1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারীদের হাতে মোবাইল

৯ ডিসেম্বর ২০১২

অনভিপ্রেত প্রেম বা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর জন্য দায়ী নাকি মোবাইল ফোন৷ বিশ্বাস হচ্ছে না? ভারতের বিহার রাজ্যের একটি গ্রামের স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা কিন্তু সে রকমই বলছেন৷

(FILES) In this photo taken on January 21, 2010, a Kashmiri woman speaks on a cell phone in Srinagar. India on April 16, 2010, banned phone users with monthly contracts in insurgency-hit Kashmir from sending SMS text messages in a new crackdown "in the interest of national security," a statement said. There was no further explanation for the move, which is likely to provoke protests in the volatile Muslim-majority region like a previous attempt to ban pre-paid mobile phones in 2009. AFP PHOTO/Tauseef MUSTAFA/FILES (Photo credit should read TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images)
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images

না, শুধু এহেন একটা কথা বলাই নয়, নারীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ‘সামাজিক পরিবেশ খাটো করছে' – এই যুক্তি দেখিয়ে নারীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করা নিষিদ্ধও করে দিয়েছে বিহার রাজ্যের কিষাণগঞ্জ জেলার সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত সুন্দরবাড়ি গ্রামের পঞ্চায়েত৷

মোবাইল ফোনের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে নাকি ছেলে-মেয়েদের একসঙ্গে পালানোর ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ বললেন বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে ৪০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এই গ্রামটির গ্রাম-পরিষদের প্রধান মানুয়ার আলম৷ তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েক মাসে পালিয়ে যাওয়া এবং বিবাহ-বহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক বেড়ে গেছে সুন্দরবাড়িতে৷ কমপক্ষে ছ'জন নারী এ সময় বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে৷ আর এদের মধ্যে বিবাহিত মেয়েরাও আছে৷ আমরা দেখেছি মেয়েরা, যারা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে, তাদের মধ্যে প্রেমের প্রবণতা বেশি৷ তাই গ্রামের পরিবেশ ঠিক রাখতে এবং ছেলে-মেয়েদের সঠিক পথে চালানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা৷''

তবে শুধু মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করাই নয়, ধরা পড়লে জরিমানা দেয়ার কথাও জানিয়েছে সুন্দরবাড়ির গ্রাম পঞ্চায়েত৷ জানা গেছে, রাস্তায় যদি কোনো মেয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে গিয়ে হাতে-নাতে ধরা পড়ে, তাহলে তাকে ১০ হাজার ভারতীয় টাকা জরিমানা দিতে হবে৷ আর বিবাহিত নারীদের জন্য এই জরিমানার পরিমাণ দু'হাজার টাকা৷ অবশ্য যাদের স্বামীরা বাইরে কাজ করে, তারা নিজ বাড়ির অন্দরমহল থেকে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে৷

মোবাইল ফোনের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে ভারতে নাকি ছেলে-মেয়েদের একসঙ্গে পালানোর ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ছবি: BASF/Oliver Lassen

অবশ্য আশার আলো এখনও আছে৷ একটি সুস্থ সমাজে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন দেওয়া যায় না – এ কথা উল্লেখ করে এরই মধ্যে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা৷ এছাড়া, নারী অধিকার কর্মীরাও এ সিদ্ধান্তকে স্বাধীনতার প্রতি হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন৷

বলা বাহুল্য, আধুনিক প্রযুক্তির এ যুগে এ ধরনের একটা নিষেধাজ্ঞা সত্যিকার অর্থেই ‘হতাশাজনক'৷ মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ ইসলামের কথায়, ‘‘গ্রাম পরিষদ মোবাইল ফোনের সুবিধাগুলিকে উপেক্ষা বা অস্বীকার করেছে৷ একটি মেয়ের হাতে মোবাইল থাকলে, বিপদে সে সেটা ব্যবহার করতে পারে, পরিবারের সদস্যদের ফোন করতে পারে – এ ব্যাপারটা পঞ্চায়েত খতিয়ে দেখছে না৷''

মজার ব্যাপার হলো, যেই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে সুন্দরবাড়ি অবস্থিত, সেই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কিন্তু একজন নারী৷ নাম সামিনা খাতুন৷ এরকম একটা নিষেধাজ্ঞার কথা শুনে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেন এমন একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, তা আমি জানি না৷ আমারই পঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রামে এমন ফতোয়ার কথা জানতে পেরে আমি নিজেই লজ্জিত৷''

এখানেই অবশ্য শেষ নয়৷ কারণ সুন্দরবাড়িতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মেয়েদের স্নান নিয়েও৷ গ্রামের অন্যতম মাতব্বর জাভেদ ইকবালের কথায়, ‘‘আমাদের গ্রামের পাশেই জাতীয় সড়ক৷ সেখানে একটি কুয়ায় গিয়ে মহিলারা স্নান করেন৷ পাশের রাস্তা দিয়ে মানুষজন যায়, যানবাহন চলাচল করে৷ এতে গ্রামের সম্মান নষ্ট হয় বৈকি! তাই আমরা ঠিক করেছি যে, এটা আর করা যাবে না৷''

ডিজি/এসবি (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ