1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে নব্য-নাৎসি দৌরাত্ম্য

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২

নব্য নাৎসিদের হাতে নিহতদের পরিবারের কাছে অবশেষে ক্ষমা চাইলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বার্লিনে এক স্মরণ সভায় ম্যার্কেল কয়েক বছর ধরে নাৎসি হামলায় নিহতদের হত্যাকারীদের আটকে তদন্তে ঘাটতির কথা স্বীকার করেন৷

German Chancellor Angela Merkel delivers a speech during a memorial ceremony for victims of far-right violence in Germany at the Concert Hall at the Gendarmen Markt in Berlin Thursday, Feb. 23, 2012. (Foto:Markus Schreiber/AP/dapd)
ছবি: AP

বার্লিনে বৃহস্পতিবার এক স্মরণসভায় আট তুর্কি, এক গ্রিক এবং এক জার্মান নারী পুলিশের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ নব্য নাৎসিদের হাতে দশ ব্যক্তি নিহত হলেও জার্মান নিরাপত্তা বাহিনী তা সহজে শনাক্ত করতে পারেনি৷ বার্লিনের গ্র্যান্ড কনসার্ট হাউসে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘এদেরকে হত্যার কারণ দীর্ঘ সময় ধরেই অজানা ছিল৷ এটা নির্মম সত্য যে, এই বছরগুলো আপনাদের কাছে অন্তহীন দুঃস্বপ্নের মতো ছিল৷ এজন্য আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি৷ ম্যার্কেল আরও বলেন, ‘‘জার্মানিতে কিছু মানুষ ধারণা করেছিল, ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে সংগঠিত এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোন উগ্র-দক্ষিণপন্থী দল জড়িত রয়েছে৷ তা সত্ত্বেও তদন্তকারীরা এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মাফিয়া কিংবা মাদক-পাচারের কোন সম্পর্ক কিংবা হতভাগাদের পরিবারের কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখেছে''৷

গত নভেম্বর মাসে এসব হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ প্রকাশ পায়৷ এবং এরপরই বিষয়টি জার্মানিতে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তোলে৷ জার্মানির পূর্বাঞ্চলে সুইকাউ শহরের এক উগ্র দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠী কয়েক বছর ধরে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে গেলেও গোয়েন্দারা তা শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়৷ শুধু মানুষ হত্যা নয়, এই দল প্রায় ডজনখানেক ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গেও জড়িত বলে জানা যায়৷

উগ্র দক্ষিণপন্থী এই দলটি নিজেদেরকে ‘ন্যাশনাল সোশালিস্ট আন্ডারগ্রাউন্ড' হিসেবে আখ্যা দেয়৷ এই দলের দুই সদস্য একটি ব্যাংক ডাকাতির পর আত্মহত্যা করে৷ কিন্তু দলের অপর এক নারী সদস্য আত্মহত্যাকারীদের ফেলে যাওয়া তথ্যউপাত্ত নষ্ট করতে গেলে পুরো বিষয়টি ধরা পড়ে৷ পুলিশ তখন অস্ত্র, নব্য নাৎসিদের বিভিন্ন পরিকল্পনা এবং তাদের হাতে নিহতদের বিভিন্ন ছবির সন্ধান পায়৷

নিজের পিতাকে হারিয়েছেন সেমিয়া সিমসেক (ডানে)ছবি: dapd

যারা নব্য নাৎসিদের হামলার শিকার হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা ফাস্ট-ফুড দোকানদার৷ হালিত নামক ২১ বছর বয়সি এক ভুক্তভোগীর পিতা ইসমাইল ইয়োজগাট বলেন, ‘‘২০০৬ সালে আমার সন্তান আমার কোলেই প্রাণ হারায়৷ একটি ইন্টারনেট ক্যাফেতে সে গুলিবিদ্ধ হয়৷'' তিনি কাসেল শহরের যেই রাস্তায় তাঁর ছেলে বেড়ে উঠেছে এবং নিহত হয়েছে, সেই রাস্তার নামকরণ ছেলের নামে করার আহ্বান জানান৷

সেমিয়া সিমসেক'এর বাবা এন্ভার সিমসেক নুরেমবার্গে ফুল বিক্রি করার সময় গুলিবিদ্ধ হন৷ সেমিয়া জানান, দীর্ঘসময় তারা নিজেদেরকে ভুক্তভোগী মনে করেন নি, কেননা সন্দেহ করা হয়েছিল তাঁর বাবা হয়ত কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন৷

তিনি স্মরণ সভায় সমবেতদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘আপনারা কি ধারণা করতে পারেন, আমাদের কেমন মনে হচ্ছিল, যখন আমার মা ছিলেন তদন্তের কেন্দ্রবিন্দু? আজকে আমি নিজেকে একটি প্রশ্নবানে জর্জরিত করি৷ সেটি হচ্ছে, আমি কি জার্মানিকে নিজের দেশ হিসেবে মেনে নিতে পারি? আমি কীভাবে এই বিষয়ে নিশ্চিত হব, যখন কিছু মানুষ চায় না আমি এখানে থাকি, কেননা আমার বাবা-মা অন্য দেশ থেকে এসেছিল?''

জার্মানিতে বর্তমানে ত্রিশ লক্ষ তুর্কি বংশোদ্ভূত নাগরিকের বসবাস৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শ্রমিক সংকট মেটাতে এদের অনেকেই জার্মানিতে আসেন৷ যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জার্মানির অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব উন্নতি আনতে এদের ভূমিকা কম নয়৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ