1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজপাকিস্তান

নারী দিবস পালন নিয়ে পাকিস্তানে রক্ষণশীলদের প্রতিক্রিয়া

৭ মার্চ ২০২২

‘মাই বডি মাই চয়েস' স্লোগান দিয়ে ‘আওরাত আজাদি মার্চ' পালন করা নিয়ে পাকিস্তানে বিতর্ক বেড়েই চলছে৷ এমনকি এর আয়োজকেরা পড়ছেন রক্ষণশীলদের হুমকির মুখে৷

২০২১ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-এ ছবি: Aamir Qureshi/AFP/Getty Images

‘আওরাত আজাদি মার্চ' শুরুর আগ পর্যন্ত পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি তেমন কারো মনোযোগ পায়নি৷ বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও থেকে পালন করা হত৷ আওরাত আজাদি মার্চের কল্যাণে নারী দিবসের কুচকাওয়াজ এখন সারা দেশের হাজারো নারী, অধিকারকর্মী এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে সর্বজনীন অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে ৷ আর এই মার্চকে ঘিরে পাকিস্তানে এখন মূলধারা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ অনেক মানুষ বিশেষ করে পুরুষেরা এটাকে পশ্চিমের অর্থায়নে চালিত একটি ‘অশ্লীল' ইভেন্ট বলে অভিহিত করেছেন৷

‘মাই বডি মাই চয়েস‘ স্লোগানের আয়োজকদের ধর্মীয় ও রক্ষণশীল গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে থেকে প্রকাশ্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷

সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি এসেছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের থেকে, যা এনজিওগুলোকে দমন-পীড়ন করেছে৷ কর্তৃপক্ষ নারী অধিকার গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিদেশি অর্থ গ্রহণ এবং দেশে পশ্চিমা মূল্যবোধের প্রচারের অভিযোগ এনেছে৷ ২০১৮ সালে, পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকার ১৮টি আন্তর্জাতিক এনজিওকে জোর করে বন্ধও করে দিয়েছে৷

নারী অধিকার গোষ্ঠী উইমেন ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সভাপতি ইসমত শাহজাহান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আওরাত আজাদি মার্চ কোন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ সহযোগিতা পায় না৷ আমরা আমাদের স্বাধীনতার স্বার্থে অর্থ সংগ্রহ করি৷ সরকার এই আন্দোলনকে নষ্ট করতে চায়৷’’

নারী দিবস পালন 'পশ্চিমা ভাবনা'

আওরাত আজাদি মার্চ এর বিরোধী লেখক খলিল-উর-রহমান কামার ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘নারীবাদ একটি পশ্চিমা ধারণা ৷ নারী অধিকার কর্মীরা ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থ পায়৷’’

২০১৯ সালের নারী মার্চের অংশগ্রহণকারীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘নিজের খাবার নিজে গরম করুন', ‘আমার শরীর আপনার যুদ্ধক্ষেত্র নয়' এমন কিছু স্লোগান পাকিস্তানের রক্ষণশীলদের বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ করে৷

খলিল-উর-রহমান কামার আরও বলেন ‘‘নারীরা যদি এই বেহায়া এবং নোংরা স্লোগানের ব্যবহার বন্ধ করে, আমি তাদের সবচেয়ে বড় সমর্থক হব ৷ তাদের জানা উচিত যে, তাদের বাবা ও স্বামীকে অসম্মান করে তারা তাদের অধিকার আদায় করতে পারবে না৷ নারীবাদিরা এই দেশটিকে ধ্বংস করছে ৷’’ 

নারীদের জন্য বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক দেশ পাকিস্তানের বর্তমান রীতিগুলো চ্যালেঞ্জ করার জন্য এই স্লোগানগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অধিকার কর্মীরা ৷ এছাড়াও পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী শতকরা প্রায় ৭০ থেকে ৯০ ভাগ পাকিস্তানি নারী শারীরিক এবং মানসিক সহিংসতার শিকার হয় ৷ 

আওরাত আজাদি মার্চের অন্যতম সংগঠক তুবা সৈয়দ ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘পুরুষেরা নারীর শরীরকে তাদের সম্পত্তি বলে মনে করেন, নারীরা নিজেদের বা তাদের শরীর নিয়ে কথা বললে তারা বিরক্ত বোধ করেন৷’’  রাষ্ট্র, মিডিয়া এবং ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলো নারীবাদকে ‘টুইস্ট' করার অসম্মান করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান তিনি৷ 

নারীবাদীদের প্রতি হুমকি বাড়ছে

বেশ কয়েক বছর ধরে, পাকিস্তানের ধর্মীয় দলগুলো আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তাদের নিজস্ব নারীবাদ-বিরোধী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে৷ ডানপন্থি দল জমিয়ত উলেমা-ই ইসলাম (জেইউআই-এফ) গত বছর পাল্টা মিছিল করে এবং রাজধানী ইসলামাবাদে নারীদের মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের উপর পাথর ছুঁড়ে ৷ ধর্মীয় দলগুলোর নারী শাখাও নারীদের ইসলামি মূল্যবোধ প্রচারের জন্য ৮ মার্চ এ ‘হায়া দিবস'-এর  আয়োজন করে৷

ডানপন্থি জামায়াত-ই-ইসলামী দলের সামিয়া রাহিল কাজী ডিডব্লিউকে বলেন, ‘‘ইসলামে নারী ও পুরুষের আলাদা স্থান ও ভূমিকা রয়েছে৷ তার দল ১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সমাবেশ করে আসছে৷ তাদের এ বছরে থিম ‘শক্তিশালী পরিবারই গঠন করে শক্তিশালী সমাজ৷’’

অধিকারকর্মী সৈয়দ মনে করেন, যে কোনো মিছিলের জন্য পাল্টা মিছিল অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ৷ গত বছর আওরাত আজাদি মার্চের অংশগ্রহণকারীদের উপর হামলার পর আয়োজকেরা এবার নিজেদের রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে৷

মাভরা বারি (ইসলামাবাদ)/এনএস 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ