বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন প্রতিহত, বাতিল ও গণতন্ত্র রক্ষায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন৷ ২৯ ডিসেম্বর রবিবার তিনি সারা দেশের সব শ্রেণির মানুষকে ঢাকা অভিমুখে অভিযাত্রার আহ্বান জানিয়েছেন৷
বেগম খালেদা জিয়াছবি: Getty Images
বিজ্ঞাপন
বিরোধী দলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি৷’
বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার এই নতুন কর্মসূচি রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়াতে পারে৷ আর আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল বা স্থগিতের কোনো সুযোগ নেই৷
৫ম দফায় ৮৩ ঘণ্টার অবরোধ শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়া নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ তিনি রবিবার সারা দেশের মানুষকে গণতন্ত্র রক্ষায় ঢাকায় এসে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান৷ আর ঢাকার বাসিন্দাদের সেদিন একযোগে রাস্তায় নেমে আসার অনুরোধ করেন৷ তিনি বলেন এই কর্মসূচিতে বাধা দিলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে৷ তিনি পরিবহণ মালিক- শ্রমিক, পুলিশ-প্রশাসনসহ সবাইকে এই কর্মসূচি পালনে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন৷
পোশাক শ্রমিকদের নির্বাচনি ভাবনা
আগামী পাঁচ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ কিন্তু সাধারণ মানুষ নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছেন? এই ছবিঘরে পোশাক শ্রমিকদের নির্বাচনি ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিরোধী দলের উপর ‘ক্ষিপ্ত’ আকলিমা
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার পোশাক শ্রমিক আকলিমা বেগম৷ কাজ করেন ঢাকার রামপুরার একটি পোশাক কারখানায়৷ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে অবরোধ দেয়ায় বিরোধী জোটের ওপর ক্ষিপ্ত এই পোশাক শ্রমিক৷ এমনিতেই সামান্য কিছু টাকা বেতন পান৷ তার উপর টানা অবরোধের কারণে নিত্যপণ্যের দাম গেছে বেড়ে৷ ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন আকলিমা৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দিতে পারবেন না লাকী আক্তার
ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন লাকী আক্তার৷ বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে হলেও ভোটার হয়েছেন ঢাকায়৷ তাঁর এলাকার সাংসদ ইতোমধ্যেই একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন৷ তাই ভোট নিয়ে তাঁর কোনো পরিকল্পনা নেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
রুবেলের ভাষায় ‘প্রতিযোগিতাহীন নির্বাচন’
পোশাক শ্রমিক রুবেলের বয়স মাত্র ২৩ বছর৷ কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় তাঁর বাড়ি৷ কাজ করেন ঢাকায়৷ রুবেলের প্রশ্ন, ‘‘প্রতিযোগিতাহীন এই নির্বাচনে ভোট দেয়ার কী আছে?’’ জীবনের প্রথম ভোটটি নষ্ট করতে রাজি নন তিনি৷ একইসঙ্গে আসন্ন নির্বাচনে ভোট দেয়াটাও অর্থহীন মনে করেন তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
এখনো সিদ্ধান্ত নেননি শেফালি
শেফালির বাড়ি ঢাকার পাশে আশুলিয়ায়৷ কাজ করেন, ঢাকার রামপুরার একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ দশম জাতীয় সংসদ নিয়ে তাঁর অভিমত হচ্ছে, দুই পক্ষই যদি ভোটে আসত তাহলে ভালো হতো৷ ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন কিনা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
হোসনে আরার স্বপ্ন ছেলেকে মানুষ করা
গুলশানের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন ফরিদপুরের হোসনে আরা৷ দুপুরের খাবারের বিরতির সময় ছেলেকে নিয়ে বসেছেন পাশের একটি চায়ের দোকানে৷ ভোট নিয়ে তাঁর কোনো চিন্তাভাবনা নেই৷ খেটেখুটে একমাত্র ছেলেকে মানুষ করাই তাঁর স্বপ্ন৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দেবেন না সাদ্দাম হোসেন
সাদ্দাম হোসেনের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে৷ কাজ করেন ঢাকার রামপুরার একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ রাজনীতিবিদদের উপর তাঁর অনেক রাগ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘ভোট দিয়া হইবটা কী? যারা দল করেন তারা কোনো না কোনো ভাবেই লাভবান হন, মরি আমরা শ্রমিকরা৷ ভোট দিব না ভাই৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দিতে গ্রামে যাবেন মিতু
জামালপুরের বকশীগঞ্জের মিতু কাজ করেন ঢাকার গুলশানের একটি তৈরি পোশাক কারাখানায়৷ কাজের ফাঁকে স্বামীর মোবাইল ফ্লেক্সি লোডের দোকানেও বসেন৷ জীবনের প্রথম ভোট দিতে গ্রামে যাবেন মিতু৷ তবে নিরুত্তাপ নির্বাচন তাঁর ভালো লাগছে না৷
ছবি: DW/M. Mamun
ছুটি পেলে ভোট দিতে যাবেন মিজান
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর মিজানুর রহমান কাজ করেন গুলশানের একটি তৈরি পোশাক কারাখানায়৷ ছোট সময় তিনি নির্বাচন দেখেছেন অনেক উৎসবমুখর৷ কিন্তু এবার নিজে ভোটার হয়ে ভোটের উৎসব দেখতে পাচ্ছেন না৷ তারপরেও ছুটি পেলে পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিতে গ্রামে যাবেন মিজান৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট নিয়ে ভাবার সময় নেই সাথীর
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার পোশাক শ্রমিক সাথী৷ কাজ করেন রামপুরার একটি পোশাক কারখানায়৷ নির্বাচন কিংবা ভোট নিয়ে ভাবার সময় নেই তাঁর৷ সাথীর একমাত্র চিন্তা কাজ নিয়ে৷ তিনি মনে করেন, ভালোভাবে কাজ করতে পারলেই সন্তানদের মুখে দুই বেলা খাবার তুলে দিতে পারবেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দেওয়া অনর্থক মনে করেন আব্দুল আলীম
পটুয়াখালী জেলার খেপুপাড়ায় বাড়ি আব্দুল আলীমের৷ কাজ করেন রামপুরার একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ ছুটি নিয়ে এই ধরনের নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়া তার কাছে অনর্থক মনে হয়৷ তাছাড়া তার ধারণা সে ভোট না দিলেও যে প্রার্থী জয়লাভ করার তার জয় হবেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
হাসনা হেনার কাছে ‘নিরুত্তাপ নির্বাচন’
ঢাকার মালিবাগের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন হাসনা হেনা বেগম৷ বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুরে৷ দেশে যে সবচেয়ে বড় ভোট উৎসব চলছে সেটা তাঁর মনেই হচ্ছে না৷ নিরুত্তাপ নির্বাচনে ভোট দিতে চান না হাসনা হেনা৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোট দেয়ার ইচ্ছা ছিল লাইলীর
লাইলী বেগমের বাড়ি পিরোজপুরের জিয়ানগরে৷ ভোটার হয়েছেন ঢাকার তেজগাঁও এলাকায়৷ ভোট দেয়ার ইচ্ছাও ছিল তাঁর৷ কিন্তু শুনতে পাচ্ছেন তাঁর এলাকায় নাকি ভোট হবে না৷ একক প্রার্থী হিসেবে একজন ইতিমধ্যেই জিতে গেছেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
পদত্যাগে ভয় কিসের? প্রশ্ন সোহাগের
সোহাগ মিয়া কাজ করেন ঢাকার মালিবাগের একটি তৈরি পোশাক কারখানায়৷ বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে৷ তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করে বিরোধী দলকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়া উচিত ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘ভালো কাজ করলে পদত্যাগে প্রধানমন্ত্রীর এতো ভয় কিসের? ভোটতো আমরাই দিব৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
13 ছবি1 | 13
‘মেরুদণ্ডহীন’ নির্বাচন কমিশন
কর্মসূচি ঘোষণার আগে খালেদা জিয়া বলেন, সরকার দেশের মানুষ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷ এরই মধ্যে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন৷ বাকি ১৪৬ আসনেও যোগ্য প্রার্থী নেই যে ভোটাররা ভোট দেবেন৷ এটা ইলেকশন নয়, নির্লজ্জ সিলেকশন৷ তিনি বলেন এই প্রক্রিয়ায় জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে৷ সরকার গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে৷ আর মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবাহকে পরিণত হয়েছে৷ তিনি প্রশাসন, পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনকে এই নির্বাচনি কাজে যুক্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷
খালেদা জিয়া তাই ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল করে সরকারকে সংলাপ শুরুর আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, বিরোধী দল আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছে, জাতীয় পর্যায়ে মতপার্থক্য এবং মতবিরোধ মিটিয়ে এখনো সমঝোতার সময় আছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সরকার তা চায় না৷ জনগণই তার প্রমাণ৷’’
খালেদা জিয়া অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে সহিংসতা এবং হতাহতের জন্য সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়ী করেছেন৷ তিনি দাবি করেছেন, সরকার আন্দোলন দমাতে চরমভাবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন করছে৷ তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সরকারের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে মানবাধিকার লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানান৷ আর দেশকে অরাজকতা থেকে রক্ষা, গণতন্ত্র রক্ষা ও মানুষের অধিকার রক্ষায় দলীয় নেতা-কর্মীদের পাড়ায়, মহল্লায় কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন৷
পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে মানবতা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ের জন্য বিরোধীদলের কর্মসূচিতে পুড়ছে যানবাহন, ধ্বংস হচ্ছে সম্পদ, মরছে মানুষ৷ হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো অনেকে এখনো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
সারি সারি পোড়া মানুষ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট এখন হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো জীবিকার তাগিদ কিংবা দৈনন্দিন প্রয়োজনে রাস্তায় নামা মানুষে ভরে গেছে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
শিশুর কষ্ট বোঝেনা তারা!
কোলের শিশুও বাঁচতে পারছেন না জ্বালাও-পোড়াওয়ে হাত থেকে৷ প্রতিপক্ষের আদর্শকে ভুল প্রমাণ করে শ্রেয়তর আদর্শ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নয়, প্রতিপক্ষকে আঘাত করে, হত্যা করে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা অনেক দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ৷ স্বাধীন দেশে নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে পোড়ানোও দেখতে হচ্ছে৷ ৩ নভেম্বর আট বছরের সুমি দাদীর সঙ্গে নেত্রকোনা থেকে ঢাকা আসছিল৷ জয়দেবপুর চৌরাস্তায় তাদের বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বোবা কান্না...
নির্মমতার আরেকটি ছবি হয়ে আছে মজিবরের পোড়া শরীর৷ মজিবর বাকপ্রতিবন্ধী৷ কুমিল্লার দেবিদ্বারের এক ট্রাকের হেলপার৷ পিকেটারদের বোমা হামলায় বাসের সঙ্গে তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ সবাই শুনে বুঝবে এমনভাবে কথা তিনি বলতে পারেন না, বোবা কান্নায় শুধু পারেন অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে, আর্তনাদ করতে আর এ অন্যায়ের প্রতিকার আশা করতে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
মেয়েকে দেখতে গিয়ে মা হাসপাতালে
জাহানারা বেগম৷ বয়স ৫২৷ পেশা – ফেরি করে কাপড় বিক্রি করা৷ হরতাল-অবরোধ থাকলে বিক্রি কমে যায় বলেই হয়তো সেদিন কাপড় নিয়ে বাড়ি বাড়ি না ঘুরে জাহানারা গিয়েছিলেন শ্যামপুরে৷ সেখানে তাঁর মেয়ের বাড়ি৷ মেয়েকে দেখে অটো রিক্সায় ফেরার সময়েই বিপদ৷ বিরোধী দলের কিছু সমর্থক সেই অটোরিক্সাতেও ছুড়ে মারে পেট্রোল বোমা৷ সন্তানের প্রতি অপত্য স্নেহের মূল্য আগুনে পুড়ে চুকাচ্ছেন জাহানারা বেগম!
ছবি: Mustafiz Mamun
তালহার অসহায়ত্ব
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা৷ শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় আবু তালহা সেই থেকে ১ নম্বর বার্ন ইউনিটে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
রাজমিস্ত্রী
রাজমিস্ত্রী ও ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদের শরীর পুড়েছে গত ১২ নভেম্বর৷ সেদিন ঢাকার রায়েরবাগেও একটি চলন্ত বাসে ছোড়া হয় পেট্রোল বোমা৷ সেই থেকে তাঁরও ঠিকানা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বাসচালক
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাহবাগে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো সেই বাসটি চালাচ্ছিলেন মাহবুব৷ যাত্রীদের মতো তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ তাঁর দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময়, অর্থাৎ ১৯৭১ সালেই জন্ম মাহবুবের৷ স্বাধীনতার ৪২ বছর পর দেশ পুড়ছে, তিনিও পুড়েছেন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
ঘুমের মাঝেই আগুন...
৭ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া ফেরিঘাটে বাসে ঘুমাচ্ছিলেন হেলপার আলমগীর৷ থামানো বাসেই দেয়া হয় আগুন৷ পোড়া দেহ নিয়ে এখন তিনি হাসপাতালে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
লেগুনার যাত্রী
১০ নভেম্বর ঢাকার লক্ষীবাজারে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো হয় একটি লেগুনা৷ লেগুনা পুড়ে শেষ, লেগুনার যাত্রী কামাল হোসেন ভাগ্যগুণে বেঁচে গেছেন৷ তবে শরীরের ৩৫ ভাগেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে৷ ৩৬ বছরের এ তরুণ লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে৷ চিকিৎসকদের চেষ্টা এবং সুস্থ মানসিকতার প্রতিটি মানুষের শুভকামনায় তিনি শিগগিরই হয়তো ফিরবেন স্বাভাবিক জীবনে৷ কিন্তু এই দুর্ভোগ, এই দুঃস্বপ্নের দিনগুলো কি কোনোদিন ভুলতে পারবেন?
ছবি: Mustafiz Mamun
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুভও ছিলেন রায়েরবাগের সেই বাসে৷ তাই ১২ নভেম্বর থেকে তিনিও পোড়া শরীর নিয়ে পড়ে আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায়৷
ছবি: Mustafiz Mamun
10 ছবি1 | 10
বিরোধী দলীয় নেত্রী যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব পাসে মর্মাহত হওয়ার কথাও জানান সংবাদ সম্মেলনে৷
‘‘অবরোধের নামে তারা মানুষ হত্যা করেছে’’
খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানান, সংবিধান ও নির্বাচনি আইনে কোনোভাবেই এখন আর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্থগিত বা বাতিলের সুযোগ নেই৷ তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর নতুন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷ আর ঢাকা অভিযাত্রা কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, এতদিন অবরোধের নামে তারা মানুষ হত্যা করেছে, সহিংসতা করেছে৷ এখন তাদের এই নতুন কর্মসূচি সহিংস না অহিংস হবে, তা বলেননি খালেদা জিয়া৷ সরকার এই কর্মসূচিতে বাধা দেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি কোন দিকে যায় তা দেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷
এদিকে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেছেন, এখনো নির্বাচনের তারিখ ১৫-২০ দিন পিছিয়ে দিয়ে সমঝোতা সম্ভব৷ তিনি বলেন একতরফা নির্বাচন কারোর কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না৷ আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দলের এই ধরণের নির্বাচনের দিকে যাওয়া ঠিক হবে না বলে তিনি মনে করেন৷ তিনি বলেন বিরোধী দলের নতুন কর্মসূচি রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াতে পারে, কারণ সরকার চাইবে বাধা দিতে৷ আর বিরোধী দল চাইবে কর্মসূচি সফল করতে৷