বায়ার্ন মিউনিখের রবার্ট লেভানডোস্কি গত মৌসুমে ৪৭ ম্যাচে ৫৫ গোল করে ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। ফলে মেসি, রোনালদোকে হারিয়ে এবার তিনিই ফিফার বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার জুরিখে এই পুরস্কার দেয়া হয়। ২০১৮ সালে ক্রোয়েশিয়া ও রেয়াল মাদ্রিদ তারকা লুকা মডরিচের পরদ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে পোলিশ তারকা লেভানডোস্কি মেসি-রোনালদোর প্রায় এক যুগের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাগ বসালেন।
এর আগে গত অক্টোবরে ইউরোপের সেরা ফুটবলারও নির্বাচিত হন ৩২ বছর বয়সি লেভানডোস্কি। চলতি মৌসুমেও তার দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স বহাল আছে। এখন পর্যন্ত ১৭ ম্যাচে গোল করেছেন ১৮টি।
এদিকে, ফিফার বর্ষসেরা তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন রোনালদো। তার পরের অবস্থান মেসির।
নিজের সেরা তিন ফুটবলার বাছাইয়ে রোনালদো মেসিকে ভোট দিলেও মেসি তার একটি ভোটও রোনালদোকে দেননি।
মেসি ছাড়াও লেভানডোস্কি ও এমবাপেকে ভোট দিয়েছেন রোনালদো। আর মেসির তালিকা ছিল এরকম- নেইমার, এমবাপে ও লেভানডোস্কি।
ফিফার সব বর্ষসেরারা
১৯৯১ সাল থেকে বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত করে আসছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা৷ ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ফরাসি ফুটবলের পুরস্কার ব্যালন ডি অঁর-এর সাথে মিলে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Stansall
লুথার ম্যাথেউস
১৯৯০ সালে ম্যাথেউসের নেতৃত্বেই বিশ্বকাপ জেতে পশ্চিম জার্মানি৷ দারুণ নৈপুণ্যের স্বীকৃতি হিসেবে সেবছর ইউরোপ সেরার পুরস্কারও পান তিনি৷ পরের বছর ১৯৯১ সালে প্রথমবারের মতো চালু হয় ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার৷ জার্মানির ইতিহাসে ফিফার এই পুরস্কার পাওয়া একমাত্র খেলোয়াড় ম্যাথেউস৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Kleefeldt
মার্কো ফন বাস্তেন
ইনজুরির কারণে মাত্র ২৮ বছর বয়সে অবসরে যেতে বাধ্য হন ডাচ এই ফুটবলার৷ কিন্তু এর মধ্যেই ক্রীড়ানৈপূণ্য দিয়ে সবার নজর কাড়েন তিনি৷ ১৯৯২ সালে দ্বিতীয় ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার যায় তাঁর ঘরে৷ ব্যালন ডি অঁর জিতেছেন তিনবার, ১৯৮৮, ১৯৮৯, ১৯৯২ সালে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দুই ইটালিয়ান
১৯৯৩ সালে ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের পাশাপাশি ব্যালন ডি অঁরও পান রবার্তো বাজ্জিও৷ বাজ্জিওর পর দ্বিতীয় ইটালিয়ান হিসেবে ২০০৬ সালে ফিফার এই সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন ফাবিও কানাভারো৷ একই বছর ব্যালন ডি অঁরও যায় তাঁর ঝুলিতে৷
ছবি: picture-alliance/AP Pjoto/M. Probst
ব্রাজিলের পাঁচ জন
বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে দেশ হিসেবে ব্রাজিলের সাথে পাল্লা দেয়ার কেউ নেই৷ কিন্তু ব্যক্তি হিসেবে বিশ্বসেরার পুরস্কার জুটছিল না অনেকদিন ধরেই৷ ১৯৯৪ সালে বিশ্বসেরা হয়ে সে আক্ষেপ ঘুচান রোমারিও৷ এরপর ১৯৯৯ সালে রিভালদো, ২০০৭ সালে কাকা, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে রোনালদিনিয়ো এবং ১৯৯৬, ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে ফিফার বর্ষসেরা হন রোনালদো৷ পাঁচ খেলোয়াড় মিলে ৮ বার পুরস্কার ঘরে নিয়ে এখন এই দিকেও সেরা ব্রাজিল৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Ugarte
বর্ষসেরা থেকে প্রেসিডেন্ট
গোটা আফ্রিকা মহাদেশে এখন পর্যন্ত একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বসেরার পুরস্কার জেতেন লাইবেরিয়ার জর্জ উইয়াহ৷ ১৯৯৫ সালে পৃথিবীর সব নামিদামি খেলোয়াড়কে পেছনে ফেলে ফিফার বর্ষসেরা হন উইয়াহ৷ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাঁকে৷ মজার কথা, খেলার মাঠের পাশাপাশি রাজনীতির মাঠেও সমান জনপ্রিয় তিনি৷ এবছরই লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি৷
ছবি: AP
দুই পর্তুগীজ
পর্তুগাল বললেই সবার আগে চোখে ভাসে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর নাম৷ রোনাল্ডো সম্পর্কে নতুন করে আর বলার কিছু নেই৷ ২০০৮, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৭ সাল মিলিয়ে মোট পাঁচবার বর্ষসেরা হয়ে মেসির রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু পর্তুগালের হয়ে সর্বপ্রথম এ সম্মান ঘরে এনেছিলেন রোনাল্ডোর পূর্বসূরি লুই ফিগো৷ ২০০১ সালে তাঁর নাম ঘোষণা করে ফিফা৷
ছবি: Reuters/J. Nazca
লিও দ্য গ্রেট
কে সেরা? মেসি, না রোনাল্ডো? ক্লাব অথবা বিশ্বকাপ, কোথাওই এখনো এ প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি৷ ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর মতোই পাঁচবারের বর্ষসেরার তকমা নিয়ে লড়াই জিইয়ে রেখেছেন লিওনেল মেসি৷ মেসি এ পুরস্কার পান ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত টানা চারবার এবং ২০১৫ সালে আরো একবার৷
ছবি: Getty Images/G. Rossi
জিনেদিন জিদান
শুধু ফ্রান্স নয়, বিশ্বের সর্বকালের সেরাদের মাঝেও আসে জিনেদিন জিদানের নাম৷ নিখুঁত পাস, অসাধারণ বল কন্ট্রোল এবং টেকনিকের কারণে তাঁকে মনে রাখবে বিশ্ববাসী৷ ফ্রান্সের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে হলেও ১৯৯৮, ২০০০ এবং ২০০৩ সালে তিনবার বর্ষসেরার পুরস্কার নিয়ে পুষিয়ে দিয়েছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/G. Fuentes
লুকা মডরিচের ২০১৮
দীর্ঘ এক দশক কাউকে সুযোগ দেননি লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো৷ ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা বর্ষসেরার পুরস্কার নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন তাঁরা৷ তবে ফুটবল রাজত্বে নতুন রাজার আবির্ভাব যে ঘটেছে তা বিশ্বকাপেই বুঝিয়েছেন লুকা মডরিচ৷ প্রায় একক নৈপুণ্যে নিজ দেশ ক্রোয়েশিয়াকে নিয়েছেন ফাইনালে৷ ২০১৮ সালে বর্ষসেরা তাই অবধারিতভাবেই লুকা মডরিচ৷
ছবি: Reuters/D. Martinez
9 ছবি1 | 9
অন্যান্য পুরস্কার:
বর্ষসেরা নারী ফুটবলার ইংল্যান্ড ডিফেন্ডার লুসি ব্রোঞ্জ
সেরা কোচ লিভারপুলের ইয়ুর্গেন ক্লপ
সেরা নারী কোচ নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলের সারিনা ভিগমান
সেরা পুরুষ গোলরক্ষক জার্মানি ও বায়ানের মানুয়েল নয়ার
সেরা গোল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বার্নলির বিরুদ্ধে করা টটেনহামের দক্ষিণ কোরীয় স্ট্রাইকার সনের গোল