একেবারে বিনা খরচে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন পোশাক শিল্পের মেধাবী নারী কর্মীরা৷ তাঁদের এ সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়৷ ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেছেন ২২ জন পোশাক কর্মী৷
বিজ্ঞাপন
পোশাক কর্মীদের এমন সুযোগ করে দিয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডাব্লিউ)৷ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দাবি করে আসছে, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো যাঁর টাকা আছে তারা শুধু তাঁকেই লেখাপড়ার সুযোগ দেয় না, তাদের কাছে বরং শিক্ষার্থীর মেধাই সবচেয়ে বড় কথা৷
সম্প্রতি তারাই বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের মেধাবী নারী কর্মীদের বিনা খরচে লেখাপড়ার সুযোগ দিয়েছে৷ প্রথম বছরে সুযোগ পেয়েছেন ২২ জন৷ রীতিমতো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এ সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা৷ বাংলা, অংক ও ইংরেজী বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এসএসসি পাশ মোট ৬২২ জন নারী পোশাক কর্মী৷ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত ২২ জন প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় পর্বের দু'বছরের কোর্স শুরু করেছেন গত জানুয়ারি থেকে৷ বাংলাদেশের নারী পোশাক কর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ার খবর নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান৷
২০০৮ সালে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন৷ বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়টি মূলত ইকিয়া ফাউন্ডেশন ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের মতো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনুদানে পরিচালিত৷ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, কম্বোডিয়া, কানাডা, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, ভিয়েতনামসহ ১৬ টি দেশের শিক্ষার্থীরা সেখানে লেখাপড়া করেন৷
এসিবি/ডিজি (গার্ডিয়ান)
বাংলাদেশি পোশাক শ্রমিকদের পাশে জার্মানি
রানা প্লাজা বিপর্যয়ের দেড় বছর পর জার্মানি যে ‘টেক্সটাইলস পার্টনারশিপ’ চালু করেছে, সে উপলক্ষ্যে ফেডারাল অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রী গ্যার্ড ম্যুলার বাংলাদেশ যান৷ নিজের চোখে দেখেন সেখানকার মানুষ ও তাঁদের উন্নয়নকে৷
ছবি: DW/S. Burman
‘মেড ইন বাংলাদেশ’
রানা প্লাজা বিপর্যয় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে৷ চালু হয়েছে ‘‘অ্যাকর্ড’’, ‘‘অ্যালায়েন্স’’ এবং ‘‘টেক্সটাইলস পার্টনারশিপ’’ মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, যার উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের গার্মেন্টস ওয়ার্কারদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা৷
ছবি: DW/S. Burman
একযোগে
জার্মান উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এক করা৷ গাজিপুরের ডিবিএল গ্রুপ ‘‘টেক্সটাইলস পার্টনারশিপ’’-এ যোগ দিয়েছে ও ইতিমধ্যেই একাধিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করেছে৷ জার্মান উন্নয়নমন্ত্রী গ্যার্ড ম্যুলার তাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং এই আশা প্রকাশ করেন যে, অন্যান্য সংস্থাও এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবে৷
ছবি: DW/S. Burman
মোটরসাইকেলে
প্রায় দেড়’শ নতুন লেবার ইনস্পেক্টরদের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে, কারখানাগুলোর পরিস্থিতির উপর নজর রাখার জন্য৷ কোনো সংকট ঘটলে যানজট এড়িয়ে চটজলদি অকুস্থলে পৌঁছানোর জন্য তাদের মোটরসাইকেল দেওয়া হয়েছে৷
ছবি: DW/S. Burman
লুডো খেলাও সচেতনতা বাড়ায়
গার্মেন্টস শিল্পের শ্রমিকরা প্রধানত মহিলা, নিজেদের আইনি দাবিদাওয়া সম্পর্কে তাঁদের বিশেষ ‘জানকারি’ নেই৷ কাজেই কারখানায় ‘‘মহিলাদের কাফে’’ সৃষ্টি করে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সেই সঙ্গে বিনোদনের জন্য লুডো খেলা৷
ছবি: DW/S. Burman
কাজের জায়গায়
পরিস্থিতি কিছুটা অন্যরকম৷ দিনে দশ থেকে চোদ্দ ঘণ্টা কাজ৷ ‘‘টেক্সটাইলস পার্টনারশিপ’’ এই অনলস কর্মীদের কাজের পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে চায়৷
ছবি: DW/S. Burman
রাজনীতিও শামিল
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ গাজিপুরের ডিবিএল গ্রুপের ফ্যাক্ট্রিতে জার্মান উন্নয়নমন্ত্রী গ্যার্ড ম্যুলারের সঙ্গে যোগ দেন এবং সহযোগিতা সম্পর্কে আলোচনা করেন৷ গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি ঘটানোর জন্য সরকারের উদ্যোগ বিশেষভাবে প্রয়োজন৷
ছবি: DW/S. Burman
মিনি ফায়ার ব্রিগেড
গ্যার্ড ম্যুলার গাজিপুরে ডিবিএল গ্রুপের কারখানার নতুন ‘খুদে দমকল বাহিনীর’ উদ্বোধন করেন৷ এই ফায়ার ব্রিগেড এক কিলোমিটার ব্যাসের এলাকার মধ্যে অগ্নি নির্বাপণে সক্ষম৷ ম্যুলারের সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ৷
ছবি: DW/S. Burman
চাইল্ড কেয়ার
শ্রমিক কল্যাণ উদ্যোগের অংশ হিসেবে কারখানা প্রাঙ্গণে ডে-কেয়ার সেন্টার সৃষ্টি করে মহিলা শ্রমিকদের শিশুসন্তানদের দেখাশোনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷
ছবি: DW/S. Burman
সবে মিলে করি কাজ
জার্মান সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা, মালিকপক্ষ, বিদেশি ক্রেতা এবং অপরাপর সংশ্লিষ্টরা সকলে একত্রিত হয়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করছেন৷
ছবি: DW/S. Burman
লক্ষ্য
বাংলাদেশ বর্তমানে ২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের গার্মেন্টস রপ্তানি করে থাকে৷ সরকার সেটাকে ২০২১ সাল – অর্থাৎ দেশের পঞ্চাশতম বার্ষিকীর মধ্যে ৫০ বিলিয়নে দাঁড় করাতে চান৷ জার্মান উন্নয়ন মন্ত্রী গ্যার্ড ম্যুলার গত ৭ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন৷