নজরদারিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করে অন্য দেশের সরকার!
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯‘পার্মানেন্ট রেকর্ড‘ নামের বইটিতে স্নোডেন ‘অ্যামেরিকার প্রিমিয়ার সিগন্যাল এজেন্সিতে‘ কাজ করাকে ‘স্বপ্নের কাজ' হিসাবে বর্ণনা করেছেন৷ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর গোপন নজরদারী কর্মসূচি নিয়ে বইটিতে বিস্তারিত তথ্যও দিয়েছেন তিনি৷
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর গোপন নজরদারি কর্মসূচির বিস্তারিত ফাঁস করে দেওয়ার পর ২০১৩ সাল থেকে রাশিয়ায় বাস করছেন স্নোডেন৷ ফ্রান্স তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে বলে সম্প্রতি আশা প্রকাশ করছেন তিনি৷
বিশ্বের বহু মানবাধিকার কর্মী স্নোডেনকে ‘বীর' হিসেবে বিবেচনা করলেও তাঁর নিজের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে চায়৷
বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মেট্রোপলিটন বুকস স্নোডেনের নতুন বইটি প্রকাশ করেছে৷ ২০০৯ সালে মার্কিন জাতীয় সুরক্ষা সংস্থায় চুক্তিতে যোগ দিয়েছিলেন এই কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ৷
নতুন বইয়ে স্নোডেন আরো গভীরতর গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন৷ তিনি বলেছেন, পিআরআইএসএম প্রোগ্রাম ব্যবহার করে এনএসএ বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের জন্য নজরদারি করতো৷ ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পরে এই প্রোগ্রামটি চালু করা হয়েছিল৷
স্নোডেন দাবি করেছেন, তিনি শেষ পর্যন্ত অনুভব করেছিলেন যে, তাঁর প্রজন্ম যদি হস্তক্ষেপ না করে তবে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে৷ তাই তিনি এসব ফাঁস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং সাংবাদিকদের সাথে এনএসএ কী করছে তা-ও সবাইকে জানাতে চেয়েছিলেন৷
২০১৩ সালে স্নোডেনের তথ্যগুলো যখন বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়েছিল, তখন তিনি চিহ্নিত করেন, যেসব দেশের নাগরিকরা অ্যামেরিকার গণ-নজরদারির সবথেকে বিরোধী ছিল সেসব দেশের সরকারই তাদের এই কাজে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছিল৷
স্নোডেনের তথ্য ফাঁসের পর জার্মানরা তাদের দেশে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাকে আবিষ্কার করে৷ দেশটিতে এনএসএ-র নজরদারিকে সমর্থন করেছিল বিএনডি৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সেল ফোন ট্যাপ করা হয়েছিল৷ ২০১৩ সালে ম্যার্কেল বলেছিলেন, বন্ধুদের মধ্যে গুপ্তচরবৃত্তি, এটি সহজভাবে করা হয়নি৷ স্নোডেনের তথ্য ফাঁসের পর ২০১৪ সালে জার্মানিতে একটি সংসদীয় তদন্তও করা হয়েছিল৷
মেট্রোপলিটন বুকস-এর মুখপাত্র প্যাট ইসিম্যান আগেই জানিয়েছেন, আত্মজীবনী লিখছেন এডওয়ার্ড স্নোডেন। তাঁর লেখা ‘পারমানেন্ট রেকর্ড' বইটি ২০টি দেশে একযোগে প্রকাশ করা হবে৷
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থায় যোগদানের পর স্নোডেন সেখানে যে বিবেকের সংকট দেখেছিলেন, সেসব নিয়েই বইটি লেখা হয়েছে বলে জানায় প্রকাশনা সংস্থাটি৷
ফাবিয়ান ফন ডা মার্ক/এসআই