ছোটবেলা থেকেই দেখছি ঈদের কিছুদিন আগে থেকেই মা খালাদের ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। ঘর বাড়ি ঝাড় পোছ করা, বিছানার চাদর, জানালার পর্দা, সোফার কভার সব ধুয়ে পরিস্কার করা, রান্নার জন্য মশলা পাতি পিষে রেডি করা- কাজের শেষ নেই।
বিজ্ঞাপন
ঈদের আগের দিন রাত জেগে চলে পরদিনের রান্নার প্রস্তুতি, পেঁয়াজ রসুন কাটা, জিরা আদা বাটা কিংবা নানা পদের পিঠা বানানো। আবার ঈদের দিন ভোরে সবার আগে ঘুম থেকে উঠে বিভিন্ন রকমের সেমাই ফিরনি পায়েশ রান্নার পাশাপাশি হাত চালিয়ে পরিপাটি করে ঘর-দোর গুছানোও তাদের কাজ।
ঈদের নামাজের পরপরই পশু কোরবানি শেষে একদিকে চলে মাংস কাটাকাটি, ভাগাভাগি, সংরক্ষণ করার জন্য ফ্রিজে গুছিয়ে রাখা আবার অন্যদিকে চলে রান্না বান্না, পরিবারের সবাইকে খাওয়ানো-দাওয়ানো আর অতিথি আপ্যায়ন। এই রান্না খাওয়ার ডামাডোলের মাঝেই দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত। এদিকে, গৃহিণীর হয়তো সময় মতো সেদিন গোসল করাই হলো না, পরা হলো না নতুন কাপড়টাও। ঘেমে নেয়ে পরিবারের সবার মুখে ঠিক সময়ে খাবার তুলে দেওয়া আর অতিথিদের যত্নআত্তি করতে করতেই তার ঈদ শেষ।
ফলে এটা বলা খুব মিথ্যা হবে না যে পরিবারের ছোট বড় সকলের ঈদের আনন্দ উপভোগের নেপথ্যে যে মানুষটি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি হচ্ছেন পরিবারের নারী সদস্যটি। একজন নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, শুধুমাত্র ঈদের দিনটি তার পুরুষ হয়ে যেতে ইচ্ছা করে। তিনি লিখেছেন, কোরবানির ঈদ নারীদের মানসিক ও শারিরীক পরীক্ষার দিন। আসলেই তাই। যে কোন ঈদ বা উৎসব মানেই পরিবারের নারীদের উপর বাড়তি কাজের চাপ। বেশি রান্না। বেশি মেহমানদারি। বেশি পরিশ্রম। ফলে আয়েশ করে ঈদ উপভোগের ফুরসৎ কোনো কালেই নারীর ছিল না, এখনো নেই। বরং সবার আনন্দের খোরাক জুগিয়ে ঈদের দিন শেষে তার প্রাপ্তি সারাদিনের এক রাশ ক্লান্তি আর অবসাদ।
চিরাচরিতভাবে ধরেই নেয়া হয়, রান্না বান্না, বাড়ি ঘর পরিষ্কার করা, অতিথি আপ্যায়ন ইত্যাদি সবগুলো কাজই নারীর কাজ। উৎসব আনন্দে তাই নারীর ঘাড়েই অবধারিতভাবে চাপিয়ে দেয়া হয় এইসব দায়িত্ব। সমাজ নির্ধারিত এই শ্রম বিভাজনের চাপে পড়ে মা বোন ভাবিদের আলাদা করে ঈদ উদযাপনের আর কোনো সুযোগ থাকে না। যদিও এখন সময় বদলাচ্ছে। ঘরের বাইরেও নারীরা পুরুষের সমান্তরালে কাজ করছেন। কিন্তু উৎসব আয়োজনে নারীর কাধ থেকে ঘরের কাজের বোঝা কিন্তু একটুও কমেনি।
বরং এখনো মনে করা হয়, ঘর গৃহস্থালির কাজ মেয়েদের আর ঘরের বাইরের কাজ ছেলেদের। নারীর কাজ এবং পুরুষের কাজ বলে সমাজে কর্মবিভাজনের এই প্রবণতা আসলে নারীর প্রতি চরম বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার প্রতিফলন ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ সত্যিকার অর্থে নারীর কাজ আর পুরুষের কাজ বলে আলাদা কিছু কি আছে? ঘরের কাজ কি এক অর্থে পুরুষেরও নয়? তিনিও তো ঘরেই থাকেন, তারও তো নিজের খাবার লাগে, তাহলে খাবার তৈরি করাটা কি তার কাজ নয়? খাওয়া শেষে নিজের থালা বাসনটা ধুতে হয়। তিনি কাপড়ও পরেন, তাহলে নিজের থালাটা ধোয়া বা কাপড়টা ধোয়া- সেটাও তো তারই কাজ। অথচ বাস্তবে আমরা দেখি পুরুষ তার এই কাজগুলিতে অভ্যাসগত ভাবে নারীর উপর নির্ভরশীল। যুগের পর যুগ এই নির্ভরশীলতাকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ স্বাভাবিক বলেই প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফলে নারীরাও এই বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না, বরং মুখ বুজে সমাজ নির্ধারিত কাজের জোয়াল কাঁধে বয়ে নিয়ে যান। অনেকে বলেন, ঈদের দিনের রান্নাবান্না আর সংসারের কাজ কর্ম আগেকার দিনের মা খালারা আনন্দিত চিত্তেই করতেন। কিন্তু যদি তাদের সামনে বিকল্প থাকতো তাহলে কি তারা অন্য রকম কিছু ভাবতেন না?
এক্ষেত্রে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা যদি তাদের পুরনো ধ্যান-ধারণা বদলান এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটান তবে পরিবারের নারী সদস্যটিও একটু স্বস্তির সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন। ঘরের সব কাজ একা তার কাঁধে না চাপিয়ে নারী পুরুষ যদি সংসারের কাজ ভাগভাগি করে নেন, একে অন্যকে গৃহ কর্মে সহযোগিতা করেন তবে সংসারটা তাদের দুজনেরই হয়ে ওঠে। এতে লজ্জ্বা বা অগৌরবের কিছু নেই বরং নারী পুরুষ একসাথে হাতে হাতে কাজ করলে আনন্দ বাড়ে বৈ কমে না।
ঘরের কাজের কথা তুললেই বেশির ভাগ পুরুষই অজুহাত দেন, ‘আমি এসব কাজ পারি না।' ‘কখনো করিনি, অভ্যাস নেই।' আসলে ছোটবেলা থেকেই পরিবারে ছেলেদের এভাবেই বড় করে তোলা হয়। মা-বোন-স্ত্রী সবসময় তার কাজগুলো করে দেয়। ফলে এসব কাজে আনাড়ি থাকাটাকেই তিনি গৌরবের বলে মনে করেন। এক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিবারের সদস্যদেরও ভূমিকা রয়েছে। মায়েরা ছোটবেলা থেকে মেয়েকে যে কাজ শেখান, ছেলেকেও সেই কাজটা শেখাতে হবে। ভাই বোনের কাজের মধ্যে বৈষম্য রাখা উচিত নয়। ‘কাজের ক্ষেত্রে নারী পুরুষ নেই, সবাই সব কাজ করতে পারে'- এই ধারণাটি ছোটবেলা থেকেই সবার উপলব্ধিতে আনতে হবে। এজন্য শিক্ষার কারিক্যুলামেও পরিবর্তন আনা দরকার। মেয়েরা গার্হস্থ্যবিজ্ঞান পড়বে আর ছেলেরা কৃষিবিদ্যা- বহুদিন ধরে প্রচলিত এই ব্যবস্থাও বদলানো প্রয়োজন। শিক্ষা ব্যবস্থায় এভাবে নারী পুরুষকে আলাদা করে দেয়া লৈঙ্গিক বৈষম্যকেই উৎসাহিত করে। এখন সময় এসেছে দুটি বিষয়কেই জেন্ডার নিরপেক্ষ করে ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই আবশ্যিক করা।
আবার ফিরে আসি ঈদ উদযাপনের প্রসঙ্গে। ঈদ আসে নারী পুরুষ সবার জন্যই। ফলে নারীদের উপর সকল কাজের দায় না চাপিয়ে যদি পরিবারের নারী পুরুষ সবাই মিলে কাজগুলি ভাগ করে নেয়া যায়, তাহলে ঈদ উদযাপন যে আরো আনন্দময়, আরো মধুর হয়ে উঠবে সে বিষয়ে কোনোই সন্দেহ নেই।
অন্দরের ঈদ: পুরুষদের চোখে নারী
রান্না করে, ঘর গুছিয়ে, আত্মীয় স্বজনকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানোর মধ্য দিয়েই উৎসবের দিনটা কেটে যায় নারীদের৷ সারাটা দিন ঘরের মধ্যেই পার হয় তাদের৷ এ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ কী বলছেন?
ছবি: Shahnaz Munni
‘ঈদ আমরা উপভোগ করি, কিন্তু নারীদের বঞ্চিত করি’
ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোজাহার হোসেন বুলবুল বলেন, ‘‘আমাদের দেশে উৎসবে নারীদের অবদানকে আমরা খুব একটা গুরুত্ব দেই না৷ ঈদের দিন সকাল থেকে রান্না-বান্না নিয়ে তাদের ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়৷ এর সঙ্গে অতিথি আপ্যায়ন আছে৷ ফলে ঈদটাকে যে উপভোগ করা, একটু বেড়ানো বা কোথাও যাওয়া সেটা তারা করতে পারেন না৷ আমি মনে করি, ঈদে নারীদের বিশেষ অবদান আছে৷ ...ঈদটাকে আমরা উপভোগ করি, কিন্তু তাদের বঞ্চিত করি৷”
ছবি: Samir Kumar Dey
‘উৎসবের পূর্ণতা পায় নারীদের ভূমিকার কারণে’
দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক সম্পাদক মাঈনুল আলম বলেন, “উৎসবের পরিপূর্ণতা পায় মূলত নারীদের ভূমিকার কারণে৷ ঘরে-গৃহস্থলিতে তারা সবকিছু সামাল দেন৷ এই যে কোরবানি ঈদ গেল, এখানে মাংস আনার পর সেটার প্রক্রিয়া করা এবং রান্না করার কাজটা নারীরাই করেন৷ বিশেষ করে ঘরটাকে সামাল দেওয়া কিন্তু বড় একটা বিষয়৷ শুধু ঘরে না, বাইরেও নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ এই ভূমিকা না হলে হয়তো উৎসব পরিপূর্ণতা পেত না৷’’
ছবি: Samir Kumar Dey
‘ঈদের দিন তারা রান্না না করলে আমরা কোথায় খাব?’
শাহবাগের ফুল বিক্রেতা মো. সোহাগ বলেন, “ঘরের রান্না তো নারীরাই করবেন৷ পুরুষেরা বাইরে কাজ করেন, আর নারীরা ঘরে রান্না করেন৷ এখন ঈদের দিন তারা রান্না না করলে আমরা কোথায় খাব? এটাতে হয়ত তাদের কষ্ট হতে পারে৷ কিন্তু এটাই তো প্রকৃতির নিয়ম৷ এটা নিয়ে নারীদের কোনো অভিযোগ কিন্তু নেই৷ কখনও তারা বলে না, আমরা রান্না করতে পারব না৷ এভাবেই পূর্বপুরুষদের আমরা দেখে এসেছি৷ এখনও সেভাবেই চলছে৷’’
ছবি: Samir Kumar Dey
‘নিজের নয়, পুরুষদের পছন্দের খাবার রান্না করে’
স্টাফ নার্স রেজাউল করিম বলেন, “ঈদের দিন নারীরা সকাল থেকে কাজ শুরু করেন৷ বাচ্চা থেকে শুরু করে স্বামীদের দেখভালের কাজটা তাদের৷ সকালের নাস্তা সেরে দিনের আসল রান্না শুরু করে৷ বিশেষ করে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা কী খাবার পছন্দ করে সেই খাবারই তারা রান্না করে৷ অথচ নিজের কোন পছন্দের খাবার থাকলেও সেটা করেন না৷ ঈদের দিন তাদের আসলে তাদের সর্বোচ্চ বিনোদন হলো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসে ঈদের কোন অনুষ্ঠান দেখা৷’’
ছবি: Samir Kumar Dey
‘উৎসবে অন্যরা বাইরে গিয়ে খায়, আমরা লোক ঘরে ডেকে খাওয়াই’
প্রযুক্তি পণ্য বিক্রয়কারী একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ইমরুল হাসান বলেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতিতে উৎসব মানেই বাসায় বিশেষ রান্নার আয়োজন৷ উৎসব সারা বিশ্বেই হয়৷ কিন্তু ওই সব দেশগুলোতে উৎসবে তারা বাইরে খায়৷ আর আমরা উৎসবে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের ডেকে বাসায় খাওয়াই৷ ফলে পরিবারের নারী সদস্যদের উপর একটা বাড়তি চাপ পড়ে৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নারীদের বিশেষ দিনে রান্না করতে করতে দিন পার হয়ে যায়৷’’
ছবি: Samir Kumar Dey
‘সবাই মিলে কষ্ট করলেই তো খুশি থাকা যায়’
বরগুনা থেকে ঢাকায় এসে রিক্সা চালানো মো. সোহেল বলেন, “গিন্নিরা যে সারাদিন শুধু রান্না করে তা কিন্তু না৷ একসাথে আমরা টিভিও দেখি৷ আবার আত্মীয়ের বাড়িতেও কিন্তু যায়৷ তারা একটু বেশি কষ্ট করে৷ আমরাও কিন্তু বাইরে কম কষ্ট করি না৷ তাদের খুশি রাখার জন্যই তা আমাদের এত কষ্ট৷ দিন-রাত রিক্সা চালায় দু’টো টাকার জন্য৷ সবাই মিলে কষ্ট করলেই তো খুশি থাকা যায়৷ সন্তানদের দেখে রাখবে, রান্না করবে, এটাই তো তাদের কাজ৷’’
ছবি: Samir Kumar Dey
‘আপ্যায়নেই আনন্দ পান নারীরা’
আগারগাঁওয়ে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল রফিজ উদ্দিন বলেন, “নারীরা ঘরে রান্না করলে যে আনন্দ উপভোগ করতে পারে না, সেটা কিন্তু নয়৷ হ্যাঁ, তাদের কষ্টটা আমাদের চেয়ে বেশি৷ আপ্যায়নেও তারা কিন্তু আনন্দ খুঁজে পান৷ ছোট বাচ্চাদের তারা সাজগোজ করে দেন নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য৷ ঘরেও তারা নতুন পোশাক পরেন, সবাই মিলে একত্রে থাকার মধ্যেও কিন্তু আনন্দ আছে৷ সেই আনন্দটা তারা পান৷”
ছবি: Samir Kumar Dey
‘মিলেমিশেই আমরা আনন্দ উপভোগ করি’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাকির হোসেন বলেন, “বাংলাদেশে সর্বক্ষেত্রেই নারীরা গৃহকর্ম করেন৷ সবকিছু গুছিয়ে স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে আত্মীয় স্বজনের বাসায় যান৷ অনেক সময় হয়তো সম্ভব হয় না৷ করোনার এই পরিস্থিতিতে তো এখন আর কেউ বাইরে যাচ্ছেন না৷ ঘরেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সময় কাটান৷ ফলে বাঙালির যে কালচার সেটা কিন্তু দুই বছর ধরে নেই৷ এখন তো সবাই ঘরের কাজে অংশ নেন৷ মিলেমিশেই আনন্দ আমরা উপভোগ করি৷”
ছবি: Samir Kumar Dey
‘রান্না করে খাওয়ানোতেই নারীদের আনন্দ’
মিরপুরের সিএনজি চালক মোরশেদ আলম বলেন, “ঈদের দিন তো নারীরা ঘরে রান্না করেই সময় পার করে দেয়৷ আত্মীয়-স্বজনকে বাসায় ডেকে খাওয়াতেই তাদের আনন্দ৷ আমরা যদি তাদের বলিও ঈদের দিন রান্না করতে হবে না৷ বরং তাহলে তারা কষ্ট পাবে৷ যুগ যুগ ধরে চলে আসা তাদের এই আনন্দ আমরা নষ্ট করতে চাই না৷ তাই তারা যেটাতে আনন্দ পায় সেটাই করতে দেওয়া উচিৎ৷’’
ছবি: Samir Kumar Dey
‘আত্মীয় স্বজন না এলে তারাই বেশি কষ্ট পান’
মেট্টোরেলের কর্মী সাইমুন হাওলাদার বলেন, “আমাদের মা, খালা, চাচী, ফুফুসহ আমাদের ঘরের স্ত্রী যারা আছেন তারা ঈদটাকে সেভাবে উদযাপন করতে পারে না৷ ঘর গোছানোসহ রান্নাতেই তাদের বেশি সময় যায়৷ এভাবেই তো চলে আসছে৷ এটার আসলে কোন পরিবর্তন হয়নি৷ ঈদে বাড়িতে আত্মীয় স্বজন না এলে নারীরাই বেশি কষ্ট পান৷ এই রান্না করা, আর ঘরের কাজ করার মধ্যেই তারা আনন্দ খুঁজে পান৷”
ছবি: Samir Kumar Dey
‘উৎসবের দিনটা নারীরা আমাদের উৎসর্গ করে’
মিরপুরের শেওড়াপাড়ার ভোলা টি স্টলের স্বত্বাধিকারী মো. রাসেল মনে করেন, “সবচেয়ে সুন্দর দিনটা নারীরা আমাদের জন্য উৎসর্গ করে৷ ঈদের দিন তো সবাই আনন্দ করতে চায়৷ নারীরাও চায়৷ কিন্তু পরিবারের পুরুষ সদস্যদের কথা ভেবে তারা এই আনন্দের দিনটা মাটি করে ফেলে৷ সারাদিন রান্না ঘরেই কাটিয়ে দেয়৷ আমাদের তো উচিৎ তাদের কাজে সহযোগিতা করা, সেটা তো আমরা করি না৷ উৎসবের দিনে নারীদের এই ত্যাগ আসলে আমরা স্বীকারও করি না৷’’
ছবি: Samir Kumar Dey
‘ঈদে খাবারের দোকান বন্ধ থাকে, ঘরে তো রান্না করতেই হবে’
একটি ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী ইয়াদ আলী বলেন, “ঘরে ঈদের দিন নারীরা যে কাজ করে সেটা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে৷ শিক্ষিত-অশিক্ষিত নেই, সব নারীই ঈদের দিন ঘরের কাজে আনন্দ পান৷ আপনি যদি এটা বদল করতে চান, সেটা সম্ভব না৷ আমাদের দেশে কি ঈদে কোন খাবারের দোকান খোলা থাকে? থাকে না৷ তাহলে বাড়িতেই তো রান্না করতে হবে৷ সেই কাজটা তো নারীরা করবেন৷ এজন্য নারীরা কিন্তু আপনাকে কোন অভিযোগ করে না৷ এটাতেই তাদের শান্তি৷’’