২০১৬ সালে থেকে অবৈধভাবে ইটালিতে এসেছেন ১১ হাজারেরও বেশি নাইজেরিয়ান নারী৷ আর তাঁদের অধিকাংশেরই শেষ পরিণতি হয়েছে পতিতাপল্লি৷ নারী পাচার ঠেকাতে এবার দেশটি কাজে লাগাচ্ছে ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালো জাদু৷
বিজ্ঞাপন
অর্থনৈতিকভাবে বেশ উন্নত হলেও নাইজেরিয়ার ইডো প্রদেশের বেনিনে কালো জাদুর ওপর মানুষের বিশ্বাস এখনো প্রবল৷ অনেকেই বিশ্বাস করেন, কালো জাদুর অধীনে কোনো চুক্তি করে তা ভঙ্গ করলে শারীরিক অসুস্থতা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে৷
আর এই ভীতি কাজে লাগিয়ে প্রায় দুই দশক ধরে নাইজেরিয়া থেকে ইউরোপে নারী পাচার করছেন ৪২ বছর বয়সি পেশেন্স৷ এ থেকে তার আয়ও ছিল বেশ৷ নারীরা যাতে পালাতে না পারে, সেজন্য তিনি ব্যবহার করতেন তাঁর কালো জাদু৷
যেসব দেশে পতিতাবৃত্তি বৈধ
পতিতাবৃত্তি নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন পেশা৷ কিন্তু কোনো যুগে, কোনো দেশেই মানুষ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেনি, আজও করে না৷ তবে বিশ্বের বহু দেশেই পতিতাবৃত্তি বৈধ এবং সেখানে যৌনকর্মীরা নিয়মিত আয়করও দেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Vennenbernd
হল্যান্ডের ‘পতিতাপল্লী’ পর্যটকদের মূল আকর্ষণ
নেদারল্যান্ডসে পতিতাবৃত্তি শুধু বৈধ নয়, ইউরোপের এই দ্বীপদেশটির পতিতাপল্লী সত্যিকার অর্থেই বিশ্ববিখ্যাত৷ ঐ ‘রেডলাইট জোন’ দেখতে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক আসে আমস্টারডামে৷ নেদারল্যান্ডসের মতো ইউরোপের আরেক দেশ বেলজিয়ামেও দেহব্যবসা সম্পূর্ণ বৈধ৷
ছবি: picture-alliance/AP
জার্মানি এবং ফ্রান্সে কঠোর আইন
জার্মানি এবং ফ্রান্সেও দেহব্যবসা বৈধ৷ তবে এ দু’দেশেই যৌনকর্মীদের এই ব্যবসা করতে হয় কঠোর আইন মেনে৷ জার্মানির কিছু শহরে এখনো যৌনকর্মীরা রাস্তায় নেমে খদ্দের ডাকতে পারেন না, এভাবে খদ্দের সংগ্রহ করা সেসব জায়গায় আইনত দণ্ডনীয়৷ ফ্রান্সেও ২০১৪ সালে এমন একটা আইন হয়েছে, যা মেনে যথেচ্ছ দেহব্যবসা করা খুব কঠিন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সুইডেন আর নরওয়েতেও নিয়ন্ত্রিত পতিতাবৃত্তি
ফ্রান্স ২০১৪ সালে যে আইন প্রবর্তন করে, সেটা প্রথম চালু হয়েছিল সুইডেনে, ১৯৯৯ সালে৷ এ কারণে আইনটি ‘সুইডিশ মডেল’ হিসেবে পরিচিত৷ এ আইনে যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষা করে দালালদের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায় স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাধ্যতামূলক
সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতেও দেহব্যবসা বৈধ৷ তবে এ দু’টি দেশে ১৯ বচর বয়স না হলে কেউ দেহব্যবসায় আসতে পারেন না৷ যৌনকর্মীদের যাতে কোনো যৌনরোগ না হয়, কিংবা তাঁদের মাধ্যমে খদ্দেরদের মাধ্যে যাতে এইডস, সিফিলিস বা অন্য কোনো রোগ ছড়াতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে যৌনকর্মীদের নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হয়৷ অবশ্য শুধু সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতে নয়, জার্মানিতেও ঐ একই নিয়ম৷
ছবি: AFP/Getty Images
গ্রিস এবং তুরস্কে পতিতাবৃত্তি নিয়ন্ত্রিত
গ্রিস এবং তুরস্কেও পতিতাবৃত্তি পুরোপুরি বৈধ, তবে দেহ ব্যবসার আইন খুব কঠিন৷ জার্মানির মতো এই দু’টি দেশেও যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্যবীমা করা বাধ্যতামূলক৷ এছাড়া যৌনকর্মীরা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান কিনা, তা সবসময় তদারক করা হয়৷ স্বাস্থ্যকার্ডেই লেখা থাকে স্বাস্থপরীক্ষার সব তথ্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Vennenbernd
যে দুই দেশের পতিতাপল্লীতে ধীরে চলা মানা
ব্রিটেন আর আয়ারল্যান্ডের পতিতাপল্লী বা ‘রেড লাইট জোন’-এর প্রায় সব আইনই জার্মানির মতো ছিল৷ তবে সম্প্রতি ব্রিটেনে কিছু বেসরকারি সংস্থার দাবিতে এতে নতুন কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে৷ ব্রিটেনের রেড লাইট জোন-এ এখন যেমন ধীরে গাড়ি চালানো নিষেধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কাউকে জোর করে পতিতা বানানো যায় না
ইউরোপের সব দেশেই পতিতাবৃত্তি আইনত বৈধ৷ তবে আইন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেশভেদে একটু হলেও অন্যরকম৷ যেমন স্পেন এবং পর্তুগালেও দেহব্যবসা বৈধ৷ কিন্তু স্পেনে কাউকে জোর করে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌনকর্মী বানানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Dedert
দক্ষিণ অ্যামেরিকায় অন্যরূপ
দক্ষিণ অ্যামেরিকার অধিকাংশ দেশেই যৌনব্যবসা বৈধ৷ তবে কিছু দেশে মাফিয়া এবং মানবপাচার বড় সমস্যা হয়ে ওঠায়, এই ব্যবসার ওপর কড়াকড়ি এবং তদারকি বেড়েছে৷ দেহব্যবসাকে মাফিয়া চক্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখতে ব্রাজিল এবং মেক্সিকোতে রয়েছে কঠোর আইন৷ তারপরও দেশ দু’টিতে মাফিয়া চক্রের আধিপত্য রয়ে গেছে৷
ছবি: Yasuyoshi Chiba/AFP/Getty Images
প্রতিবেশী হয়েও নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া আলাদা
নিউজিল্যান্ডে যৌনব্যবসা একেবারেই বৈধ৷ তবে প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়ার অনেক রাজ্যে এই ব্যবসা এখনো অবৈধ৷ ২০০৩ সালে আইন করে সব প্রাপ্তবয়স্কের জন্য যৌনব্যবসাকে বৈধ করে দেয় নিউজিল্যান্ড৷
ছবি: picture-alliance / rolf kremming
এশিয়ায় লুকোনো পতিতাবৃত্তি
ভারতের পতিতাবৃত্তি বৈধ৷ তারপরও পতিতাবৃত্তি চলে আড়ালে-আবডালে৷ রাস্তায় নেমে পতিতারা খদ্দের সংগ্রহ করতে পারেন না৷ খদ্দেররা অর্থের বিনিময়ে যৌনক্ষুধা মেটাতে যায় রাতের আঁধারে৷ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে পতিতালয় কমলেও মাসাজ পার্লার এবং আবাসিক হোটেলে প্রায়ই চলে পুলিশি অভিযান৷ খদ্দেরসহ পতিতা আটকের খবর আসে তখন৷ থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্সে পতিতাবৃত্তি চলে অবাধে৷ তবে দেশ দুটিতে এই ব্যবসা আইনের চোখে অবৈধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
10 ছবি1 | 10
বেনিনে পেশেন্সের একটি সেলুন আছে৷ সেখানেই চুলের সাজসজ্জার আড়ালে দীর্ঘদিন নারী পাচারের কাজকর্ম চালিয়ে আসছেন পেশেন্স৷ উন্নত জীবনের লোভে ইউরোপ যাওয়ার সুযোগ খুঁজতে বেনিনের তরুণীরা ভিড় জমাতেন তার সেলুনে৷ ফলে এ খাত থেকে প্রতি মাসেই বেশ বড় অংকের উপার্জনও হতো পেশেন্সের৷
ইউরোপে বসবাসকারী এজেন্টদের সহায়তায় নারীদের তুলে দেয়া হতো নৌকায়৷ তবে তার আগে পালন করা হতো এক বিশেষ ধরনের আচার৷ হাজার হাজার ডলার পরিশোধের চুক্তিতে সই করতে বাধ্য করা হতো ইউরোপগামী নারীদের৷
সেই চুক্তি তারপর নিয়ে যাওয়া হতো আধ্যাত্মিক যাজকের কাছে৷ কালো জাদুর অংশ হিসেবে জ্যান্ত মুরগির যকৃত টেনে বের করে তাঁদের খেতে বাধ্য করা হতো৷ এরপর নারীদের চুল এবং কাপড়ের কিছু অংশ একটি মিশ্রণে মিশিয়ে বাধ্য করা হতো সেটা পান করতে৷ এভাবেই কালো জাদুর মাধ্যমে সেই চুক্তি সিলগালা করে দেয়া হতো৷
স্থানীয়ভাবে ‘জুজু' নামে পরিচিত এই কালো জাদুকে বেশ ভয় পান বেনিনের নারীরা৷ ফলে ইউরোপে এসে স্বপ্নভঙ্গের পর শত নির্যাতন সহ্য করলেও পুলিশের কাছে যাওয়ার কথা ভুলেও ভাবেন না তাঁরা৷
১৮ বছর বয়সে রাশিয়ায় পাচার হওয়া ফ্লোরেন্সের বয়স এখন ২৪৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি একবার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলাম৷ এরপরই আমার মুখে পচন ধরতে শুরু করে৷ আমাকে একাধিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও কোনো চিকিৎসকই আমার রোগের কারণ বের করতে পারেননি৷''
বাংলাদেশের যৌনকর্মীদের কথা
পৃথিবীর আদিম এক পেশা পতিতাবৃত্তি৷ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই চালু রয়েছে এই পেশা৷ বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়৷ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেমন আছেন বাংলাদেশের যৌনকর্মীরা? এই ছবিঘরে তাঁদের অবস্থা কিছুটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images
যেভাবে যৌনপল্লীতে আগমন
বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হয়ে যৌনপল্লীতে হাজির হন মেয়েরা৷ প্রত্যন্ত অঞ্চলের অতিদরিদ্র্য পরিবারের সদস্যরা কখনো কখনো অর্থের লোভে মেয়েদের বিক্রি করে দেন বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা৷ এছাড়া ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে কিংবা বিদেশ যাওয়ার লোভ দেখিয়েও মেয়েদের যৌনপল্লীতে আনা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Munir uz ZAMAN
যৌনকর্মীদের জন্য ‘গরুর ট্যাবলেট’
ফরিদপুরের সরকার অনুমোদিত যৌনপল্লীর ছবি এটি৷ অভিযোগ রয়েছে, পল্লীর মালিক নতুন আসা যৌনকর্মীদের স্টেরয়েড ট্যাবলেট সেবনে বাধ্য করেন, যা সাধারণত গরুকে খাওয়ানো হয়৷ গরুর স্বাস্থ্য বাড়াতে ব্যবহার করা এই ট্যাবলেট মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকর৷
ছবি: M.-U.Zaman/AFP/GettyImages
অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ‘ইনজেকশন’
বাংলাদেশের এক যৌনপল্লীর মালিক রোকেয়া জানান, স্টেরয়েড ওষুধ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ভালো কাজে দেয়৷ কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক, বিশেষ করে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সি মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর নয়৷ অপ্রাপ্তবয়সিদের স্বাস্থ্য ভালো করতে বিশেষ ধরনের ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় বলে জানান ৫০ বছর বয়সি রোকেয়া৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Press/M. Candela
অধিকাংশ যৌনকর্মী ‘স্টেরয়েড আসক্ত’
আন্তর্জাতিক উন্নয়নসংস্থা একশনএইড ইউকে এক সমীক্ষার ভিত্তিতে ২০১০ সালে জানায় যে, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ যৌনকর্মী ওরাডেক্সন বা অন্যান্য স্টেরয়েড ট্যাবলেট নিয়মিত গ্রহণ করে৷ তাঁদের গড় বয়স ১৫-৩৫ বছর৷ বাংলাদেশে দু’লাখের মতো যৌনকর্মী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Press/M. Candela
সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ
স্টেরয়েড ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচারণা চালাচ্ছে একশনএইড৷ সংস্থাটির বাংলাদেশ অংশের কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানিয়েছেন, ‘‘ওরাডেক্সন গ্রহণ করার পর শুরুতে মেয়েদের শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়তে থাকে৷ কিন্তু এটি নিয়মিত সেবন করলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চামড়ায় ক্ষতসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়৷’’
ছবি: GMB Akash
এইচআইভি সংক্রমণ
বাংলাদেশে যৌনকর্মীদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ বা এইডস রোগ হওয়ার খবর মাঝে মাঝে পত্রিকায় প্রকাশ হয়৷ তবে ঠিক কতজন যৌনকর্মী এইচআইভি আক্রান্ত তার হালনাগাদ কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি৷ অনেকক্ষেত্রে কনডম ব্যবহারে খদ্দেরের অনীহা যৌনকর্মীদের মাঝে যৌনরোগ ছড়াতে সহায়ক হচ্ছে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: AP
‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ যৌনকর্মী
বাংলাদেশের যৌনপল্লীগুলোতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের জোর করে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করানোর অভিযোগ রয়েছে৷ আর এই পেশায় যাঁরা একবার প্রবেশ করছেন, তাঁদের জীবনেও নানা ঝুঁকি থাকে৷ পতিতাপল্লীতে হামলার খবর কিন্তু মাঝেমাঝেই শোনা যায়৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: M.-U.Zaman/AFP/GettyImages
শত বছরের পুরনো পল্লী উচ্ছেদ
মাদারিপুরের পতিতাপল্লীটি ছিল শত বছরের পুরনো৷ গত বছর এই পল্লী উচ্ছেদ করেছেন স্থানীয়রা৷ এমনকি পল্লীটি জোরপূর্বক উচ্ছেদ না করার হাইকোর্টের আদেশও এক্ষেত্রে উপেক্ষা করা হয়েছে৷ সেখানে পাঁচশ’র মতো যৌনকর্মী বাস করতেন৷ কিছুদিন আগে টাঙ্গাইলের একটি পতিতাপল্লীও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এ রকম উচ্ছেদের আতঙ্কে রয়েছেন আরো অনেক যৌনকর্মী৷
ছবি: M.-U.Zaman/AFP/GettyImages
মধ্যপ্রাচ্যে ‘যৌনদাসী’ বাংলাদেশের মেয়েরা!
বাংলাদেশের বেশ কয়েক নারীকে মধ্যপ্রাচ্যে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে৷ তাঁদের পাচার করে সিরিয়ায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক বার্তাসংস্থা৷ এ সব নারীকে ফিরিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগের কথা বলা হচ্ছে৷ তবে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন পতিতালয়েও বাংলাদেশি নারীদের জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
9 ছবি1 | 9
ফ্লোরেন্স জানান, টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর আগ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৪৫ হাজার ডলার দিয়েছেন ইউরোপে তাঁর এজেন্টের কাছে৷ এসব এজেন্টকে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত নারীরা চেনেন ‘ম্যাডাম' নামে৷ আবার টাকা দেয়া শুরু করার পর কোনো ওষুধ ছাড়াই তাঁর মুখ ভালো হতে শুরু করে বলেও জানান ফ্লোরেন্স৷
নাইজেরিয়ার সরকার কঠোর আইন করেও বন্ধ করতে পারছিল না কালো জাদু প্রয়োগে ভয় সৃষ্টির কর্মকাণ্ড৷ ফলে এবার সরকারও কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে কালো জাদু নিয়ে মাঠে নেমেছে৷ আর এই কাজে সরকার সাথে পেয়েছে বেনিন অঞ্চলের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা দ্বিতীয় ওবা এওয়ারেকে৷
মার্চে এক অনুষ্ঠানে ওবা ঘোষণা দেন, অবৈধ অভিবাসনে যারা কালো জাদু কাজে লাগাবে, তাদের ওপর পড়বে তাঁর অভিশাপ৷ নাইজেরিয়ার সরকার বলছে, এই ঘোষণার পর থেকে উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে নারী পাচার৷
যারা এতদিন অন্যদের ওপর চাপিয়ে এসেছেন কালো জাদুর ভয়, তারাই এখন ভয়ে জড়োসড়৷
পাচারকারী পেশেন্স বলছেন, ‘‘আমি নিজে তাঁর মুখ থেকে এই ঘোষণা শুনিনি, কিন্তু রেডিও ও টেলিভিশনে শুনেছি৷ ওবা সব বন্ধ করে দিয়েছেন৷ এখনো বাইরে গেলেই মেয়েরা চারপাশে জড়ো হয়, তাঁদেরকে ইউরোপ পাঠাতে হাতে-পায়ে ধরে৷ কিন্তু আমি রাজি হই না৷ আমি মরতে চাই না৷ সবাই এখন খুব ভয়ে ভয়ে আছে৷''
ভয় পেয়ে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন খোদ কালো জাদুর পরিচালক আধ্যাত্মিক যাজকরাও৷ জুজু পরিচালনাকারী যাজক ডেভিড উবেবে বলেন, ‘‘এখন আর কেউ আমাকে বিরক্ত করে না৷ কেউ যদি আমাকে ইউরোপের মেয়েদের কাছ থেকে আরো অর্থ আদায়ে চাপ দেয়ার জন্য জাদু করতে বলে, তবুও আমি সেটা আর করি না৷ মৃত্যুর ভয় আমারও আছে৷''