৯০-এর দশক বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের স্বর্ণযুগ৷ তবে একবিংশ শতাব্দীতে এসে সেই ঐতিহ্যে ভাটা পড়েছে৷ ভালো কথা, ভালো সুর বা সংগীতায়োজন আজ হাতে গোনা কয়েকটি ব্যান্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ৷
বিজ্ঞাপন
২০০০ সাল৷ ডিসেম্বর মাস৷ শামসুন্নাহার হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল ভর্তি হয়েছি৷ একদিন হঠাৎ হলে বেশ হইচই৷ ব্যাপারটা কি৷ ডিসেম্বর মাসে হলের বার্ষিক ভোজ এবং পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়৷ এবারের অনুষ্ঠানে ব্যান্ড নগর বাউল৷ অর্থাৎ জেমস আসবে৷ ব্যান্ড সংগীতের প্রতি আমার তখনো কোনো অনুরাগ জন্মেনি৷ মফস্বল শহরে থাকতে রাস্তা-ঘাটে এলআরবি, আর্ক, নগর বাউলের কয়েকটা জনপ্রিয় গান কানে এসেছে, টিভিতে ঈদের অনুষ্ঠানে কখনো কখনো শুনেছি৷ কিন্তু পছন্দ বা ভালো লাগা তৈরি হয়নি৷
তাই মেয়েদের এত উচ্ছ্বাস দেখে কিছুটা বিস্ময়, কিছুটা বিরক্তি জেগেছিল৷ তারপর এই সেই ক্ষণ৷ মেয়েদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের পর তিনি এলেন৷ কালো একটা লম্বা পাঞ্জাবি, জিন্সের প্যান্ট, কাঁধে গামছা৷ কেমন যেন একটু এলোমেলো ভাব৷ কী কথা বলেছিলেন মনে নেই৷ তবে প্রথম গানেই আমি মোটামুটি ধরাশায়ী৷ যখন উদাত্ত গলায় শুরু করলেন ‘ইয়া রব ইয়া রব'৷ গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো যেন৷ এরপর চললো একের পর এক অসাধারণ কিছু গান–আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেবো, দুঃখিনী দুঃখ করো না, বাবা কতদিন দেখিনি তোমায়, পদ্ম পাতার জল, মা..৷ সেদিন থেকে আমি তাঁর দারুণ ভক্ত৷ আসলে লাইভ ব্যান্ডের যে আবেদন, সেটা তো আর ক্যাসেটে উপলব্ধি করা যায়নি, তাই হয়তো ভালো লাগাও তৈরি হয়নি৷
অবিস্মৃত: মাইকেল জ্যাকসন
২৫শে জুন ২০০৯৷ মাত্র ৫০ বছর বয়সে বিংশ শতাব্দীর সাড়া জাগানো সংগীত তারকা ‘দ্য কিং অফ পপ’ মাইকেল জ্যাকসন চিরবিদায় নেন৷ হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যান তাঁর হৃদযন্ত্র৷ সেই শোকে যেন আজও মুহ্যমান তাঁর ভক্তরা৷
ছবি: AP
যে খবরে সারা বিশ্ব হতভম্ব
২০০৯ সালের ২৫শে জুন ‘কিং অফ পপ’ মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যুসংবাদ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে৷ অথচ তার ঠিক কিছুদিন আগেই ‘দিস ইজ ইট’ নামের বেশ কয়েকটি সংগীত কনসার্ট করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি৷ পপ সংগীতের ইতিহাসে জ্যাকসন সূচনা করেছিলেন এক নতুন অধ্যায়৷ সারা জীবনে ৭৫ কোটিরও বেশি অ্যালবাম বিক্রি হয় তাঁর৷
ছবি: AP
শৈশব সুখের ছিল না
১৯৫৮ সালের ২৯শে আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের গ্যারি শহরে এক গরিব পরিবারে জন্ম মাইকেল জ্যাকসনের৷ তিনি পাঁচ ভাই ও তিন বোনের সঙ্গে একটি কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিক এলাকায় বড় হন৷ এরপরেও অবশ্য সাফল্যের শিখরে উঠেছিলেন জ্যাকসন৷ পেয়েছিলেন সংগীত জগতের সবচেয়ে বড় পুরস্কার ‘গ্র্যামি’, তাও আবার ১৩ বার৷
ছবি: Express Newspapers/Getty Images
‘দ্য জ্যাকসন ফাইভ’
বাবা জো জ্যাকসন খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁর সন্তানদের তারকা হিসেবে তৈরি করতে চেয়েছিলেন৷ তাই ১৯৬৪ সালে, পাঁচ ছেলে – জেরমাইন, জ্যাকি, টিটো, মেরলন ও মাইকেলকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘দ্য জ্যাকসন ফাইভ’ সংগীত গোষ্ঠী৷ ১৯৬৯ সালে কিংবদন্তি সোল-লেবেল রেকর্ড কোম্পানি ‘মোটাউন’-এর সাথে চক্তিবদ্ধ হয় এই গ্রুপ৷
ছবি: Frank Barratt/Getty Images
সাফল্যের সূচনা
১৯৮২ সালে মাইকেল জ্যাকসনের প্রথম একক অ্যালবাম ‘থ্রিলার’ বের হয়, যার দশ কোটি ৮০ লাখ কপি বিক্রি হয়৷ অ্যালবামটির ব্যবসায়িক সাফল্য সংগীত জগতে সৃষ্টি করে এক নতুন রেকর্ড আর মাইকেল জ্যাকসনকে বলা হতে থাকে ‘পপ সম্রাট’৷ পরবর্তীতে ‘ব্যাড’-র ৩ কোটি আর ‘ডেঞ্জারাস’-এর দেড় কোটি কপি বিক্রি হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa
নতুন মাইকেল
১৯৭৯ সালে মাইকেল জ্যাকসন তাঁর প্রথম কসমেটিক অপারেশনটি করান৷ এবং তার পরপরই একটি অ্যাক্সিডেন্টে তাঁর নাক ভেঙে যায়৷ তিনি ত্বকের সমস্যায়ও ভুগছিলেন৷ নিজে কৃষ্ণাঙ্গ ত্বকের জন্য গর্বিত হলেও, ক্রমশই তাঁর ত্বক সাদা হতে থাকে৷ এর পর থেকে প্রায়ই তাঁকে মুখোশ পরা অবস্থায় দেখা যেত, ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে৷
ছবি: imago/paulrose
ভালোবাসা না শুধুই লোক দেখানো?
১৯৯৪ সালে পপ সম্রাট বিয়ে করেন এলভিস প্রেসলির কন্যা লিসা মারি প্রেসলিকে৷ এ বিয়ে মাত্র ২০ মাস টেকে৷ তাই এটা কি শুধুই লোক দেখানো না অভিনয়? – প্রশ্ন উঠেছিল মিডিয়ায়৷ এমনকি প্রকাশ্যে তাঁদের প্রথম চুম্বনটিও নাকি ছিল ম্যানেজারের শিখিয়ে দেওয়া৷ এর উত্তরে লিসা অবশ্য বলেছিলেন, ‘‘আমি গভীরভাবে মাইকেলের প্রেমে পড়েছিলাম’’৷
ছবি: AFP/Getty Images
অবশেষে পিতৃত্বের সুখ
লিসার সাথে ডিভোর্সের পর মাইকেল জ্যাকসন তাঁর ডাক্তারের সহকারী ডেবি রোকে বিয়ে করেন৷ এই দাম্পত্য নাকি ছিল ব্যবসায়িক কারণে, অর্থাৎ মাইকেল জ্যাকসন সন্তানের পিতা হতে চেয়েছিলেন বলেই বিয়ে করা৷ ডেবি দুই সন্তানের জন্ম দেন৷ তবে তৃতীয় সন্তানটির জন্ম হয়েছিল ‘আর্টিফিশিয়াল ইনসেমিনেশান’-এর মাধ্যমে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সফল ট্যুর
১৯৯৬/৯৭ সালে মাইকেল জ্যাকসন শেষবারের মতো কনসার্ট করতে ‘ওয়ার্ল্ড ট্যুর’-এ বের হন৷ ‘হিস্টরি’ অ্যালবামটি নিয়ে ৫৮টি শহরে ৮২টি কনসার্ট করেন, মাতিয়ে রাখেন প্রায় ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ভক্তকে৷ সে সময় দারুণ সফল জ্যাকসন ভারতেও আসেন৷ গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুয়ায়ী তিনিই ছিলেন সর্বকালের সবচেয়ে সফল শিল্পী৷
ছবি: BETH A. KEISER/AFP/Getty Images
জ্যাকসনের বিরুদ্ধে কড়া অভিযোগ
১৯৯৪ সালে মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশু যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়৷ তবে যারা অভিযোগ করেছিল, সেই পরিবারটি এক মিলিয়ন ডলার দেওয়াতে জ্যাকসনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি৷ ২০০৩ সালে একই অভিযোগ আবারও আসে৷ কোর্টে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও, সম্মান ছারখার হয়ে যায়৷ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পপ সম্রাট৷
ছবি: Pool/Getty Images
আবারো মঞ্চে ফিরে আসার ঘোষণা
২০০৯ সালের মার্চ মাসে আবার মঞ্চে ফিরে আসার ঘোষণা দিয়ে ভক্তদের অবাক করে দেন মাইকেল৷ তিনি আবারো আগের মতো ‘পারফর্ম’ করতে পারবেন কিনা – তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, ‘দিস ইজ ইট’ শো দেখার জন্য টিকিট কেনার ‘ক্রেজ’ প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যায়৷ লন্ডনে প্রথম শো করার ঠিক ১৮দিন আগেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর মৃত্যুসংবাদ৷
ছবি: Getty Images
মরণোত্তর কেরিয়ার
মৃত্যুর পর ‘এক্সকেপ’-সহ দুটো অ্যালবাম বেরিয়েছে মাইকেল জ্যাকসনের৷ ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০১৯ সালের হিসাবে, মৃত্যুর পরও দুইশো কোটি ডলারের বেশি রোজগার করেছেন তিনি, যা অন্য সব মৃত শিল্পীদের চেয়ে বেশি৷ বলা বাহুল্য, ‘দ্য কিং অফ পপ’ এভাবেই বেঁচে থাকবেন চিরদিন ভক্তদের অন্তরে৷
ছবি: Robyn Beck/AFP/Getty Images
11 ছবি1 | 11
আর বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই আমার আসলে ব্যান্ডের প্রতি ভালোবাসা৷ আমার আত্মীয় পল্লবী, মিথুন, বিন্নীকে এর অনেকটাই ক্রেডিট দেয়া যায়৷ মিথুন ছিল আর্কের ভোকাল হাসানের ভক্ত৷ হাসান কোনো ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে এলে সেই ম্যাগাজিন তার কেনা চাই, গানের ক্যাসেট বের হলে তো কথাই নেই৷ সেই হাসান যখন বিয়ে করলন, তখন মিথুনের দুঃখ কে দেখে৷ মিথুনের বদৌলতে হাসানের প্রায় প্রতিটা গান আমার শোনা৷ ওদের কাছেই মাইলস, এলআরবি, রেনেসাঁ, দলছুট, সোলস, নগর বাউলের গান শোনা এবং তখন আমার তাঁদের গাওয়া বিখ্যাত সব গান প্রায় কণ্ঠস্থ৷ এরও পরে শুনেছি আজম খানের বাংলাদেশ, ফেরদৌস ওয়াহিদের জনপ্রিয় গান ‘এমন একটা মা দেনা'৷
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে এই প্রতিটা ব্যান্ডের লাইভ কনসার্ট দেখার সুযোগ হয়েছিল৷ আমরা ক্যাম্পাসে থাকাকালীন ‘বাংলা ব্যান্ড' তাদের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করে৷ আর সেই গানগুলো তখন সবার মুখে মুখে৷ মেয়েদের হল বন্ধ হয়ে যেতো রাত সাড়ে ৯ টায়৷ বিশেষ অনুমতি নিয়ে চারুকলার বকুল তলায় বাংলা ব্যান্ডের গান শুনেছি কতদিন!
ব্যান্ড সংগীতে বাংলাদেশে আসলে একটা বিপ্লব ঘটে গিয়েছিল ৯০-এর দশকে৷ কারণটা ছিল সংগীতায়োজন, কথা এবং সুর৷ অসাধারণ কিছু গীতিকার ছিলেন, যাঁরা ব্যান্ডসংগীতকে প্রতিটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন৷ যাঁদের বুকে বিচ্ছেদের বেদনা বাজছে, তাঁদের চোখকে আরও সজল করে দিতো ‘সানাইয়ের সুর নিয়ে যাবে দূর একটু একটু করে তোমায়...', অথবা ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে...' ৷ অথবা মিষ্টি ভালোবাসার গান ‘আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে...', রেনেসাঁর সমাজ সচেতনতার গান ‘আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে...' আর জন্মদিন এলে মাইলসের ‘আজ জন্মদিন তোমার' কে না গায়! কী অপূর্ব এবং অসাধারণ গানের কথা৷
মাইলস, এলআরবি, সোলসের পর অবস্কিউর, ফিডব্যাক, শিরোনামহীন, আর্টসেল, ওয়ারফেজও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল৷ তবে একবিংশ শতাব্দীতে এসে ব্যান্ড সংগীতে কেমন একটা অচলাবস্থা তৈরি হলো৷ বেশিরভাগ ভালো ব্যান্ডগুলোর মধ্যে দেখা দিলো ভাঙন৷
বর্তমানে যে কয়টি ব্যান্ড কিছুটা হলেও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে, তার মধ্যে অন্যতম চিরকুট ও জলের গান৷ আর অর্নব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস হঠাৎ হঠাৎ দু-কটা ভালো গান নিয়ে হাজির হয়৷
বর্তমানে কোনো ব্যান্ডের নামই তেমন একটা শোনা যায় না৷ কখনো কখনো হয়ত কোনো একটা গান হিট হয়, তারপর সবাই ভুলেও যায় গায়ক এবং ব্যান্ডের নাম৷ প্রযুক্তির কল্যাণ আর বস্তাপচা কথার বদৌলতে সস্তা দরের গান আর স্পন্সরদের খুশি করাই এখন ব্যান্ডগুলোর লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন৷
আগে ব্যান্ডসংগীত কেবল ভালোবাসা, প্রেম, ভালোলাগার কথাই বলতো না, সমাজ সচেতনতার কথাও বলতো৷ তারা কেন হারিয়ে গেল? এই প্রশ্নের উত্তর কি আমরা খুঁজেছি কখনো? ব্যান্ডসংগীত কি আবার তার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে পেতে পারে না? ‘চল বু বাইজান মাটি কাটা চাইয়া রইলি কার পানে....' এমন গান কি আর তৈরি করা সম্ভব না?
তবে পাওয়ারসার্জ, আরবোভাইরাস, এভোয়েড রাফা, ওল্ড স্কুল, ছাতক, মিনেরেবা-র মতো নতুন ব্যান্ডগুলো নতুন আঙ্গিকে ব্যান্ডসংগীতের ধারা ক্রমবর্ধমান রাখুক, পুরোনো ঐতিহ্যকে আরও সম্মুন্নত করুক এই প্রত্যাশা৷
বিশ্ববিখ্যাত ব্যান্ডগুলোর ভাঙা-গড়া
যশ, অর্থ ও প্রতিপত্তি যখন তুঙ্গে থাকে, তখন অনেকেই তা ঠিক সামাল দিতে পারেন না৷ সে কারণেই যুগে যুগে বিখ্যাত সব ব্যান্ড ভেঙেছে৷ অনেকে ব্যান্ডের ছায়ায় না থেকে নিজের আলাদা ক্যারিয়ার গড়েছেন৷ ছবিঘরে দেখে নিন তারই এক ঝলক৷
ছবি: Getty Images/AFP
দ্য বিটলস
১৯৬৯ সালেই ব্যান্ড ছেড়ে দেন লেজেন্ড গায়ক জন লেনন৷ তবে ১৯৭০ সালে সতীর্থ পল ম্যাককার্টনি একক অ্যালবামের ঘোষণা দেয়ার আগ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি৷
ছবি: picture-alliance/AP
দ্য ঈগলস
১৯৮০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ব্যান্ডের তকমা দ্য ঈগলসের গায়ে৷ মূল দুই সদস্য বার্নি লেডন ও রেন্ডি মাইজনার ব্যান্ড ছেড়ে দেন৷ তাঁদের অভিযোগ ছিল, দলের ভেতরের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে৷ কর্তৃত্ব আর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের দ্বন্দ্ব এতটাই চরমে পৌঁছে যায় যে, ১৪ বছর একসাথে থাকার পর ভেঙে যায় ব্যান্ডটি৷
ছবি: Imago/UnitedArchives
গানস অ্যান’ রোজেস
জনপ্রিয়তা আর বাণিজ্যিক সাফল্যের শিখরে থাকা অবস্থাতেই ভেঙে যায় গানস অ্যান’ রোজেস৷ গায়ক রোজ ও গিটরিস্ট স্ল্যাশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে৷ দু’জনেই আধিপত্য বজায় রাখতে গিয়ে ব্যান্ডটা ভেঙ্গে ফেলেন৷
ছবি: Imago/ZUMA Press
পিংক ফ্লয়েড
১৯৮৩ সালে প্রথম ভাঙে এই বিখ্যাত দলটি৷ দু’বছর পর আবার দলকে এক করার চেষ্টা করেন ডেভিড গিলমোর ও নিক মেসন৷ কিন্তু ব্যান্ডটির অমর সৃষ্টি ‘দ্য ওয়াল’ গানের মূল নায়ক রজার ওয়াটার্স নিজের একক ক্যারিয়ার নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন৷ শুধু তাই নয়, তিনি ব্যান্ডটি আবার একত্রিত হচ্ছে, তা-ও মেনে নিতে পারেননি৷ মামলা ঠুকে দেন অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে৷ পরে অবশ্য কোর্টের বাইরেই ফয়সালা হয়৷
ছবি: Reuters/S. Wermuth
স্পাইস গার্লস
গান ও মিউজিক ভিডিও দিয়ে লাখো তরুণের মন মাতানো স্পাইস গার্লসও এক থাকতে পারেনি৷ ১৯৮৮ সালে গ্যারি হ্যালিওয়েল (জিনজার স্পাইস) ঘোষণা দেন যে, তিনি বিশেষ কারণে দল ছেড়ে দিচ্ছেন৷ এরপর কিছুদিন একক ক্যারিয়ার চালিয়ে গেলেও দলটি বেশিদিন আর টিকতে পারেনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Owen
দ্য এভারলি ব্রাদার্স
প্রায় দুই দশক গান গেয়ে পুরো পৃথিবী মাতান৷ এরপর তাঁদের মধ্যে কে বড়, তাই নিয়ে বাঁধে ঝগড়া৷ সেই ঝগড়ার কারণে দলটিই ভেঙে দিয়ে আলাদা আলাদা ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যান৷
ছবি: Getty Images
ওয়েসিস
ব্যান্ডের দুই সহোদর গীতিকার নোয়েল ও লিয়াম গ্যালাঘারের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রায়ই সহিংস হয়ে উঠতো৷ যখন নোয়েল নিজের নাম ‘অলসো লিয়াম’-এ পরিবর্তন করলেন, তখন ব্যান্ডটিকে ধরে রাখা গেল না৷ ভেঙ্গে গেল৷
ছবি: AP
এন সিঙ্ক
ব্যান্ডটি বেশ ভালোই নাম কুড়িয়েছিল৷ কিন্তু অন্যতম সদস্য জাস্টিন টিম্বারলেক যখন ২০০২ সালে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম বের করলেন, তখনই শঙ্কায় পড়লো ব্যান্ডের ভবিষ্যৎ৷ এরপর ২০০৪ সালে ঘোষণা দিয়েই ব্যান্ড ছেড়ে বেরিয়ে এলেন টিম্বারলেক৷
ছবি: Getty Images/Liaison
8 ছবি1 | 8
লেখকের সঙ্গে আপনি কি একমত? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷