1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাইন ইলেভেনের এক যুগ

১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩

টুইন টাওয়ার হামলার ১২ বছর পূর্তিতে যখন মার্কিনিরা তাদের স্বজনদের স্মরণ করছেন, তখন মার্কিন প্রশাসন ব্যস্ত সিরিয়া ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নিতে৷

Smoke billows from one of the towers of the World Trade Center and flames and debris explode from the second tower, Tuesday, Sept. 11, 2001. In one of the most horrifying attacks ever against the United States, terrorists crashed two airliners into the World Trade Center in a deadly series of blows that brought down the twin 110-story towers. (AP Photo/Chao Soi Cheong)
ছবি: AP

স্মৃতিতে অম্লান নাইন ইলেভেন৷ এক যুগ পর আরো একবার পরম শ্রদ্ধায় দিনটি পালন করছে নিহতদের স্বজনরা এবং পুরো দেশ৷ যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখনও আল-কায়েদা, গণবিধ্বংসী অস্ত্র এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে৷ অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কথা ভাবছেন৷

সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের সম্ভাব্যতা অনেক মার্কিন অভিভাবকের মনে আশংকার জন্ম দিয়েছে, আবারো তাদের সন্তানদের ইরাক-আফগানিস্তানের মতো মধ্যপ্রাচ্যে মৃত্যুর সাথে লড়তে হবে কিনা৷ অন্যদিকে, অন্যরা মনে করছে, সিরিয়া এমন একটি দেশ যার সীমান্তে রয়েছে ইরান৷ তাই সিরিয়াকে কোনো কড়া জবাব না দিতে পারলে ইরানের কাছে তাদের জাতি হিসেবে দুর্বলতা প্রকাশ পাবে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে নীরবতা পালন করছিলেন, তখন হয়ত এ বিষয়গুলোই তাঁকে ভাবাচ্ছিল৷

কি হয়েছিল নাইন ইলেভেনে?

১২ বছর আগে এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারসহ এক যোগে চালানো চারটি আত্মঘাতি হামলায় নিহত হয় অন্তত ৩ হাজার মানুষ৷ ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় এই ঘটনা ঘটে৷ চারটি মার্কিন যাত্রিবাহী বিমান ছিনতাই করে এই হামলা চালানো হয়৷ দুটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ও দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে৷ গুড়িয়ে ধসে পড়ে ভবন দুটি৷ অ্যামেরিকান এয়ারলাইন্সের ছিনতাই করা আর একটি বিমান নিয়ে হামলা চালানো হয় মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে৷ তবে যাত্রীদের চেষ্টায় নির্ধারিত স্থানে হামলা চালাতে ব্যর্থ হয়ে পেনসিলভেনিয়ার আকাশে বিধ্বস্ত হয় চতুর্থ বিমানটি৷

১২ বছর আগে এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারসহ এক যোগে চালানো চারটি আত্মঘাতি হামলায় নিহত হয় অন্তত ৩ হাজার মানুষছবি: AP

হামলার সাথে সাথেই যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহ গিয়ে পড়ে ওসামা বিন লাদেনের উপর৷ শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান৷ লাদেনকে জীবন দিয়ে সেই অভিযানের মূল্য দিতে হয় ১০ বছর পর ২০১১ সালে৷ এই দিনটি মার্কিন নীতিতে আমূল পরিবর্তন এনেছে, সেইসাথে মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির৷

আল-কায়েদা এখনও বড় হুমকি

নাইন ইলেভেনের পর থেকে ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়েদা অ্যামেরিকার শত্রুতে পরিণত হয়েছিল৷ ঐ ঘটনার এক দশক পর লাদেনের মৃত্যুর পর ওবামা বলেছিলেন, আল-কায়েদার শক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছে৷ এরপরও আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে শুরু করে আরব দেশগুলো, উত্তর আফ্রিকা, এমনকি সিরিয়াতেও তাদের দৌরাত্ম্য কিন্তু এখনও কমেনি৷

সিরিয়ায় আল-কায়েদা সমর্থিত জিহাদি দলগুলোর কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্র এবং তার আইন প্রণেতাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এমনকি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে বলতে শোনা গেছে, ‘শত্রুর শত্রু তার বন্ধু' – এ কথা বলতে৷

সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বা এপি-র এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৯৪ ভাগ অ্যামেরিকান মনে করেন, সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জয় হয়নি৷ মাত্র ১৪ ভাগ মনে করেন আগামী ১০ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধরে জয়ী হতে পারে৷

এসব অনুভূতির কথা মাথায় রেখেই হয়ত মঙ্গলবার জাতীয় জরুরি অবস্থা আরো এক বছর বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন ওবামা, ২০০১ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর যা ঘোষণা করা হয়েছিল৷ গত মাসে আল-কায়েদার হুমকিও এর পেছনে একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে৷

এদিকে, ওবামা প্রশাসন যখন সিরিয়ায় হামলা করবে কিনা ভাবছে, তখন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লেবানন থেকে সব মার্কিন কূটনীতিকদের ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে৷ ইরান সমর্থিত হেজবুল্লাহ গোষ্ঠীর উপস্থিতির কারণেই এ সিদ্ধান্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

ইরাক এবং আফগানিস্তান

যুক্তরাষ্ট্র যখন অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলার জন্য সেনাবাহিনীর বাজেট কাট ছাট করতে ব্যস্ত, তখন আবার কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টিকেই ভালোভাবে দেখছেন না বেশিরভাগ অ্যামেরিকান৷ বেশিরভাগ অ্যামেরিকানই চান যুদ্ধের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ হবে সীমিত এবং স্থলপথে তারা কোনো সামরিক অভিযান চালাবে না৷

এই ইরাক ও আফগান যুদ্ধই ওবামাকে নির্বাচনে জিততে সাহায্য করেছিল, কেননা বরাবরই তিনি ইরাক যুদ্ধ নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের সমালোচনা করেছিলেন৷ বরাবরই ওবামা ছিলেন যুদ্ধবাজ নীতির বিপক্ষে৷ কিন্তু হাউস এখন রিপাবলিকানদের দখলে থাকায় তারা সিরিয়ায় হামলার চালানোর পক্ষে রায় দেয় কিনা সেটা এখন দেখার বিষয়৷

গণবিধ্বংসী অস্ত্র

গণবিধ্বংসী অস্ত্রের জের ধরেই ইরাকে সামরিক অভিযান চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ এবারও সিরিয়া ইস্যুতে রায়ানিক অস্ত্র মূখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তবে আসলেই আসাদ সরকার রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে খোদ মার্কিন মহলেই৷ তবে এ সপ্তাহেই আসাদ সরকার স্বীকার করেছে, রাসায়নিক অস্ত্র তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে এবং শর্ত সাপেক্ষে তারা এগুলো ধ্বংস করতে প্রস্তুত৷

ওবামা হয়ত বুঝতে পেরেছেন সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে না আর তাই হয়ত তিনি পিছিয়ে দিলেন কংগ্রেস ভোট, সেই সাথে স্থগিত করলেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি৷

এপিবি/ডিজি (এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ