1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোদীকে গদিচ্যুত করার তোড়জোড়

রাজীব চক্রবর্তী নতুন দিল্লি
৮ মার্চ ২০১৮

একদিকে বিজেপি'‌র সর্বগ্রাসী উত্থান রুখতে কোমর বাঁধছে আঞ্চলিক দলগুলি৷ তা কয়েক দশক পর আবারও অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি জোটের জল্পনা উস্কে দিচ্ছে৷ ওদিকে সংযুক্ত প্রগতিশীল জোটের ভাবনায় বিরোধীদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ সোনিয়া গান্ধীর৷

ছবি: Getty Images/AFP/P. Singh

ভারতের উত্তর-‌পূর্বের রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতেই বিরোধী দলগুলির মধ্যে এক অদ্ভুত আতঙ্ক দেখা দিয়েছে৷ কেউই সেই ভয়ের কথা প্রকাশ করছেন না বটে, তবে, মোদী-‌সরকারকে যে সরানো প্রয়োজন, তা নিয়ে একমত হতে শুরু করেছে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয়’ দলগুলি৷

‘‌ঝোঁপ বুঝে কোপ’ মারার মতোই সবার আগে মোদী‌বিরোধিতার মঞ্চে উঠে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ‘তৃতীয় ফ্রন্ট’ গড়ার ডাক দিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ অনেকটা নেতাজি সুভাষচন্দ্রের ‘‌দিল্লি চলো’র ঢঙে তিনি বলেছেন, ‘‌লক্ষ্য লালকেল্লা’৷ মমতা এই উদ্যোগ নিতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ কংগ্রেসের৷ তড়িঘড়ি আগামী ১৩ মার্চ নিজের বাড়িতে নৈশভোজের আয়োজন করে ফেললেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷ সবক'টি অ-‌বিজেপি দলের নেতা-‌নেত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেখানে৷ যার ফলে, একটা বিষয় জলের মতো স্বচ্ছ, মোদীকে হঠানোর কর্মযজ্ঞে পুরোহিত কে হবেন, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ে মেতে উঠেছে কয়েকটি দল৷ যত দিন এগোবে, লড়াই ততই প্রকট হয়ে উঠবে৷ কে বলতে পারে, বিরোধীদের এই ঠেলাঠেলির মাঝে নেপোয় দই খেয়ে দেওয়ার মতো বাজিমাত করে যাবে না বিজেপি?

যদিও ইতিমধ্যেই মমতা‌র নৌকায় সওয়ার হতে চেয়েছেন আম আদমি পার্টি, দক্ষিণের টিআইএস, পশ্চিমের শিবসেনা‌সহ জিগনেশ মেবানি ও হার্দিক প্যাটেলরা৷

এই দুটো উদ্যোগই বিজেপি‌কে বিপদে ফেলতে যথেষ্ট: সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরি

This browser does not support the audio element.

‌রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ তখা রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরি ডয়েচে ভেলে‌কে বললেন, ‘‌‘ত্রিপুরা‌সহ উত্তর-‌পূর্ব ভারতে বিজেপি’র বিপুল জয়ের প্রেক্ষিতে ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে৷ পাশাপাশি কংগ্রেসের তরফেও সমান্তরাল একটি ফ্রন্ট গড়ার চেষ্টা শুরু হয়ে গেছে৷ এই দু’টো উদ্যোগই বিজেপি‌কে বিপদে ফেলতে যথেষ্ট৷ তবে এই দলগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতেই হবে৷ কারণ, কংগ্রেসকে বুঝতে হবে, তাদের আর অতীতের অবস্থা নেই৷ একটা চিন্তা থেকেই যাচ্ছে, যদি কোনও কারণে বিজেপি'‌কে ঠেকানো যায়, তাহলেও দেশের নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে তা নিয়ে বিবাদ অনিবার্য বলেই মনে হয়৷’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, অ-বিজেপি-অ-কংগ্রেস ফ্রন্ট জাতীয় রাজনীতিতে কোনও নতুন ঘটনা নয়৷ কিন্ত, সত্যিই যদি সব আঞ্চলিক দল একত্রিত হয়, তাহলে বিজেপি বা কংগ্রেস কারও ক্ষেত্রেই লড়াইটা সহজ হবে না৷ সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের লোকসভা হয়তো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চেয়েও চমকপ্রদ হবে৷ বিজেপি সরকারকে উৎখাত করতে ‘‌তৃতীয় ফ্রন্ট'‌ গড়ার ব্যাপারে মমতার সঙ্গে কথা বলেছেন টিআরএস প্রধান তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, মহারাষ্ট্রের শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এবং তামিলনাড়ুর ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন৷ প্রায় বিনা শর্তে মমতার নৌকায় সওয়ার হয়ে আছেন আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল

মেরুকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে: দেবারুণ রায়

This browser does not support the audio element.

অন্যদিকে, বিজেপির মোকাবিলায় সংযুক্ত ফ্রন্ট গড়ার নতুন উদ্যোগ নিলেন সোনিয়া গান্ধী৷ সেই লক্ষ্যে আগামী ১৩ তারিখ সব বিরোধী দলকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী৷ এই দুই জোট জল্পনায় ধরা পড়ছে বিরোধের ছবিও৷ অন্যান্য প্রায় সবক'টি দলই সোনিয়ার ডাকা নৈশভোজে উপস্থিত থাকতে রাজি হয়েছে৷ কিন্তু, বেঁকে বসেছেন মমতা ব্যানার্জি৷ তিনি নিজে যাবেন না৷ প্রতিনিধিকে পাঠাবেন৷ মোদ্দা কথা, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব মোটেই পছন্দ করছেন না মমতা৷

প্রবীন সাংবাদিক দেবারুণ রায় মনে করছেন, মেরুকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে৷ মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার সময় থেকেই৷ তিনি বলছেন, ‘‌‘‌২০১৯-‌এর ভোটে আবারও মেরুকরণের কথা বলবেন বিজেপি নেতারা৷ সেক্ষেত্রে ওড়িশার নবীন পট্টনায়েক বা বাংলার মমতা ব্যানার্জির গ্রহণযোগ্যতা মেনে নিয়ে কংগ্রেস সঠিক সিদ্ধান্ত নিলেই বিজেপি-কে পর্যুদস্ত করা সম্ভব হবে৷’’

‌সদা বিবদমান দু'টি দল সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি নিজেদের মধ্যে ‘‌হ্যান্ডশেক’ করে নিয়েছে৷ ফলে, মনে করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে তৃতীয় ফ্রন্ট তৈরি হলে এই দুটি দল এগিয়ে আসবে সবার আগে৷ কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের শরিক দলগুলিও বিজেপির থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেছে৷ এমনকি জোট ভেঙে বেরিয়ে আসার কথাও বলছে অন্ধ্রপ্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টি৷ শিবসেনা, এআইএডিএমকে ও বিজু জনতা দল প্রকাশ্যে বিজেপি‌র বিরোধিতা শুরু করছে৷ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি তৃতীয় ফ্রন্টের পক্ষে৷ ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চাও এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ