সাংবাদিকের প্রশংসা
৩১ ডিসেম্বর ২০১৩রোববার ঢাকায় এক নারী আইনজীবীকে পেটায় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা৷ আদালতের সামনে আইনজীবীকে পেটানোর সময় তাঁকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এসেছিলেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজ-এর ফটোসাংবাদিক সানাউল হক৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁর মানবিকতা এবং সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন অনেকেই৷ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের সাংবাদিক প্রভাষ আমিন শুরুতেই প্রশ্ন রেখেছেন, ‘‘সাংবাদিকের কাজ কি, শুধু ছবি তোলা, নাকি সাংবাদিকরা আগে মানুষ?''
প্রশ্নটি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় বিশ্বজিতের মৃত্যুর পরও রেখেছিলেন প্রভাষ৷ একটি জাতীয় দৈনিকে এ বিষয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন৷ সেই লেখার প্রসঙ্গ টেনে সোমবার ফেসবুকে প্রভাষ লিখেছেন, ‘‘আমি এখনও মনে করি সাংবাদিকরা বিশ্বজিৎকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারতেন৷ সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই৷ সাংবাদিকরাও আগে মানুষ৷ সানাউল হককে ধন্যবাদ৷ তিনি ভালো ছবি মিস করার ঝুঁকি নিয়েও মহিলা আইনজীবীকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন৷ একজন সাংবাদিক হিসাবে আমি আজ গর্বিত৷''
প্রবাসী সাংবাদিক সওগাত আলী সাগর ফেসবুকে সানাউল হকের প্রশংসা করলেও ‘গরীব ঘরের সন্তান ছিলেন বলেই হয়তে বিশ্বজিতের দিকে কেউ সেদিন সাহায্যের হাত বাড়ায়নি' – এমন ধারণা পোষণ করে সাগর লিখেছেন, ‘‘বিশ্বজিৎ বেচারা দর্জির পোলা! তার নৃসংশভাবে খুন হওয়া ক্যামেরাবন্দী করতেই ব্যস্ত ছিল সব ক্যামেরাওয়ালা৷ এই আইনজীবীটির বেলায় অন্তত একজন ‘ক্যামেরাওয়ালা' মানুষ হয়ে উঠেছিলেন৷ স্যালুট সানা, আপনাকে স্যালুট৷ আপনি কেবল ‘ক্যামেরাওয়ালা' থাকেননি৷ মানুষ হয়ে উঠেছিলেন৷'' ক্যানাডা প্রবাসী সাগর লেখার শেষে নারী আইনজীবীর ওপর হামলা চালানো সন্ত্রাসীদের শাস্তি দাবি করে লিখেছেন, ‘‘আর ওই অমানুষগুলো, যারা একজন মায়ের সম্মান দিতে শিখেনি, ওই দুবৃত্তগুলোকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হউক৷''
বিএনপি সমর্থক নারী আইনজীবীর ওপর হামলার এ ঘটনায় সাংবাদিক সানাউল হকের প্রশংসা করতে গিয়ে অনেকে আবার অতীতে আওয়ামী লীগের নারী সাংসদ এবং মন্ত্রী আর নারী সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনের ওপর হামলার কথাও স্মরণ করেছেন৷ আওয়ামী লীগ নেত্রী মতিয়া চৌধুরীকে বিএনপি সরকারের আমলে পিটিয়েছিল পুলিশ৷ একুশে টেলিভিশনের সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনকে এ বছর হেফাজত-ই-ইসলামের সমাবেশে দায়িত্ব পালন করার সময় হেফাজত কর্মীরাই নির্মমভাবে পেটায়৷ হামলায় আহত নাদিয়াকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে কাটাতে হয়, দু- দুটি অস্ত্রোপচারের পরও তিনি স্বাভাবিক জীবন পুরোপুরি ফিরে পাননি৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ