সিন্ডারেলার উপর তার সৎমা আর সৎবোনেরা অত্যাচার করত৷ এক পরীর কল্যাণে সে সাজপোশাক পেল, রাজপ্রাসাদে নাচতে গেল, রাজপুত্তুরকে বিয়ে করল – এ সব ফেলে দেওয়ার সময় আসেনি কি? প্রশ্ন তুলেছেন ইটালির দুই নারী৷
বিজ্ঞাপন
ভিডিওটি আসলে একটি বই-এর বিজ্ঞাপন৷ তবে বিজ্ঞাপনটি অভিনব৷ বিজ্ঞাপনের সূচনাতেই দেখবেন কার্টুনে সিন্ডারেলার নয়, সিন্ডারফেলার কাহিনি৷ গল্পটা একই, শুধু সিন্ডারফেলা এক যুবক; তার সৎবাপ আর সৎভাইরা তার ওপর অত্যাচার করে, তার জামাকাপড় ছিঁড়ে দেয়৷
সিন্ডারফেলা আর কী করবে, অশ্রু ঝরিয়ে কাঁদে৷ তখন এক ফেয়ারি গডফাদার – আমাদের দেশের রূপকথা হলে হতো পরীর বদলে বামন, কিংবা ব্যাঙ্গমীর বদলে ব্যাঙ্গমা – যা-ই হোক, সেই পুরুষ পরীটি এসে সিন্ডারফেলাকে নতুন সুট আর একজোড়া কাচের ‘লোফার' দিয়ে পাঠাল নাচসভায়৷
এখানে একটা মজার সংলাপ আছে৷ সিন্ডারফেলা বলছে: ‘‘কাচ কি বিপজ্জনক নয়?'' বামন বলছে: ‘‘সুন্দর হওয়ার মানে যন্ত্রণা সহ্য করা, সেটাও জানো না?''
সিন্ডারফেলা তো নাচছে রাজকন্যের সঙ্গে৷ কাঁটায় কাঁটায় ঠিক রাত বারোটায় তার ‘কারফিউ'! কাজেই সিন্ডারফেলাকে তার কাচের লোফার ফেলে পালাতে হলো৷ রাজকন্যে পরদিন পেয়াদা পাঠালেন তার খোঁজে, ইত্যাদি...
এখানেই ক্যাঁচ করে শেষ হয়ে গেল কার্টুন৷ ভেসে উঠল একটি প্রশ্ন: ‘‘আমাদের ছেলেদের যদি আমরা এরকম একটা রূপকথা পড়ে না শোনাই, তবে মেয়েদের পড়ে শোনাব কেন?''
এর পরে উদয় হলেন এলেনা ফাভিলি ও ফ্রাঞ্চেস্কা কাভালো – এবং তাদের লেখা বইটি পেশ করলেন৷ বইতে ১০০ জন মহিয়সী নারীর কীর্তি-কাহিনি বিধৃত করা আছে, ছবিসহ; এদের মধ্যে আছেন রেস্টুরেন্টের শেফ, চিত্রকর, বিচারক, টেনিস খেলোয়াড়, সব পেশার মহিলা৷ রচয়িতাদের বক্তব্য হলো, তারা সম্প্রতি উপলব্ধি করেছেন যে, তারা তাদের মেয়েবেলায় যত গল্পকাহিনি শুনেছেন বা পড়েছেন, তার কোনোটিতে একটি মেয়ে তার নিজের ভাগ্য নিজের হাতে তুলে নেয়নি: সবসময়েই কোনো রাজপুত্র বা ভাই কিংবা – আর কিছু না হলে – ইঁদুর তাদের সাহায্য করেছে৷
এর ফলে মেয়েরা এলিমেন্টারি স্কুলে পৌঁছানোর সময়েই তাদের আত্মবিশ্বাস ছেলেদের চেয়ে কম হয়৷ কিন্তু কেন এরকম হবে? ‘‘প্রতিটি মেয়ের উচিত এই ভেবে বড় হওয়া যে, সে যা চায় তাই হতে পারে৷'' তাই দুই বান্ধবী ‘গুড নাইট স্টোরিজ: রেবেল গার্লস' নাম দিয়ে এই বইটি বার করেছেন৷ আপাতত ইংরেজিতে, তবে অন্যান্য ভাষায় অনুবাদের অনুরোধ ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে৷
এসি/এসিবি
যেসব ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে পারদর্শী
৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস৷ বহু ক্ষেত্রে নারীর সমাধিকার নিশ্চিত হয়নি ঠিকই, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে নারীরা এমনিতেই পুরুষদের চেয়ে পারদর্শী৷ জেনে নিন সেসবের কথা৷
ছবি: imago/fotoimedia
যে নারী গন্ধ চেনে
নারীর নাক পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল৷ তাই যে কোনো সুগন্ধ বা গন্ধ নারীর নাকে আগে এসে পৌঁছায়৷ কারণ নারীদের মস্তিষ্কের গন্ধকেন্দ্রের নার্ভে ক্রসসংযোগ থাকে পুরুষেদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি৷
ছবি: AP
নারীর অনুভূতি
অনুভূতির ক্ষেত্রে যে নারী এগিয়ে সেকথা বহুল উচ্চারিত৷ নারীর নরম হাতের প্রতিটি নার্ভসেলের স্কয়ার সেন্টিমিটার নাকি পুরুষের শক্ত হাতের নার্ভসেলের চেয়ে বড়৷
ছবি: Colourbox
নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি
যে কোনো অসুখের বিরুদ্ধে নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরুষের তুলনায় বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে৷ তবে তা নারীর সেক্স হরমোন ‘ইস্ট্রোজেন’-এর কারণে৷ তাছাড়াও ‘ইস্ট্রোজেন’ নারীর রক্তনালীকে সুরক্ষা করে এবং নারীর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতেও সহায়তা করে থাকে৷
ছবি: Colourbox/L Dolgachov
নারীর ‘কুলনেস’
‘ইস্ট্রোজেন’ নারীর স্ট্রেস হরমোনকে একদিকে যেমন দমন করে, তেমনি অন্যদিকে বড় ধরনের কোনো স্ট্রেসের সময়ও নারীকে শান্ত রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে এই হরমোন৷
ছবি: imago/fotoimedia
চিন্তা ও ভাষায় ভিন্নতা ()
মাতৃগর্ভে থাকাকালীন অবস্থায়ই শিশু মস্তিষ্কে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন এবং নারী হরমোন ইস্ট্রোজেন আলাদাভাবে বিকাশ ঘটে৷ বহু সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে, নারীদের চিন্তা-ভাবনা, বোঝার ক্ষমতা বা অনুভূতি অনেক গভীর হয়৷ তাছাড়া মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক সহজ ভাষায় তাদের মনের ভাব বা কোনো কঠিন কথাও সহজে বলে ফেলতে পারে৷
ছবি: picture-alliance
অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সচেতন
গবেষণায় জানা গেছে, পুঁজি বা শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের লাভ হয় শতকরা দুই ভাগ বেশি৷ কারণ অর্থ বিনিয়োগের ব্যাপারে মেয়েরা বেশি সচেতনতার পরিচয় দিয়ে থাকে৷
ছবি: Fotolia/Franz Pfluegl
মেয়েরা সতর্ক ড্রাইভার
জার্মানির ট্র্যাফিক আইন অমান্য বা জোড়ে গাড়ি চালানো অপরাধীদের মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ নারী৷ আর শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে তিন ভাগের দুইভাগই ঘটে থাকে পুরুষদের কারণে৷ এই পরিসংখ্যান জানা গেছে জার্মানির ফ্লেন্সবুর্গ-এ ট্র্যাফিক অপরাধমূলক সংস্থা থেকে৷