নাইজেরিয়ায় আবার সহিংসতার বিস্ফোরণ
২১ জানুয়ারি ২০১২এএফপি সংবাদ সংস্থার এক সাংবাদিক শনিবার সকালে কানোর একটি মর্গে রক্ষিত অন্তত ৮০টি মৃতদেহ দেখেন৷ মর্গটি শহরের বৃহত্তম হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত৷ নিহতদের অনেকের দেহেই নাকি গুলির চিহ্ন দেখেছেন এএফপি'র সাংবাদিক৷ মর্গের বাইরে শতাধিক মানুষ প্রিয়জনের মরদেহ সংগ্রহ করার জন্য অপেক্ষা করছিল৷
নয়তো কানোর পথে পথে এখন সৈন্য এবং পুলিশের দঙ্গল৷ ৯০ লাখ বাসিন্দার এই শহরটিকে নাইজেরিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চলের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কেন্দ্রবিন্দু বলা চলে৷ অপরদিকে শুক্রবারের আক্রমণের জন্য বোকো হারাম নামধারী উগ্রপন্থি মুসলিম গোষ্ঠীটি নিজেদের দায়ী বলে ঘোষণা করেছে৷
ফেডারাল পুলিশের এক মুখপাত্র শুক্রবার জানান যে, পাঁচটি পুলিশ ভবন, দু'টি অভিবাসন দপ্তর এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা পুলিশের স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের উপর আক্রমণ চালানো হয়৷ এটাকে নাইজেরিয়ার দুর্বল কেন্দ্রীয় সরকারের উপর বোকো হারামের পরোক্ষ আক্রমণ বলে গণ্য করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ৷ ওদিকে নাইজেরিয়ার রেড ক্রস কানোতে সক্রিয়, বিশেষ করে সারা শহরে ছড়ানো মৃতদেহগুলি সংগ্রহের কাজে৷ আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হচ্ছে এবং বিশেষভাবে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷
আক্রমণ শুরু হয় শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা নাগাদ, জু্ম্মার নমাজের পরে৷ অফিসকর্মীরা তখন বাড়ি ফেরার পথ দেখছেন৷ এক আত্মঘাতী বোমারু আঞ্চলিক পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রাঙ্গণে ঢুকে তার গাড়িবোমাটি ফাটায়৷ হেডকোয়ার্টার্সের ছাদ ও জানলা-দরজা উড়ে যায়৷ হেডকোয়ার্টার্সের কর্মীরা গুলিগোলার মধ্যে পলায়নের পথ খোঁজেন৷ কর্তৃপক্ষ এর ঠিক পরেই কানোতে ২৪ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেন৷
বোকো হারামের এক মুখপাত্র ছদ্মনাম ব্যবহার করে সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত একটি বার্তায় কানোর আক্রমণগুলির জন্য দায়িত্ব নিয়েছে৷ ‘বোকো হারাম'-এর অর্থ ‘পশ্চিমি শিক্ষা হল ধর্মদ্রোহ'৷ গোষ্ঠীটি বহুজাতিক দেশ নাইজেরিয়ায় গোঁড়া শরিয়া আইন চালু করতে চায়৷ কানোতে তাদের সর্বাধুনিক আক্রমণের ফলে গোটা উত্তর নাইজেরিয়ায় আবার আগুন জ্বলার আশঙ্কা রয়েছে, বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই