – তার ওপর নির্ভর করে খাবারে পরিমাণ৷ প্রতিদিনের খাবারে থাকতে হবে তাজা শাক-সবজি, রুটি, নুডলস, বিভিন্ন শস্যদানা, আলু ইত্যাদি৷ এসবে চর্বি নেই বললেই চলে, তবে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন আর মিনারেল, পুষ্টি এবং আঁশ, যা প্রতিদিনই মানুষের শরীরে প্রয়োজন৷ তবে কার জন্য কি প্রয়োজন সেটা জেনে খেতে হবে৷
ছবি: Fotolia/Tatyana Gladskih
বিশেষজ্ঞের মত
একবেলা না খেলেও অসুবিধা নেই তবে সকালের নাস্তা ভালো করে করতে হবে৷ তা না হলে কনসেন্ট্রেশন বা মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে যা বাড়ন্ত ছেলে-মেয়েদের অত্যন্ত প্রয়োজন৷ বিভিন্ন খাবারের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন বাচ্চাদের ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে৷ জার্মানির বাডেম ভুর্টেমব্যার্গ শহরের একটি স্কুলের টিফিনের সময় বাচ্চাদের আপেল খাওয়ার অভ্যাস করানো হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফাস্ট ফুড
ফাস্ট ফুড খাওয়া কমাতে হবে এবং সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ব্যায়াম করা প্রয়োজন৷ ওজন কমানোর জন্য শুধু খাদ্যাভাসের পরিবর্তন করলেই হবে না, করতে হবে প্রচুর হাঁটা-চলা, ব্যায়াম৷ এছাড়াও পান করতে হবে প্রচুর পানি৷ একমাত্র তবেই কাঙ্খিত ফিগার পাওয়া সম্ভব৷
ছবি: Fotolia/st-fotograf
প্রবীণদের জন্য ব্যায়াম
বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ওজন বাড়ে – যা সবারই জানা৷ তাই শরীর ঠিক রাখতে ফিটনেস সেন্টারগুলোতে বয়স্কদের জন্যও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা৷ এ ব্যাপারে তাদের আরো আগ্রহী করে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: Fotolia/Robert Kneschke
সুন্দর জীবন
সবশেষে বলা যায় স্বপ্নের পৃথিবী গড়তে চাইলে থাকতে হবে সুস্থ৷ আর সুস্থ থাকার জন্য খাওয়া থেকে শুরু করে জীবনযাত্রার মান – সবকিছুতেই চাই পরিমিতি বোধ৷ তখন মোটা হওয়ার সম্ভবনাও থাকবে না আর ওজন নিয়েও সমস্যা হবে না৷ অনেক স্বপ্নই তখন পূরণ করা সম্ভব হবে৷
ছবি: Fotolia/Yuri Arcurs
10 ছবি1 | 10
চলতি মাসের শেষে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের দিকেই আপাতত সবার নজর৷ গত কয়েক মাস ধরে ইউরো এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে নানা মতপার্থক্যের কারণেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল৷ গত সপ্তাহে ম্যার্কেল ও ওলঁদ যৌথ উদ্যোগে অর্থনৈতিক নীতির রূপরেখা তৈরি করায় স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে ইউরোগ্রুপের স্থায়ী সভাপতি নিয়োগ, ইউরো এলাকার শীর্ষ নেতাদের আরও ঘন ঘন বৈঠকের আয়োজন, সামাজিক ভাতা ও কর সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে আরও সমন্বয় ইত্যাদি৷
ব্যাংকিং ইউনিয়ন সৃষ্টির পথেও আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চান দুই নেতা৷ ইউরোপীয় চুক্তির কোনো রদবদল ছাড়াই এ সব করা হবে৷ ফ্রান্সের দুর্বলতার কারণে জার্মানি এতই উদ্বিগ্ন যে, ম্যার্কেল বেশ কিছু ছাড় দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে মনে করছেন অনেক পর্যবেক্ষক৷ এর বদলে ফ্রান্সকে ব্যাপক সংস্কার চালাতে হবে৷ আইএমএফ চলতি বছর জার্মানির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাষ কমিয়ে দেওয়ায় কিছুটা হতাশা দেখা যাচ্ছে৷ ইইউ সম্মেলনে এ সব বিষয় আলোচিত হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
চলতি সপ্তাহে আন্তর্জাতিক দাতারা গ্রিসে গিয়ে সে দেশের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন৷ তার উপর নির্ভর করবে আগামী কিস্তির বেলআউটের ভবিষ্যৎ৷ স্পেনের ব্যাংকিং ক্ষেত্রে সংস্কারের সুফল দেখা যাচ্ছে৷ জার্মানি স্পেনের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে চাঙ্গা করতে বিশেষ ঋণের ঘোষণা করেছে৷ ইটালি ও পর্তুগালকেও এমন সহায়তা দিচ্ছে জার্মানি৷ এদিকে লাটভিয়া আগামী বছর ইউরো এলাকায় যোগ দিতে চলেছে৷ ফলে সদস্যসংখ্যা দাঁড়াবে ১৮৷
ইউরো এলাকায় উৎপাদনের সূচক বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও বাজার তেমন চাঙ্গা হতে পারে নি৷ গত ১৫ মাসে এটাই সবচেয়ে ভালো ফল৷ অ্যামেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্টিমুলাস কমাতে পারে, এই আশঙ্কাও কাজ করছে৷