মঙ্গলগ্রহের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ বহুদিন থেকেই৷ আর মঙ্গলে নাসার সাম্প্রতিক অভিযান সেই আগ্রহের আগুনে ঘি ঢেলেছে৷ কারণ সেই আগ্রহের কারণেই এবার নাসা পরীক্ষা চালিয়েছে ‘ফ্লাইং সসার’-এর৷
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেশী এই গ্রহের ভূ প্রকৃতি কেমন, গ্রহটি আদৌ মানুষের বসবাসের উপযোগী কিনা – তা নিয়ে বহু দিন থেকেই চলছে জল্পনা-কল্পনা৷ আর এবার, সেই জল্পনার জট খুলতেই সাহায্য করবে নাসার নতুন এই প্রযুক্তি৷ যার সাহায্যে মঙ্গলে সহজে ও নিরাপদে নভোচারীরা অবতরণ করতে পারবেন৷ নাসার দাবি, তারা এই পরীক্ষা থেকে যে তথ্য পেয়েছেন তা তাদেরকে সামনের দশকেই মঙ্গলে আরও ভারী জিনিস পাঠাতে সাহায্য করবে৷ নাসার এই পরীক্ষা যানের নাম দেয়া হয়েছিল ‘লো ডেনসিটি সুপারসনিক ডিসেলারেটর'৷
যেখানে মঙ্গলগ্রহের চেয়েও বেশি শীত
যুক্তরাষ্ট্র আর ক্যানাডার একটা অংশে পড়েছিল মঙ্গলগ্রহের চেয়েও বেশি শীত৷ শৈত্যপ্রবাহ এবং তুষার ঝড়ে জনজীবন বিপন্ন৷ ডয়চে ভেলের ইংরেজি বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়ার অনুসারীদের পাঠানো ছবিতে দেখুন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু এলাকার জনজীবন৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/M. Fortner
বরফ ঢাকা শহরের পথে ভেঙে পড়া গাছ
যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যে জর্ডান শহরের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে নেমে গিয়েছিল৷ এমন শীতে মানুষের কষ্ট কী পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে তা কল্পনা করা কঠিন নয়৷ এ ছবিটি মাইকেল অ্যালডেন পাঠান মাইন রাজ্যের লুসার্ন থেকে৷ বিদ্যুৎ ছিল না, প্রচণ্ড ঝড়ে গাছপালা ভেঙে পড়ছিল৷ অ্যালডেনের ছবিতে অবশ্য বিরূপ প্রকৃতির সৌন্দর্যই ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Michael Alden
প্রকৃতি কখন সদয় হবে!
ইন্ডিয়ানার সাউথ বেন্ড থেকে এ ছবি পাঠিয়ে কারস্টেন হাইভোনেন লিখেছেন, ‘‘আমাদের এখানে ১৩ ইঞ্চি পুরু বরফ জমেছে৷ তাপমাত্রা নেমে গেছে মাইনাস ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ এমন শীতে শ্বাস নিতেও কষ্ট হয়৷ আবহাওয়া কখন উষ্ণ হবে, কখন রাস্তাঘাট পরিষ্কার করা হবে – আমরা এখন তারই অপেক্ষায় আছি৷ বাচ্চারা দু’দিন ধরে স্কুলে যেতে পারছে না, আগামী কালও বোধহয় যেতে পারবে না৷’’
ছবি: Kristen Hyvonen Amsler
জুরি আছে আনন্দে
কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ৷ শীতে মানুষ কষ্টে মরছে আর পাহাড়ি কুকুর জুরির এ সময়েই মহা আনন্দ৷ তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নামলে ও বরফের বুকে খেলতে চায়, চায় কেউ ওর সঙ্গে থাকুক, ওর সঙ্গে আনন্দ করুক৷ ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শ্যাম্পেইন থেকে জুরির এই ছবি পাঠিয়ে এরিন কিরবি জানতে চেয়েছেন, ‘‘এমন শীতের মধ্যে কে ওর সঙ্গে খেলবে!’’
ছবি: Erin Kirby
বরফের সঙ্গে যুদ্ধ
মিশিগানের মেরিল থেকে এ ছবি পাঠিয়েছেন জুলিয়েট জাভার্স৷ শহরের পথ-ঘাট ঢেকে গেছে বরফে৷ চলছে বরফ সরিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা৷
ছবি: Juliette Zavarce
বরফের বাগান
যুক্তরাষ্ট্রের মইনেস থেকে ছবিটি পাঠিয়েছেন মারিয়ানা লিঙ্ক-আলেকজান্ডার৷ আইওয়া অঙ্গরাজ্যে এ শহরটির বর্তমান অবস্থা জানাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘ওয়েস্ট ডেস মইনেসে আমার বাড়ির সামনের বাগান৷ গতরাতে এখানে তাপমাত্রা মাইনাস ২৫ ডিগ্রিতে নেমে যায়, শৈত্যপ্রবাহের ঠান্ডা তো মাইনাস ৪০-এরও নীচে৷’’ এমন শীতে মারিয়ানার বাগানটা কিন্তু অন্য রূপে সেজেছিল৷
ছবি: Marianne Link-Alexander
অপরূপ প্রকৃতি
দুঃসময়েও কখনো কখনো মানুষ আনন্দ খুঁজে নেয়৷ মিশিগানের মেরিলে আলিরিও জাভার্স শীতের অত্যাচারে কাবু হতে চান না৷ তাই তিনি ব্যালকনি থেকেই ক্যামেরাবন্দি করেছেন বরফে ঢাকা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে৷
ছবি: Juliette Zavarce
জলপ্রপাত এখন বরফসমুদ্র
শন ও’কনর থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়োতে, চ্যাগরিন জলপ্রপাতের কাছে৷ এই শীতে সব জল জমে বরফ৷ মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পানি বরফ না হয়ে থাকে কী করে!
ছবি: Shawn O'Conner
বরফ ঝরায় ঘাম
মাইনাস ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ইন্ডিয়ানার হান্টিংটন শহরও বরফে বরফে সয়লাব৷ এ ছবির প্রেরক বরফ সরানোর যন্ত্র নিয়েই নেমেছিলেন কাজে৷ গাড়ি চালিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য পথ করতে পাক্কা দু’ঘণ্টা খাটতে হয়েছে তাঁকে৷ যুক্তরাজ্য সরকার এমনি এমনিই তো আর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া বাকি সবার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি!
ছবি: Dan Herber
বরফাচ্ছাদিত
মাইনের পোর্টল্যান্ড থেকে জেমস কোলবাথের পাঠানো ছবি৷ দেখুন, বাড়ি এবং বাড়ির আশপাশ কত উঁচু বরফে ঢাকা৷
ছবি: James Colbath
খেটে মরা
মিশিগান থেকে এ ছবি পাঠিয়েছেন রন সোন৷ বাড়িতে তখন শুধু তাঁর ছোট ছেলেটিই ছিল৷ কাজ সেরে একে একে সবাই বাড়ি ফিরছে৷ বরফ সরিয়ে সেই ছেলেকে প্রথমে তাঁর দাদির জন্য, তারপর বাবা-মায়ের বাড়ি ফেরার পথ করে দিতে হয়েছে৷ পরে আরো একবার বরফ সরিয়ে গাড়ি আসার পথ করতে হয়েছিল তাঁকে৷ মাইনাস ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সাত ইঞ্চি পুরু বরফ তিনবার সরানোর পর শরীর আর চলছিল না৷
ছবি: Ron Sohn
10 ছবি1 | 10
রকেট মোটরের সহায়তায় শব্দের চেয়েও চারগুণ দ্রুতগতিতে যানটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল এবং যানটি ১ লাখ ২০ হাজার ফুট ওপরে পৌঁছাতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় নিয়েছিল বলেই জানিয়েছে নাসা৷ শনিবার ১৫ কোটি মার্কিন ডলারের এই পরীক্ষাটি চালানো হয়৷ হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের কাওয়াই-এর একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে যানটি ওড়ার পর নেমে আসার সময় প্যারাসুটে জট পাকিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে আছড়ে পড়ে৷ তবে এটাকে ব্যর্থতা হিসেবে না দেখে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন প্রকৌশলীরা৷ ভবিষ্যতের পরীক্ষাগুলোতে এটা অনেক সাহায্য করবে বলে মনে করছেন তাঁরা৷ যানটির ‘ব্ল্যাকবক্স' খুঁজতে এরই মধ্যে একটি জাহাজ রওনা হয়েছে৷ ব্ল্যাকবক্সে এমন কিছু তথ্য আছে, যা বিশ্লেষণ করে দেখতে চান বিজ্ঞানীরা৷ তাঁদের ধারণা, এর থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া সম্ভব৷
আগামী বছর হাওয়াই থেকেই আরও দুটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা-র৷