জর্ডানে সরকারি উদ্যোগে মসজিদে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার শুরু হয়৷ এখন দেশটির প্রায় সব মসজিদের জ্বালানি চাহিদার শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে পূরণ হচ্ছে, বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা৷
বিজ্ঞাপন
দেশটির এক গ্রিন কনসালটেন্সিতে কাজ করা কর্মকর্তা ইয়াজান ইসমাইল থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে জানান, ২০১৪ সালে ধর্ম মন্ত্রণালয় আম্মানের মসজিদগুলোকে সবুজ করার প্রকল্প শুরু করে৷ প্রকল্প বাস্তবায়ন এতটাই সফল হয়েছে যে, অনেক মসজিদ এখন তাদের উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে বিক্রিও করছে৷
আম্মানের তা'লা আল-আলি মসজিদের ইমাম বলেন, সৌরশক্তি ব্যবহারের প্রধান কারণ, ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করা৷ কারণ ইসলাম ধর্মে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি৷
তবে সৌরশক্তি ও এলইডি বাল্ব ব্যবহারের কারণে মসজিদ কর্তৃপক্ষ আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন তিনি৷
উল্লেখ্য, আম্মান হচ্ছে বিশ্বের ৭০টি শহরের একটি, যারা ২০৫০ সালের মধ্যে ‘কার্বন নিরপেক্ষ' হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে৷ এর মানে হচ্ছে, এই শহরগুলো যে পরিমাণ জলবায়ু পরিবর্তনকারী গ্যাস নির্গমন করবে, তার চেয়ে বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণকারী গাছ লাগাবে কিংবা অন্য কোনো পরিবেশবান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে৷
দেশটির পরিবেশমন্ত্রী নায়েফ হামাইদি আল-ফায়েজ থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, ‘‘আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছি৷''
২০২২ সালের মধ্যে দেশের মোট জ্বালানি চাহিদার ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে মেটানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে জর্ডান৷ তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন আল-ফায়েজ৷ সে লক্ষ্যে শুধু মসজিদ নয়, ঘরবাড়ি, স্কুল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি ভবনের ছাদেও সোলার প্যানেল বসানো হচ্ছে বলে জানান তিনি৷
১৫ হাজার মসজিদ চলবে সৌরপ্রযুক্তি দিয়ে
মরক্কোর মোট জ্বালানির ৯৫ শতাংশ আসে বিদেশ থেকে৷ এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে দেশটি৷
ছবি: picture alliance/Arco Images
মহাপরিকল্পনা
মরক্কো আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ১৫ হাজার সরকারি মসজিদে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে৷ কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে৷ এই পরিকল্পনার আওতায় মসজিদগুলোতে জ্বালানি-সাশ্রয়ী বাতি, সৌরচালিত ওয়াটার হিটার ও সৌরপ্যানেল বসানো হবে৷
ছবি: DW/J. Thurau
উদ্দেশ্য
একটি উদ্দেশ্য অবশ্যই পরিবেশ রক্ষা৷ সঙ্গে আছে খরচ কমানো এবং নাগরিকদেরও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহিত করে তোলা৷ কারণ কোনো নাগরিক যখন দেখবেন এই জ্বালানি ব্যবহার লাভজনক, তখন তিনিও তা শুরু করবেন৷
ছবি: DW/D. Guha
খরচ কমেছে ৮০ শতাংশ
এটি আস-সুন্না মসজিদ৷ রাজধানী রাবাতে অবস্থিত৷ ইতিমধ্যে সেখানে সোলার প্রযুক্তি বসানো হয়েছে৷ ফলে জ্বালানি খরচ কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ৷ ঐ মসজিদে সৌরপ্রযুক্তি বসাতে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ডলার৷ তবে এর ফলে জ্বালানি বাবদ খরচ প্রতি বছর কমবে ৭ হাজার ডলার করে৷
ছবি: picture-alliance/maxppp/S. Assier
পাওয়ার গ্রিডে সরবরাহ
সৌরপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আস-সুন্না মসজিদে যে জ্বালানি উৎপাদিত হবে তার বাড়তি অংশ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে৷
ছবি: DW/D. Guha
২০৩০ সালের মধ্যে...
ঐ সময়ের মধ্যে মরক্কোতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে তার অর্ধেক নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দেশটি৷ এই লক্ষ্য পূরণে সৌরশক্তিসহ অন্যান্য উৎস খুঁজে বের করতে অনেকদিন ধরে কাজ করছে মরক্কো৷
ছবি: cc-by-sa-3.0/Daniel Csörföly
চাকরির সুযোগ
লক্ষ্য পূরণে প্রতিবছর ৮ থেকে ১০ হাজার নাগরিককে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে গড়ে তুলছে দেশটি৷ এছাড়া জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি তৈরি ও স্থাপনের মতো বিষয়গুলো কোর্স কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে৷