1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন বছরে নবীন আশা

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

রাজনীতিবিমুখ নয়, বরং আজকের প্রজন্ম রাজনীতি সচেতন৷ কিন্তু নিজেদের মতো করে৷

Indien Proteste gegen neues Staatsbürgerschaftsrecht in Delhi
ছবি: Reuters/A. Fadnavis

সোমবার, ক্রিসমাস, নববর্ষ বরণের উৎসবের আবহেও কলকাতায় মিছিল করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা৷ বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে৷ যেদিন থেকে ভারতীয় সংসদে এই আইন পাস হয়েছে, লাগাতার বিক্ষোভ, আন্দোলন চলছে, যার প্রথম সারিতে আছেন ছাত্র-যুব, আজকের প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা৷ তাঁদের আন্দোলন এক ব্যাপকতর মাত্রা পাচ্ছে, যখন পদাধিকারবলে যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সেই রাজ্যপালের হাত থেকে শংসাপত্র নিতে অস্বীকার করছেন তাঁরা৷ কারণ, শিক্ষার্থীরা মনে করেন, রাজ্যপাল বিভাজনের আইনের পক্ষে কথা বলছেন৷ যখন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালাচ্ছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ, প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের আরো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ একসময় দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎপাতের উৎস বলে মনে করত এখনকার বিজেপি সরকার৷ যেহেতু যাবতীয় ছাত্র বিক্ষোভ, আন্দোলন ওখানেই হতো তখন৷ কিন্তু ক্রমশ ছাত্রদের বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে আইআইটির মতো তথাকথিত ‘‌প্রিমিয়ার'‌ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও৷ এবং তার প্রভাব কত প্রবল, সেটা বোঝা যায়, যখন বিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এক জার্মান ছাত্রও প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়ে বহিষ্কৃত হন৷
২০১৯ সাল জুড়ে একাধিক দেশে সরকারবিরোধী, প্রতিষ্ঠানবিরোধী আন্দোলন হয়েছে৷ তার মধ্যে হংকংয়ের আন্দোলনে প্রথম থেকেই প্রথম সারিতে নবীন প্রজন্ম৷ লেবাননে কমবয়সিদের আন্দোলন এক সম্পূর্ণ নতুন বক্তব্যকে সামনে তুলে ধরেছে৷ ওঁরা বলছেন, অসৎ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতাদের আর প্রশাসকের আসনে দেখতে চাইছেন না তাঁরা৷ বরং প্রশাসনের বিভিন্ন পরিষেবার দায়িত্বে আসুন শিক্ষিত টেকনোক্র্যাটরা, যাঁরা বিদ্যুৎ, বা পানীয় জলের সরবরাহ, জনস্বাস্থ্যের মতো জরুরি বিষয়গুলো বুঝবেন৷ এটা সম্পূর্ণ নতুন একটা দিক উন্মোচিত করছে ভবিষ্যতের পৃথিবীর সামনে৷ যেখানে রাজনীতি এবং জনসেবা, দুটোকে আলাদা করতে চাইছে আজকের ছেলেমেয়েরা৷


এই কারণেই ক্রমশ সারা বিশ্বজুড়েই পরিবেশ সুরক্ষার আন্দোলনে আরো বেশি করে জড়িয়ে পড়ছেন, দূষণ নিয়ে ভাবিত হচ্ছেন কমবয়সিরা৷ গ্রেটা ট্যুনবার্গ তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করছেন বলা যায়৷ ভারতের মতো দেশেও স্কুল পর্যায়ে পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে এমন অনেক উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে, যা আগে কখনো যায়নি৷ এই প্রবণতা আশা জোগাচ্ছে, হয়ত ভবিষ্যতের পৃথিবী আজকের থেকে অনেক বেশি বাসযোগ্য হবে৷ অবশ্য শুধু নবীন প্রজন্মই নয়, সামগ্রিকভাবে মানুষ তার নিজের অভাব–অভিযোগ সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন এবং সরব হয়েছেন৷ দল, গোষ্ঠী, বা মতাদর্শের বিভাজন অস্বীকার করে জোট বাঁধছেন দাবি আদায়ের লড়াইয়ে৷ একদিকে যেমন গ্রাম-মফস্বল থেকে মিছিল করে এসে শহর অবরুদ্ধ করে দিচ্ছেন কৃষকরা, তেমনই শিক্ষকরা প্রাপ্য সম্মানের দাবিতে রাস্তায় নামছেন৷ এক্ষেত্রে লক্ষ করার মতো বিষয়, যাঁরা মানুষের মুখে খাবার জোগান এবং যাঁরা শিক্ষা দিয়ে ভবিষ্যৎ গড়েন— সমাজের গুরুত্বপূর্ণ দুই পক্ষই সমানভাবে বঞ্চিত৷ কারো কথাই শাসক শোনে না, বরং নানাভাবে তাঁদের আরো হেনস্থার মুখে ফেলে, যা দেখা গেছে এবছর পশ্চিমবঙ্গে পার্শ্ব-শিক্ষকদের আন্দোলনে৷ প্রতিবাদ করার মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারও যাতে তাঁরা না পান, লাগাতার সেই চেষ্টা করে গেছে প্রশাসন৷ তাতেও ওঁরা হার মানেননি৷ মাটি কামড়ে পড়ে থেকে লড়ে গেছেন৷
প্রশাসনের বিরুদ্ধে, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই যে হার না মানা মনোভাব, সমাজের সবকটি স্তরে, তার প্রতীক হয়ে থাকবে ২০১৯ সাল৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ