মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্ট এবারের বিজয় দিবসে নতুন রূপে আসছে৷ ট্রাস্টের পরিচালক সাব্বির হোসেইন জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের উপর ৪ হাজার বই, এক হাজার ডকুমেন্টারি, ভিডিও ক্লিপ, সংবাদপত্রের কাটিং ও মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য রয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি স্টার' যুক্তরাষ্ট্রের ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণারত মো. সাজ্জাদুর রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়েছে৷ সাক্ষাতকারে মো. সাজ্জাদুর রহমান জানান, দেশের বাইরে থেকে মুক্তিযু্দ্ধের বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করা খুবই কঠিন৷ সেক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্ট-এর কাছ থেকে তিনি গবেষণার অনেক তথ্য উপাত্ত পেয়েছেন৷
তাঁর মতে, এটি একটি ডিজিটাল গ্রন্থাগার, সংগ্রহশালা এবং তা ঐতিহাসিক দলিল সমৃদ্ধ৷ এটি একেবারেই অবাণিজ্যিক এবং সেচ্ছাসেবীরাই আর্কাইভের কাজটি করে থাকেন৷ ২০০৭ সালে এই ওয়েবসাইটটির কাজ শুরু হয়৷
ডিসেম্বর মাস বাংলাদেশের বিজয়ের মাস৷ বুধবার ছিল শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে৷ তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে – তা নিশ্চিত করা৷ পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দু'দিন আগে বুদ্ধিজীবী হত্যায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামস বাহিনীর সদস্যরা৷ শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের নির্মম চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়৷ ওই জায়গা দুটি পরে বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে৷ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন৷ কেউ শেয়ার করেছেন শহিদদের নিয়ে লেখা স্মৃতি৷
‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’
বাংলাদেশের ৪৪তম বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে মহাসমারোহে৷ দিনটি উপলক্ষ্যে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভীড় করেন অসংখ্য মানুষ৷ রাজনীতিবিদরা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান৷
ছবি: DW
লাল-সবুজে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশ
ঢাকার অদূরে সাভারে সারাদিন ছিল লাল-সবুজের ভিড়৷ স্মৃতিসৌধে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা অধিকাংশ মানুষের হাতে ছিল ছোট বড় পতাকা৷ লাল-সবুজের ভিড়ে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকায় গড়ে ওঠে উৎসবের আমেজ যা কার্যত গোটা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছে৷
ছবি: DW
বিজয় দিবসের সেলফি
সেলফি তোলার ক্রেজ এখন গোটা বিশ্বে৷ বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা কি সেই ট্রেন্ডের বাইরে থাকতে পারে? বিজয় দিবসে সাভারে তাই অনেককে দেখা গেছে এভাবে সেলফি তুলতে৷
ছবি: DW
ভিনদেশিদের আগমন
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশে চলতি বছর ব্লগার, বিদেশিদের উপর বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছেন চার ব্লগার, দুই বিদেশি নাগরিক৷ ফলে দেশটিতে বিদেশিদের চলাফেলায় সতর্কতা জারি করে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ৷ তা সত্ত্বেও বিজয় দিবসে সাভারে হাজির হন বিদেশিরা৷ যেন বিজয় উদযাপনে নিরাপত্তা কোনো ইস্যুই নয়৷
ছবি: DW
হাজির ভবিষ্যত প্রজন্ম
এভাবেই বাবার কাঁধে করে সাভারের স্মৃতিসৌধে এসেছে ভবিষ্যত প্রজন্মের অনেক প্রতিনিধি৷ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি ইতিহাস দীর্ঘ সময় ধরে পরিবর্তন করা হয়েছে৷ যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দল তাদের মতো করে বিজয়ের ইতিহাস প্রকাশের চেষ্টা করে৷ তবে বর্তমানে ইন্টারনেটের কারণে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সহজে জানা যাচ্ছে৷
ছবি: DW
অনুষ্ঠান সারাদেশে
শুধু সাভার নয়, বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে সারাদেশে৷ বাংলাদেশে দিনটি সরকারি ছুটির দিন৷ ঢাকার সোহরওয়ার্দি উদ্যান, যেখানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পন করেছিল, সেখানে এক অনুষ্ঠানে সমবেত স্বরে গাওয়া হয়েছে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি৷’
ছবি: DW
৪৪তম বিজয় দিবস
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় আত্মসমপর্ন করে পাকিস্তানি বাহিনী৷ শেষ হয় নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ৷ বাংলাদেশ অর্জন করে চূড়ান্ত বিজয়৷
ছবি: DW
6 ছবি1 | 6
জাফর ওয়াজেদ লিখেছেন, ‘‘শিক্ষক ড. মালেকের বাড়িতে ঢুকে হানাদাররা তার টাকা ও গয়না লুটপাটের পর বাথরুমে লুকিয়ে থাকা দুই কন্যা ও স্ত্রীকে ধরে নিয়ে গেল, যারা আর ফেরেননি৷ যাবার সময় খতম করে যায় ড. মালেককে৷'' শহিদ আনোয়ার পাশা তাঁর লেখা উপন্যাসে জগন্নাথ হলের মাঠে গণহত্যার বর্ণনা করেছেন এভাবে, ‘‘ সমস্ত জীবনটাকেই একটা তীব্র বিরূপ বলে সুদীপ্তর মনে হলো, যখন তিনি জগন্নাথ হলের মাঠে সদ্য পুঁতে দেয়া নারী-পুরুষের কারও হাতের আঙুল, কারও পায়ের কিয়দংশ মাটি-ফুঁড়ে বেরুনো বৃক্ষ-শিশুর মতো মাথা তুলে থাকতে দেখলেন৷ কত শব এইখানে পুঁতেছে ওরা? এবং এমনি কত স্থানে !'' আনোয়ার পাশা একজন বাংলাদেশি কবি, কথা সাহিত্যিক এবং শিক্ষাবিদ৷ একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর তাঁকেও ধরে নিয়ে হত্যা করে আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা৷ চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান ও লেখক শহীদুল্লাহ কায়সার এবং লেখক জহির রায়হানকেও বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় আল বদর বাহিনী৷ তাঁরাও আর ফেরেননি৷
শহিদ কন্যা মেঘনা গুহঠাকুরতা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন শহিদ কবি সেলিনা পারভীনের কথা৷ যেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘কবি সেলিনা পারভীন সর্বত্রই তার স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য সমালোচিত হতেন, চাকরি হারাতেন৷ ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন আর পাশাপাশি নিজের পত্রিকা প্রকাশের কাজ করতে থাকেন৷ একাত্তরে বাঙালি বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনাতে সেলিনা পারভীনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়৷ ১৩ ডিসেম্বর কারফিউয়ের মধ্যে সিদ্ধেশ্বরী আউটার সার্কুলার রোডের বাসা হতে সেলিনা পারভীনকে চোখ বেঁধে একটা মাইক্রোবাসে করে উঠিয়ে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী৷ ছেলে সুমনকে ছেড়ে যাওয়ার সময়ও তিনি নির্ভীক আচরণ করেন৷ এরপর ১৮ ডিসেম্বর রায়ের বাজারের বধ্যভূমিতে চোখে ও কানে বুলেট এবং বেয়নেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত সেলিনা পারভীনকে পাওয়া যায়৷''
‘তোমাদের এই ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না’
১৬ই ডিসেম্বর, বাংলাদেশের বিজয় দিবস৷ ন’মাসের মুক্তিযুদ্ধ আর চরম আত্মত্যাগে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে৷ জাতি তাই আজ স্মরণ করছে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য আন্দোলনরত ছাত্রদের বুকে গুলি চালানো হয়৷ রফিক, সালাম, বরকতসহ অনেকে এদিন শহিদ হন৷ সেই তার সঙ্গে সঙ্গেই রচিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি৷
ছবি: Archiv Rowshan Jahan Shathi
কাল রাত
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে বাঙালি নিধন শুরু করেছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী৷ তার জবাব দেয়া হয় স্বাধীনতা ঘোষণা আর মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে৷ যুদ্ধকালীন নয় মাসের চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশিদের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী৷
ছবি: DW/M. Mamun
ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া দেশ
১৬ই ডিসেম্বর অনেক ত্যাগ আর তিতিক্ষার বিনিময়ে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় ‘বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন রাষ্ট্র, পায় নতুন একটা মানচিত্র৷ স্বাধীনতার জন্য জীবন দেন ৩০ লাখ মানুষ৷ দেশের বাতাসে তাই আজ ভেসে বেড়াচ্ছে সেই গান – ‘তোমাদের এই ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না’৷
ছবি: AP
রাষ্ট্রীয় ভাবে পালন
বরাবরের মতোই দিনটিকে পালন করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে৷ তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে ৪৪তম বিজয় উৎসব শুরু হয়৷ আর ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মৃতির বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন সরকার প্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতারা৷
ছবি: DW/M. Mamun
মানুষের ঢল
রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢল নামে সর্বস্তরের মানুষের৷ মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী সবাই সমবেত হন শ্রদ্ধার্ঘ্য হাতে৷
দেশের প্রতিটি শহরে নানা ভাবে বিজয় উদযাপন চলছে৷ শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সহ চলছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷
ছবি: AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
বুদ্ধিজীবী দিবসে পল্লব হোসেন লিখেছেন, ‘‘অন্য বছরের শহিদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস উদযাপনের চেয়ে এবারের শহিদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস উদযাপনের একটা ভিন্ন তাৎপর্য আছে, কারণ, গত কয়েক বছরে একাত্তরে গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে প্রথম সারির কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হয়েছে এবং কয়েকজন জেল খাটছেন৷ এবারের বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন তাই দুঃখভারাক্রান্ত স্মৃতিচারণ ও বেদনাহত পরিস্থিতির মধ্যেও খানিকটা আনন্দের৷''
ফিরোজ আহমেদ লিখেছেন, ‘‘প্রায়ই দেখবেন, বুদ্ধি বিক্রি করা মানুষগুলো যেমন হয় খুব চতুর, সত্যিকারের বুদ্ধিজীবীরা হন শিশুর মতো সরল৷ শিশুর সারল্য আর অকপট প্রকাশের অধিকার যে সমাজে বুদ্ধিজীবীর সাধারণ সংস্কৃতি, সেই সমাজ যে কোনো বিপদ অতিক্রম করতে পারবে৷ দুর্ভাগ্যক্রমে, মোসাহেবের দুর্নীতি আর কুটিলতা অধিকাংশ বুদ্ধি বিক্রি করা পণ্ডিতের সাধারণ বৈশিষ্ট্য, এই সমজে তারাই এই মুহূর্তে প্রায় একচেটিয়া দাপটের সাথে আছে৷ যে অল্প কিছু মানুষ এই নিদারুণ সময়েও তাদের স্পর্ধা ধরে রেখেছেন, তাদের শ্রদ্ধা জানাই শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এই উপলক্ষ্যটিতে৷''
অন্যদিকে, এই বিশেষ দিনটিতে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো সব শহিদের নাম গেজেটভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে শহিদ সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ৭১৷ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে রায়ের বাজার বদ্ধভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক মানববন্ধন থেকে তাঁরা এ দাবি জানিয়েছেন৷
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
ভিন্ন মাত্রায় বিজয় উদযাপন
বাঙালির কাছে এবার বিজয় দিবস নতুন রূপে ধরা দিয়েছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির তিনদিন পর এই বিজয় উৎসব জাতিকে ভিন্ন মাত্রায় উজ্জীবিত করেছে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
অনেক ত্যাগ আর তিতিক্ষার বিনিময়ে পৃথিবীর বুকে জন্ম নিয়েছিলো ‘বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন রাষ্ট্র, পেয়েছে নতুন মানচিত্র৷ আজ ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪২ বছর পূর্তি৷ সেই উপলক্ষ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিরোধী নেতার শ্রদ্ধা
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া৷
বড়দের সঙ্গে এসেছিল শিশুরাও৷ বুঝে হোক, কিংবা না বুঝে, বড়দের সাথে সাথে তারাও শ্রদ্ধা জানিয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের৷
ছবি: DW/M. Mamun
"বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব পতাকা"
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির হাজার প্রাণের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী৷ তাদের পরাজয়ে উদিত হয় একটি নতুন দেশের সূর্য৷ সূচিত হয় নতুন ইতিহাস, নতুন পতাকা৷ স্বাধীনতার ৪২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব পতাকা তৈরি করেন প্রায় ত্রিশ হাজার সেনা সদস্য, স্কুল শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
নতুন রূপে বিজয় দিবস
এবারের বিজয় দিবস বাঙালির কাছে নতুন রূপে ধরা দিয়েছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির তিনদিন পর এই বিজয় দিবস জাতিকে ভিন্ন মাত্রায় উজ্জীবিত করেছে, দিয়েছে নতুন সাহস৷ ৪২ বছর ধরে জাতি যা চেয়েছে, তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
নয় মাসের আত্মত্যাগ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বাঙালি নিধন শুরু করেছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী৷ তার জবাব দেয়া হয় স্বাধীনতা ঘোষণা আর মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে৷ যুদ্ধকালীন ৯ মাসের চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ৷ স্বাধীনতার জন্য জীবন দেন ৩০ লাখ মানুষ৷
ছবি: AP
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার
স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামসসহ স্বাধীনতা বিরোধীরা ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছিল৷ হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা৷ এই সব রাজাকারদের বিচারের আওতায় আনতে কয়েক দশক সময় লেগে যায়৷
ছবি: Reuters
মুক্তি আন্দোলনের সূত্রপাত
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য আন্দোলনরত ছাত্রদের বুকে গুলি চালানো হয়৷ রফিক, সালাম, বরকতসহ অনেকে শহিদ হন৷ সেই সময়ই রচিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি৷
ছবি: DW/M. Mamun
লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করেছিল সেই জায়গায় লাখো কণ্ঠে একসঙ্গে উচ্চারিত হলো ‘‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি৷'' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গানটিই একাত্তরের রণাঙ্গণে বাঙালি জাতিকে প্রেরণা যুগিয়েছিল, শক্তি দিয়েছিল –যা পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসাবে গ্রহণ করা হয়৷ ‘বিজয় ২০১৩' মঞ্চে বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে এই গানে কণ্ঠ মেলান উপস্থিত লাখো জনতা৷