গত বছর বাসের চাপায় দুই স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর পর ঢাকায় শুরু হয় শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলন৷ এরপর শাস্তির বিধান কঠোর করে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করে সরকার৷ ১ নভেম্বর থেকে তা কার্যকরের জন্য ২২ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি হয়৷

আইনটি বাস্তবায়নে শুরুতেই দেখা দেয় জটিলতা৷ ট্রাফিক পুলিশের সফটওয়্যার আপডেট না করায় নতুন হারে জরিমানা আদায় করা যায়নি এক নভেম্বর থেকে৷ তৈরি হয়নি আইনের প্রয়োজনীয় বিধিমালাও৷ আইনের প্রয়োগ তাই শুরু হচ্ছে পরবর্তী সপ্তাহ থেকে৷

গাড়ি চালাতে হলে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে৷ না হলে ভোগ করতে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ড৷

একজনের ড্রাইভিং লাইসেন্স আরেকজনকে দেয়া যাবে না৷ এজন্য এক মাসের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে৷

গণপরিবহনে কন্ডাক্টরের জন্যেও লাইসেন্স লাগবে৷ লাইসেন্স ছাড়া কেউ এই দায়িত্ব পালন করলে তার এক মাসের জেল, পাঁচ হাজার টাকা পরিমানা হতে পারে৷

নিবন্ধন ছাড়া কোন মোটরযান ব্যবহার করলে শাস্তি ছয় মাসের কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা৷

ফিটনেস সনদ ছাড়া, মেয়াদোত্তীর্ণ সনদ ব্যবহার করে বা ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানার মুখে পড়তে হতে পারে৷

মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের শাস্তি দুই বছর জেল ও পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা৷

মোটরযান এবং পথচারীদের চলাচলে ট্রাফিক সাইন বা সংকেত মেনে চলতে হবে৷ জেব্রা ক্রসিং, ফটওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস সুবিধা থাকলে সেগুলো ব্যবহার করে পথচারীদের পারাপার হতে হবে৷ না হলে এক মাসের জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হবে৷

গণপরিবহনে ভাড়ার তালিকা প্রদর্শন করতে হবে৷ এর বরখেলাপ বা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে এক মাসের জেল, ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে৷

ডিএমপি কমিশনার জানিয়েছেন, সড়ক পরিবহন আইনে অপরাধের দায়ে কাউকে জরিমানা করা হলে সেক্ষেত্রে আপিলের সুযোগ আছে৷ প্রথমবার কেউ অপরাধ করলে তাকে সহনীয় পর্যায়ে জরিমানা করা হবে৷

আইন কার্যকর ঠিকমতো করা হচ্ছে কিনা সেজন্য সার্জেন্টের পোশাকে ক্যামেরা লাগানো থাকবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার৷ সেটি বন্ধ থাকলে বুঝে নেয়া হবে, ‘‘অবৈধ কাজের জন্য ক্যামেরা বন্ধ ছিল’’৷