শক্তির বিচারে অনেক এগিয়ে আইসল্যান্ড। কিন্তু ফিফা র্যাংকিয়ে ৪৮ নম্বরে আফ্রিকার ‘অদম্য সিংহ’ রীতিমতো দাপট দেখিয়ে জিতলো র্যাংকিং-এর ২২ নম্বরে থাকা আইসল্যান্ডের সঙ্গে।
বিজ্ঞাপন
আইসল্যান্ড-নাইজেরিয়া
শক্তির বিচারে অনেক এগিয়ে আইসল্যান্ড। কিন্তু ফিফা র্যাংকিয়ে ৪৮ নম্বরে আফ্রিকার ‘অদম্য সিংহ’ রীতিমতো দাপট দেখিয়ে জিতলো র্যাংকিং-এর ২২ নম্বরে থাকা আইসল্যান্ডের সঙ্গে।
আর্জেন্টিনার সঙ্গে যে দুর্ধর্ষ ডিফেন্স রচনা করেছিল আইসল্যান্ড, নাইজেরিয়ার সামনে তা ভেঙে পড়লো তাসের ঘরের মতো।
প্রথমার্ধে অবশ্যই ভালোই ঠেকিয়েছিল আইসল্যান্ড। নাইজেরিয়ার বেশ কয়েকটি আক্রমণের চেষ্টা তো ঠেকিয়েছেই, নিজেরাও তৈরি করেছিল গোলের বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ।
নাইজেরিয়াই এখন পর্যন্ত রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম ও একমাত্র দল, যারা প্রথমার্ধে গোলপোস্টে একটিও শট নিতে পারেনি।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে সিংহরূপেই আবির্ভূত হয় নাইজেরিয়া। ৪৯ মিনিটের মাথায় আইসল্যান্ডের একটি আক্রমণ রুখে দিয়ে দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাকে মোসেসের অ্যাসিস্টে দারুণ গোল করেন আহমেদ মুসা।
গোল শোধে মরিয়া আইসল্যান্ড অনেক চেষ্টা করেও ভাঙতে পারছিলো না নাইজেরিয়ার প্রতিরোধ।
৮৩ মিনিটে একটি আক্রমণে ডিবক্সে ফাউল হলে ভিএআর দেখে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। কিন্তু ব্যবধান কমানোর সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন আইসল্যান্ডের মিডফিল্ডার গিলফি সিগুরোসোন। জোরালো শট যায় গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে।
নাইজেরিয়ার এই জয়ে ডি গ্রুপ থেকে শেষ ষোলতে যাওয়ার আশা বেঁচে থাকলো আর্জেন্টিনার। তবে সেজন্য ২৬ তারিখে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তাদের অবশ্যই হারাতে হবে নাইজেরিয়াকে, অন্যদিকে একই সময়ে অন্য ম্যাচে আইসল্যান্ড যাতে ক্রোয়েশিয়ার জিততে না পারে, সে প্রার্থনাও করতে হবে।
রাশিয়া বিশ্বকাপের সব প্রথম
রাশিয়া বিশ্বকাপে ফেবারিটদের সাথে সমানে পাল্লা দিচ্ছে তথাকথিত ছোট দলগুলিও৷ এই ফাঁকে চলুন দেখে নেয়া যাক এই বিশ্বকাপের কিছু প্রথম...
ছবি: Getty Images/C. Rose
প্রথম গোল
সৌদি আরবের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে প্রথম গোল দেন রাশিয়ার ইউরি গাজিনস্কি৷ সেই সূত্রে এটি রাশিয়া বিশ্বকাপেরও প্রথম গোল৷ এরপর অবশ্য সৌদি আরবকে আরো চার চারটি গোল হজম করতে হয়৷ ফলে বিশ্বকাপের প্রথম জয়ও উঠেছে রাশিয়ার ঘরেই৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Bandic
প্রথম আত্মঘাতি গোল
মরোক্কোর বিরুদ্ধে ইরান নিজের চেষ্টায় নয়, বরং খেলার ইনজুরি টাইমের শেষ মুহূর্তে পেয়েছে আত্মঘাতী গোল৷ মরোক্কোর আজিজ বুহাদ্দুজার এই গোলে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো একটি ম্যাচ জয় করতে সক্ষম হয় ইরান৷
ছবি: Reuters/D. Martinez
প্রথম হ্যাটট্রিক
বিশ্বকাপের প্রথম বড় ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্পেন-পর্তুগাল৷ গোলের বন্যায় ভেসে যায় ম্যাচটি৷ দুই দল মিলে ৬ গোল হলেও, জয় নিয়ে ঘরে ফিরতে পারেনি কেউই৷ তবে পর্তুগালের হয় তিনটি গোলই করেছেন সেনসেশনাল ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো৷ এটিই রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক৷
ছবি: Reuters/M. Sezer
প্রথম হলুদ কার্ড
এই রেকর্ডও রাশিয়ার দখলেই৷ সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন রাশিয়ার আলেক্সান্ডার গোলোভিন৷
ছবি: Reuters/C. Recine
প্রথম লাল কার্ড
জাপানের বিপক্ষে ম্যাচে হার্ড ট্যাকল করায় বিশ্বকাপের প্রথম লাল কার্ড দেখেন কলম্বিয়ার কার্লোস সানচেজ৷ শুধু তাই না, তার ফাউলের কারণে একটি পেনাল্টিও পায় জাপান৷ ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেও নেয় জাপান৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
প্রথম ভিএআর
এই বিশ্বকাপেই প্রথম চালু হয়েছে ভার্চুয়াল অ্যাসিসট্যান্ট রেফারি বা ভিএআর৷ ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে জশুয়া রিডসনের ট্যাকলে অস্ট্রেলিয়ার ডিবক্সে পড়ে যান ফ্রান্সের অ্যান্টনিও গ্রিজমান৷ উরুগুয়ের রেফারি আন্দ্রেস কুনহা প্রথমে খেলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও পরবর্তীতে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করেন ভিএআর, সিদ্ধান্ত পালটে ঘোষণা দেন পেনাল্টির৷ ম্যাচে ২-১ গোলে জয় পায় ফ্রান্স৷
ছবি: Reuters/S. Perez
প্রথম অঘটন
মোস্ট ফেবারিট আর্জেন্টিনাকে জয় নিতে দেয়নি আইসল্যান্ড৷ রুখে দিয়েছে ১-১ গোলে৷ হেক্সা মিশনে আসা ব্রাজিলকেও সুইজারল্যান্ড আটকে ফেলে ১-১ গোলে৷ কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানির৷ মেক্সিকোর দারুণ গতির সামনে ১-০ গোলে হার মানতে হয় জার্মানিকে৷
ছবি: Reuters/C. Recine
7 ছবি1 | 7
ব্রাজিল-কোস্টারিকা
সেন্ট পিটার্সবার্গে নীল রংয়ের অ্যাওয়ে জার্সি পরে খেলতে নামে ব্রাজিল৷ সাম্বার তালে খেলা যে ব্রাজিলকে সমর্থকরা দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিলেন, আজ মাঠে সেলেসাওদের দেখা গেল তেমন রূপে৷
খেলা শেষের পরিসংখ্যান বলছে ম্যাচের ৭২ শতাংশ সময়ই বল ছিল ব্রাজিলের দখলে৷ গোলপোস্টে কোস্টারিকার মাত্র ৩টি শটের বিপরীতে ব্রাজিলের শট ছিল ২২টি৷
প্রথম ২০ মিনিট বেশ আক্রমণাত্মক খেলছিল কোস্টারিকা৷ বল পায়ে পেতে সমস্যা হচ্ছিল ব্রাজিলিয়ানদের৷ শক্ত ডিফেন্সের কারণে বল নিয়ে ডি বক্সেই ঢুকতে পারছিল না ব্রাজিল৷
বিশেষ করে নেইমারকে রাখা হয় কড়া মার্কিংয়ে৷ ২০ মিনিটেই ৩ বার ফাউলের শিকার হন এই স্ট্রাইকার৷ তবে ২০ মিনিট পর দেখা যায় অন্য ব্রাজিলকে৷ হঠাৎ করেই নিজেদের খুঁজে পেতে থাকেন নেইমাররা৷
২৫ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসুস দুর্দান্ত একটি গোল দিয়ে বসলেও সাইড রেফারি অফসাইডের পতাকা তুললে তা বাতিল হয়৷
কৌটিনহো, মার্সেলো, উইলিয়ানরা প্রায় প্রতি মিনিটেই সাজাতে থাকেন একের পর এক আক্রমণ৷ প্রথম দিকের শক্ত ডিফেন্সেও সহজেই ফাঁকফোকর বের করতে থাকেন সেলেসাওরা৷
দ্বিতীয়ার্ধে খেলার শুরুতেই উইলিয়ানকে বসিয়ে মাঠে নামানো হয় দিয়েগো কস্তাকে৷ এরপর ব্রাজিলের আক্রমণ আরো ধারালো হয়ে ওঠে৷
উজ্জ্বীবিত ব্রাজিলের মুহুর্মুহু আক্রমণে এক সময় কোস্টারিকার ১১ জন খেলোয়াড়কেই দেখা যায় ডি বক্সের ভেতরে৷
৪৮ মিনিটে জেসুসের একটি দুর্দান্ত হেড গোলবারে লেগে ফেরত আসে৷ দ্রুতই বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আবার জোরালো শট করলেও কর্নার দিয়ে তা ঠেকান ডিফেন্ডার৷
৭১ মিনিটে পালটা আক্রমণ থেকে নেইমারের দারুণ শট অল্পের জন্য মিস করে গোলপোস্ট৷
৭৭ মিনিটে নেইমারকে ডি বক্সে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ব্রাজিল৷ কোস্টারিকার খেলোয়াড়দের আপত্তির মুখে ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে পেনাল্টি বাতিল করেন রেফারি৷
৯০ মিনিট পর ৬ মিনিটের ইনজুরি টাইম দেয়া হয়৷ অতিরিক্ত সেই সময় কাজে লাগিয়ে দুই গোল করে সেলেসাওরা৷
৯২ মিনিটে গোলরক্ষক নাভাসের পায়ের নীচ দিয়ে জালে বল জড়ান কৌটিনহো৷ এতটাই হাঁফ ছেড়ে বাঁচে ব্রাজিল দল যে, গোল উদযাপন করার সময় দৌঁড় দিতে গিয়ে মাঠে পড়ে যান কোচ তিতে৷ সৃষ্টি হয় হাস্যরসের৷ পরে রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়েরা তাঁকে হাতে ধরে টেনে তোলেন৷
এরপর থেকেই ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে কোস্টারিকার রক্ষণভাগ৷ হাতে নেই সময়৷ তার মধ্যে একদিকে গোল শোধের তাড়া, অন্যদিকে ব্রাজিলের একের পর এক আক্রমণ৷ অতিরিক্ত সময়ের ৬ মিনিট পেরিয়ে যাওয়ার পর ৯৭ মিনিটে আবার কাউন্টার অ্যাটাক৷ ডগলাস কস্তার অসাধারণ পাসে বল পেয়ে যান নেইমার, স্কোর পরিণত হয় ২-০ তে৷
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তারকাদের প্রিয় দল
মাশরাফি, সাকিব, তামিম, জেসি, আকরাম বা ক্রিকেটের বর্তমান ও সাবেক অন্য তারকাদের প্রিয় দল কোনটি? ফুটবল, দাবা, টেবিল টেনিসসহ অন্যান্য খেলার তারকারাই বা কোন দলের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি দেখতে চান? ছবিঘরে থাকছে তারই বিস্তারিত...
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মাশরাফি বিন মুর্তজা
মারাদোনাকে দেখে আর্জেন্টিনার সমর্থক হয়েছেন৷ কিন্তু গতবার আর্জেন্টিনা ফাইনালে হেরে যাওয়ার পর ফুটবল দেখাই বন্ধ করে দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক, ‘‘২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর টিভিতে আর কোনো ফুটবল দেখিনি৷ চার বছর পর সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল দেখলাম একটু৷’’ বিশ্বকাপ অবশ্য দেখবেন, তবে সেটি কোনো প্রত্যাশা নিয়ে নয়, ‘‘তারপর যদি মেসি জিতিয়ে দেয়, তো ভালো৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/I.S. Kodikara
সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির
তাঁর আদুরে নাম ছিল ‘বাংলার ম্যারাডোনা’৷ অথচ সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বিরের প্রিয় দল ব্রাজিল! সে দল এবার ২০১৪ সালের মতো হতাশ করবে না বলেই সাবেক এই বলপ্লেয়ারের বিশ্বাস, ‘‘গত বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে নেইমার খেলতে না পারায় জার্মানির কাছে ওভাবে হারতে হয়েছে৷ এবার সেই নেইমার ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতাবে বলে আমার বিশ্বাস৷’’
ছবি: Noman Mohammad
সাথিরা জাকির জেসি
২০০২ বিশ্বকাপের সময় বিকেএসপিতে পড়তেন৷ প্রথম রাউন্ডে আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর যা করেছিলেন তা মনে করে এখনো হাসেন সাথিরা জাকির জেসি, ‘‘তখন ক্লাস সিক্স বা সেভেনে পড়তাম৷ আর্জেন্টিনা বাদ পড়ার পর হাত কেটে-টেটে খুব বাজে অবস্থা করেছিলাম৷’’ বিশ্বকাপে এখন আরেকটি দলও সমর্থন করছেন এই নারী ক্রিকেটার, ‘‘আর্জেন্টিনার পর আমি জার্মানি৷ গত তিন বিশ্বকাপেই জার্মানির কাছে হেরেছে আর্জেন্টিনা৷ আমার তাই বেশি দুঃখ নেই৷’’
ছবি: Mir Farid
শেখ মোহাম্মদ আসলাম
বাংলাদেশ ফুটবলের স্বর্ণসময়ের প্রতিনিধি তিনি৷ আর বিশ্ব ফুটবলের সুবর্ণ সময়ের দলটির সমর্থক শেখ মোহাম্মদ আসলাম, ‘‘পেলের ব্রাজিলকেই সমর্থন করেছি সব সময়৷’’ এখন না হয় পেলে নেই, তবে উত্তরসূরিদের কাছে প্রত্যাশা কমেনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই স্ট্রাইকারের, ‘‘ফুটবল গোলের খেলা৷ আর সেই গোল করার মতো অনেক ফুটবলার রয়েছেন এখনকার ব্রাজিল দলে৷ আমার তাই মনে হয়, তাঁদের বিশ্বকাপ জয়ের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে৷’’
ছবি: Noman Mohammad
সাকিব আল হাসান
মেসি আর আর্জেন্টিনার পাগলপারা ভক্ত তিনি৷ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সতীর্থদের সঙ্গে এ নিয়ে সাকিব আল হাসানের তর্কযুদ্ধ চলে নিয়মিত৷ বছরজুড়ে তা মেসির দল বার্সেলোনাকে নিয়ে, বিশ্বকাপে হবে আর্জেন্টিনার পক্ষ নিয়ে৷ বিশ্বকাপে প্রিয় দল হতাশ করেছে বারবার; কিন্তু আবারও আশায় বুক বাঁধেন সাকিব৷ এবার মেসির হাতে উঠবে বিশ্বকাপ– এ আশায় জাতীয় দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময়ও টিভিতে খেলা দেখবেন চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডার৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মাবিয়া আক্তার সীমান্ত
১৪ জনের এক দল আছে তাঁদের– কাজিন ও বন্ধু মিলিয়ে৷ বিশ্বকাপের সময় তাঁরা তিন ভাগ– ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল৷ মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ব্রাজিলের পক্ষে৷ কিন্তু বিশ্বকাপের সময় তাঁদের এই গ্রুপের কী যে হবে, এ নিয়ে কপট দুশ্চিন্তায় এসএ গেমসে স্বর্ণপদকজয়ী এই ভারোত্তলক, ‘‘আমরা বলেছি, বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিলের ম্যাচ সবাই মিলে দেখতে হবে৷’’ প্রিয় দল ব্রাজিলের শিরোপা জয়ের ব্যাপারে খুব আশাবাদী সীমান্ত৷
ছবি: Khandakar Tarek
কায়সার হামিদ
১৯৮২-র বিশ্বকাপ জিততে পারেনি ব্রাজিল, কিন্তু হৃদয় জিতে নিয়েছিল বিশ্বজোড়া অনেক ভক্তের৷ কায়সার হামিদেরও৷ বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই ডিফেন্ডারের চোখে এখনো ভাসে জিকো-সক্রেতিসের খেলা৷ এখনকার ব্রাজিল দল নিয়েও আশাবাদী৷ প্রিয় দল ফাইনালে গেলে ইচ্ছে আছে রাশিয়া যাবার, ‘‘২০০২-র ফাইনাল গ্যালারিতে বসে দেখেছি৷ জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল৷ এবারও সেমিফাইনাল, ফাইনালের টিকেটের জন্য চেষ্টা করছি৷ ’’
ছবি: Noman Mohammad
ইমতিয়াজ সুলতান জনি
বাংলাদেশে সমর্থকদের মূল বিভক্তি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনায়৷ জাতীয় দলের সাবেক ডিফেন্ডার ইমতিয়াজ সুলতান জনি সেখানে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম৷ জার্মানির কট্টর সমর্থক তিনি৷ কেন? ‘‘জার্মানরা ম্যাচ শেষ হবার আগে কখনো হাল ছাড়ে না৷ আর লড়াই করে সবাই মিলে,’’ কারণটা জানান এভাবে৷ এই বিশ্বকাপে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে যাচ্ছে প্রিয় দল৷ শিরোপা ধরে রাখায় আশাবাদী তিনি, ‘‘অবশ্য ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-স্পেনকে গোনায় ধরতে হবে৷’’
ছবি: Noman Mohammad
তামিম ইকবাল
বন্ধু সাকিব আল হাসানের সঙ্গে প্রিয় দল, প্রিয় খেলোয়াড় কিছুই মেলে না তামিম ইকবালের! বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনার ভক্ত সাকিব; রিয়াল মাদ্রিদ ও ব্রাজিলের ভক্ত তামিম৷ ব্রাজিলের সমর্থক হয়েছেন তিনি চট্টগ্রামের বিখ্যাত খান পরিবারের আবহের কারণে৷ বাবা-চাচা সবাই যে ওই দলের সমর্থক! এবারের টুর্নামেন্টে নেইমারের হাতে ট্রফিটা খুব করে দেখতে চান তামিম৷ প্রিয় বন্ধু সাকিবকে তাহলে খোঁচানো যাবে খুব!
ছবি: Getty Images/J. Mansfield
সাবিনা খাতুন
নতুন প্রজন্মের অনেকেই আর্জেন্টিনাকে ভালোবেসেছেন মেসিকে দেখে৷ যেমন, সাবিনা খাতুন৷ বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক বলছিলেন, ‘‘ফুটবল যখন থেকে বুঝি, তখন থেকে তো মেসিকেই কেবল দেখছি৷ মেসির কারণেই আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক৷’’ এ বছর ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগে খেলে আসা সাবিনা জানালেন, ‘‘প্রতি বিশ্বকাপই আশা নিয়ে দেখতে বসি৷ এবারও আশায় থাকবো, মেসি যেন আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারেন৷’’
ছবি: Mir Farid
আলফাজ আহমেদ
কিশোর লিগ খেলা ছোট্ট ছেলেটি প্রথম বিশ্বকাপ দেখে ১৯৮৬ সালে৷ আর দিয়েগো মারাদোনাকে দেখার পর মনে হয়, ফুটবলার তাঁকে হতেই হবে৷ তা হয়েছেন আলফাজ আহমেদ৷ প্রিয় দল আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন মারাদোনা৷ বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই স্ট্রাইকারের এবারের প্রত্যাশা লিওনেল মেসির কাছে, ‘‘ও তো ফুটবলে সব শিরোপাই পেয়েছে৷ আশা করি এবার বিশ্বকাপটাও পাবে৷’’
ছবি: Noman Mohammad
শফিকুল ইসলাম মানিক
১৯৯৮ সালে এক কোচিং কোর্সের জন্য ব্রাজিলে গিয়ে দেখা হয় রোমারিও, বেবেতো, কার্লোস আলবের্তো পারেইরা, মারিও জাগালোর মতো কিংবদন্তিদের সঙ্গে৷ জাতীয় দলের সাবেক কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক অবশ্য ব্রাজিলকে সমর্থন করেন আরো অনেক আগে থেকেই৷ প্রিয় দলকে নিয়ে এবারও আশাবাদী তিনি, ‘‘আগে গ্রুপ পর্ব পেরোতে হবে৷ এরপর তো নকআউট পর্বের প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল৷ তবে এবারের ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী৷’’
ছবি: Noman Mohammad
জোবেরা রহমান লিনু
ছিলেন ব্রাজিলের সমর্থক৷ কিন্তু ১৯৮৬ বিশ্বকাপে মারাদোনার খেলা দেখে সমর্থন পাল্টে যায় জোবেরা রহমান লিনুর, ‘‘মারাদোনার খেলা দেখার পর থেকে আমি আর্জেন্টিনার ভক্ত৷’’ টেবিল টেনিসে জাতীয় পর্যায়ে সর্বাধিক শিরোপায় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখানো এই খেলোয়াড় বিশ্বকাপ ফুটবল দেখেন নিয়মিত৷ বাবার অসুস্থতার কারণে এবার সেদিকে মনোযোগ নেই খুব একটা৷ ‘‘তবে আর্জেন্টিনা শিরোপা জিতলে ভালো লাগবে’’–বলেছেন লিনু৷
ছবি: Khandakar Tarek
আমিনুল হক
তাঁর কাজ ছিল গোল ঠেকানো৷ কিন্তু আমিনুল হক ব্রাজিলের ভক্ত হয়ে যান দলটির গোল করার ক্ষমতা দেখে৷ ‘‘ছোটবেলা থেকেই বিশ্বকাপ দেখি নিয়মিত৷ আর সব সময়ই দেখেছি, ব্রাজিলের গোল করতে সমস্যা হয় না কোনো৷ ডিফেন্সে সমস্যা থাকে৷ কিন্তু এবারের দলটির ডিফেন্সও ভালো৷ আমার তাই মনে হয়, এই ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিততে পারবে৷’’
ছবি: Noman Mohammad
জাহিদ হাসান এমিলি
মারাদোনার শেষ বিশ্বকাপেই তাঁকে প্রথম দেখেন জাহিদ হাসান এমিলি; ১৯৯৪ সালে৷ তাঁর নিজের বয়স তখন সাত বছর৷ কান্নাভেজা ওই আর্জেন্টাইনকে দেখে আর্জেন্টিনার ভক্ত হয়ে যান বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই ফরোয়ার্ড৷ তবে প্রিয় দলকে বিশ্বকাপ জিততে দেখেননি কখনো৷ এবারও সে সম্ভাবনা বেশি দেখেন না এমিলি, ‘‘আবেগ একপাশে রেখে বললে, আর্জেন্টিনার জন্য বিশ্বকাপ জয় কঠিন৷ ব্রাজিল, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেনকেই বরং আমি এগিয়ে রাখবো৷’’
ছবি: Noman Mohammad
আকরাম খান
শুধু বিশ্বকাপ নয়, ইউরোপিয়ান ফুটবলের বিভিন্ন লিগের খেলাও নিয়মিত দেখেন আকরাম খান৷ বিশ্বকাপে প্রিয় দল ব্রাজিল৷ ২০১২ অলিম্পিকে ব্রাজিলের ম্যাচ দেখেছেন গ্যালারি থেকে৷ এবারও যাবেন বিশ্বকাপে৷ সেখানে প্রিয় দলের হাতে ট্রফি দেখতে চান আইসিসি ট্রফিজয়ী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, ‘‘আমি জুলাইয়ের ১০ তারিখ রাশিয়া যাবো৷ একটি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল দেখবো৷ আশা করি, নেইমারের হাতে ট্রফি দেখেই ফিরতে পারবো দেশে৷’’
ছবি: Noman Mohammad
রানী হামিদ
বাংলাদেশে ‘দাবার রানী’ তিনি৷ ছেলে কায়সার হামিদ আবার ফুটবলের কিংবদন্তি৷ রানী হামিদের তাই ফুটবলও প্রিয়৷ আর বিশ্বকাপের প্রিয় দল? ‘‘বাসার সবাই ব্রাজিল সমর্থন করতো বলে আমাকেও তা করতে হতো৷ আমার কিন্তু মনে মনে ইংল্যান্ডকে ভালো লাগতো৷ কারণ, আমাদের সিলেটিদের জন্য ইংল্যান্ড দ্বিতীয় বাড়ির মতো৷ এবারের বিশ্বকাপে এ দুটো দলের একটি চ্যাম্পিয়ন হলে ভালো লাগবে৷’’
ছবি: Khandakar Tarek
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু
৮৬ বিশ্বকাপের সময় মাইনর কাউন্টি খেলার জন্য ইংল্যান্ডে ছিলেন৷ আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড ম্যাচের কথা মনে আছে স্পষ্ট, ‘‘আমি আর নোবেল একটি পাবে খেলা দেখছিলাম৷ মারাদোনা হাত দিয়ে গোল করার পর চিত্কার করে উঠেছিল নোবেল৷ বাকি সবাই চোখ ঘুরিয়ে দেখছিলো ওকে৷’’ ভাইয়ের মতো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়কের প্রিয় দল অবশ্য আর্জেন্টিনা নয়, ‘‘আমার পছন্দ ইংল্যান্ড৷ ওরা বাদ পড়ে গেলে জার্মানিকে সমর্থন করবো৷’’
ছবি: Noman Mohammad
হাবিবুল বাশার সুমন
১৯৮২ বিশ্বকাপ তাঁর মনে আছে আবছা৷ ১৯৮৬ বিশ্বকাপ পুরোপুরি৷ এ দুটো আসর ব্রাজিলের জন্য হতাশার হলেও হাবিবুল বাশার সুমনের ভালোবাসার বদল হয়নি৷ এবারও প্রিয় দলের বিশ্বকাপ জয়ের আশায় টিভির সামনে থাকবেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, ‘‘আর্জেন্টিনার ব্যক্তিবিশেষের খেলা হয়তো ভালো লাগে৷ আগে যেমন ছিলেন মারাদোনা, এখন মেসি৷ কিন্তু ব্রাজিল দল হিসেবে খেলে চমত্কার৷ আশা করছি এবার বিশ্বকাপ জিতে সে হতাশা কাটাবো৷’’
ছবি: Noman Mohammad
আবদুল্লাহ হেল বাকি
কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্যপদকজয়ী শুটার আবদুল্লাহ-হেল বাকি আর্জেন্টিনার পাঁড় সমর্থক৷ কেন? উত্তরটাও ওই পাঁড় সমর্থকের মতো, ‘‘খেলা যাঁরা বোঝেন, তাঁরা সবাই আর্জেন্টিনাই সমর্থন করেন৷’’ কিন্তু সেই ‘খেলা বুঝেই’ প্রিয় দলকে নিয়ে এবার খুব একটা আশাবাদী হতে পারছেন না বাকী, ‘‘সত্যি বলতে কী, খুব একটা আশা আমি দেখছি না৷ তবে একজন মেসি যখন রয়েছে আর্জেন্টিনার, তখন কিছুই অসম্ভব না৷’’
ছবি: Noman Mohammad
20 ছবি1 | 20
সুইজারল্যান্ড-সার্বিয়া
সুইজারল্যান্ডের কাছেই বলের দখল ছিল ম্যাচের ৬৩ ভাগ সময়। কিন্তু তাতে আসলে খেলার পুরো চিত্রটা ওঠে আসে না।
পুরো ৯০ মিনিটই দুই দলই আক্রমণ-পালটা আক্রমণে মাতিয়ে রেখছে দর্শক-সমর্থকদের।
খেলা শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় টাডিচের পারফেক্ট পাসে, অসাধারণ টাইমিং দেখান আলেক্সান্ডার মিত্রোভিচ। শক্তিশালী হেডারে বল জড়ান সুইজারল্যান্ডের জালে। ফলে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় সুইসরা।
প্রথমার্ধের বাকি সময়টাতে সুইজারল্যান্ড বেশ আধিপত্য দেখালেও গোল শোধ করতে পারেনি।
বল দখলে মরিয়া ছিলো সার্বিয়াও। বিপজ্জনক ট্যাকল করায় ১৫ মিনিটের মধ্যে তিন তিনটি হলুদ কার্ড দেখে বসেন সার্বিয়ার তিন মিডফিল্ডার। ৩৩ মিনিটে সের্গেই সাভিচ এবং ৩৯ মিনিটে লুকা মিলিভয়েভিচ এবং প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ৪৭ মিনিটে নেমানিয়া মাটিচকে দেখতে হয় হলুদ কার্ড।
স্টেডিয়াম যখন ১-১ ড্রয়ের জন্য প্রায় প্রস্তুত, তখন জাদু দেখালেন শাকিরি। সার্বিয়ান ডিফেন্সের ভুলে খালি মাঠে বল পেয়ে দৌঁড়ে চলে যান ডি বক্সের ভেতরে। একা গোলকিপারকে কাটিয়ে স্কোর ২-১ করতে কোন ভুল করেননি তিনি।
এই গোলে, সার্বিয়াকে টপকে ই গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে চলে এলো সুইজারল্যান্ড। সমান চার পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে গ্রুপের শীর্ষে আছে ব্রাজিল।