নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত শামীম ওসমানই ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছেন৷ মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং তৈমুর আলম খন্দকার তাকে নিয়েই এখন বাক যুদ্ধে লিপ্ত৷
বিজ্ঞাপন
আর শেষ পর্যন্ত সোমবার শামীম ওসমানও সংবাদ সম্মেলন করে এই ‘‘গডফাদার’’ বিতর্কের জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছেন৷
আওয়ামী লীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে "গডফাদার” বলে প্রথম বিতর্ক উসকে দেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা সেলিনা হায়াৎ আইভী৷ দুইদিন আগে আইভী তৈমুরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘উনি (তৈমুর) শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের প্রার্থী৷ উনি অন্য কারুর প্রার্থী নন, বিএনপিরও নন, স্বতন্ত্রও নন৷ তৈমুর আলম খন্দকার যে গডফাদার শামীম ওসমানের প্রার্থী তার প্রমাণ হয়েছে৷ জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানের চারজন ইউপি চেয়ারম্যান তৈমুরের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন৷’’
প্রসঙ্গত, সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এবং শামীম ওসমানের ভাই৷
একই দিন আইভীর কথার জবাব দেন হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া তৈমুর আলম খন্দকার৷ তিনি বলেন ‘‘আমি তো আওয়ামী লীগের ভোটও চাই৷ প্রধানমন্ত্রীর ভোটও চাই৷ যাদের নাম উনি বলেছেন তারা তো এমপি, জনপ্রতিনিধি তাদের সমর্থনও তো আমি চাই৷ তাদের সাথে আমার পার্সোনাল কোনো আন্ডারস্ট্যান্ডিং নাই৷’’
তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনী প্রচারে সোমবার সকালে আবার আইভীকে ‘‘গডমাদার’’ বলেছেন ৷ এর জবাবে আইভী বলেন, ‘‘উনি তো গডফাদারের কোলে গিয়ে বসেছেন৷ উনি তো গডফাদারের বাইরে কেউ নন৷ উনি আমাকে গডমাদার বলে খুব খারাপ কাজ করেছেন৷ কারণ ওনাকে আমি তো এরকম কিছু বলি নাই৷’’
‘আওয়ামী লীগের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব আছে তা কাজে লাগাতে চাই’
দুই প্রার্থীর এই ‘‘গডফাদার’’ আর ‘‘গডমাদার’’ বিতর্কের মধ্যে সোমবার দুপুরে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন করে তার অবস্থা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন৷
সংবাদ সম্মেলন করে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রতি তার সমর্থন জানিয়ে বলেছেন,‘‘যেহেতু আমি সংসদ সদস্য তাই কোনো প্রার্থীর পক্ষে আমি প্রচার চালাতে পারি না৷ আমাদের প্রতীক নৌকা৷ কোনো ব্যক্তি আমার কাছে মুখ্য নয়৷ আমাদের সব নেতা-কর্মী নৌকার জন্য কাজ করছেন৷ এত দিন আমি নামতে পারিনি সত্য৷ এবার নামব৷ আমার অনেক ব্যথা, কষ্ট আছে৷ নির্বাচনের পর তা বলব৷’’
তাকে গডফাদার অভিহিত করার জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এখন যদি কারো ইচ্ছা হয় তবে আজকে আমাকে গডফাদার বলবে, দুইদিন আগে যার ইচ্ছা হয়েছে তিনি আমাকে ফাদার বলেছেন৷ তিনদিন আগে বলতে ইচ্ছে হয়েছে, ব্রাদার বলেছেন৷ এখন যদি কারুর ইচ্ছা হয় আজকে তোমাকে ব্রাদার বলব, কালকে তোমাকে ফাদার বলব, পরশু তোমাকে গডফাদার বলব৷ ভাই যা বলার বলেন, গডমাদার বলবেন না৷ আই ডোন্ট কেয়ার কে কী বলল৷ এত আমারা কিছু যায় আসে না৷’’
কেন বিতর্কের কেন্দ্রে শামীম ওসমান?
আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন৷ মেয়র ছাড়াও ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হবে৷ নির্বাচনে ছয়জন মেয়র প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে নৌকা প্রতীকের সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং স্বতন্ত্র হাতি প্রতীকের তৈমুর আলম খন্দকারের মধ্যে৷
বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচন করায় তাকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷ তাই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী৷
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তৈমুর আলম খন্দকার যেমন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমানের সমর্থন চাইছেন৷ তেমনি আইভী চাইছেন শামীম ওসমান তার দলের নেতা হয়ে যেন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান না নেন৷ কারণ জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও কর্মীদের বড় একটি অংশ শামীম ওসমানের অনুসারী৷
‘শামীম ওসমানের সমর্থন আমরা চাই’
তৈমুর আলম খন্দকারের নির্বাচন সমন্বয়কারী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবিএম কামাল বলেন,‘‘আমরা আওয়ামী লীগের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব আছে তা কাজে লাগাতে চাই৷ তৈমুর আলমকে দল অব্যাহতি দিলেও আমরা বিএনপির লোকজন তাকে ছেড়ে যায়নি৷ বিএনপির ভোট ব্যাংক তার আছে৷ আর মানুষের মধ্যে এখন নৌকা বিরোধী যে মনোভাব আছে তাও কাজে লাগবে৷’’
তার কথা,‘‘এতদিন আইভী বিএনপি জামায়াতের যে ভোট পেত তা তিনি পাবেন না বলে মনে করি৷ শামীম ওসমানকে নিয়ে আইভী একটা নাটক করছেন৷ ভোট বাড়াতে৷ আমরা তো চাইব শামীম ওসমানের লোকজনও আমাদের ভোট দিক৷ আমরা কি মানা করব? আর শামীম ওসমান এখন আর আগের ইমেজে নেই৷ তিনি নিজেকে পরিবর্তন করেছেন’’
সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্বাচন সমন্বয়কারী এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘শামীম ওসমান কোনো ফ্যাক্টর নয়৷ তবে তার সমর্থন আমরা চাই৷ কারণ দলের লোক হয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গেলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি হয়৷ আইভী দুইবারে মেয়র৷ এবার তৃতীয়ারের মত তিনি নির্বাচন করছেন৷ তিনি সিটি এলাকায় ভালো কাজ করেছেন৷ আর এখানকার ৫০ ভাগ নারী ভোটার৷ আইভীর প্রতি নারীদের বরাবরের সমর্থন আছে৷ আর তিনি শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী’’
তার অভিযোগ, ‘‘শামীম ওসমান যাদের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন তারা মনোনয়ন পাননি৷ এজন্য তিনি কলকাঠি নাড়ছেন৷ তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনের পর তাকে আমরা বিশ্বাস করতে চাই৷ কিন্তু মনের ভিতরে কী আছে তা তো বলতে পারব না৷’’
সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রথমবার স্বতন্ত্র নির্বাচন করে মেয়র হন৷ তখন শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান৷ এর পরের বার আইভী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান৷ তখনো শামীম ওসমান অনুসারীরা বিরুদ্ধে কাজ করে বলে জানা যায়৷ স্থানীয় লোকজন জানান এই দুই পরিবারের মধ্যে বৈরিতা অনেক পুরনো৷ দুই পরিবারই আওয়ামী লীগের হলেও এই বৈরিতা যেন শেষ হওয়ার নয়৷
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস৷ বর্তমানে কাজী হাবিবুল আউয়াল৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের নির্বাচন কমিশনগুলো সম্পর্কে জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Asif Mahmud Ove
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচন কমিশন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস৷ ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই থেকে ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি ৷ ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে এই কমিশন৷ সে সময় রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। নির্বাচনে ২৯৩ আসন জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। জাসদ ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাঁচটি আসন পায়।
ছবি: AP
নুরুল ইসলাম কমিশন
বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব পালন করা সিইসি৷ ১৯৭৭ সালের ৮ জুলাই যখন দায়িত্ব নেন, তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান৷ প্রায় আট বছর দায়িত্ব পালনের পর অব্যাহতি নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি৷ ৷ ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন হয় তার তত্ত্বাবধানে। বিএনপি পায় ২০৭ আসন, আবদুল মালেক উকিলের আওয়ামী লীগ ৩৯ আসন৷
ছবি: imago stock&people
তিন রাষ্ট্রপতির কমিশন
পরপর দুই সামরিক শাসকের অধীনে সিইসির দায়িত্ব পালন করেছেন নুরুল ইসলাম৷ ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জিয়াউর রহমান নিহত হলে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ১৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ‘সামরিক অভ্যুত্থানে’ ক্ষমতায় আসেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পরবর্তীতে এরশাদের সরকারে আইনমন্ত্রী ও পরে উপ রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন নুরুল ইসলাম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Rahman
মসউদ কমিশন
বিচারপতি চৌধুরী এটিএম মসউদ দায়িত্ব নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি৷ তিনি পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করেন ১৯৯০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি৷ এরশাদের আমলে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুটো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এই কমিশনের অধীনে৷ তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোট গেলেও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সাত দলীয় জোট তা বর্জন করে। চতুর্থ জাতীয় নির্বাচন দুই জোটই বর্জন করে৷
ছবি: DW
সুলতান কমিশন
বিচারপতি সুলতান হোসেন খান ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ তবে মাত্র ১০ মাস দায়িত্বে থেকে কোনো জাতীয় নির্বাচন না করেই ২৪ ডিসেম্বর সরে যেতে বাধ্য হন এরশাদের নিয়োগ পাওয়া এই সিইসি৷ গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হলে প্রধান দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক মতৈক্যে অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ৷ এরপর তিনি ইসি পুনর্গঠন করেন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
রউফ কমিশন
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথম তিন সদস্যের ইসি পায় বাংলাদেশ। বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ সিইসি হিসেবে নিযু্ক্ত হন৷ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে তার কমিশন৷ তিনি ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন৷ রউফ কমিশন নির্বাচনি আইনে ব্যাপক সংস্কার আনে, জারি করা হয় নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ। ১৯৯৪ সালে মাগুরা উপ নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত হন সিইসি রউফ।
ছবি: AP
সাদেক কমিশন
বিচারপতি একেএম সাদেক সিইসি পদে নিযুক্ত হন ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল৷ ১৯৯৬ সালে এই কমিশনের অধীনেই হয় বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলো ভোট বর্জন করে। বিএনপি পায় ২৭৮ আসন৷ দেড় মাস মেয়াদী সংসদের একমাত্র অধিবেশনে ত্রয়োদশ সংশোধনে সংবিধানে যুক্ত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ এই ইসিই নির্বাচনি আচরণবিধি চালু করে৷
ছবি: AP
হেনা কমিশন
১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে অস্থিরতার মধ্যে সাবেক আমলা মোহাম্মদ আবু হেনা ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ এই প্রথম কোনো আমলা এই পদে নিয়োগ পান৷ তার অধীনে ১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯৯ সালে টাঙ্গাইল (সখিপুর-বাসাইল) উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির জন্য সমালোচিত হয় তার কমিশন৷ নির্বাচনের গেজেট না করেই ২০০০ সালের ৮ মে দায়িত্ব ছাড়েন আবু হেনা৷
ছবি: Mustafiz Mamun
সাঈদ কমিশন
রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়াদপূর্তির পর আওয়ামী লীগ সরকার ওই দায়িত্বে আনে একানব্বইয়ের নির্বচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে থাকা শাহাবুদ্দিন আহমেদকে। আবু হেনা সরে যাওয়ার পর সিইসি হন সাবেক আমলা এম এ সাঈদ৷ বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সাঈদ কমিশনের অধীনেই ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন হয়।
ছবি: Mustafiz Mamun
আজিজ কমিশন
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত কমিশনগুলোর একটি আজিজ কমিশন৷ বিচারপতি এমএ আজিজ ২০০৫ সালের ২২ মে সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ ব্যাপক রাজনৈতিক টানাপড়েনের সময় ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন৷ পরে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দীন আহমদ তফসিল বাতিল করেন৷ ২১ জানুয়ারি কোনো জাতীয় নির্বাচন আয়োজন না করেই পদত্যাগ করেন এম এ আজিজ৷
ছবি: DW
শামসুল হুদা কমিশন
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এমএ আজিজের উত্তরসূরী হন এটিএম শামসুল হুদা৷ তার কমিশন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে৷ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন হয় ওই কমিশনের সময়েই। সংলাপ করে নির্বাচনি আইন সংস্কার করা হয়। চালু হয় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নিয়ম ও ইভিএম। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০, বিএনপি ৩০ ও জাতীয় পার্টি ২৭ আসন পায়।
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
রকিবুদ্দিন কমিশন
ইসি পুনর্গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের পর সার্চ কমিটি গঠন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। ২০১২ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেন সাবেক আমলা কাজী রকিবুদ্দিন আহমদ৷ সংসদে বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ ক্ষমতাসীন দলের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়৷ বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের বর্জন করা নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন৷
ছবি: DW
নুরুল হুদা কমিশন
এবারও সংলাপ আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবুল হামিদ৷ সিইসি করা হয় সাবেক আমলা কে এম নুরুল হুদাকে৷ দ্বাদশ ইসির যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের নতুন কার্যালয় নির্বাচন ভবনে। তার অধীনে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ পাওয়ায় যায়৷ বর্তমান কমিশনের মেয়াদ রয়েছে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।