নতুন পরমাণু নীতি ঘোষণা করছে ওবামা প্রশাসন
৬ এপ্রিল ২০১০মিত্র দেশগুলোর পরমাণু নিরাপত্তা এবং আক্রান্ত হলেই কেবল পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ রেখে নানা পর্যায়ে পরমাণু অস্ত্রের বিধান সীমিত করা হচ্ছে নতুন এই পরমাণু নীতিতে৷
আগামী ১২ ও ১৩ই এপ্রিল রাজধানী ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক পরমাণু সম্মেলন এবং এ সপ্তাহেই স্নায়ুযুদ্ধকালীণ শত্রু রাশিয়ার সঙ্গে নতুন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির আগে আগে এই পরমাণু নীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে ওবামা প্রশাসন৷
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্বে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার সীমিত করা, পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরাপত্তার প্রশ্নে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে এই নতুন পরমাণু নীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র৷
নিউ ইয়র্ক টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছেন, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলোর জন্য ব্যতিক্রমী বিধান রাখা হলেও নতুন নীতিতে পরমাণু অস্ত্র সীমিত করা হচ্ছে এবং তিনি আশা করছেন এর ফলে পৃথিবী থেকে স্নায়ুযুদ্ধকালীন পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসানে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে৷
‘নিউক্লিয়ার পোশ্চিউর রিভিউ' বা ‘এনপিআর' নামে নতুন এই নীতি সম্পর্কে এক উর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন এই নীতির মধ্য দিয়ে ‘‘পরমাণু যুদ্ধাস্ত্রের বিষয়ে ২১ শতকের নতুন দৃষ্টিভঙ্গিকে আলিঙ্গন করছে যুক্তরাষ্ট্র৷''
ওই কর্মকর্তা বলেন, এনপিআর এর লক্ষ্য হচ্ছে পরমাণু সন্ত্রাসবাদ দমন এবং পরমাণু অস্ত্রের বিস্তাররোধ করা৷ তবে একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং মিত্রদেশগুলোর পরমাণু নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও কার্যকর বিধান থাকবে এই নীতিতে৷
ওদিকে, দ্য টাইমস পত্রিকাকে ওবামা বলেছেন, ‘‘এখন ‘নিউক্লিয়ার পোশ্চিউর রিভিউ'-তে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হচ্ছে আপানারা যদি একটি পরমাণু অস্ত্রহীন দেশ হোন এবং এনপিটি মেনে চলেন, তাহলে তার বিপরীতে এই নিশ্চয়তা থাকছে যে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবো না৷''
তবে, প্রেসিডেন্ট ওবামা একইসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘‘এবং একইসঙ্গে আমি অ্যামেরিকার জনগণকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখার জন্যও প্রয়েজানীয় সব ব্যবস্থাগুলোকেও বজায় রাখছি৷''
ওদিকে, এ বৃহস্পতিবারই চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে রুশ-মার্কিন নতুন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি৷ এই চুক্তিতে দুই দেশের পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরমাণু নীতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন যে, ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য প্রস্তাবিত মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা খুব বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে পড়লে কিংবা তা রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে পড়লে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে রাশিয়া৷
পেন্টাগনে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট গেটস, পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, জ্বালানি মন্ত্রী স্টিভেন চু এবং সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মাইক মালেন এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই পরমাণু নীতি ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ
সম্পাদনা : দেবারতি গুহ